প্রেমাতাল | পর্ব – ৪

মুগ্ধ চিন্তা করতে করতে একসময় বলল,
-“তুমি সিওর যে তুমি আমার সাথে থানচি পর্যন্ত যাবে?”
-“হ্যা। কিন্তু কিভাবে?”
-“সেটা দেখছি তুমি আরেকবার ভেবে বল তুমি সিওর তো?”
-“১০০%”
-“ওকে,এসো আমার সাথে।”
মুগ্ধ বাসস্ট্যান্ডের দিকে হাটা শুরু করলো। ২ মিনিটের রাস্তা। বাসস্ট্যান্ডের একপাশে অনেকগুলো সিএনজি। মুগ্ধ একজনকে জিজ্ঞেস করলো,
-“মামা থানচি যাবা?”
-“মাহাজনের লগে কতা কুইন।”
মুগ্ধ সিএনজির মহাজনকে খুঁজতে লাগলো। পেয়ে যেতেই তাকে বলল,
-“মামা, থানচি যাব। একটা সিএনজি লাগবে।”
-“আমরা তো মামা নিলগিরি পর্যন্ত যাই। থানচি গেলে পোষায় না।”
-“চলো না মামা। আমাদের গাড়িটা আমাদের রেখে চলে গেছে। মহাবিপদে পড়সি। তোমাদের পাহাড়ে আসছি, তোমরা সাহায্য না করলে কই যামু কও।”
-“মামা, বুঝেন না ক্যা? যাইতে যাইতেই সন্ধ্যা অইয়া যায়। তহন তো আর্মিরা আটকাইয়া দেয়, গাড়ি চালাইতে দেয়না। কাইল্কা ফিরা আওন লাগবো।”
-“ভাড়া একটু বেশি নিও। আর রাতের থাকা খাওয়া আমাদের সাথেই করতে পারবে। ২৮ জনের গ্রুপে আসছি আমরা।”
লোকটা কিচ্ছুক্ষণ ভাবলো তারপর বলল,
-“৩৫০০ টাকা লাগবো।”
-“এত? মামা সিএনজির নিলগিরির ভাড়া তো ১৫০০ টাকা।”
লোকটা হেসে বলল,
-“মামা, আমরা তো ওইদিকে যাই না। অনেক রিস্ক নিয়া যাওন লাগবো। আপনেরা বিপদে আছেন তাই রাজি হইসি।”
-“আচ্ছা, আচ্ছা ৩৫০০ ই দিব।”
লোকটা একজনকে ডেকে বলল,
-“ওই হাসু, দাদারে থানচি লইয়া যা। হেগো লগেই থাকবি খাবি। কাইল্কা আইয়া পড়বি।”
হাসু নামের সেই ছেলেটা বলল,
-“ওস্তাদ, ওইদিকের রাস্তা তো ভালনা। সিওএনজি নিয়া যাওন কি ঠিক অইবো? আর তেলও তো শ্যাষ অইয়া যাইবো।”
-“রাস্তা ভালনা দেইখাই তো তরে কইসি। তুই চালাইলে আমি নিশ্চিত থাকুম। যা ব্যাটা। মেহমানরা বিপদে পড়সে। ত্যাল দুই গ্যালান বেশি লইয়া যা।”
-“আইচ্ছা, কহন যাইবো?”
মুগ্ধ বলল,
-“আমরা এখনি যেতে চাচ্ছি।”
হাসু ছেলেটা বলল,
-“আইচ্ছা, লন।”
মুগ্ধ তিতিরকে অবাক করে দিয়ে মহাজনকে জড়িয়ে ধরে বলল,
-“ধন্যবাদ মামা। অনেক উপকার করলা।”
মহাজনও বোধহয় এমন কিছু ভাবতেও পারেনি। খুব অবাক হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। তিতিরের কেন জানি খুব ভাল লাগছে। এত স্মার্ট একটা ছেলে কিনা নোংরা শার্ট পড়া একটা সিএনজি ড্রাইভার কে জড়িয়ে ধরলো শুধুমাত্র কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য! এতক্ষণ কিছুটা ভয় কাজ করলেও এখন আর তিতিরের মধ্যে কোন ভয় নেই। এত বড় মনের একটা মানুষের সাথে শুধু থানচি পর্যন্ত না, আরো অনেকদূর যাওয়া যায়। অনেক দূর!
সিএনজিতে ওঠার পর মহাজন কাছে এসে হাসুকে বলল,
-“ঠান্ডা মাথায় গাড়ি চালাবি, তাড়াহুড়া করবি না।”
সিএনজি ছেড়ে দিল। মুগ্ধ মহাজনকে হাত নেড়ে বিদায় জানালো। তারপর নিজের ব্যাগপ্যাকটা কাধ থেকে নামিয়ে পেছনে রাখতে গিয়েই তিতিরের দিকে চোখ পড়লো। কি যেন ভাবছে মেয়েটা। মুগ্ধ বলল,
-“কি ব্যাপার? ব্যগপ্যাক এখনো কাধে কেন? রিল্যক্সে বসো। ৯০ কিলোমিটার যেতে হবে।”
-“আচ্ছা ঢাকা থেকে বান্দরবান ৩০০ কিমি দূরে না?”
-“৩৩৮ কিমি।”
-“আর বান্দরবান থেকে থানচি ৯০ কিমি?”
-“হুম।”
-“ঢাকা থেকে বাসভাড়া বোধহয় জনপ্রতি ৫০০। তাহলে দুজনের ৩০০ কিমির ভাড়া ১০০০ আর ৯০ কিমির ভাড়া ৩৫০০? এত ডিফারেন্স?”
মুগ্ধ হেসে আস্তে আস্তে বলল,
-“প্রথমত, ওটা সোজা রাস্তা ছিল আর এটা পাহাড়ী রাস্তা। দ্বিতীয়ত, ওটা বাস। দুনিয়ার মানুষকে আনে। আর এটা সিএনজি। শুধু আমাদেরকে নিচ্ছে। এটা অনেকটা প্রাইভেট টাইপ হলোনা?”
তিতির নিজের বোকামি মার্কা প্রশ্নে লজ্জা পেয়ে গেল,
-“ওহ, তাইতো।”
-“বান্দরবান থেকে থানচির বাসভাড়া ১০০-১৫০ টাকা মাত্র।”
-“সেকি! তাহলে বাসেই যেতাম।”
মুগ্ধ আবার হেসে দিল। বলল,
-“একটা ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ের জীবন নিয়ে রিস্ক নেয়ার সাহস আমার নেই। তাছাড়া, আমিও বিয়েশাদি করিনি। স্বপ্নের সব যায়গা ঘোরাও হয়নি। এত তাড়াতাড়ি মরার ইচ্ছে নেই।”
তিতিরও হাসলো। বলল,
-“মানুষ বুঝি যায়না?”
-“লোকাল মানুষজন যায়। পিচ্চি পিচ্চি বাস। প্রায়ই এক্সিডেন্ট করে। টাকার চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।”
-“হুম! একটা কথা বলব, কিছু মনে করবেন না প্লিজ।”
-“আরে বলো বলো।”
-“ভাড়াটা আমি শেয়ার করবো।”
-“ওহ ওটা পুরোটাই সাফির কাছ থেকে আদায় করবো, ভুলটা ওর। আর ও না দিলেও সমস্যা নাই ছোটভাই তো। তোমার শেয়ার করতে হবে না।”
-“কেন? দিস ইজ নট ফেয়ার!”
-“তুমি যদি আমার সমান হতে, আর্ন করতে তাহলে শেয়ার করতাম। তুমি তো ছোট। এই ব্যাপারে কথা বলে আমাকে আর লজ্জা দিওনা প্লিজ!”
কথাটা শেষ করেই মুগ্ধ হাসলো। কি যে অমায়িক সে হাসি! তিতির আর কিছুই বলতে পারল না।
কিছুদূর যাওয়ার পরেই হঠাৎ গাড়িটা উঁচুতে উঠতে লাগলো। তিতিরের মনে হচ্ছিল গাড়িটা ৬০/৭০ ডিগ্রি এংগেলে উঠছে। সিএনজি উল্টে যাবে মনে হচ্ছে। হঠাৎ ও মুগ্ধর হাত চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে ফেলল। ভয়ের চোটে নিঃশ্বাস আটকে যাবার মত অবস্থা। উপড়ে উঠে যাওয়ার পরেই ও চোখ খুলল। তারপর দেখলো মুগ্ধ দুহাত দিয়ে ওর দুহাত ধরে হাসছে।
তারপর হঠাৎ মনে পড়ায় জিজ্ঞেস করলো,
-“আচ্ছা তখন সিএনজির মহাজন তেল নেয়ার কথা বলছিল কেন? সিএনজি তো তেলে চলে না।”
-“হ্যা, কিন্তু পাহাড়ে তেলেই চলে তাছাড়া উঁচু রাস্তায় উঠতে পারবে না তো।
তিতির এক ঝটকায় হাত ছেড়ে দিল। বলল,
-“হাসবেন না। রাস্তাটা খুব ভয়ংকর ছিল।”
-“হুম বাচ্চা টাইপের একটা আপহিল ছিল।”
-“এটাকে আপনার বাচ্চা বলে মনে হচ্ছে?”
-“হুম, কারন সামনে আরো বড় বড় আপফিল, ডাউনহিল আছে। আমরা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ২৮০০ ফিট উপরে উঠছি বুঝতে হবে।”
-“সিরিয়াসলি আমরা এত উপরে উঠছি?”
-“হুম!”
-“আপনি এতকিছু জানেন কি করে?”
-“কিছুক্ষণ পর পরই তো মাইলস্টোন, ওখানে ইনফরমেশন দেয়া আছে না? তাছাড়া একটা যায়গায় গেলে সে যায়গা সম্পর্কে জানবো না? প্রথমবার যখন এসেছিলাম তখনই সব জেনেছি। তারপর তো কত এলাম। নাফাখুম একবার গেছি মাত্র। কিন্তু এই রাস্তা দিয়েই নিলগিরি, বগালেক, কেওক্রাডং, তাজিংডং, সাকাহাফং গিয়েছি। কেওক্রাডং ২ বার গিয়েছি। নিলগিরি তো হিসাবই নেই।”
তিতির অবাক হয়ে বলল,
-“আপনি কেওক্রাডং ট্রেকিং করেছেন?”
-“কেওক্রাডং এমন কিছুই না। নিশ্চই মনে পড়ে গেছে ছোটবেলায় পড়েছিলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাহাড়চূড়া কেওক্রাডং। এর উচ্চতা ৩২০০ ফিট। তাই না?”
-“হ্যা।”
-“হুম, কিন্তু ওখানে যাওয়া এমন ডিফিকাল্ট কিছু না। শীতকালে জিপে করে যাওয়া যায়। তবে ওই দিকে কঠিন যা আছে তা হলো জাদিপাই ঝরনা। কেওক্রাডং থেকে ৩ ঘন্টা হেটে যেতে হয়। ৩ ঘন্টা হাটা কোন বিষয় না। কিন্তু ওই রাস্তায় ৩ ঘন্টাকে ৩ দিন মনে হয়। কিন্তু পৌঁছানোর পর সব কষ্ট কোথায় যে যায়। অনেক বড় আর অসম্ভব সুন্দর একটা ঝরনা।”
-“ওহ। আচ্ছা, এখন তাজিংডং এর কথা বলুন। শুনেছিলাম তাজিংডং কেওক্রাডং এর থেকেও উঁচু।”
-“তাজিংডং কেওক্রাডং এর চেয়েও উঁচু আর সবচেয়ে উঁচু সাকাহাফং। আর এদুটোতে উঠতে আমার জান বের হয়ে গেছে। কেওক্রাডং এ তো জিপ যায়, যদিও আমরা বর্ষায় গিয়েছিলাম ঝরনার ভরা রূপ দেখবো বলে। হেটেই যেতে হয়েছিল তখন। কিন্তু এই দুটোতে জিপ তো দূরের কথা হাটা পথও নেই পুরোটা।”
-“তাহলে গিয়েছেন কিভাবে?”
-“ক্লাইম্বিং করে। আর সবচেয়ে বোকামি যেটা করেছিলাম কোন গাইড নেইনি। এক বড় ভাই ছিল। উনি আগে গিয়েছেন, রাস্তা চেনেন গাইড লাগবে না হ্যান ত্যান বলে নিয়ে গেছে। তারপর তো আর রাস্তা চেনে না। হায় খোদা কি বিপদে যে পড়েছিলাম! এক রাস্তায় বারবার হেটেছি অথচ বুঝিনি। বুঝবো কি করে সব তো একই রকম দেখতে পাহাড়, আর একই রকম জঙ্গল। একটা রাস্তা পার হয়েছিলাম মাত্র এক হাত চওড়া। দুইপাশে খাড়া খাদ। একটা পা এদিক সেদিক হলেই ভবলীলা সাঙ্গ!”
-“আপনার অনেক সাহস!”
মুগ্ধ হেসে বলল,
-“অনেক সাহস তো তোমারও। এইটুকু বয়সে তুমি এতগুলো অচেনা মানুষের সাথে পাহাড়ে চলে এলে। আবার এখন একটা অচেনা ছেলের সাথে যাচ্ছো। অনেক রকম বিপদ হতে পারে। ছেলেটা খারাপ হতে পারে। তোমাকে ভুল যায়গায় নিয়ে যেতে পারে। আরো অনেক কিছুই তো হতে পারে।”
একথা শুনে তিতির হেসে দিল। মুগ্ধ বলল,
-“শুধু হাসলে হবে? উত্তর দাও।”
তিতির হেসে উত্তর দিল,
-“বিঃশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর!”
মুগ্ধ আর কথা বাড়ালো না। সিএনজি ক্রমশ উপরের দিকে উঠছে। আবার সামান্য নেমে যাচ্ছে। হঠাৎ করে পাহাড়ের গা ঘেঁষে বায়ে মোড় নিচ্ছে আবার একই ভাবে ডানে। এরকম করতে করতেই ওরা এমন একটা রাস্তায় এল যার ডানপাশে গাছপালা, জঙ্গল। আর বামপাশে খাদ। হঠাৎ মুগ্ধ তিতিরকে আঙুল দিয়ে ইশারা করে দেখালো,
-“ওই যে দেখছো বাড়িঘর গুলো, ওটা বান্দরবান শহর। একটু আগেই আমরা ওখানে ছিলাম।
-“এত উপরে উঠে গেছি!”
-“হুম!”
ওরা যেখানে ছিল সেখান থেকে শহরটা অনেক নিচে। উপরে খোলা আকাশ। দূরের পাহাড় গুলো দেখে ছোটবেলার আঁকা গ্রামের দৃশ্যের মত লাগছে। পাহাড়গুলোকে একবার মনে হচ্ছে সবুজ, আবার মনে হচ্ছে নীল। রাস্তার পাশে ফুটে আছে অজস্র বুনোফুল। তিতির বলল,
-“অদ্ভুত সুন্দর একটা ঘ্রাণ পাচ্ছি। এটা কিসের ঘ্রাণ জানেন? বাই দ্যা ওয়ে, আপনি কি ঘ্রাণটা পাচ্ছেন?”
-“পাহাড়ের ঘ্রাণ! বুনো ঘ্রাণ। আমি আসক্ত এ ঘ্রাণে, তাইতো বারবার ছুটে আসি।”
একটু থেমে তিতির আবার বলল,
-“আশেপাশের সৌন্দর্য দেখে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি! কি নিশ্চুপ চারপাশ!”
-“সৌন্দর্যের কি দেখেছো? সৌন্দর্য শুরু হবে মিলনছড়ির পর।”
-“ওহ, কিন্তু আমার তো এখানও বেশ লাগছে।”
-“হুম, পাহড়ের বাঁকে বাঁকে সৌন্দর্য!”
-“আসলেই, যা দেখছি তাই ভাল লাগছে। আচ্ছা মিলনছড়ি কতদূর?”
-“২ কিলোমিটার। অলমোস্ট চলে এসেছি।”
কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই মিলনছড়ি এসে পড়লো ওরা। একটু আগে যেখানে ছিল সে যায়গাটা এখন অনেক নিচুতে। রাস্তার একপাশে মিলনছড়ি আর্মিক্যাম্প। তার একটু আগেই অন্যপাশে মিলনছড়ি চেকপোস্ট। চেকপোস্ট বলতে ছোট্ট একটা টিনের ঘর। যার দেয়ালগুলো বারান্দার মত অর্ধেকটা খোলা। পাশেই দুটো গাছ। ভেতরে একটা কাঠের টেবিল, একটা প্লাস্টিকের চেয়ার। একজন আর্মিম্যান খাতা কলম নিয়ে বসে টুরিস্টদের নাম এন্ট্রি করছে। পুরোটাই যেন শিল্পীর আঁকা ছবি। গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভার হাসু আর মুগ্ধ নেমে গিয়ে চেকপোস্টে ঢুকলো। নাম এন্ট্রি করে এসে সিএনজিতে তাকিয়েই মুগ্ধর আত্মা উড়ে গেল। তিতির নেই সিএনজিতে। আশেপাশে তাকাতেই তিতিরকে দেখতে পেল। দৌড়ে কাছে যেতেই দেখলো যে পাশে খাদ সে পাশের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে তিতির। আর ওর চোখদুটো ছলছল করছে। মুগ্ধ বলল,
-“এনি প্রব্লেম?”
তিতির মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে বলল,
-“এতবড় আকাশ আমি আগে কখনো দেখিনি। দূরের ওই পাহারগুলো যেন আমার সাথে পরিচয় হওয়ার অপেক্ষায় চেয়ে আছে। মেঘের এত কাছে আসিনি কখনো। এত ভাল আগে লাগেনি কখনো। বুকের ভতরটায় কেমন যেন করছে।”
এক্সাইটমেন্টে তিতিরের গলা কাঁপছে। মুগ্ধ পরিচিত এই অনুভূতির সাথে। প্রথমবার এখানে এসে ওরও এরকম অনুভূতিই হয়েছিল। মুগ্ধর মনে হলো, ইশ ও যদি তিতিরকে দুনিয়ার সব থেকে সুন্দর সুন্দর পাহাড়গুলোতে নিয়ে যেতে পারতো!

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।