মেঘেদের শব্দে উথাল পাথাল ধরণী। সূর্য লুকিয়েছে ছাই রঙা মেঘের আড়ালে। বৃষ্টি হচ্ছে,খুব বেশি না। তবে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে ভিজে যাবে। ছাউনির নিচে দাড়িয়ে শায়েরের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আছে পালক। খাবারের তদারকি করছে শায়ের। এই বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ভিজে সব কাজ করছে। কপাল বেয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে। হাত দিয়ে বার বার পানি ঝারছে সে। শায়েরের বিরক্তি ভাব দেখে মৃদু হাসলো পালক। যদি অসুখ করে বৃষ্টিতে ভিজে! এই ভেবে মুখটা কালো করে ফেলে পালক। তবুও মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও। সাদা পাঞ্জাবীতে আবৃত পুরুষটি বড্ড আকর্ষণ করছে ওকে।

‘মিস পালক সরকার অতো দেখো না। পুরুষটি মুসলিম,মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। অন্তর পুড়ে ছাই হয়ে যাবে যে।’
ঘাড় ঘুরিয়ে রুমির দিকে তাকালো পালক। রুমি ঠোঁট টিপে হাসছে। তারমানে রুমি কিছুটা বুঝেছে। শায়েরের দিকে তাকিয়েই পালক বলল,’ভালো লাগাটা ধর্ম দেখে হয় না,মানুষ দেখে হয়।’

‘বুঝি না এই গ্রামে এসে সবার হলো কি?নাঈম, শেখর,আসিফ তুই!!তবে তোর কথাটা আলাদা। এটা সম্ভব না।’

‘আমি সম্ভব করতে চাইও না।’

‘তাহলে ওভাবে দেখছিস কেন?’
পালক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,’কদিন ই তো আছি দেখলে তো কোন দোষ নেই। ‘

নিজের কাজে মন দিলো পালক। রুমি আর কথা বলল না। মেয়ে মানুষ অদ্ভুত,কখন কাকে নজর বন্দি করে ফেলে তা বোঝার উপায় নেই।

কাজ শেষ করে সবাই একসাথে এক নৌকাতে এসেছে। সাথে শায়ের ও ছিলো। জমিদার বাড়িতে ফিরে সবাই তাদের ঘরে গেল। পালকরা ওদের ঘরে গিয়ে চমকে গেল পরীকে দেখে। পালঙ্কের উপরে বসে পা দোলাচ্ছে। ওদের দেখেই নেমে কাছে এগিয়ে এসে দাঁড়াল। গম্ভীর কন্ঠস্বর টেনে বলল,’আপনেরা শহরে ফিইরা যাবেন কবে?’
আকস্মিক প্রশ্নে চমকালো ওরা। পালক বলল, ‘কেন বলতো?’
‘যত তাড়াতাড়ি চইলা যাইবেন ততই ভাল। এই গেরামডা বেশি ভাল না। মরণ সব খানেই খারাইয়া থাহে।’
আবার চমকে যায় ওরা। মিষ্টি খানিকটা রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলল,’কি সব আবোল তাবোল বকছো বলতো? আসার পর থেকেই দেখছি আমাদের দেখতেই পারনা তুমি। আমরা তো ইচ্ছে করে এখানে আসিনি, আনা হয়েছে । মেহমানদের সাথে কিরকম আচরণ করতে হয় জানো না?ভাল না লাগলে বলো চলে যাই। এভাবে অপমান হতে তো আসিনি আমরা।আর আমরা বয়সে তোমার বড় তাও এভাবে কথা বলবে?’
মিষ্টির কথায় হাসলো পরী বলল, ‘আপনাগো ভালোর লাইগা কইতাছি। আর কি কইলেন?বয়সে বড়!! অন্যায় করলে আমি আমার বাপরেও ছাড় দিমু না।যাই হোক অন্দরে পুরুষ ঢোকা মানা এইডা তো জানেন?তারপরও দুই ডাক্তার সাহেব আইছিল। আমার হাতে পড়ে নাই ভাগ্য ভাল। মেহমান বইলা ছাইড়া দিলাম। সাবধান কইরা দিয়েন। আর তাড়াতাড়ি চইলা যান। আমি রাইগা গেলে ভাল হবে না। আমি বয়স দেইখা না মানুষ দেইখা সম্মান দেই।’

পরী বের হতে গিয়েও ফিরে এসে মিষ্টির সামনে দাঁড়াল বলল,’বয়স কম কিন্ত রক্ত গরম।’ কথাটা বলার সময় চোখ থেকে আগুন ঝরছে পরীর। যেন ভষ্ম করে দেবে মিষ্টিকে। পরী চলে যেতেই রাগটা বাড়লো মিষ্টির।
‘কি তেজ?ওরা এসেছিল বলে এতো রাগার কি আছে?’
পালক একটু ভেবে বলল,’এই মেয়ের রাগটা তোর কাছে অস্বাভাবিক মনে হলেও আমার কাছে স্বাভাবিক। কারণ আমি বেশ বুঝতে পারছি এই মেয়েটা পুরুষ মানুষ বিশ্বাস করে না। এই দিক দিয়ে খুব কঠোর ও।’

‘তোর এমনটা কেন মনে হচ্ছ?আর ছেলে মানুষদের এত অপছন্দ কেন করে পরী?’
রুমির প্রশ্নে পালক বলল,’ঘৃণাটা হয়তো ওর বাবার থেকে শুরু। দ্বিতীয় বিয়ে আর পরীর বড় বোন সোনালীও এর মধ্যে হয়তো আছে। অন্য কোন কারণ ও থাকতে পারে। তবে আমি এটা বুঝেছি যে পরী ওর বড় বোনকে অনেক বেশি ভালোবাসে। এজন্য ও মরিয়া হয়ে গেছে সোনালীকে খোঁজার জন্য।’

‘ভালো রহস্য উদঘাটন করেছিস তুই।’

‘অনেক টাই বের করেছি। এই বাড়িটা অনেক অদ্ভুত। এতগুলো ঘর পড়ে আছে অথচ সব বন্ধ। সবচেয়ে বড় কথা হলো পরীর কাকাকে অন্দরে ঢুকতে দেওয়া হয় না কেন?আর এত বয়স হওয়ার পর ও তিনি বিয়ে কেন করছেন না?আর দেখ পরীর মা অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও পরী একটি বার ও মায়ের ঘরে গেল না। অথচ পরীর চোখে আমি ওর মায়ের জন্য ভালোবাসা দেখেছি। এর কারণ কি?পরী ইচ্ছে করে যায় না নাকি পরীর মা চান না তার মেয়ে আসুক?’

পালকের কথাটা ভাবাচ্ছে ওদের দুজন কে। কিছু তো একটা গন্ডগোল আছে এই বাড়িতে। নিজের রাগ দমিয়ে মিষ্টি বলল, ‘কিন্ত এসবের মানে কি?সবকিছু ধোয়াশার মধ্যে রেখেছে কেন ওরা?’

‘কি জানি?তবে আমার মনে হয় সব প্রশ্নের জবাব একমাত্র পরীর মা দিতে পারবে।’
একটু চুপ থেকে পালক আবার বলে উঠল, ‘আজ পরী পুরুষ মানুষকে বিশ্বাস করে না ঠিকই কিন্ত এমন একদিন আসবে যে ও নিজেই এক পুরুষে এমনভাবে আসক্ত হবে,তাকে ছাড়া ওর নিশ্বাস নেওয়া কঠিন হবে।’

আর কোন কথা কেউ বলল না। যে যার কাজে মন দিলো। এসব নিয়ে ভেবে লাভ নেই ওরা কদিন এর অতাথি মাত্র।

ভেলা নিয়ে বের হয়েছে বিন্দু। ওর বাবা মহেশ এসেছে। সাথে সাথেই চন্দনা ঝগড়া শুরু করে দিয়েছে। ঝড়ে আটকে গিয়েছিল মহেশ তাই আসতে পারেনি। আর এ নিয়ে এলাহি কান্ড শুরু করে দিয়েছে চন্দনা। বিন্দু থাকতে না পেরে চলে এসেছে।একটু এগিয়ে যেতেই সম্পানের নৌকা দেখা গেল। বিন্দু তাকিয়ে রইল সেদিকে। নৌকার ভেতর লোক ছিল বিধায় দুজনের কথা হলো না। সম্পান ঝুকে একটা শাপলা তুলে ছুড়ে দিল। বিন্দু খপ করে ধরে নিলো সেটা। মুখে হাসি ফুটিয়ে তাকিয়ে রইল সম্পানের দিকে। শাপলাটা হাতে নিয়েই সে ঘুরে বেড়ায় তলিয়ে যাওয়া গ্রাম।
পরী নিজের ঘরে বসে আছে। রাগ কমেছে ওর। নাঈম,শেখর কে ধরতে পারলে ও কি যে করত!! ওর কাছে ভাল পুরুষ মানুষ দুইজন। একজন সম্পান আরেকজন হলো রাখাল। বাকিদের ও ঘৃণা করে। এসব ভাবতে ভাবতে পরী দোতলা থেকে নিচে নেমে এলো। আনমনে এগিয়ে গেল বৈঠক ঘরের দরজার দিকে। দরজা হাট করে খোলা। ওখান থেকে শায়েরের ঘরটা দেখা যায়। বারান্দায় থাকা কাঠের চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমাচ্ছে শায়ের। থমকে দাঁড়াল পরী। হঠাৎ ওর মনে পড়ল যে এই মানুষ টাকে দেখলে ওর রাগ হয় না। কারণ টা পরীর অজানা। ঘুমন্ত মানুষ টার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে পরী। আচমকা হাতে টান পড়তেই সরে এল সে। গালে থাপ্পড় পড়তেই হুশ ফিরে পেল সে। মালা রেগে বলে,’ওইখানে কি করস?তোরে মানা করি নাই?’

মালার কথার উত্তর না দিয়ে পরী মালার হাত দুটো ধরে বলল,’আম্মা আপনের তো অনেক জ্বর। আহেন, ঘরে তো ডাক্তার আছেই। ‘
মালা হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,’তোর এতো ভাবতে হবে না যা ঘরে যা।’
মালার ধমকে পরী রাগ করে নিজের ঘরে চলে গেল। দরজা খুলে রাখার জন্য কুসুমের গালেও পড়লো একটা। মালা অনেক বকাবকি করলেন কুসুম কে। নিজের ঘরে বসে রাগে ফুসছে পরী। মায়ের এই একটা স্বভাব ভাল লাগে না পরীর। মালার যতোই অসুখ হোক না কেন কখনোই পরীকে তার কাছে ঘেষতে দেন না। এমনকি তার ঘরে যাওয়ার অনুমতিও পরীর নেই। এমন কারণের কোন মানে আছে?এজন্য পরীর খুব রাগ হয়।
শাপলা হাতে বিন্দু আসতেই পরীর ধ্যান ভাঙে। বিন্দু হাসি মুখে এসে বলে,’আছোস কিবা পরী?সব ঠিকঠাক তো?’

‘হ,বয় এইহানে! তোর খবর কি?আর মাঝি?’

‘সবই ভালা,তবে আহার সময় দেখলাম শায়ের দাদা শুইয়া আছে। জিগাইলাম কইলো জ্বর হইছে। আহারে মানুষ টা বড্ড ভাল। কেউই নাই এহন দেখব কেডা?’
পরী চমকে তাকালো বিন্দুর দিকে। বলল,’জ্বর হইছে মানে?চল তো দেখি?’
বিন্দু পরীকে বাধা দিয়ে বলল,’পাগল তুই?জেডি দেখলে তোরে মারবো।’
পরী একটু ভেবে বলল,’তুই এক কাজ কর,বাটিতে কইরা পানি আর কাপড় নিয়া পট্টি দে আমি ওষুধ আনতাছি।’
বিন্দুকে পাঠিয়ে পরী ছুটে গেল পালকের কাছে। জ্বরের ওষুধ চেয়ে নিয়ে বিন্দুকে দিয়ে পাঠায়। পালক ভেবেছিল মালার জন্য পরী ওষুধ নিচ্ছে। কিন্ত বারান্দায় আসতেই ওর কাছে সব পরিষ্কার হয়ে গেল। পালক ভাবতেও পারছে না যে পরী শায়েরের কথা ভাবছে কেন?ওখানে বেশিক্ষণ থাকলো না পরী,মালা দেখলে রাগ করবে। দোতলায় উঠে পালকের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় পালক বলে উঠল, ‘আমি যতদূর জানি তুমি পুরুষ মানুষ পছন্দ কর না। তাহলে এই ছেলেটার জন্য এত কিছু করছো কেন?’
উওর টা দিতে পারলো না পরী। নিজেকেও সে এই একই প্রশ্ন পরী করেছে কিন্ত উওর খুঁজে পাচ্ছে না। তাই ও নিজের ঘরে চলে গেল। পালক আগের মত দাঁড়িয়ে রইল।

আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছানোর সাথে সাথেই মিষ্টি গিয়ে নাঈম আর শেখরকে ধরল। রেগে বলল,’তোরা কি কখনোই মানুষ হবি না?’
শেখর মজা করে বলল,’কোন সন্দেহ আছে?’

‘গাধা একটা। পরী জেনে গেছে তোরা কাল রাতে ওর ঘরে গিয়েছিলি আর আমাদের হুমকি দিয়েছে যাতে তাড়াতাড়ি চলে যাই।’
নাঈম অবাক হয়ে বলে,’কি?পরী জানলো কিভাবে?কাল রাতে তো পরী বাড়িতেই ছিল না।’

নাঈম শেখর বাদে সবাই চমকালো। নাঈম বলল,’কালকে আমরা পরীকে দেখতে পারিনি। কারণ পরী অন্দরে ছিল না। বাইরে ছিল, কিন্ত কোথায় গিয়েছিল তা জানি না। আর পরী যদি থাকত তাহলে আমরা ধরা খেতাম’

সবাই বেশ অবাক হয়ে গেল। রুমি বলে,’তাহলে পরী বুঝলো কিভাবে যে তোরাই এসেছিলি?’
পালক বলল,’এটুকুই বয়সে যথেষ্ট বুদ্ধির অধিকারি হয়েছে মেয়েটা। আর পরী এটাও বুঝেছে যে তোরা দুজন এসেছিলি।’

‘ওসব বাদ দে চল আমরা চলে যাই। আমার এই যায়গাটা সুবিধার মনে হচ্ছে না। বিপদ হতে পারে।’

মিষ্টির কথায় নাঈম বলল, ‘আমরা কেন যাব?কাজে এসেছি কাজ শেষ করে তারপর যাব।’

‘তাহলে পরীর চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল।’

নাঈম জবাব দেয়ার আগেই পালক বলল, ‘মিষ্টি ঠিক কথা বলেছে নাঈম। পরীর কথা মাথা থেকে বের করে দে তাহলে আমাদের সবার ভাল। পরীর মধ্যে কিছু একটা আছে। গোপন কোন রহস্য। যার জন্য ও নিজেকে শক্তিশালী মনে করে। তাই আমাদের ভালোর জন্য হলেও এসব চিন্তা বাদ দে।’

নাঈম কথা না বলে স্থান ত্যাগ করল। তবে ওর চিন্তা তরতর করে বেড়ে গেল। সবখানে এত রহস্যের গন্ধ কেন?এখন ওর মনে হচ্ছে এই গ্রামটাই রহস্যজনক। কারো মুখে জমিদার বাড়ির কোন কথা শোনা যায় না। ভালো মন্দ কোন কথা না। জানার আগ্রহ আরও বাড়ছে নাঈমের। কিছু তো একটা গোপন তথ্য আছে ওই বাড়িতে।
কাজ শেষ করে ফিরতেই শায়েরের মুখোমুখি হয় নাঈম।
‘আপনার জ্বর এখন কেমন?’
বিগলিত হেসে শায়ের জবাব দিলো,’কাজের মানুষ আমি,জ্বরের কথা ভাবলে হবে?’

‘নিজের শরীরের কথাও ভাবতে হবে। কালকে বৃষ্টিতে ভেজা আপনার উচিত হয়নি। এই সময় একটু সাবধানে থাকবেন। ‘

‘আচ্ছা থাকব।’

‘শুনুন!’

শায়ের চলে যেতে গিয়েও দাঁড়াল। নাঈম বলল, ‘এই বাড়ির ভেতরে বোধহয় অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটে। আমার বন্ধুরা তাই বলল। আপনি কি কিছু জানেন?’

‘আমার জানা মতে জমিদারের তিন কন্যা আর এক পুত্র। এবং দুই বউ। আর একটা ভাই আছে। বাড়িতে কাজের লোক আছে পাহারাদার আছে। আর কি জানতে চান?’

নাঈম আমতা আমতা করে বলল,’মানে পরী,,!’

‘এই নামটা ভুলে যান। গ্রামের প্রায় সব মানুষ পরীকে চিনলেও স্বীকার করে না আপনিও তাই করুন ভাল হবে। এর বেশি কিছুই আমি জানি না। আর আপনি জানার চেষ্টাও করবেন না।’

কথাগুলো গম্ভীর কন্ঠে বলল শায়ের। নাঈমের অদ্ভুত লাগল শায়েরের কথাগুলো। এভাবে বলল কেন? ওহ শায়ের তো জমিদারের লোক। যদি সবাইকে বলে দেয়? ইশ ভুল যায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছে।

রাতের বেলা ঘটে গেল অনাকাঙ্খিত ঘটনা। যা নাঈম কল্পনাও করতে পারেনি। রাতে খবর এলো বাগান বাড়িতে একজন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কোন কিছু না ভেবে নাঈম একজন মাঝিকে নিয়ে একাই গেল। তবে ফেরার পথে হলো সমস্যা। অন্ধকারের মধ্যে কেউ শক্ত লাঠি দিয়ে আঘাত করে নাঈমের মাথার পেছনে। পড়ে গেল নাঈম, ব্যাথায় গোঙাতে লাগল। মাথা থেকে রক্ত বের হচ্ছে কি না অন্ধকারে দেখা যাচ্ছিল না। অজ্ঞান না হলেও সব কিছু ঝাপসা দেখছে সে।
এভাবেই কিছুক্ষণ কেটে গেল। তবে কেউ এলো না। নিঃশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে আসছে। আর কিছুক্ষণ পর হয়তো ও মারা যাবে। ঠিক তখনই হাজির হলো শায়ের। হারিকেন হাতে নিয়ে কাছে আসতেই দেখল নাঈম বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে আছে। শায়ের ছুটে গেল। চিৎকার করে কাউকে ডাকলো।

সবাই ধরাধরি করে নাঈমকে বাড়িতে নিয়ে এলো। আসিফ আর শেখর মিলে নাঈমের মাথায় ব্যান্ডেজ করে দিলো। আঘাত তত গুরুতর না। রক্ত ও বেশি বের হয়নি। নাঈমের জ্ঞান এখন ও আছে। ও ভাবছে কে করতে পারে কাজটা?পরী?হয়তো, কারণ ওর জানা মতে রাতে পরী বের হয়। আবার ভাবছে শায়ের ও হতে পারে। কারণ আজকে শায়েরের কথাগুলো ভাল লাগেনি। তাহলে শায়ের ওকে বাচালো কেন?যাতে নাঈমের সন্দেহ না হয় সেজন্যই কি?

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।