জন্মদিন মানেই বিশেষ একটি দিন।সে দিন টা যদি আবার হয় প্রিয় জনের তাহলে সেই দিন টা বিশেষ এর থেকেও বিশেষ হয়।আজ রাত বারোটা বাজলেই বিহান ভাই এর জন্মদিন।কিন্তু উনি তো এলেন না।
আজ সকালে সূর্যের দেখা মেলেনি। থেকে থেকে টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে৷ প্রকৃতি অবসাদগ্রস্ত। সেই অবসাদ গ্রাস করে নিয়েছে সিমরানকেও। দু’পায়ে এখনো ব্যান্ডেজ মেয়েটার। কান্নাকাটি করে ফর্সা মুখ লালচে বর্ণে পরিণত হয়েছে। চোখ দু’টোও ফুলে আছে ভীষণ। সময় সাতটা বেজে পঁয়ত্রিশ মিনিট৷ মেয়ের ঘুম ভেঙেছে, উদয়িনী টের পেয়েছে ব্লুটুথ স্পিকারে গান শুনে।
ঘুম থেকে জেগে প্রতিবারের ন্যায় আজো অর্ক নিজেকে ব্যালকনিতে আবিষ্কার করলো।তবে অন্যদিনের তুলনায় আজকে অর্কের সাথে ব্যাতিক্রম ঘটনা ঘটেছে।প্রতিবার এই ব্যালকনিতে ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে হয়তো আয়েশা বেগমের ডাকাডাকিতে অর্কের ঘুম ভাঙে
বাবা আমার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে আর বিভিন্ন গল্প বলছে।আমি ডাক্তার হলে বাবা আর কাজ করবে না,আমি আর ভাইয়ার থেকে পকেট খরচ নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াবে।যদিও বাবার এটা একটা আবদারের কথা।
বৃষ্টির ধারা মাত্রই শেষ হয়েছে। আকাশে এখনো মেঘ বিদ্যমান। কোথাও ঘন কুয়াশা আবার কোথাও বা শুভ্র মেঘ। ফজরের নামাজ পড়ে ছাতা মাথায় আধভেজা হয়ে মাত্রই মসজিদ থেকে ফিরেছে পরীর বাবা। ছাতাটা ড্রয়িংরুমে রেখে তিনি নিজের রুমে যান। রাতে রেহেনা বেগম…
বাড়িতে কেউই পাশা মিয়ার সঙ্গে মনির সম্পর্ক মানতে রাজি নয়। বাবা নরম গলায় মেয়েকে যথেষ্ট বুঝালেন। কিন্তু তার বে*য়াদব মেয়ে কিছুতেই কিছু বুঝতে রাজি না। উল্টো বাবা, মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন। মামাশ্বশুর আবারও আসলেন। এবার সঙ্গে মামীও। উল্লেখ্য, মামী আম্মাকে তেমন একটা পছন্দ করেন না।
শেখর সোজা হয়ে দাঁড়াল বলল,'কাজ ছিলো।'
-'কাজ তো থাকবেই বিয়ে বলে কথা। আমাকে একবার জানালি না। আর তুই নাকি আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখবি না।'
উনি দরজা খুলে এসে হাফসাকে সামনাসামনি সোফায় বসে থাকতে দেখে হাতের বাটিটা টেবিলে রাখলেন।তারপর এসির পাওয়ার বাড়াতে বাড়াতে বললেন, 'আম রিয়েলি সরি।ট্রাস্ট মি আমার মনেই ছিলো না যে আপনাকে দরজা বন্ধ করে রেখেছি।'
হাফসা উনার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ এত ক্লান্তির কারন কি উনার!
আকাশ চিৎকার করে বলছে মেঘলা যাস না প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাস না।
দেখতে দেখতে মেঘলার গাড়ি অন্ধকারে মিলিয়ে গেল।আকাশ রাস্তায় বসে কাঁদছে নাবিল পাশেই দাঁড়িয়ে আছে।
ঠোঁটের কোণা বেয়ে পড়া রক্ত টুকু তর্জনীতে মুছে নিল নামী৷ মুছে নিল গাল বেয়ে পড়া অশ্রুটুকুও৷ এরপর নিজেকে যথাসম্ভব শক্ত করে নিয়ে দৃঢ় গলায় বলল, ‘ মিসেস উদয়িনী, অনেক বলেছেন আপনি। এবার আপনার শোনার পালা। ‘ চমকে গেল উদয়িনী। হতভম্ব মুখে তাকিয়ে রইল নামীর বিধ্বস্ত মুখপানে।
-'আমার থেকে তা আপনি ভালো জানেন। আপনার থেকেই তো ভালোবাসা শিখছি আমি। প্রতিদিন আপনার ভালোবাসার নতুন রূপের সাথে পরিচিত হই আমি। আপনিই বলুন।'
অন্ধকার কোন ঘর থেকে কারো বিভৎস চিৎকার ভেসে আসছে। মস্তবড় এক গুদাম ঘরের বিলাসবহুল এক রুমে বসে আছে আশমিন। তার পাশের ই কোন রুম থেকে কারোর আর্তনাদ ভেসে আসছে। সোফায় বসে হাটুতে দুই হাত ভর দিয়ে পা নাচিয়ে যাচ্ছে আশমিন। সানভি ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে আশমিনের দিকে।
-'এই আপনার এই যাব এই আসব ডাক্তারসাহেব?'
প্রণয়ের চোয়ালজোড়া তীব্র কষ্টে ভারী হয়ে ওঠল। ছোট্ট করে নিশ্বাস ফেলে প্রণয়কে আপাদমস্তক দেখে পুনরায় শাহিনুর প্রশ্ন করল,
-'ওরা আমার এতবড়ো সর্বনাশ কেন করল ডাক্তারসাহেব?'
বিকালের দিকে রাওনাফ রোশনি আমার মেহেনূর শহর দেখবে বলে বেড়িয়েছে।যাওয়ার সময় অর্ককেও এক প্রকার জোর করেই নিয়ে আসা হয়েছে।অর্ক কিছুতেই আসতে চাইছিল না। কিন্তু রোশনি কি আর কম চালাক মেয়ে।
শাড়ি, গয়না পছন্দ করে তিনজন মিলে হাসাহাসি, রসিকতা করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো। অবশেষে রোমানা প্রণয়ের বউ হতে যাচ্ছে।
আকাশটা মেঘাচ্ছন্ন। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে। আজকের এই বৃষ্টিই জানান দিলো বর্ষাকাল এসে গেছে। এতে বেশ ভালোই হয়েছে। শীত আর বর্ষা এই দুই ঋতুতে এদুয়ার্দো বেশ আনন্দ অনুভব করে। ছোট ভাই আব্রাহামকে সাথে নিয়ে নানান রকম এডভেঞ্চারে বেরিয়ে পড়ে। তার ভাইটাও হুবুহু তার মতই। প্রকৃতি প্রেমি। আব্রাহামের অবশ্য আরও একটা নেশা আছে।প্রেমের নেশা। তার জীবনে প্রণয়িনীর অভাব নেই। তবুও সে মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মনের দুঃখ প্রকাশ করে বন্ধুদের কাছে।
পরী তৎক্ষণাৎ শায়েরের হাত মুঠোয় নিয়ে বলে, 'আপনি ছাড়া আমি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির কাছেও সুখি থাকতে পারবো না। তাই এই প্রশ্ন আপনি কখনোই করবেন না।'
স্পেশাল ফোর্সের প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য আফতাব হোসেন কে জিজ্ঞেস করলো তাদেরকে সাহায্য করা লোকটার ব্যাপারে, কিন্তু আফতাব হোসেন কিছুই বলতে পারলো না, কোথাও সে লোকটার টিকি পাত্তাও পেলোনা ওরা।
ডিনারেও হাফসা চুপচাপ ছিলো।আরহাম মাছের কাটা বেছে বেছে দূপাশে দূজনকে খাইয়ে দিচ্ছেন।দূই লোকমা খাওয়ার পর হাফসা আরহামকে বাঁধা দিয়ে বলল, 'এবার আপনি খান।'
উনি আবার দিতে চাইলে হাফসা উনাকে রিপিট করে।অথচ মাইমুনা একবারও উনাকে খাওয়ার কথা বলেননি।
কামিনী চৌধুরী কে একটা চেয়ারের সাথে শক্ত করে বেধে রাখা হয়েছে। চারিদিকে গার্ড রা ঘিরে রেখেছে তাকে।বাচ্চাদের আলতো করে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাহাদুর আর একজন মেয়ে গার্ড। অনেকক্ষন না খেয়ে থাকার দরুন তার একটু পর পর কেদে উঠছে।কামিনী চৌধুরীর গায়ে কেউ হাত তুলে নি।