সব ঘুমানোর পূর্বেই খুলে রেখেছে। কক্ষের ভিতরে ঝকঝকে আলো থাকায় নিজের হাত দু'টো চোখের সামনে মেলে ধরলো। দু'হাত মেহেদি'র রঙে রাঙানো।
ওয়াসেনাত রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছে আর তার সাথে রিমি।ওয়াসেনাত প্রচণ্ড বিরক্ত ভঙ্গিতে রিমির দিকে তাকিয়ে আছে।কারন একটাই রিমির আজাইরা বকবক।যা ওয়াসেনাতের মোটেও পছন্দ হচ্ছে না।ওয়াসেনাতের এখন ইচ্ছে করছে রিমির মুখে কস্টিভ লাগিয়ে দিয়ে বলতে এবার বল কত কথা বলতে পারিস।কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্যি ওয়াসেনাতের কাছে এমন কিছুই নেই।
সকাল দশ টা বাজে সূর্যমামা তার পূর্ণ উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছে পৃথিবীতে।ক্রমশ প্রকৃতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।আরো এক ঘন্টা আগে গোসল করে চুল ফ্যানের নিচে দিয়ে সুয়ে আছি।চুলের পানি ঝরলে চুল বেঁধে রেডি হয়ে নিলাম।এই গরমে কি পোশাক পরবো সেটা ভেবে দিশেহারা।আবার খারাপ পোশাক পরেও যাওয়া যাবে না।কাল সারারাত উত্তেজনাতে ঘুম হয় নি।
ও সাফওয়ানের জন্য নেহাত একটা মেডিসিন! শুধু মাত্র মেডিসিন! এর বাইরে আর কিছুই না! ওই ডায়েরি টা তে কোথাও লেখা নেই যে সাফওয়ান ওকে ভালোবাসে, কোথাও না! তাহলে কি ও সাফওয়ান কে চিনতে পারেনি?
গমগমিয়ে বৃষ্টির আওয়াজ রোজকার মতো আজ আর স্নিগ্ধ মোহময় হয়ে ধ্বনিত হচ্ছে না। বৃষ্টির ফোঁটা গুলো শোনাচ্ছে কোনো এক কিশোরীর আর্তনাদের ন্যায়। এমনটাই অনুভূত হচ্ছে কাঁচের তৈরি আবদ্ধ কক্ষে।
অরিএান আর রিমন হতভম্ভ হয়ে একজন আর একজনের মুখ চাওয়া চাই করছে।তাদের অবস্থা দেখে মনে হয় ভয়ঙ্কর কিছু দেখেছে।তবে তারা যা দেখছে এক কথায় এটা মেয়েদের জন্যে একদম সাধারন একটা ব্যাপার।অরিএান আর রিমনের সামনে ওয়াসেনাত আর রিমি ঝগড়া করছে।আসলে ঝগড়া করছে বললে ভুল হবে মারা মারি করছে।যাকে বলে চুল
পরী হাঁটু গেড়ে বিছানার ওপরে বসে পরে, অভি ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরে। পরী খুব আদরে অভির চুলে বিলি কেটে দেয়। অভি ওর কোমর জড়িয়ে ধরে থাকে। দু’জনের বুকের ভেতর এক অনাবিল প্রেমের আলো বিছুরিত হয়, সেই প্রেমে কোন কামনার লেশ নেই, বাসনার লেশ নেই, এ যেন এক সুন্দর ধবধবে সাদা প্রেমের বন্ধন।
অভি, “পরী…”
পরী, “হুম বল।”
অভি, “সুব্রত আর মৈথিলী আমার সাথে অরুনিমার সম্পর্ক তৈরি করার জন্য উঠে পরে লেগেছে।”
পরী, “আমি জানি অভি, আর এও জানি সেই জন্য তুমি আজ ওদের বাড়ি যাচ্ছ না। তোমার ওপরে যে আমার অগাধ বিশ্বাস আছে অভি।”
- এভাবে কি সেদিন আমার হাত পায়ের বাঁধনগুলো খোলা যেত?
সিয়ার আফসোস হলো। সাথে অপরাধবোধ হলো এটা ভেবে, প্রয়োজনের সময় কেনো উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগাতে পারেনি ও। কিন্তু সিয়া কি আর জানতো ওকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করে শ'য়তানটা ওর দাদুকে তুলে নিয়ে যাবে?
মুগ্ধ কলাবাগান বাস কাউন্টারে দাঁড়িয়ে আছে। ১০:৩০ এ বাস ছাড়বে। সামনেই সাফি আর দোলা বসে আছে। ওরা এসেছে হেল্প করার জন্য। কারন তিতিরকে পৌঁছে দিতে আসবে ওর বাবা এবং ভাইয়া। তিতির বাসায় বলেছে এবারও টিওবি থেকেই যাচ্ছে খাগড়াছড়ি ট্রিপে। যেহেতু তিতিরের বাবা, ভাইয়া সাফি-দোলাদের চেনে তাই ওদেরকে নিয়ে এসেছে মুগ্ধ।
বাবু, “কি করা যায় বলত? পরী নিশ্চয় লুকিয়ে লুকিয়ে কারুর সাথে যোগাযোগ রেখেছে।”
ছোটমা, “একদম বাজে ব্যাপার তাহলে। কিন্তু ও কি করে যোগাযোগ করতে পারে?”
বাবু, “আমার মনে হয় ও করেনি। আমি একদিন ওর ফোনের লগ দেখেছিলাম, তাতে ত কোন অন্তর্জাতিক কল ছিলনা।”
ছোটমা, “আমি এইসবের মানে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।”
বাবু, “আমিও কিছুই বুঝতে পারছিনা এ সব কি?”
এমন নৃশংস খু/ন পলাশ ব্যতিত আর কে করতে পারে? এই একটি প্রশ্নই পাগল করে দিচ্ছে তাকে। এমন সময় প্রণয় এলো। তাকে দেখে আঁতকে ওঠল সে।
বরপক্ষ কে স্টেজের সামনে রাখা চেয়ারে বসতে দেওয়া হলো। রুমাইশা, আফসানা আর বাচ্চারা গিয়ে প্রথমে এক জায়গাতে বসলো। আর ওদের পাশে এসে বসলো আন্টি মহল। শাফিনের কাজিন গুলা সব কনের সাথে ফট্যোশ্যুট করতে চলে গেছে।
রুনিয়া হলরুমের মেঝেতে বসে বুক চাপড়ে হাহাকার করে কাদছেন। তার সাফওয়ান, তার নাড়িছেড়া ধন, তার প্রথম সন্তান সাফওয়ান নেই! তাকে কারা জানি মেরে ধরে নিয়ে চলে গিয়েছে কোথায়!
রাফসান আর শাফিন ঘুরতে গেলো জঙ্গলের ভেতর। বহু বছর আসা হয়নি এখানে, ছোটবেলার কত শত স্মৃতি ওদের এইখানে। স্মৃতি গুলো আবার তাজা করতে ধীর গতিতে ওরা জঙ্গলের দিকে এগোলো।
কোনোমতে শরীরে টি-শার্ট জড়িয়ে নিচে নেমে এলো সৌধ৷ দেখতে পেল সুহাস, আইয়াজ আর প্রাচীর আতঙ্কিত মুখ। সুহাস ঢাকাতে ছিল, গতকাল সকালেই কথা হয়েছে ওর সঙ্গে। তাই আকস্মিক সুহাসের আগমন সন্দেহ তৈরি করল মনে। আইয়াজ আর ফারাহর গত মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
নেশায় ভোর হয়ে ব্যালকনিতেই ঘুমিয়ে পড়েছিল অর্ক।সূর্যের তীর্যক রশ্মি চোখে মুখে পড়তেই বিরক্তিতে কপাল কুচকে আসে অর্কের।চোখ খুলে নিজেকে মেজেতে বসে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে কিঞ্চিৎ বিস্মিত হয় অর্ক।পরমুহূর্তেই গত রাতের কথা মনে পড়তেই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ায়।
“চলো ট্রুথ ডেয়ার খেলি সবাই৷”
“আমি এইসব খেলতে পারব না।”
মোবাইল নিয়ে ক্যারম খেলতে শুরু করে স্বাক্ষর। সে বাদে বাকি সবাই রাজি হয়ে যায়৷ সে এখানে বসে আছে এটাই অনেক। শিরিন অনুরোধের স্বরে বলে‚
“প্লিজ ভাইয়া। তুমি তো এইসব খেলা থেকে দূরেই থাক। আজ না-হয় আমাদের সাথে একদিন খেললে।”
নিঃস্তব্ধ রাতে মাউথ অর্গানে সুর তুলে ল্যাম্পপোস্টের আলোর পথ ধরে হেঁটে চলা মানবীর দিকে তাকিয়ে আছে টরেন্টোবাসী।তাঁদের মধ্যে বাঙালীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।চাকরীর সুযোগ সবচেয়ে বেশী এবং সবচেয়ে বেশী বাঙালী এই টরেন্টো অর্থাৎ এই অন্টারিও প্রভিন্সে বসবাস করে।
গেস্ট হাউজটা আসলে একটা কটেজের মত। চারদিকে ঘিরে আছে একটা বারান্দা। কটেজে মোট ৪ টি ঘর। প্রত্যেকটি ঘরে দুটো করে বিছানা। আর দুই বিছানার মাঝেও অনেক যায়গা। ফ্লোরিং করার প্ল্যান ছিল বাকিদের। কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেল। কোথায় চলে গেল সাফিরা।
মদন কিছুতেই যাচ্ছে না। আর পদ্মজা অন্দরমহলের ভেতর ঢুকতে চাইছে না। সে বার বার বলছে, ‘আমি একটু হাঁটব এদিকে। আপনি যান।’ ‘রাইতের বেলা একলা থাকবেন। আমার কাম আপনারারে দেইখা রাখা।’ ‘এদিকে তো আলো জ্বলছে। উনিও আসবেন এখন। আপনি যান। আর…