এমন নৃশংস খু/ন পলাশ ব্যতিত আর কে করতে পারে? এই একটি প্রশ্নই পাগল করে দিচ্ছে তাকে। এমন সময় প্রণয় এলো। তাকে দেখে আঁতকে ওঠল সে।
গত কয়েকদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। দিন নেই রাত নেই প্রকৃতি মুখরিত হয়ে আছে শ্রাবণ ধারায়। সুহাস, আইয়াজ গতকাল ঢাকায় ফিরেছে। ছুটি শেষ ওদের। ফারাহ আপাতত নামীর সঙ্গে নামীর বাসাতে থাকছে। একমাসের মধ্যে আইয়াজ তার পরিবারকে মানিয়ে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ফারাহকে ঘরে তুলবে। আজ আইয়াজ আর সৌধর নাইট ডিউটি।
আকাশঃ রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে আমার বাবা মা তোকে এত বড় করে তুলেছে। আমি তোকে এত ভালবেসেছি আজ সব কিছুই ভুলে গেছিস? প্রতিদিন কোন না কোন ছেলের সাথে ফস্টিনস্টি করিস কেন রে আমি কোনদিক দিয়ে খারাপ? আর যদি খারাপই হই…
দুই সপ্তাহ পর তিতিরের বাবাকে বাসায় আনা হলো। তারপর তিতির একটু নিশ্চিন্ত হলো। ডাক্তার বলে দিয়েছে বাবাকে এখন থেকে খুব সাবধানে রাখতে হবে, উনি আর কোন ভারী কাজ করতে পারবেন না। এমনকি ওনাকে বাজার করতেও দেয়া যাবে না। ফুল বেডরেস্টে থাকতে হবে, নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।
চোখাচোখি হলো কেবল কয়েক সেকেন্ডের জন্য।আরহাম দৃষ্টি সরিয়ে নিলেন সাথে সাথে।মাইমুনা খুশিতে কাঁদবে না হাসবে বুঝতেই পারছে না।দাদূ উনার সাথে খোশালাপে ব্যস্ত ছিলেন তখন ড্রয়িংরুমে আসলেন আয়মান।মাও আসলেন।
আরহাম উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিলেন।মা, ইমরানা, তার হাজবেন্ড প্রথম থেকে সবকিছুর জন্য করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন।আরহাম কেবল শুনে গেলেন।
পাঁচিল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে সাদিফ। বক্ষপটে মাংসল হাত গুঁজে রাখা। গায়ের কালো পাঞ্জাবি মিশে গেছে তিঁমিরে। ক্ষীণ রশ্মিতে, চশমার গ্লাস চিকচিক করছে।
অমানিশার এই সুবিধে টুকু, মারিয়া হামলে নিয়েছে প্রযত্নে। তৃষিত নয়নে,চেয়ে আছে ওর দিক। সে মানুষটার নজর সম্মুখে,একটু উঁচুতে,ঐ আকাশের রাস্তায়।
রাত অনেক হয়ে গেছে, সুব্রত মৈথিলীকে সঙ্গে করে বেড়িয়ে যায় অভির ঘর থেকে। পরী ওদের পেছন পেছন বেড়িয়ে যেতে থাকে। অভি দেখল পরী যে ওর কথা রাখছে না তাই পেছন থেকে পরীর কাঁধে হাত রাখে, ইশারায় বলতে চায় যে তুমি তোমার কথা রাখছ না। পরী কাঁধের ওপর থেকে ওর দিকে মিষ্টি করে তাকায়। সুব্রত আর মৈথিলী কিছুটা এগিয়ে গেল। পরী একটু দাঁড়িয়ে রইল তারপরে ওর দিকে তাকিয়ে ডান হাতের তর্জনী ঠোঁটের সামনে এনে ডগায় আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে ওর দিকে নাড়ে, অভি সেই ছুঁড়ে দেওয়া চুম্বন টাকে বুকের ওপরে মেখে নেয়।
ভগ্ন হৃদয়ে পরীর দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে চোখের ইশারায় বলে, “তুমি কথা দিয়েছিলে পরী।”
পরী মাথা নেড়ে চোখের ইশারায় জানায়, “এটা নিয়ে সন্তুষ্ট থাক সোনা।”
পরী চোখ তুলে তাকালো শায়েরের দিকে। মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেছে।
-'চম্পা শুধু এই কাজটাই করেনি। আরো একটা জঘন্য কাজ করেছে জানেন কি?'
“এভাবে কান্না করলে সবাই ভাববে আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করেছি। এই বিয়েতে তুমি কী খুশি না? কাজী সাহেবকে বলে সব ক্যান্সেল করে দিব?”
ঠাসসস শব্দে কেঁপে উঠলো রুম।আম্মুর হাতের পাঁচ আঙুল আমার গালে লেগে গেলো।আম্মুর যথেষ্ট বকাবকিতেও মন ভরে নি।তার ধারণা তার মেয়ে অন্য জগতে প্রবেশ করেছে।তার মেয়ে এমন মানুষদের সাথে ফোনে কথা বলে তারা ভিডিও কলে অশালীন জিনিস দেখায়।
হাফসা পড়ালেখা করেছে আ্যারাবিক লাইনে।চাচার কাছেই কুরআন হিফয শেষ করেছে অল্প বয়সেই।তবে ফিকহ সহ অ্যারাবিক বইয়ের পাশাপাশি পড়ছে সাইকোলজি নিয়ে।সাইন্সের বিভিন্ন বিষয়ের বইয়েও চরম আগ্রহ ওর।ইসলামিক বই পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সায়েন্স ফিকশনের বইও সংগ্রহে আছে ওর নিজের লাইব্রেরীতে।
আমি ড্রয়ারটা আস্তে করে বন্ধ করে উঠে দাঁড়াতেই শাওন আমার এক হাত ধরে টান দিয়ে আমাকে বিছানায় নিয়ে এলো। আর আমার দুই হাত বিছানার সাথে চেপে ধরল। আমি চোখ বড়সড় করে তাকিয়ে বললাম আ… আপনি… ঘু…ঘু…ঘুমান নি!” “এত রাতে আমার রুমে কি করছ?”
পরী হাঁটু গেড়ে বিছানার ওপরে বসে পরে, অভি ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরে। পরী খুব আদরে অভির চুলে বিলি কেটে দেয়। অভি ওর কোমর জড়িয়ে ধরে থাকে। দু’জনের বুকের ভেতর এক অনাবিল প্রেমের আলো বিছুরিত হয়, সেই প্রেমে কোন কামনার লেশ নেই, বাসনার লেশ নেই, এ যেন এক সুন্দর ধবধবে সাদা প্রেমের বন্ধন।
অভি, “পরী…”
পরী, “হুম বল।”
অভি, “সুব্রত আর মৈথিলী আমার সাথে অরুনিমার সম্পর্ক তৈরি করার জন্য উঠে পরে লেগেছে।”
পরী, “আমি জানি অভি, আর এও জানি সেই জন্য তুমি আজ ওদের বাড়ি যাচ্ছ না। তোমার ওপরে যে আমার অগাধ বিশ্বাস আছে অভি।”
রুমাইশা শোয়া থেকে উঠে বসল। চোখ দুটো মুছে নিলো ভালোভাবে৷ এই অসময়ে কে আসবে? ফুপ্পি? না শাফিন! ভাবতে ভাবতে উঠে দরজা খুলে দিলো রুমাইশা। কিন্তু কাউকেই সামনে পেলো না৷ মনে মনে শাফিনের ওপর খুব বিরক্ত হলো।
ইরা ভাবতে লাগল কিভাবে মেঘলাকে সরানো যায়… । । । এদিকে আকাশের চাচাত বোনের বিয়ে, চাচা চাচী সহ বোন, সবাই বিদেশে থাকে কিন্তু সব আত্নীয় স্বজন দেশে থাকে তাই বিয়েটা আকাশদের বাসা থেকে হবে। জাস্ট ২ দিন পর বিয়ে তাই…
তিতিরের ঘুম ভাঙতেই দেখলো মুগ্ধ গুনগুন করে গান গাইছে। ও বলল, -“আপনি গান গাইতে পারেন?” মুগ্ধ বেড়ী দিয়ে তিতিরকে আগলে রাখা হাতটা সরিয়ে নিল। তিতির আড়মোড়া ভেঙে সোজা হয়ে বসল। তিতিরের ঘুমে জড়ানো কন্ঠস্বরটা মুগ্ধর বুকে গিয়ে লাগলো। মুগ্ধ সত্যি এবার চিন্তায় পড়ে গেল। ও তিতিরের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে না
হসপিটাল থেকে ফেরার পথে সারাটা পথ মনের সাথে আলাপ করেছে সে। যে মেয়েটা তার যত্ন নিতে ব্যস্ত ছিলো দিনের পর দিন, তাকে সে কিভাবে এতোটা আঘাত করতে পারলো! তার সকল কাজ অনায়াসে করে দিতো মেয়েটা, আর তাকেই কি না সে এতোটা মেরেছে!
নাবিলঃ আছে একটা পাগলি একদিন না হয় পরিচয় করিয়ে দিব।
আবিরঃআকাশ ভাইয়ের ভালবাসা দেখে খুব হিংসা হচ্ছে তারউপর। সেই ভাগ্যবতীকে তো দেখতেই হবে।
নাবিলঃ সত্যিই সে ভাগ্যবতী...!!!
ঘর থেকে বের হওয়ার আগে শায়ের চম্পাকে উদ্দেশ্য করে বলে,'যে মানুষ টা তোকে এতো কাছে টানলো তার এতোবড় ক্ষতি করতে তোর বুক কাঁপলো না? তোর মুখ যেন দ্বিতীয়বার আমি না দেখি।'
শুভর কথা শুনে সবাই একত্রে হেসে উঠল। হেনা তার পিঠে চাপড় মে’রে বলল‚ “ধরা পড়লে তোর উপর গনধোলাই পড়বে এটা নিশ্চিত।”
“তারপর টিভির হেডলাইন হবে‚ গার্লফ্রেন্ডের সাথে সারারাত গল্প করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল যুবক শুভ আর সেই গনধোলাইয়ে প্রাণ হারিয়েছে নিস্পাপ সেই ছেলেটি।”