রুমাইশাদের বাড়ির পাশ থেকে বিশ পচিশ হাত দুরত্ব রেখে মেইন রোড চলে গেছে।
ভেজা জামা কাপড় গুলো হাতে নিয়ে শামসুলের সাথে রাস্তা থেকে নেমে বাড়িতে ঢুকলো রুমাইশা। আয়েশা ওদের অপেক্ষাতেই ছিলেন।
রুমাইশা কে এভাবে খোলামেলা অবস্থায় আসতে দেখে তিনি কিছুটা অবাক হয়েই বললেন,
—কি রে, তোর বোরখা হাতে কেন? রাস্তা দিয়ে কি এভাবেই এসেছিস?
রুমাইশা কিছু বলার আগেই শামসুল বললেন,
—সাফওয়ান এসে দিয়ে গেছে ওকে, গাড়িতে করে৷
আয়েশা কিছু বললেন না, কিন্তু তার চাহনি দেখে বোঝা গেলো বিষয়টা তিনি মোটেও পছন্দ করেননি৷
রুমাইশা মায়ের চাহনি উপেক্ষা করেই ভেতরে চলে গেলো, তার এখন এসব বিষয় খেয়াল করার মতো মানসিক অবস্থা নেই৷
রুমে গিয়ে ফোন টা বের করতেই চোখে পড়লো সাফওয়ানের ১৩ টা মিসডকল। দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো রুমাইশা। ফোন টাকে সাইলেন্ট মোড থেকে নরমাল মোড করলো। তারপর ভেজা জামা কাপড় গুলো আলনায় মেলে দিলো আয়েশা রুমে এলেন এমন সময়।
— কেমন হয়েছে তোর পরীক্ষা৷
বিছানায় বসতে বসতে বললেন তিনি।
— ভালো হয়েছে মা৷ কমন এসেছে সব।
নিজের কাজ চালিয়ে যেতে যেতে বলল রুমাইশা৷
আয়েশা কিছুক্ষন নিরব থেকে জিজ্ঞেস করলেন,
—ওর গাড়িতে তুই কোন জায়গা থেকে উঠেছিস?
রুমাইশা বিরক্তি নিয়ে বলল,
—চাচড়া থেকে উঠেছি মা৷
আর তুমি কি এখন আমাকে জেরা করতে এসেছো? আমি ক্লান্ত অনেক৷ আমি খেয়ে ঘুমিয়ে যাবো এখনি। এসব নিয়ে কথা বলার এখন আমার কোনো ইচ্ছা নেই৷ আমার ঘুম আসছে৷
আয়েশা চটে গেলেন,
— তুই কি আমাকে মেজাজ দেখাচ্ছিস?
রুমাইশা মুখ দিয়ে ‘চ’ জাতীয় শব্দ করলো, তারপর মৃদু গলায় বলল,
— মেজাজ দেখাচ্ছিনা মা, তোমার তো বোঝা উচিত আমি সেই সকালে খেয়েছি, রাতে অনেক রাত পর্যন্ত পড়েছি, চার ঘন্টা বসে এক্সাম দিয়েছি, আর তার ওপর এই পঁচিশ ত্রিশ কিলো জার্নি করেছি! আমার তো কষ্ট হচ্ছে, তাই না বল!
আয়েশা ফোস করে নিঃশ্বাস ছাড়লেন, তারপর বিছানা থেকে উঠে যেতে যেতে বললেন,
—ঠিক আছে ফ্রেস হয়ে আয়, আমি খাবার দিচ্ছি। খেয়ে ঘুমা। এক্সাম তো শেষ, কাল থেকে আর কোনো চিন্তা নেই।
রুমাইশা প্রতিউত্তরে কিছু বলল না, মাথা নাড়লো শুধু৷ আয়েশা চলে গেলে বিছানায় এসে বসলো ও৷ চোখ দুইটা বন্ধ করলেই সিএনজির ভেতরের সেই ভয়ানক দৃশ্য গুলো চোখে ভাসছে৷
আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া, সাফওয়ান ভাইয়া সময় মতো এসে পৌছেছিলো! নইলে আজ ওর কি হতো!
দুই হাত দিয়ে মাথার চুল গুলো আকড়ে ধরলো রুমাইশা। চোখে আবার ও পানি আসছে। ফুলে ফুলে নিঃশব্দে কাদতে লাগলো ও৷
এমন সময়ে ওর ফোনে টুং করে শব্দ হলো। কিন্তু এখন ওর ফোনের দিকে তাকানোর মতো ইচ্ছাশক্তি নেই। মাথা থেকে হাত সরিয়ে চোখ দুইটা মুছলো রুমাইশা৷ নাক টানছে থেকে থেকে৷ এমন সময়ে ফোনে আবার ও শব্দ হলো। কিন্তু দেখলো না ও৷ নিজেকে স্বাভাবিক করে বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো ডাইনিং এ যাওয়ার জন্য।
এবার ফোন টা হাতে নিলো রুমাইশা৷ ফোন অন করতেই ভেসে উঠলো সাফওয়ানের নাম আর মেসেজ
— আমাকে ক্ষমা করে দিও, আমি সময় মতো পৌছাতে পারিনি, আর ওই লোক দুইটা ওদের নোংরা হাত দিয়ে তোমাকে ছোয়ার সুযোগ পেয়েছে!
—তবে কথা দিচ্ছি, আমি বেচে থাকতে কেউ আর কখনো তোমার দিকে চোখ তুলে তাকানোর ও সুযোগ পাবে না। তাকানো মাত্রই তাদের চোখ আমি উপড়ে ফেলবো। কান্না বন্ধ করো এইবার৷
সাফওয়ানের হঠাৎ তুই থেকে তুমি সম্বোধনে চমকালো রুমাইশা। বুকের ভেতর রক্ত যেন ছলকে উঠলো। মৃদু হাসি ফুটে উঠলো ওর মুখে, ব্লাশ করলো যেন ও! কিন্তু তখনি ওর চোখ গেলো লাস্ট সেনটেন্সে৷
কান্না বন্ধ করবো! ও কি করে জানলো আমি কাদছিলাম।
ভাবনায় পড়ে গেলো রুমাইশা। চোখে মুখে ওর চিন্তার ছাপ ফুটে উঠলো।
তখনি ফোনে আবার টুং করে শব্দ হলো; সাফওয়ানের মেসেজ এসেছে আবার….
—ছোট্ট মাথা টায় অত চাপ দিও না, আমি বাইরেই দাঁড়িয়ে আছি, রাস্তায়। তোমাকে দেখা যাচ্ছে এখান থেকে, স্পষ্ট। আর ব্লাশ করার মতো কিছু বলিনি আমি। সামান্য ‘তুমি’ শুনে ব্লাশ করছো! তাহলে তো ফিউচারে যা করবো তাতে খয়েরী রঙা স্ট্রবেরি হয়ে যাবা!
মেসেজ টি পড়ে রুমাইশার কান মাথা গরম হতে শুরু করলো, লজ্জায় চোয়াল দুটো জ্বলছে যেন!
রুমাইশা তাড়াতাড়ি করে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে জানালা দিয়ে উঁকিঝুঁকি মারলো সাফওয়ান আসলে কোথায় আছে দেখার জন্য৷
এমন সময় সাফওয়ান আবার মেসেজ দিলো,
রুমের আলো টা নিভিয়ে উকি মার গাধি। সায়েন্স বুঝিস না নাকি?
এবারের মেসেজ টা দেখে মেজাজ গরম হয়ে গেলো রুমাইশার।
‘আমাকে গাধি ডাকলো!”
জানালার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বিড়বিড় করে বলল, —তুই গাধা শালা।”
এ সময়ে আবার মেসেজ এলো,
—কুল ডাউন, কুল ডাউন! মেনে নিচ্ছি আমিই গাধা! 🙂”
রুমাইশা মেসেজ টি পড়ে কটমট করে শুধু তাকালো ফোনের দিকে, কিন্তু কিছু বলল না।
বিছানার মাথার কাছ থাকা লাইটের সুইচ টা টিপে বন্ধ করে দিলো, তারপর জানালার কাছে এলো আবার। রাস্তা টা এখান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, লম্বা চওড়া কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে। অন্ধকারে বোঝা যাচ্ছে না তেমন।
রুমাইশাকে জানার কাছে দেখেই নিজের চোখের গগলস খুলে ফেললো সাফওয়ান, অন্ধকারে জ্বলজ্বল করে উঠলো ধুসর সবুজ রঙা চোখ দুইটা, দূর থেকে এবার স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হলো সাফওয়ানএর অবয়ব টা।
মুখে মাস্ক নেই, শরীরের উপরের অংশ অনাবৃত। প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে গাড়ির দরজায় পেছন ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, চোখ দুইটা রুমাইশার চোখে। এই আবছা আলোতে কালো কুচকুচে ঠোঁট দুইটা যেন সাফওয়ানের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুন!
রুমাইশা তাকিয়ে আছে অপলক, মুখ টা আস্তে আস্তে হা হয়ে যাচ্ছে ওর!
জ্বলজ্বলে চোখের এই শ্যামরঙা পুরুষটির মারাত্মক ঝলকে চোখ ঝলসে যাওয়ার উপক্রম ওর৷
এতক্ষন রুমাইশার মনমরা চেহারা দেখে যে ক্ষত টা বুকের ভেতর হয়েছিলো সাফওয়ানের সেটা রুমাইশার এই মুগ্ধ চাহনি দেখে নিমিষেই উপশম হলো! নিঃশব্দে হাসলো ও।
পেকেটের ভেতর থেকে ফোন টা বের করে কল করলো রুমাইশা কে।
রিংটনের শব্দে সম্বিত ফিরে পেলো রুমাইশা। সাফওয়ানের দিকে ওইভাবে তাকিয়ে ছিলো ভেবেই লজ্জায় পড়ে গেলো ও।
বিছানার ওপর থেকে ফোন টা নিয়ে কানে ধরতেই সাফওয়ান মোহনীয় গলায় বলে উঠলো,
—এভাবে তাকালে কিন্তু রাস্তায় থাকতে চাইবো না! ভেতরে আসতে চাইবো, অনেক।
রুমাইশা লজ্জায় যেন মাটিতে মিশে গেলো। জ্বলজ্বলে চোখ দুটোর দিকে শেষবারের মতো তাকিয়ে দ্রুত পর্দা টা টেনে দিলো জানালার৷
তারপর কানে ফোন ধরা অবস্থাতেই বিছানায় গিয়ে বসলো, কথা বলল না কোনো।
সাফওয়ান আবার ও আগের মতো করেই বলে উঠলো,
এই চাহনি, এই হাসি, এই লাল লাল গাল এর মানে আমি কি ধরে নিবো? আমার প্রস্তাবের উত্তর ‘হ্যা’?
রুমাইশা কি বলবে ভেবে পেলোনা৷ কিছু বলতে নিবে তখনি আয়েশা চলে এলেন রুমে৷ তড়িঘড়ি করে ফোন কেটে দিলো রুমাইশা।
— রুমি, ঘুমাই গেছিস নাকি?
আয়েশা জিজ্ঞেস করলেন।
— না না মা ঘুমাইনি, জেগে আছি। খাবার দিছো?
— হ্যা দিয়েছি, খেতে আয় তাড়াতাড়ি, নইলে ঠান্ডা হয়ে যাবে সব।
বলে আয়েশা চলে গেলেন রুম থেকে।
আয়েশা চলে গেলে রুমাইশা ফোন দিলে সাফওয়ান কে।
মা আসছিলো। আপনি এখন বাড়িতে যান, এই রকম আবহাওয়ায় খালি গায়ে থাকলে ঠাণ্ডা লেগে যাবে।
মৃদু হাসলো সাফওয়ান। রুমাইশা ওকে নিয়ে চিন্তা করছে ভেবে ভালো লাগলো ওর অনেক। মা ছাড়া কেউ এরকম চিন্তা করেনি ওর জন্য কখনো! অন্য কেউ মায়ের মতো করেই চিন্তা করছে দেখে ভালো লাগায় ছেয়ে গেলো ওর বুক টা৷
রুমাইশা কে বলল,
—কাল শাফিন কে বলবো এখানে আসতে, একদিন এসে তোকে সঙ্গ দিলে ভালো লাগবে তোর৷
— আচ্ছা, ঠিক আছে, আপনি বাড়িতে যান এখন। কেউ দেখে ফেললে সমস্যা হবে।
সাফওয়ান হুম বলে ফোন টা রেখে দিয়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো। তারপর জানালার দিকে আর একবার তাকালো রুমাইশা কে দেখার আশায়। কিন্তু পর্দার কারণে দেখা গেলো না ওকে।
সাথেই সাথেই আবার কল দিলো রুমাইশাকে। রুমাইশা ফোনের কাছেই ছিলো, রিসিভ করতেই সাফওয়ান বলে উঠলো,
— পর্দা তোল জানালার, তোকে আর একবার দেখবো!
রুমাইশা ফোন কানে ধরেই জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে পর্দা টা উচু করলো৷ গাড়ির ভেতরে বসা সাফওয়ানের জ্বলজ্বলে চোখে এদিকেই তাকিয়ে আছে।
দুজনে দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো অপলকে কিছুক্ষন!
— জানালা দিয়ে দে এবার, রাতের বেলা যেন আর কখনো জানালা খোলা না দেখি! বড় হয়েছিস, এখন সবসময় সতর্ক হয়ে থাকবি৷ আমি সবসময় থাকবো না তোকে সিকিউরিটি দেওয়ার জন্য৷
— ঠিক আছে, সতর্ক থাকবো,
বলল রুমাইশা৷
সাফওয়ান আর কিছুই না বলে ফোন রেখে দিলো, বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো ও। তারপর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলল নিজের গন্তব্যের দিকে৷
রুমাইশা খাওয়া দাওয়া করে সকাল সকাল শুয়ে পড়লো৷ ঘুমে চোখ পুড়ছে ওর৷ বিছানায় পিঠ ঠেকানোর দশ পনেরো মিনিটের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লো।
২৫. সকাল বেলা ঘুম থেকে কোনো রকমে ঢুলে ঢুলে নামাজ টা পড়ে আবার ঘুমালো রুমাইশা, ঘুম যেন চোখ থেকে সরছেই না৷
এক্সামের এই কয়েকদিন ভালো ভাবে ঘুমাতে পারেনি বলে আয়েশা ও ঘুমাতে দিলো ওকে৷ নইলে অন্যান্য দিন নামাজের পর ঘুমাতে দেন না আর।
আর ও খানিক ঘুমিয়ে নিয়ে আট টার দিকে ঘুম থেকে উঠলো রুমাইশা। উঠে চোখ ডলতে ডলতে বেসিনে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে ডাইনিং টেবিলে এসে বসলো।
পাশে সোফায় বসে টিভি তে নিউজ দেখছিলেন শামসুল৷
রুমাইশা এক টা প্লেট টেনে নিয়ে টিভির দিকে তাকাতে তাকাতে প্লেটে ভাত নিচ্ছিলো। তখনই টিভির নিউজে চোখ আটকে গেলো ওর৷
সংবাদ পাঠিকা বলছেন,
—যশোরের সাড়াপোলের মাঠের মধ্যে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে দুইজন মধ্য বয়সি ব্যাক্তিকে। কে বা কারা এই খুন করেছেন তা এখনো জানা যায়নি৷
ভিকটিম দের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। জিহবা আর দুই হাত টেনে ছিড়ে ফেলা হয়েছে। দুই টা পা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। মুখের ভেতরে মাঠের কাদা মাটি পুরে রেখে গেছে খুনি।
মৃত দের কে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে খুনির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি সেখানে৷ ধারণা করা হচ্ছে পুর্ব শত্রুতার জের ধরে কেউ এই নৃশংস হত্যা কান্ড ঘটিয়েছে।
নিউজ শুনে রুমাইশা যেন খেতে ভুলে গেলো। সংবাদ পাঠিকা লোক দুইটার স্থিরচিত্র দেখালেন টিভিতে। রুমাইশার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেলো।
—এরা তো ওরা!’
রুমাইশার গলা শুকিয়ে গেলো একেবারে!
‘সাফওয়ান, সাফওয়ান কাল খুন করেছে ওদের! এই জন্যই কি বলছিলো, যে ও আমার ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেবে না! এ-এটা কি করলেন আপনি! কি করলেন! এখন যদি ধরা পড়ে যান! পুলিশ যদি কোনোভাবে জেনে যায় তাহলে কি হবে! জেলে নিয়ে যাবে আপনাকে!
কিন্তু তার আগে তো আপনার চেহারা দেখবে ওরা, আপনার মুখ খুললে তো সবাই জেনে যাবে আপনি কি! তখন কি হবে! মেরে ফেলবে তো ওরা আপনাকে!”
মনের ভেতর যুদ্ধ শুরু হলো রুমাইশার। ওর মাথায় কোনো কাজ করছে না৷ সব কিছু এলোমেলো লাগছে৷ কি হবে এখন!
আয়েশা রান্নাঘর থেকে এসে দেখলেন রুমাইশা ভাত না খেয়ে মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে এক পলকে। তরকারি ও নেয়নি এখনো।
আয়েশা রুমাইশার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
—কি ভাবছিস এত? দ্রুত খেয়ে নে৷ শাফিন আসবে একটু পরে, তোর ফুপ্পি ফোন দিয়ে জানালো, আজকে থাকবে৷ তাড়াতাড়ি খেয়ে গেস্ট রুম টা গোছা সুন্দর করে৷
আয়েশার কথায় রুমাইশা নিজের ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসলো। টেনশনে ওর মাথা কাজ করছে না, গা ঘেমে যাচ্ছে।
দ্রুত খেয়ে নিয়ে রুমে গিয়ে ফোন টা হাতে নিলো। অসহায় হয়ে মন আর মস্তিষ্কের সাথে খানিক্ষন যুদ্ধ করে ফোনে সাফওয়ানের কন্টাক্ট নম্বর টা মেললো, তারপর কিছুক্ষন দোনোমনা করে মেসেজ করলো সাফওয়ান কে,
—আপনি এটা কি করেছেন! কি হবে এবার!
আপনার কিছু হলে আমি কি করবো!”
মেসেজ টি সেন্ড করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো রুমাইশা। কিন্তু ওইপাশ থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে গেস্ট রুমে চলে গেলো রুম টা গোছাতে। কাউকে বুঝতে দিলো না ওর মনের ভেতর চলা ঝড়ের কথা…….