পিউয়ের মনে বৃষ্টি নেমেছে। খড়খড়ে মরুভূমিতে ঝুমঝুম শব্দের বারিপাত,উথাল-পাতাল করে দিচ্ছে ভেতরটা। প্রশান্তির হাওয়া বারেবার ছুঁচ্ছে কোমল,স্নিগ্ধ মুখমন্ডল। লজ্জ্বায় হাতদুটো জায়গা পাচ্ছে বক্ষে। হৃদস্পন্দন হচ্ছে কয়েকশ গুন বেশি৷ ধূসর ভাইয়ের এই আচরন তার কাঙ্ক্ষিত, তবে অপ্রত্যাশিত।
অন্ধকার ছাদের এক কোনে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে নূর। বিষন্নতার মরণবান বার বার আঘাত করছে তার বুকের ভিতর। মনে পরছে ছয় বছর আগের কথা। বাড়ির সবছেয়ে শান্তশিষ্ট মেয়ে নূর।রাফসান শিকদারের একমাত্র আদরের মেয়ে।নূরের পাচ বছর বয়সে তার মা মারা যায়।
শাড়ি পরে বেডের এক কোণে গুটিশুটি মে’রে বসে আছে হুর। হুরের আম্মু মিসেস হেনা জোর করে হুর কে একটা লাল শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছেন। যেহেতু আজকেই বিয়ে হলো আর ফাইয়াজ ও এই বাড়িতে থাকবে আজ তাই তিনি মেয়েকে শাড়ি পড়িয়ে হালকা সাজিয়ে দিয়েছেন। নতুন বউ বলে কথা!
বরপক্ষ কে স্টেজের সামনে রাখা চেয়ারে বসতে দেওয়া হলো। রুমাইশা, আফসানা আর বাচ্চারা গিয়ে প্রথমে এক জায়গাতে বসলো। আর ওদের পাশে এসে বসলো আন্টি মহল। শাফিনের কাজিন গুলা সব কনের সাথে ফট্যোশ্যুট করতে চলে গেছে।
বাইক চলতে চলতে পিউ জিজ্ঞেস করল,
' বাড়ি থেকে আমার সাথে এলেই তো পারতেন ধূসর ভাই।'
' তখন এলে,তুই এত অবাক হতি?'
পিউয়ের কণ্ঠ ছল্কে উঠল,
'আপনি কি আমাকে সারপ্রাইজ দিলেন?'
ধূসর আর জবাব দিলো না। কিন্তু পিউ একা একা হাসল।
-'যে পরিস্থিতি তৈরি হলে আপনার ছেলেকে আপনি সামলাতে পারবেন না। সে পরিস্থিতি'তে তার স্ত্রী সামলাতে পারবে এই ধারণা কেন হলো!'
সহসা তিনটে প্রাণই আতঙ্কিত হয়ে ওঠল।
কোনো কাজ ই ছোট নয়,তাই কাজ কে ছোট করে দেখা উচিত নয় এমন বুলি আউড়িয়ে বিহান ভাই উনার একটা বাতিল গেঞ্জি দিয়ে ফ্লোরের পানি মুছতে শুরু করলেন।আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি বিহান ভাই ফ্লোর মুছছেন এটা ইতিহাসে নবম আশ্চর্য।
হাফসা তাও নিজেকে কন্ট্রোলে রাখতে পারছে না।সময়ের সাথে ওর ভয় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।আরহাম ওর হেঁচকির মাএা সামলাতে বললেন, 'কান্না বন্ধ করুন।প্লিজ।'
হাফসা কান্না থামালোই না।একেবারে না পারতেই আরহাম হাফসার ঠোঁট স্পর্শ করলেন।মুহুর্তেই হাফসার কান্না বন্ধ হয়ে অবাক বনে গেলো সে।
বিস্ময়কর ভালবাসা গতবছর সেপ্টেম্বর এর শেষের দিকে ইউনিভার্সিটি তে এডমিট হই। কলেজ জীবন শেষে ইউনিভারসির্টি এর জীবনের শুরুটা একটু অন্যরকম অনুভূতি নিজের মধ্যে কাজ করছিল। ইউনিভারসির্টিতে কলেজ জীবন এর থেকে একটু নিয়মিতভাবেই যাতায়েত করতাম। ক্লাস ও করতাম মনোযোগ দিয়ে ইচ্ছে…
কলেজ থেকে বাসায় এসে মেঘলা ফ্রেশ হয়ে ফোন নিয়ে বসল কিন্তু ফোন নিয়ে দেখল তার ফেসবুক পুরো ওলট পালট হয়ে গেছে প্রোফাইল পিক বদলে গেছে কমেন্টে সবাইকে গালি দেওয়া হয়েছে এসমেস এ প্রতিটা ছেলেকে তার একাউন্ট থেকে অকথ্য ভাষার এসমেস…
আকাশ দৌড়ে গিয়ে মেঘলাকে ধরে বলল কি করছিস এসব? একটুও বাড়াবাড়ি করলে মেরে হাত পা ভেংগে ঘরে ফেলে রাখব বুঝেছিস খুব সাহস বেড়েছে তাই না?
“প্রিয় “B” মধ্যরাতে আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা তোমাকে দেখে ভীষণভাবে মন হারিয়েছে আমার।তোমার হাসিটা মারাত্মক সুন্দর।তুমি বিবাহিত না এটা আমি জেনেই প্রেমপত্র লিখতে বসেছি।তুমি কি রাগ করবে আমার এই পত্র পেয়ে।হয়তো ভাববে এইভাবে কিভাবে প্রেম হয়।এমি এক দেখায় তোমার প্রেমে পড়িনি।আমি হাজার বার দেখেছি তোমাকে।
আজ সূর্যি মামার দেখা মেলেনি। আকাশে মেঘের ঘনঘটা। জানালা ঘেঁষে উদাস মুখে বসে আছে নামী। ঐ আকাশের সকল মেঘ যেন তার মুখে ভর করেছে আজ৷ দেখতে দেখতে তাদের জীবনে কেটে গেছে তিন বছর। পড়াশোনা, বন্ধুত্ব, প্রেম, ঘুরাফেরা, মান অভিমান সবই ছিল বছর জুড়ে। কোনোটাতেই এক রত্তি কমতি ছিল না।
রাত গভীর হচ্ছে। একে-অপরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে ওরা৷ গভীর রাত। সুখসুখ তন্দ্রায় যেন বিমোহিত একাত্মায় দুই শরীর৷ শ্রান্তিহর সৌধর বুকে মুখ লুকিয়ে সিমরান৷ ধীরেধীরে খিদের ভাব হয়। পেটটা চুঁইচুঁই করে৷ ঘুম ছুটে যায় আকস্মিক। সুঠামদেহী পুরুষটি তার বলিষ্ঠ একজোড়া হাত দিয়ে বউকে গভীর বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। ঘুমাচ্ছে বেঘোরে।
সাফওয়ান গভীর ঘুমে আছে, নিঃশ্বাস পড়ছে ওর ঘন ঘন।
রুমাইশা মনোযোগ দিয়ে শুনছে সাফওয়ানের নিঃশ্বাস এর শব্দ। আর ওর চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে।
এই খুব বড়সড় ব্যাক্তি টাকে নিজের বুকের ওপর রাখতে পেরে ওর যেন অন্যরকম অনুভূতি বয়ে যাচ্ছে সমস্ত শরীরে। প্রচণ্ড রকম ভালো লাগছে ওর৷
আশমিন কে হসপিটালে সিফট করা হয়েছে।খুব গোপনে ট্রিটমেন্ট করা হচ্ছে আশমিনের। অমি এখনো নিজের ঘোর থেকে বেরিয়ে আসতে পারে নি। নূর এমন কিছু করবে তা স্বপ্নে ও ভাবতে পারেনি সে।সানভি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়। শূন্য দৃষ্টিতে অপারেশন থিয়েটারের দিকে তাকিয়ে আছে। আমজাদ চৌধুরী কেউ জানায়নি।
প্রানেশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বসে আছে সুফিয়ান। এই পনেরো মিনিট যাবৎ অনবরত হিচকি তুলে কান্না করেছে প্রানেশা। এখন মনে মনে নিজেকেই বকছে সুফিয়ান। প্রানেশার ওয়াটার ফোবিয়া আছে৷ এই কথাটা সুফিয়ানের মনে ছিলো না। নিজের প্রতি এত রাগ কখনো লাগেনি যতটা আজ লাগছে।
বিভোর ভাই কে জ্বলানোর জন্য রিয়া যে এমন করছে সেটা আমি শতভাগ নিশ্চিত। আমি তো ভাবতাম ওরা ফান ই করে কিন্তু বিভোর ভাই এর হাব ভাবে এটা ক্লিয়ার যে উনি রিয়ার প্রতি সিরিয়াস।রিয়ার ভাব দেখেও তাই মনে হচ্ছে।বিভোর ভাই নিয়াজের দিকে তাকিয়ে বললেন নিয়াজ তুমি না রহমান কাকার ছেলে।
এতোক্ষণ চিন্তায় চিন্তায় সময় কাটিয়ে অবশেষে দুপুরে ভাত খাওয়ার জন্য ডাকলো শ্রাবণ। কয়েকবার দরজায় টোকা দেওয়ার পর সাদাফ সাড়া দিয়েছে। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বললো, “কে?” “আমি, শ্রাবণ। ভাত খাবেন না? বিকেল হয়ে যাচ্ছে যে।” “খাবো না।” “সকালেও খেলেন না ঠিকমতো, এখনো না খেয়ে এভাবে কতক্ষণ থাকবেন!”
দিশান আর তুর্যর হাসি দেখে রাগে পরীর শরীর রিরি করছে। এইদিকে কুকুরটার ভয়ে কিছু বলতেও পারছে না। আর কুকুরটাও! একদম ফাজিলের হাড্ডি। পরীর ওড়না মুখে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে ওদের ওপর রাগ অন্যদিকে কুকুরটার ভয় সব মিলিয়ে জমে গেছে পরী।…