রিকশা‌ওয়ালা দুলাভাই

মেয়ে
যখন ভালো করে পড়া লেখা না করে, তখন বাবা/মায়েরা বলে যে রিক্সাওয়ালার সাথে বিয়ে
করিয়ে দিবে। সাধারণত এই কথা এমনিতেই বলে থাকে, বাবা/মায়েরা।

কিন্তু
আব্বু তার কথা
রেখেছেন। তিনবার ইন্টারমিডিয়েট ফেল করার পর আমার বড় বোনের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন রিক্সাওয়ালার সাথে।

সব
বাবারা যদিও এরকম কথা রাগ করে বলেন কিন্তু আমার আব্বু এক কথার‌ মানুষ। বলেছেন এবং দিয়েছেনও।

আমার
রিকশা‌ওয়ালা দুলাভাইকে নিয়ে আমি খুবই বিরক্ত। যখন তখন আমার সাথে এসে শালী শালী বলে ঢং করেন, লোকের মধ্যে আমার খুবই বিরক্ত লাগে।

ভয়ে
ভয়ে আমি ভালোভাবে পড়াশোনা করছি। আমি ফেল করতে চাইনা। আমি
কোনো
রিকশা‌ওয়ালার সাথে বিয়ে করতে আগ্রহী ন‌ই।

দুলাভাইয়ের
ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড আমরা কিছুই জানতাম না। আব্বু একদিন ওনার রিকশায় বাজার করে ফিরছিলেন তখন উনি আব্বুর সব বাজার নিজে হাতে করে বাসায় পৌছে দিয়ে গেছেন দেখে আব্বু মুগ্ধ হয়েছেন। যার ফলস্বরূপ ওনার সাথে আমার বোনের বিয়ে। কিন্তু ওনার ফ্যামিলির সাথে আমাদের এখনো দেখা হয়নি। দুলাভাই সারাদিন রিকশা চালিয়ে বাসায় এসে ঘাম মুছতে মুছতে ডাকেন,”ও ব‌উ,ও শালী!পানি দেও।”

মনের
দুঃখে আমার বোন কয়েকবার আত্ত*ত্যা
করতে গেছে। প্রতিবার‌ই আব্বুর কাছে জোরসে থা – প্প ড় খেয়েছে।

দুলাভাইকে
আমার বোন দেখতে পারে না, তাই রাতে আমার
ঘরে এসে থাকে আর সারারাত কাঁদে, আর বলে “লাবণ্য এ
আমার কি হয়ে গেল রে!! আমার বয়ফ্রেন্ড ছিল সরকারি অফিসার আর আমার বিয়ে হয়ে গেল একটা রিকশা‌ওয়ালার সাথে রে!!!”

আপুকে
সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই। সামনে আমারো রেজাল্ট আমি খুবই আতঙ্কিত
হয়ে
আছি। হয়তো আমার বর হবে এক অটো‌ওয়ালা। তারপর দুই ভায়রা-ভাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকালে একজন অটো নিয়ে বের হবে অন্যজন রিকশা। এদিকে আমরা দুই বোন প্রাইভেট কার ছাড়া কোথাও যাই না। কি একটা অবস্থা!

দুঃশ্চিন্তায়
শিউরে উঠে আমার আর সেই রাতে ঘুম হয় না।

আমার
বিদেশ থাকা ফুপী বাসায় এসেই চিল্লাচিল্লি শুরু করেছেন! আব্বুকে বলছেন,এইটা তুমি কি করলা? এতবড় ক্ষতি কেউ নিজের মেয়ের করে? এরচেয়ে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতা, আমি কি ম-রে গেছিলাম?

এসব
বলতে বলতে আমার দুলাভাইয়ের কাছে গিয়ে রাগী গলায় বললেন,”you
scoundrel, How dare you? I will see you!!”

 

দুলাভাই
বললেন,
“You can’t,bcz she is my legal wife. And whatever, I have no mistakes
actually..”

দুলাভাই এর ইংলিশ
শুনে তো

আমরা
সবাই অবাক হয়ে তার
দিকে
তাকিয়ে
আছি, আমাদের এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে দুলাভাই আবার বললেন, “আমিও ভালো ঘরের সন্তান।আমিও ইন্টার ফেইল। ইংরেজিতে ভালোই ছিলাম অংকে ধরা খাইছি। এজন্য আমার আব্বুও আমাকে রিকশা কিনে দিছে!”

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।