ইকবাল, গাড়ির দরজা খুলে রেখেছে আগেই। ধূসর,পিউকে কোলে নিয়ে এসে বসাল সিটে। পা দুটো ঝুলিয়ে রাখল বাইরের দিক। র*ক্ত পরা তখনও থামেনি। অথচ পিউ কা*ন্নাকা*টি করছেনা। সে ফ্যালফ্যাল করে এখনও তাকিয়ে। ধূসর পিউকে বসিয়ে নিজেও ফের হাটুভে*ঙে ওর সামনে বসে। ইকবালের বাড়িয়ে দেয়া ফার্স্ট এইডের বাক্স থেকে তুলো নিয়ে
পদ্মজাকে নতুন করে আবার সাজানো হয়েছে। বাসর রাত নিয়েও হাওলাদার বাড়ির হাজারটা রীতি। সেসব পালন হচ্ছে। পদ্মজা নিয়ম-রীতি পূরণ করছে ঠিকই,তবে মন অন্য জায়গায়। বিকেলে সে দেখেছে, আমির রিদওয়ানের পাঞ্জাবির কলার দুই হাতে ধরে কিছু বলছে। খুব রেগে ছিল। তবে…
ভোর ছয়টায় ঘুম ভাঙল নিনির। চোখ ডলতে ডলতে পাশে ফিরে তাকালো সাথে সাথে কেঁপে উঠলো ভয়ে। এনোন নিজের মাথা তার পিঠে ঠেকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। ভ্রুদ্বয় কিঞ্চিৎ কুঁচকালো নিনি। উঠতে চেয়েও উঠতে পারছেনা। সেভাবে শুয়ে রইল নিনি। আস্তে আস্তে তার দিকে ফিরলো নিনি।
মৃদুল এদিকওদিক দেখে বলল,'লিখন ভাই, চলো চইলা যাই।'
অসহনীয় যন্ত্রনায় লিখনের কপালে বিন্দু,বিন্দু ঘাম জমেছে। সেসবকে তোয়াক্কা করে সে বলল,'পদ্মজার খোঁজ নিতে হবে আগে।'
হুর যেদিকে যেদিকে যাচ্ছে রুশো তার পেছন পেছন লেজের মতো ঘুরছে। রুশোর থামার কোনো লক্ষণ না দেখে হুর হাঁটা থামিয়ে দিলো। হুর থামতেই রুশো ও থেমে গেলো। হুর অবাক না হয়ে পারলো না। রুশোর দিকে ফিরে কোমরে হাত দিয়ে বললো, -“এই এই সমস্যা কি তোমার হুম!
থমথমে গলায় জুম্মান বলে,'বড় আম্মার অসুখ করছে আপা। ডাক্তার কইছে বাঁচবো না। তোমারে নিয়া যাইতে কইছে। তুমি যাইবা না?'
আগামীকাল শুক্রবার। সিমরানের এনগেজমেন্ট। অ্যাডভোকেড অণুজ সরকারের সঙ্গে। লোকটার গায়ের বর্ণ শ্যাম হলেও আকর্ষণীয় চেহেরা। ভীষণ সুদর্শন। সুহাস নিজে গিয়ে দেখা করেছে ছেলেটির সঙ্গে। প্রথম দেখা এবং আলাপচারিতায় চোখ, মন দুটোই কেড়েছে অণুজ। এক দুইদিনের পরিচয়ে মানুষ চেনা ভার৷ পারিবারিক বিয়ে অবশ্য অল্প পরিচয়েই হয়৷
“বিহান ভাই ভেবে দেখেছেন আপনার বউ যদি মহিলা মেম্বার হয় তাহলে কত দাম বেড়ে যাবে।জানেন মানুষের বাড়ি মাঝে মাঝে মারাত্মক ঝগড়া হয় আবার তা নিয়ে আবার শালিস বিচার ও হয় তা আমি যদি মেম্বার হয় রেগুলার আমার বাড়িতে বসে জানতে পারবো কার বাড়িতে কি নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে।
পূর্ণা উত্তরে কিছু বললো না। সে ঝরঝর করে কাঁদতে থাকলো। নাকের পানি,চোখের পানি মিলেমিশে একাকার। দৃষ্টি মেঝেতে নিবদ্ধ। পদ্মজার রাগে দুঃখে কান্না পায়। বেসামাল ঘূর্ণিপাকে সে আটকে পড়েছে। প্রতিটি নিঃশ্বাস হয়ে উঠেছে বিষাক্ত।
রাতের খাবার শেষ হয়েছে সবেমাত্র। এশার আযান পড়েছে অনেক আগে। পূর্ণা পদ্মজা ও লাবণ্যকে পেয়ে পুলকিত। আনন্দ বয়ে যাচ্ছে মনে। একটু পর পর উচ্চস্বরে হাসছে। হেমলতা একবার ভাবলেন নিষেধ করবেন,এতো জোরে হাসার জন্য। এরপর কী ভেবে আর নিষেধ করলেন না।…
খলিল এবং আসমানি যখন পরিস্থিতি বুঝতে পারলো তারাও চমকে যায়। তারা কথা বলতে গেলে 'উউউ' আওয়াজ বের হয়। উঠতে গেলে টের পায় তাদের হাত-পা বাঁধা।
বিয়ের সময় হয়ে গেছে…. বাড়ি ভর্তি মেহমান। আকাশ নিজের রুমে রেডি হচ্ছে, আকাশ মেঘলাকে দায়িত্ব দিয়েছে ইরাকে সাজানোর। মেঘলাও মন দিয়ে সাজাচ্ছে। মেঘলার মুখেও হাসি। সে এসব মেনে নিয়েছে। কিন্তু একজন এই বিয়ে একদমি মেনে নিতে পাড়ছে না সেই একজন…
মাঝরাত! নিস্তব্ধ পরিবেশ। হঠাৎ ঠোঁটে তীব্র ব্য’থা অনুভব হওয়ায় ঘুম ভেঙে গেলো হুরের। ঘুম হালকা হতেই স্পষ্ট বুঝতে পারলো কেউ তার ঠোঁট নিজের ঠোঁট দ্বারা আঁকড়ে ধরে আছে। আঁকড়ে ধরে আছে বললে ভুল হবে লোক টা অনবরত তার ঠোঁট কামড়ে চলেছে। তীব্র ব্য’থায় গুঙিয়ে উঠলো হুর।
সময়টা দুপুরের মাঝামাঝি হবে হয়তো , রাস্তায় তেমন একটা ভিড় নেই বললেই চলে। নিস্তব্ধ রাস্তা,,,, সুদেষ্ণার কানে কোনো আওয়াজ যাচ্ছে না , ও মনে হচ্ছে কোনো ঘোরের মধ্যে আছে । সুদেষ্ণা নিষ্পলক চেয়ে আছে সুদর্শন পুরুষটির দিকে,,,,,, অষ্টাদশীর নেই কোনো তাড়া নেই কোনো ব্যস্ততা শুধুমাত্র তাকিয়ে থাকাই হচ্ছে তার মুখ্য
-' সখী ভয় পাস না এই আপা'কে আমি চিনি। '
রোমানার হাসিটা বেশ চওড়া হয়ে গেলো,অবাকান্বিত কন্ঠে বললো,
-' নুর! তুমি এখানে? আমি ভাবতেই পারিনি তোমার সাথে আবারও দেখা হবে। '
গাড়ি গুলো এসে থামলো একটা নির্দিষ্ট জায়গায়। তিনটা গাড়ির মাঝের সাদা গাড়িটার, মাঝখানের সিটে সাদা রঙা কোট প্যান্ট পরে বসে আছে লুকাস।
প্রত্যেকটা মানুষই সবকিছুর একটা নির্দিষ্ট স্টক নিয়ে পৃথিবীতে আসে। সেই স্টক শেষ হয়ে গেলে যেমন আর পাওয়া যাবে না তেমনি শেষ না হলেও মৃত্যুর আগে যেভাবেই হোক শেষ হতে হবে। তিতিরের সুখের স্টক শেষ বোধহয়। আর কষ্টের স্টকে তো হাতই পড়েনি এতদিন। ছোটবেলা থেকে কেঁদেছে অনেকবারই তবে সেটা শুধুই সুখে,আবেগে।
নাবিলঃ যা খুশি করুন বাঁধা দিচ্ছি না তো।
শ্রেয়া জনিকে ফোন দিল আর নাবিলের সামনেই সব বলল।
নাবিলঃ মুচকি হেসে সামিরাকে কোলে নিয়ে হাঁটতে লাগল।
ওয়াল ঘেষে দাঁড়িয়ে আছি আমি আমার হাত শক্ত ভাবে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন বিহান। উনার মুখশ্রির অদলে বেশ পরিবর্তন সেই রাগি ভাবটা আর নেই।আমি উনার থেকে নিজেকে ছড়ানোর চেষ্টা করছি।নিঃসন্দেহে বিহান ভাই একজন শক্ত পক্ত শক্তিশালী মানুষ উনার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা যে বৃথা চেষ্টা তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আরহামের ব্যথিত দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন হাফসার দিকে।সারাদিনের কান্না দেখার পরও কি এখন মন খারাপ দেখতে হবে!উনি কি বুঝেন?উনার মন খারাপে আমার মস্তিষ্ক এলোমেলো হয়ে যায়!আপনার প্রতি ফোঁটা চোখের পানি আমার হৃদয়ের রক্তক্ষরনের সমপরিমাণ যন্ত্রণা!