যখন চোখ খুললাম তখন সকাল হয়েছে। আমার গায়ে একটা কম্বল দেওয়া। যদিও আমি ঘামছি। মাথা হালকা ব্যথা এখনো। আমি ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে তাকালাম। শাওন ফ্লোরে বসে থেকে বিছানায় দুই হাতের উপর মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে।
পুরো বাড়ি ঘুরে দেখছিলো হুর, লিয়া আর হৃদ। বড়োরা বসার রুমে কথা বলছে। মিস্টার ফরিদ তাদের কে বললো বাড়ি ঘুরে দেখতে। বড়ো দের কথার মাঝে তারা বসে বসে বোর হচ্ছিলো বুঝতে পেরে ফরিদ সাহেব তাদের বাড়ি ঘুরে দেখতে বলেছে। বাড়ির বাইরের অংশ যতটা না বড় ভেতরের অংশ তার দ্বিগুন বড় বলে
আগামীকাল শুক্রবার। সিমরানের এনগেজমেন্ট। অ্যাডভোকেড অণুজ সরকারের সঙ্গে। লোকটার গায়ের বর্ণ শ্যাম হলেও আকর্ষণীয় চেহেরা। ভীষণ সুদর্শন। সুহাস নিজে গিয়ে দেখা করেছে ছেলেটির সঙ্গে। প্রথম দেখা এবং আলাপচারিতায় চোখ, মন দুটোই কেড়েছে অণুজ। এক দুইদিনের পরিচয়ে মানুষ চেনা ভার৷ পারিবারিক বিয়ে অবশ্য অল্প পরিচয়েই হয়৷
ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘুম ভাঙলো মুগ্ধর। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল টেরই পায়নি। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইল। তিতির ওর বুকের মধ্যে ঘুমাচ্ছে। তিতিরের দিকে চোখ পড়তেই ওর রাতের পাগলামির কথা মনে পড়ে গেল। একা একাই হেসে ফেলল মুগ্ধ। আস্তে আস্তে আকাশটা সাদা হতে লাগলো। বাসে সামনে কয়েকজনের ঘুম ভেঙেছে।
উনি বুঝতে পারলেন উমায়ের কাঁদছে।তাই আরো গভীর আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে কপালে গাঢ় চুমু দিয়ে বললেন, 'ডোন্ট ক্রাই প্লিজ!ইট হার্টস মি হুয়েন ইউ ক্রাই।'
'ধরে নিন এটা আপনার শেষবারের মতো দূঃখ পাওয়া।আর একটুও দূঃখ দেব না।এই খারাপ বরটাকে ক্ষমা করে দিন শেষবারের মতো।'
গমগমিয়ে বৃষ্টির আওয়াজ রোজকার মতো আজ আর স্নিগ্ধ মোহময় হয়ে ধ্বনিত হচ্ছে না। বৃষ্টির ফোঁটা গুলো শোনাচ্ছে কোনো এক কিশোরীর আর্তনাদের ন্যায়। এমনটাই অনুভূত হচ্ছে কাঁচের তৈরি আবদ্ধ কক্ষে।
সময় প্রবহমান, সময় কারোর জন্য থেমে থাকে না। নবীনবরণ অনুষ্ঠানের পর কেটে গেছে বেশ কয়েক দিন, এই কয়েক দিন সুদেষ্ণারা কেউ কলেজ যায়নি । তার অব্শ্য কারন আছে , চনন্দননগর কলেজে সেকেন্ড সেমিষ্টার এর পরীক্ষা চলছিলো তাই সুদেষ্ণাদের ছুটি ছিলো কাল থেকে আবার কলেজ যাবে। সেকেন্ড সেমিষ্টার এর পর সুদেষ্ণাদের
শ্যামাপাখি জানো,
আমি দিন দিন কত দুষ্টু হয়ে যাচ্ছি।তোমার দেওয়া ছবি আমি কতশত বার জুম করে দেখেছি।তোমার ওই গাড়ো লিপিস্টিক এর দিকে তাকিয়ে নেশাক্ত হয়ে গেছিলাম। এই পিচ্চি শুনছো তোমাকে শাড়িতে নীল রঙে রাঙানো নীলাভ সৌন্দর্যের অধিকারী লাগছে।
ওদের সম্পর্ক তখন ৪ মাস চলছিল। তিতির পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে চান্স পায়নি। প্রাইভেটেই ভর্তি হয়েছে। ওদিকে মুগ্ধর মাস্টার্স কম্পলিট হয়ে গেছে। তখনই মুগ্ধ আগের চাকরিটা ছেড়ে এখনকার চাকরিটায় জয়েন করেছিল। আগের অফিস ধানমন্ডিতেই ছিল। এখনকারটা বনানী। ধানমন্ডি থেকে বনানী অফিস করাটা ডিফিকাল্ট লাগলেও মুগ্ধ বাসা চেঞ্জ করেনি কারন এখানে তিতির আছে।
প্রানেশা আজ সকাল বেলা উঠেছে। ছয়টায় উঠে সবার জন্য ব্রেকফাস্ট তৈরি করে টেবিলে পরিবেশন করছে। মিসেস অদিতি, মিস্টার রাহাত নিচে নেমে এসব দেখতেই অবাক হলেন। মিসেস অদিতি প্রানেশাকে বললেন- ‘আরে! এসব কী করছো তুমি? এত কষ্টের কেনো করতে গেলে? ‘ প্রানেশা মুচকি হেসে হাতের পায়েসের বাটিটা টেবিলের উপর রাখলো।
ঘুমন্ত শাহিনুরকে পাঁজাকোল করে বিরতিহীন হেঁটে চলেছে প্রণয়। তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে বুকে মুখ গুঁজে তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়ছে মেয়েটা৷ প্রতিটি নিঃশ্বাস একদম প্রণয়ের বুকের মধ্যখানে গিয়ে ঠেকছে।
আকাশ মেঘলাকে ভালবাসে কিনা এই নিয়ে এতদিন মেঘলার মনে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল কিন্তু আজ এভাবে লিপস্টিক মুছার পর সব সন্দেহ উবে গেছে। ভালবাসা ছাড়া এভাবে একটা মেয়েকে টাচ করার মত ছেলে আকাশ নয় এটা ভেবে মেঘলার খুব আনন্দ হচ্ছে। এদিকে…
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে রেগে জোরেই বলে উঠলাম,”কাল রাতে আপনি আমার সাথে কি করেছেন?” উনি থমকে দাঁড়িয়ে ঘুরে আমার দিকে তাকালেন। আমি আরো বললাম, “আপনি সত্যিই অনেক খারাপ৷ আপনি অসভ্য আর অমানুষ।” একটু থেমে বললাম,”কি হলো এখন চুপ করে আছেন কেন?”
এক হাত সমান ঘোমটা টেনে বসে আছে হুর। কিছুক্ষন আগে লিয়া তাকে ফাইয়াজের রুমে বসিয়ে দিয়ে গেছে। ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট রোজের কম্বিনেশন এ সাজানো হয়েছে সম্পূর্ণ রুম টাকে। সাদা কালোর মিশ্রনে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে রুম টা। হুরের কিছুটা ভ’য় লাগলেও মনের ভিতর অন্যরকম প্রশান্তি, ভালো লাগা কাজ করছে।
-' ও মা গো... মরে গেলাম আম্মা... আমি মরে গেলাম।'
বিস্মিত হয়ে সকলেই তাকালো বাইজি গৃহের দিকে। সাংঘাতিক আশঙ্কায় সর্বাঙ্গ কেঁপে ওঠলো প্রণয়ের।
ডাইনিং টেবিলে বসে আছে হুর। মিসেস হেনা হুরকে খাবার সার্ভ করছেন। হুরের একটুও খাওয়ার ইচ্ছে নেই। কিন্তু এখন না খেলে মিসেস হেনা উ’ল্টা’পা’ল্টা চিন্তা শুরু করবেন। এমনিতেই তাকে অনেক ক’ষ্টে বুঝিয়েছে হুর যে সে ঠিক আছে এখন।হুর জো’ড় করে খাওয়া শুরু করলো। যতো না খাচ্ছে তারচেয়ে বেশি নাড়ছে।
ধবধবে সাদা রঙে ঘেরা একটি আলিশান বাড়ি। চারপাশের ভূমি গাঢ় সবুজ, কৃত্রিম ঘাসে সজ্জিত। গাড়ির ভেতর থেকে এ পর্যন্ত দেখে ধীরেসুস্থে নেমে দাঁড়াল সৌধ। সুহাসকে ইশারা করল চটজলদি বেরুতে। বুকের ভেতর হাতুড়ি পেটাচ্ছে সুহাসের। উত্তেজনায় তলপেট মুচড়ে, মুচড়ে ওঠছে। চোখ, মুখের অবস্থা নাজেহাল। কণ্ঠনালি ক্ষণে ক্ষণে নীরস হচ্ছে।
মারিয়া কাঁধব্যাগ বুকে চে*পে দাঁড়িয়ে রইল। সাদিফ বাইক ঘুরিয়ে ফের স্টার্ট দিতে গেলে ডাকল,
' শুনুন।'
সাদিফ ঘাড় কাত করে তাকায়,
' কিছু বলবেন?'
শ*ক্তপোক্ত চেহারা দেখে মেয়েটা গুলিয়ে ফ্যালে সব।
পলাশবাড়ীতে আমার স্কুল কলেজ কেটেছে মেয়েদের সঙ্গে। গার্লস স্কুল, গার্লস কলেজ। শিকদার বাড়ির মেয়েরা ছেলেদের সঙ্গে পড়াশোনা করবে! ছি: ছি: মেয়েদের বিয়ের বাজারে যদি দর কমে যায়! ক্লাস এইট থেকেই আমার বোরখা পরা লাগতো। সেদিক দিয়ে নাবিদ আমাকে বেশ ছাড় দিয়েছে। কলেজের জন্য জিনিসপত্র কিনতে যেদিন নিউমার্কেট গেলাম সেদিন নাবিদ আমাকে বলল,“
ছাই রঙা বোরখার ওপর মিশমিশে কালো রঙা হিজাব আর নেকাব পরে গাড়ির জানালা দিয়ে ভাবুক দৃষ্টিতে বাইরে তাকিয়ে সাফওয়ানের পাশের সিটে বসে আছে রুমাইশা। সাফওয়ান ড্রাইভিং করছে।