পাঁচ বছর পর,,,,,,
পাঁচ বছর পর আয়রা ফিরে আসে ওর জন্মভূমি বিডিতে।তবে এই আয়রা আর ছোট নেই।সে এখন নাম করা ফ্যাশন ডিজাইনার।ওও বিডিতে ফিরে একটা হোটেল বুক করে সেখানেই থাকতে লাগে।এবং সেখান থেকেই এই প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহণ করে।আর তার পরের ঘটনাগুলো তো আপনারা জানেনই।
বর্তমান…………
আমি আর কোনো কিছু না ভেবেই ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় শুয়ে পরলাম।তারপর তলিয়ে গেলাম ঘুমের রাজ্যে।
পরেরদিন সকালে,,,,,,,,,,,
আমি রাতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।সকালে উঠে দেখি আটটা বেজে গেছে।আমি আড়মোরা ভেঙে উঠে বসলাম।কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে আমি উঠে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।তারপর ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পরলাম শপিং করার জন্য।
শপিং করার জন্য আমি একটা শাড়ির শোরুমে ঢুকেই অবাক হয়ে গেলাম।কারণ সেখানে আরুশ আর বাকি সবাই আছে।সাথেই একটা সুন্দরি মেয়ে।মেয়েটা আরুশের সাথে একদম চিপকে আছে।আমি সবথেকে বেশি অবাক হলাম আরুশের সাথে আপুদের আর জিজুকে দেখে।এরমধ্যেই সেই মেয়েটি বলে উঠলো,,,,,
সেহরিশ:আরুশ,,,আমাদের বিয়ের জন্য আমি এই শাড়িটা নিবো(একটা লাল বেনারসি নিয়ে)
আরুশ:ওকে নাও।
বিন্দিয়া:তোমাদের বিয়ে বলে কথা।যা যা পছন্দ সব কিনে নাও।(সেহরিশের দিকে তাকিয়ে)
এই কথাটা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম নাহ।আরুশের বিয়ে?ওও এতো ইজিলি আমাকে ভুলে যেতে পারলো।আমি এখন কি করবো?ওর বিয়ে যে আমি অন্য কারো সাথে মেনে নিতে পারবোনা।কিন্তু আপুরাই বা এখানে কেন?কি হচ্ছে এইসব?
আমি আর কোনো দিকে না তাকিয়ে বেরিয়ে আসলাম শো-রুম থেকে।বের হতেই দুইটা বাচ্চা আমার সামনে এসে দাড়ালো।বয়স চার বছরের কাছাকাছি।দেখতেও খুব সুন্দর।বাচ্চা দুটো হুট করে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো,”মিমি”
আমি অবাক হয়ে হাঁটু গেড়ে বসে বাচ্চা দুটোকে জিজ্ঞেস করলাম,,,
আমি:বাবু,কে তোমরা?আর আমাকে মিমি বলে ডাকছো কেন?
সৃজন:আমি সৃজন।
বৃন্দা:আর আমি বৃন্দা।
আমি:খুব সুন্দর নামতো তোমাদের।(কে এই বাচ্চা দুটো?আর এই নামগুলো তো আমি সিলেক্ট করে রেখেছিলাম বিন্দুপ্পির বেবিদের জন্য।তবে কি?)
বৃন্দা:তুমিই তো আমাদের আয়রা মিমি,,তাইনা(হেঁসে)
আমি চমকে তাকালাম মেয়েটির দিকে।
আমি:তোমরা আমার নাম জানলে কি করে?
পেছন থেকে কেউ একজন বলে উঠলো,,,,,,
তিয়াশা:কারণ ওরা দুজন তোর আপু বিন্দিয়া আর ক্রাশ শুভর বাচ্চা।ওরা টুইন।
আমি:তিয়াশা?তুই এখানে?(সাথেই একটা মেয়ে।আদিশা হয়তো)
তিয়াশা:হুম।আমিও এসেছি।আরুশ আর সেহরিশের বিয়ের শপিং করতে।(আমার কাছে এসে)
আমি এইবার কনফার্ম হলাম যে আরুশ তার মানে সত্যিই বিয়ে করতে যাচ্ছে ঐ মেয়েটাকে।আর মেয়েটার নাম তাহলে সেহরিশ।
আমার ভাবনার মাঝেই তিয়াশা বলে উঠলো,,
তিয়াশা:আয়ু,,আজ আমি তোকে কিছু কথা বলতে চাই যা আজ না বললে বড্ড দেড়ি হয়ে যাবে।
আমি:কি সেই কথা?
তিয়াশা:বলবো।তার আগে চল একটা জায়গায় গিয়ে বসি।
এরপর আমরা একটা ক্যাফেতে গিয়ে বসলাম।
আমি:এখন বল,কি বলতে চাস তুই?
তিয়াশা:তুই তো আজ থেকে পাঁচ বছর আগে একটা মিথ্যের রেশ ধরে আমাদের সবার কাছে থেকে দূরে চলে গেলি।নিজে তো ভালো থাকলিই নাহ,আর আমাদেরও দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিলি।
তুই সেদিন পুরো সত্যিটা না জেনেই চলে গেলি আমাদের সবাইকে ছেড়ে।অথচ একটাবারও সত্য-মিথ্যা যাচাই করলি না।আজ তবে শোন আসল সত্যিটা।
এরপর আয়রাকে তিয়াশা আদিয়াতের পুরো প্ল্যানের কথা জানালো।এই সাথে এইটাও জানালো যে তিয়াশা আর আদিয়াতের ডিভোর্স হয়ে গেছে।আদিয়াত এখন জেলে।
তিয়াশা:এই কথাগুলো তোকে জানানোর অনেক চেষ্টা করেছি আমরা সবাই।তন্নতন্ন করে সবখানে তোকে খুঁজেছে দাভাই।একটা সময় সেও ক্লান্ত হয়ে যায়।তবে তার বিশ্বাস ছিলো যে তুই একদিন ফিরবি।কিন্তু সেদিন হয়তো খুব দেড়ি হয়ে যাবে।আর হলোও তাই।
আয়রা সব শুনে হতবাক হয়ে গেলো।এখন ওর কি করা উচিত সেইটায় ভেবে পাচ্ছে না ওও।
এর মাঝেই তিয়াশা চলে গেলো বাচ্চাদের নিয়ে।কারণ ওর হাতে এখন প্রচুর কাজ বিয়ে বাড়ির।
আর আয়রা থম মেরে বসে রইলো।
আমি:এতো বড় ভুল আমি কি করে করলাম?নিজের ভালোবাসার মানুষকে চিনতে আমি এতোটা ভুল করলাম?তবে কি আমি আমার আরুশকে আর কখনোই নিজের করে পাবোনা?এতো কাছে পেয়েও হাড়িয়ে ফেলবো ওকে?নাহ নাহ,,আমি আর কিচ্ছু ভাবতে পারছিনা।আমাকে এইবার এই সব কিছুর সমাধান করতেই হবে।এই ভেবেই আমি বেরিয়ে পরলাম হোটেলের উদ্দেশ্যে।
তিনদিন পর…………
পুরো আহমেদ বাড়ি আলোয় ঝলমল করছে।করারই কথা আরুশ আহমেদ আর সেহরিশ সরকারের বিয়ে বলে কথা।
আরুশকে আজ খুব খুশি খুশি দেখাচ্ছে।পড়নে তার সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা,মাথায় সাদা পাগড়ি,পায়ে নাগরাই জুতো।হাতে ওয়াচ।আর মুখে সেই ভুবন ভোলানো হাসি।
সেহরিশকেও আজ খুব সুন্দর লাগছে।
গায়ে লাল বেনারসি।পুরো শরীর ভর্তি গহনা।ব্রাইডাল মেকআপ।সেহরিশ ও হাসিমুখে বসে আছে স্টেজ এ।
সবাই বিয়ে বাড়িতে হৈচৈ করছে।চারিদিকে আনন্দমুখর পরিবেশ।আয়রার পরিবারের সবাই এখানে উপস্থিত।সবার মুখেই হাসি।
(কি অবাক লাগছে তো যে এসব কি হচ্ছে?আরে আরে অপেক্ষা করুন সুপ্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ।আপনাদের লেখিকা আপু জিলাপির মতো প্যাচানো।তাই তার গল্প গুলোও তো সেরকমই হবে তাইনা?
তো চলুন মূল গল্পে ফেরা যাক।)
ইতোমধ্যেই কাজি এসে গেছে একটু পরেই বিয়ে পরানো হবে।
সবাই সেহরিশ আর আরুশকে নিয়ে বিয়ের আসরে বসিয়ে দিলো।কাজি সাহেব বিয়ে পরানো শুরু করলেন।সবকিছু করার পর কাজি সাহেব আরুশকে কবুল বলতে বললো।আরুশও হাসি মুখেই কবুল বলে দিলো।
এরপর আসলো কনের পালা।কনেকে কবুল বলতে বলার পর কবুল বললো তো ঠিকই।তবে,,,,,,,,,,,,
চলবে?????