সারারাতে তুর্য একটুও ঘুমায়নি। ভোরের আলো যখন ফুঁটতে শুরু করেছে তখনই তুর্য রুম থেকে বেরিয়ে গেছে। সামনের ঘরের বারান্দায় রাখা চেয়ারে বসে বৃষ্টি ভেজা প্রকৃতি দেখছিল। আস্তে আস্তে সমস্ত অন্ধকার কাটিয়ে আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করে।মোরগ ডাকা শুরু করেছে। বাড়ির গিন্নি দরজা খুলেই তুর্যকে দেখতে পায়। পাশে দাঁড়িয়ে বলে,
তোমাকে | মুন্নি আক্তার প্রিয়া | পর্ব – ০৮
“ঘুমাও নাই তুমি বাবা?”
তুর্য ঘাড় কাৎ করে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে,
“নতুন জায়গা তো। ঘুম আসেনি। তাই এখানে এসে বসে আছি।“
“আচ্ছা তুমি বহো। আমি হাঁস-মুরগি ছাইড়া দিয়া নাস্তা বানাই দিতাছি।“
“এত ব্যস্ত হতে হবে না চাচি। পরীর ঘুম ভাঙলেই আমরা চলে যাব।“
“এইডা কী কও? না খাইয়া যাওন যাইব না।“
এই বলে তিনি হাস-মুরগির খোঁয়াড়ের দিকে এগিয়ে যান। খোঁয়াড়ের দরজা খোলার পরই এক ঝাঁক হাস-মুরগি বাচ্চাসহ ছুটে আসে উঠোনে। কেমন চৈ চৈ শব্দ করছে হাঁসগুলো। মোরগগুলো এখনো ডেকেই চলেছে। দুটো পাত্রে তিনি হাসঁ-মুরগির খাবার দেন। বাহিরের হৈচৈ শব্দে পরীর ঘুম ভেঙে যায়। শোয়া থেকে ওঠে বসতে গিয়ে মাথাটা ঘুরে ওঠে। ঝিম মেরে বসে থাকে কিছুক্ষণ। মাথাটা ভীষণ ভার ভার লাগছে। শরীরটাও গরমবোধ হচ্ছে। জ্বর বোধ হয় এসেই পড়েছে।
চৌকি থেকে নেমে পা টিপে টিপে বাহিরে আসে পরী। রাতের আলোতে বাড়ির সৌন্দর্য একদমই দেখা যায়নি। গ্রামাঞ্চল পরীর এমনিতেই অনেক ভালো লাগে। তার মধ্যে বৃষ্টিভেজা প্রকৃতি। এখনো গাছগুলোর পাতা ভেজা। বিশাল বড় একটা উঠোন। হাঁস-মুরগির বাচ্চাগুলো দৌঁড়ে দৌঁড়ে এদিক সেদিক ছুটছে দল ধরে। ডানপাশে মাটির চুলোর রান্নাঘর। একপাশেই রাখা পাতার বস্তা ও শুকনো খড়ি। রান্নাঘরের কিছুটা সামনেই টিনের বেড়া দেওয়া গোসলখানা। গোসলখানার পাশেই ফ্লোরে চারকোণা পাকা করে মাঝখানে একটা চাপকল। কলপাড়ের পাশেই লাগানো দুটো চালতা গাছ। বাম পাশে রয়েছে একটা গোয়াল ঘর ও হাঁস-মুরগির খোঁয়াড়। তারপাশে ঝাকা দেওয়া শিমগাছ,লাউ গাছ আর লম্বা একটা পেঁপে গাছ। চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে পরীর।
তুর্য চোখ বন্ধ করে কপালে আঙুল চালাচ্ছিল। চোখ খুলেই পরীকে দেখতে পায় এলোমেলো অবস্থায়। চুলগুলো উশকো-খুশকো হয়ে এলোমেলো হয়ে আছে। এলোমেলো শাড়ির কুঁচি।কাপড়ের আঁচলটাও গুছানো না। দেখতে একদম গ্রামের মেয়েদের মতোই মনে হচ্ছে। প্রকৃতি উপভোগ করতে গিয়ে পরী পিচ্ছিল উঠোনে বেখেয়ালে হেঁটে পা পিছলে ধপাস করে পড়ে যায়। কাঁদায় শরীর একদম মাখামাখি অবস্থা। পরী ‘ও মাগো’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে।
তুর্য শব্দ করে হেসে ফেলে। রান্নাঘরে চাচির দিকে চোখ পড়তেই হাসি থামিয়ে দেয়। চাচি তাড়াতাড়ি দৌঁড়ে আসে পরীর দিকে। তা দেখে তুর্যও এগিয়ে আসে। চাচি পরীকে ধরে বলে,
“আরে! শরীর এত গরম ক্যান? জ্বর আইসা পড়ছে দেহি।“
তুর্যও পরীর হাতে হাত দিয়ে চমকে যায়। সত্যিই পরীর শরীরে প্রচুর জ্বর। চাচি অস্থির হয়ে বলে,
“তাড়াতাড়ি কলপাড়ে নিয়া আহো। মাথায় পানি দিয়া দেই। চুলাডা নিভাইয়া আহি দাঁড়াও।“
তুর্য চাচিকে আশ্বস্ত করে বলে,
“আপনি রান্না করেন চাচি। আমি নিয়ে যাচ্ছি ওকে।“
তুর্য পরীকে কোলে নিতে গেলে পরী বাঁধা দিয়ে বলে,
“আমি হেঁটেই যেতে পারব।“
তুর্যও আর পরীকে জোর করে না। তবে একাও ছাড়ে না। হাত ধরে নিয়ে যায়। চাচি তার মেয়েকে ডেকে বলেন,
“যা তো সামিয়া কলডা চাইপা দে।“
সামিয়া মেয়েটি ভারী মিষ্টি। ১২/১৩ বছর বয়সী হবে। গ্রামের কল একেবারেই নরম। এক হাত দিয়ে চাপ দিলেই মুখভর্তি পানি পড়ে। পরী পাকার ওপর বসে পড়ে। সামিয়া কল চেপে বালতি ভরছে। তুর্য মগ দিয়ে পানি নিয়ে পরীর মাথায় ঢালছে। পরীর দৃষ্টি নিচে। তুর্যর এত কেয়ার সহ্য হচ্ছে না পরীর। বারবার মনে হচ্ছে যদি মায়ায় জড়িয়ে পড়ি? পরী স্বল্পস্বরে বলে,
“আমি গোসল করব।“
উত্তরে সামিয়ে বলে,
“আপা তাইলে গোসলখানায় চলেন। আমি পানি নিয়া আসি।“
তুর্য বলে,
“তুমি পরীকে নিয়ে গোসলখানায় যাও। আমি পানি চেপে আনি।“
“না, না ভাইজান। আপনে পারবেন না।“
তুর্য হেসে বলে,
“আমি পারব। তুমি ওকে নিয়ে যাও। আর ঘরের রশিতে দেখবে ওর জামাকাপড় আছে। ওখান থেকে এক সিট এনে দাও।“
“আইচ্ছা।“
সামিয়া পরীকে ধরে গোসলখানায় নিয়ে যায়। গোসলখানার ফ্লোরে শুধু ইট বসানো। মাথার ওপর খোলা আকাশ দেখা যাচ্ছে। এখন বৃষ্টি আসলে বেশ হতো। কিন্তু আকাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে না বৃষ্টি আসবে বলে। সামিয়া এসে পরীর এক সিট থ্রি পিছ গোসলখানার দড়িতে রেখে যায়। তুর্য আসে পানিভর্তি বালতি নিয়ে। বালতিটা পরীর সামনে রেখে বলে,
“পানি আরো লাগলে ডাক দিও।“
পরী মাথা তুলে তুর্যর দিকে তাকায়। মলিন মুখে বলে,
“একটু বসুন তো।“
“কেন?”
“একটা কথা বলব।“
“তো বলো।“
“জোরে বলা যাবে না।“
“আচ্ছা।“, বলে তুর্য পরীর সামনে বসে। তৎক্ষণাৎ পরী তুর্যর মাথা ধরে বালতির পানির মধ্যে চুবিয়ে ছেড়ে দেয়। তুর্য দ্রুত মাথা তুলে হাত দিয়ে মুখের পানি ঝেড়ে দুদিকে মাথায় নাড়ায়। পরী মুখ টিপেটিপে হাসছে। তুর্য লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে বলে,
“এটা কী হলো? অসুস্থ হয়েও ঝগড়া করার বাহানা বন্ধ হয়নি?”
“আমি একদমই ঝগড়া করার জন্য এমনটা করিনি। রিভেঞ্জ নিলাম।“
“কীসের রিভেঞ্জ?”
“আমি পা পিছলে পড়ে যাওয়ার পর আপনি যে বত্রিশ পাটি দাঁত বের করে হিহি করে হেসেছেন সেটা আমি দেখিনি ভেবেছেন?”
তুর্য কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়। বসা থেকে ওঠে দাঁড়িয়ে বলে,
“তাড়াতাড়ি গোসল করে নাও। আমাদের রওনা হতে হবে।“
আর কিছু না বলেই তুর্য চলে যায়। পরী ওঠে দরজাটা লাগিয়ে দেয়। গোসল শেষে বের হয়ে উঠোনের দড়িতে ভেজা কাপড়গুলো মেলে রুমে যায়। বড়সড় একটা ধাক্কাও খায়। ধাক্কাটা অঙ্গে নয়। মনের ভেতর। তুর্য কালো শার্ট আর কালো প্যান্ট পরেছে। শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত ফোল্ড করে হাত দিয়েই মাথার ভেজা চুলগুলো ঠিক করছে। এমন একটা দৃশ্যের জন্য প্রস্তুত ছিল না পরী। মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে শুধু। অসম্ভ ভালো লাগছে। ইচ্ছে করছে একবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে। পরেই আবার নিজেকে নিজে সামলে নিয়ে মনে মনে বলে,
“তুই কি পাগল হয়ে গেলি পরী? এসব কী ভাবছিস ছিঃ! নিজেকে সামলা। বাই দ্যা ওয়ে, আমি কি প্রেমে পড়ে যাচ্ছি? না, না। এই ছেলের প্রেমে পড়ার চেয়ে না খেয়ে থাকাও ভালো।“
তুর্য পরীর চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলে,
“কী ভাবো?”
পরী সম্মতি ফিরে পেয়ে বলে,
“এ্যা? না। কিছু না।“
“দাঁড়িয়ে না থেকে তাড়াতাড়ি রেডি হও।“
“আপনি কি কালও এই পোশাকই পরে ছিলেন?”
“তো? আমি কি তোমার মতো ফ্যাশন করার জন্য কাপড় সাথে নিয়ে ঘুরি?”
“না জেনেই আউলফাউল কথা বলবেন না। আমি….”
তুর্য নিজের ঠোঁটের ওপর এক আঙুল রেখে বলে,
“চুপ! বকবক শোনার মতো সময় নেই আবার। তাড়াতাড়ি রেডি হলে হও। নয়তো তোমাকে রেখেই চলে যাব।“
“যান। বারণ করল কে? আমি একাই চলে যেতে পারব।“
তুর্য পরীর কথায় পাত্তা না দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। পরী কাপড়চোপড় গুছিয়ে ব্যাগে ভরে নেয়। চুল আঁচড়ে রেডি হয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হয়। সামিয়ে এসে পরীকে ঘরে নিয়ে যায়। সকালের নাস্তায় রেখেছে পরোটা, হাঁসের মাংস, মুরগির ডিম ভাজা।
তুর্য মাংসের ঝোলে পরোটার টুকরো ডুবিয়ে ডুবিয়ে খাচ্ছে। পরী হাত ধুয়ে জিজ্ঞেস করে,
“কীসের মাংস এগুলো চাচি?”
“হাঁসের মাংস।“
“আমি তো হাঁসের মাংস খাই না।“
“আল্লাহ্! মাইয়া কয় কী! খাও না ক্যান?”
“এমনিই। ছোট থেকেই খাই না।“
“মুরগির ডিম খাও তো? নাকি এইডাও খাও না?”
“খাই। কিন্তু আমার ডিম দিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে না। ঘরে চিনি আছে?”
“আছে।
সামিয়া যা তো চিনির বয়ামটা নিয়া আয়।“
তুর্য মুখ ফস্কে বলে,
“যে তোমায় বিয়ে করবে তার কপালে দুঃখ আছে খুব।“
চাচা আর চাচি দুজনই অবাক হয়ে বলে,
“মানে? পরী না তোমার বউ?”
নিজের কথায় নিজেই ফেঁসে যায় তুর্য। খাবারও গলায় আটকে গেছে। পরী পরিস্থিতি সামলে নিয়ে বলে,
“চাচা পুরো কথাই তো শুনলেন না। ও যে কথাটা বলল ঐটা আমার মা বলতো আগে। আমি অনেক বাছ-বিচার করে খাই তো তাই।“
“ওহ। শ্বশুর-শ্বাশুরীর লগেই থাকো?”
“জি।“
সামিয়া চিনির বয়াম নিয়ে আসে। পরী পরোটায় চিনি রেখে রোল বানিয়ে খায়। একটা পরোটা খেয়েই পানি পান করে। চাচা পরীর দিকে নাপা ওষুধ এগিয়ে দিয়ে বলেন,
“এইডা খাইয়া লও। জ্বর কইমা যাইব।“
পরী কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,
“আপনারা আমাদের জন্য কত কষ্ট করলেন।“
“কষ্টর কিছু নাই মা। বিপদে যদি কাউরে সাহায্যই না করি তাইলে আল্লাহ্ নারাজ হইব।“
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে সবাই বাড়ি থেকে বের হয়। পরী চাচি আর সামিয়াকে জড়িয়ে ধরে মনের অনুভূতি জানায় ও ধন্যবাদ দেয়। চাচা বাজার পর্যন্ত এগিয়ে দিতে আসেন। তুর্য চাচাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
“আপনাদের উপকার আমরা কোনোদিন ভুলব না। সময় পেলে অবশ্যই একদিন আমাদের বাসায় আসবেন। সামিয়ার কাছে আমার নাম্বার দিয়ে এসেছি আর আপনার নাম্বারও নিয়েছি।“
“আচ্ছা বাবা সময় পাইলে যামু। তোমরা সাবধানে যাইয়ো ঠিকাছে। আর বাড়িতে পৌঁছাইয়া ফোন দিও।“
“ঠিকাছে আসি চাচা।“
পরী চাচাকে বলে,
“অনেক অনেক ধন্যবাদ চাচা। সারাজীবন মনে রাখব আপনাদের। আল্লাহ্ যেন সবমসময় আপনাদের সহায় থাকেন।“
“আল্লাহ্ তোমাগো দুইজনরেও যেন সারা জনম ভালো রাখে। তুমগো দুইজনরে দেখলে চোখ জুড়াই যায়। সাবধানে যাইয়ো মা। স্বামী-সংসার নিয়া সুখে থাকো।“
এরপর দুজন ভ্যানে চড়ে বিদায় নিয়ে আসে বাস স্ট্যান্ডে। পরী ব্যাগ থেকে ফোন বের করে রেহেনা বেগমকে ফোন করে। তিনি চিন্তাতেই অস্থির রাত থেকে যতবার ফোন দিয়েছে বন্ধ পেয়েছে। গ্রামে নেটওয়ার্ক এমনিতেই ভালো না। তার ওপর আবার ঝড়বৃষ্টি। বাবা-মা মিলে কিছুক্ষণ বকলেও পরে আদর করে জানায় তাদের টেনশনের কথা। পরীও রাগ করে না। বাবা-মায়ের চিন্তা বুঝতে পারে। তাছাড়া সত্যিই তো কাল যদি আল্লাহ্ সহায় না থাকতো আর তুর্য সাথে না থাকতো তাহলে অনেক খারাপ কিছু হতে পারতো। তাই রাগের মধ্যে কোনো সিদ্ধান্তই নেওয়া উচিত না। কাল রিমনের সাথে রাগ করে বাড়ি থেকে বের না হলে এতকিছুর সম্মুখীন হতে হতো না। যাই হোক, যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। অন্তত একটা শিক্ষা তো হলো। আর যাই করুক, রাগের মাথায় আর কখনো বাড়ি থেকে রাতে বের হওয়া যাবে না।
বাস এসে পড়লে সব ভাবনা-চিন্তা বাদ দিয়ে দুজনে বাসে ওঠে পড়ে। বৃষ্টি হওয়ার কারণে আবহাওয়া এখনো অনেক সতেজ। বাতাসও বেশ ঠান্ডা। জ্বরে মাথা ভার লাগছে খুব। তাই বাসের সীটের সাথেই হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে পরী।
সকালে প্রাইভেট পড়ার জন্য পরীকে ডাকতে যায় মেহেনুবা। কিন্তু পরী বাসায় না বলে একাই চলে যায়। রাস্তায় মেহেনুবাকে একা দেখে প্রান্তর মনে খটকা লাগে। প্রান্ত মেহেনুবাকে পেছন থেকে ডেকে বলে,
“আপু একটু দাঁড়ান।“
মেহেনুবা পেছনে ঘুরে দাঁড়ায়। প্রান্ত কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,
“আসলে একটা কথা জিজ্ঞেস করার জন্য ডেকেছি।“
“কী কথা?”
“আপনার সাথে যে আরেকটা মেয়ে থাকে। নাম সম্ভবত পরী।“
“হু। পরী আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।“
“সে কোথায়?”
“আপনি ওর খোঁজ করছেন কেন?”
“তেমন কোনো কারণ নেই। সবসময় তো দুজন একসাথেই যান তাই আরকি!”
“পরী ওর খালার বাসায় গেছে।“
“কবে আসবে?”
“আজই।“
“ওহ। আচ্ছা আপু ধন্যবাদ। আপনি যান।“
মেহেনুবা চলে যাওয়ার পর প্রান্ত কিছুক্ষণ নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকে। নিজের কর্মকাণ্ড নিয়ে নিজেই ভাবে। চাপদাড়িতে হাত বুলিয়ে ভাবতে থাকে,
“অদ্ভুত! আমি ওর খোঁজ করলাম কেন? ওর বান্ধবীকেও পর্যন্ত জিজ্ঞেস করে ফেললাম! এটা আমি?”
চিন্তিত হয়েই প্রান্ত পিছনে ঘুরে। সামনে তিথিকে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। প্রান্ত জিজ্ঞেস করে,
“তুমি!”
“জি আমি। ওর সাথে কী কথা হচ্ছিল হু?”
“না এমনিই জিজ্ঞেস করলাম।“
“আমি শুনেছি। তুমি পরীর কথা জিজ্ঞেস করছিলে।“
“তুমি চেনো পরীকে?”
“চিনব না কেন? ও তো আমাদের বাসাতেই থাকে।“
“হোয়াট! তোমাদের বাসায়?”
প্রান্তর চোখগুলো চকচক করে ওঠে। ঐদিকে প্রান্তর এমন আচরণে তিথির বুকের ভেতর কেমন যেন করে ওঠে। পরীর প্রতি ঈর্ষা হতে শুরু করে। মনের ভেতর সন্দহের দানা বাঁধতে শুরু করে।