মেসেজ টি পড়ে দ্বিধান্বিত হয়ে গেলো রুমাইশা। কি লুকাবে সাফওয়ান ওর থেকে? আবার সেটা নাকি গুরুতর কিছু! কিন্তু সাফওয়ান তো ওর খারাপ চাইবে না কখনো, তাই কিছু যদি লুকিয়েই থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা ভালোর জন্যই।
রুমাইশা চরম ঘৃণার চোখে তাকিয়ে এক ঝটকায় হাত টা ছাড়িয়ে নিলো, তারপর কড়া গলায় বলল,
— দেখুন ভাইয়া, আমি আপনাকে সারাজীবন ভাইয়ার চোখেই দেখেছি, তাই আপনাকে স্বামী হিসেবে মেনে নেওয়া আমার পক্ষে কোনো ভাবেই সম্ভব নয়
গ্রামের রাস্তা এখন পুরোপুরি ফাকা। সেই ফাকা রাস্তাতেই বুলেটের গতিতে নিজের মার্সিডিজ বেঞ্জ টা হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সাফওয়ান।
শাফিন বসে আছে ভাইয়ের পাশের সিটে চুপচাপ। ওর মাথায় ঘুরছে একটু আগের সাফওয়ান আর রাফসান ভাইয়ের ভেতর কার আক্রমনাত্মক সংলাপ গুলো।
ক্রোধান্বিত চোখে তাকিয়ে ধীরে ধীরে জুবায়েরের দিকে এগোলো সাফওয়ান।
সাফওয়ান কে এভাবে আগাতে দেখে জুবায়ের ঠাই দাঁড়িয়ে গেছে, ভয়ে ওর পা সরছে না। জুবায়েরের গা কাপা শুরু হলো ওর নিজের অজান্তেই! ঢোক গিলল একটা বড় করে।
রাফসানের এত গুলো মিসডকল দেখে আয়েশা ভড়কালেন, ছেলেটার কোনো বিপদ আপদ হলো কিনা ভেবে দ্রুত কল ব্যাক দিলেন আয়েশা। প্রথম বার রিং হয়ে কেটে গেলো, আবার কল দিলেন। দুঃশ্চিন্তায় ওনার বুকের ভেতর দুরু দুরু করে কাপতে লাগলো!
শাফিন ও একটু আগে ঘুম থেকে উঠেছে৷ উঠতো না, যদি সাফওয়ান ওকে সকাল সকাল তলব না করতো তাহলে।
সাফওয়ান কল দিয়েছিলো খানিক আগে৷
রুনিয়া ফিতা টা দিয়ে রুমাইশার বক্ষের মাপ নিতে নিতে বলল, তোর তো এইখানে আর কোনো জামাকাপড় নেই, কয়েক টা না বানালে পরবি কি? মাপ নিয়ে রাখছি, সাফওয়ান নয়তো শাফিন, নয়তো তোর ফুপ্পা; যে কেউ বাইরে গেলেই নিয়ে আসতে বলেছি।
চকিতে পেছন ফিরে তাকালো রুমাইশা। উদভ্রান্তের মতো দরজায় দাঁড়িয়ে আছে সাফওয়ান। ঘামে গায়ের সাদা রঙের আন্ডার শার্ট টা ভিজে জব জবে হয়ে গেছে। গায়ের সাথে লেপ্টে আছে সেটা। হাপাচ্ছে ও। হাতে ওর এক গুচ্ছ ধবধবে সাদা রঙের অর্ধ প্রস্ফুটিত গোলাপ।
রাফসান আসায় রুনিয়া খুশি হলেন অনেক। হলরুমে সোফায় রাফসান কে বসতে দিয়ে তিনি শাফিন কে বললেন রুমাইশা কে গিয়ে ডাকতে৷ শাফিন ওর রুমে পড়ছিলো। মায়ের আদেশ পালন করে সে গেলো রুমাইশা কে ডাকতে।
রাফসান আর শাফিন ঘুরতে গেলো জঙ্গলের ভেতর। বহু বছর আসা হয়নি এখানে, ছোটবেলার কত শত স্মৃতি ওদের এইখানে। স্মৃতি গুলো আবার তাজা করতে ধীর গতিতে ওরা জঙ্গলের দিকে এগোলো।