লাভার নাকি ভিলেন | সিজন – ২ | পর্ব – ১৮

ইরার মুখে বিজয়ের হাসি মেঘলাকে প্রথম আঘাতটা ইরাই করল….!!
মেঘলা আকাশের হাতে মার খেলেও এমন মারের সাথে পরিচিত না এক একটা আঘাতে মেঘলা মৃত্যু যন্ত্রনা অনুভব করছে।

হটাৎ করেই ইরা বলে উঠল এবার তোমায় কে বাঁচাবে মেঘলা?
মেঘলা নামটা শোনার সাথে সাথে কেউ যেন ২২০ ভোল্টের শক খেল।

ছেলেটি অবাক হয়ে বলল কি নাম বল্লেন?

ইরা না বুঝেই উত্তর দিল কেন মেঘলা….

সাথে সাথে ছেলেটি কাওকে কিছু বুঝার সুযোগ না দিয়ে মেঘলাকে নিয়ে সেখান থেকে উধাও হয়ে গেল।

সবার থেকে নিরাপদ দুরত্বে গিয়ে বলল ম্যাডাম আপনার লাগে নি তো?

মেঘলা অবাক হল তবুও ছেলেটার অস্থিরতা দেখে উত্তর দিতে বাধ্য হল,

মেঘলাঃ লেগেছে তবে সামান্য কিন্তু আপনি কে?আমি তো আপনাকে চিনতে পারছি না।আমাকে বাঁচালেন কেন?

ছেলেটিঃ আমি আবির আকাশ ভাইয়ের এসিস্ট্যান্ট আমি জানি আপনি কে। সেদিন আকাশ ভাইয়ের মুখে আপনার নাম শুনেছি দেখা করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু দেখা করার সুভাগ্য হয় নি।
আজ এভাবে এই অবস্থায় দেখা হবে ভাবি নি। যাই হোক ম্যাডাম আমি আপনার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি আপনি চিন্তা করবেন না ভাই সুস্থ হয়ে যাবে।আপনি শান্ত হোন সব ঠিক হয়ে যাবে। চলুন আপনাকে বাসায় দিয়ে আসি। এখানে থাকা আপনার জন্য নিরাপদ নয়।

মেঘলাঃ কিন্তু বাসায় যাব কি করে?আমি তো আকাশের বাসায় থাকি কোন মুখে ও বাড়িতে যাব?

আবির ব্যাপারটা বুঝতে পারল তারপর
সে একটা বাসায় সামনে গিয়ে মেঘলাকে নামিয়ে দিয়ে বলল আজ আপনি এই বাসায় থাকুন এটা আমার বাসা আপনার কোন অসুবিধে হবে না। আসলে বাইরে আপনার জন্য অনেক বিপদ ওঁত পেতে আছে।
তাই বাসা থেকে বের হওয়াটা ঠিক হবে না। আপনি প্লিজ ঘরেই থাকুন। সবাই আপনার উপর ক্ষেপে আছে, বাইরে কে কখন কি করবে বলা যায় না ভাই সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকুন।

আবির একটা মেয়েকে ডেকে বলল ম্যাডামকে আমার রুমে নিয়ে যাও।শোনো ম্যাডামের দিকে খেয়াল রাখবে,আজ বাসায় কাউকে ঢুকতে দিবে না আর ম্যাডামের যা যা লাগবে সব এনে দিবে ম্যাডামের যেন কোন অসুবিধে না হয় ঠিক আছে?

মেয়েটি মাথা নাড়ল।

আবিরঃ ম্যাডাম আসলে আমার কেউ নেই বাবা মা অনেক আগেই মারা গেছেন একটা বোন আছে ভার্সিটিতে পড়ে সেখানেই থাকে তাই এখানে কেউ নেই আপনার যা যা দরকার টুনিকে বলবেন ও এনে দিবে
আমি ভাইয়ের কাছে যাচ্ছি। বলে আবির চলে গেল।

টুনি মেঘলাকে আবিরের ঘরে নিয়ে গেল।

এদিকে,আকাশের প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছে সে এখনো জ্ঞান ফিরে নি।

অন্যদিকে,
নাবিল জেল থেকে পালানোর সময় ওকে গুলি করা হয়েছিল কিন্তু তবুও তাকে ধরা সম্ভব হয় নি। নাবিল নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল তারপর অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায় নি।

মেঘলাদের শহর থেকে অনেক দূরের ছোট একটি শহরে সামিরা আর তার মা থাকেন।

বরলোকের বাবার একমাত্র মেয়ে সামিরা
বাবা বিদেশে থাকে সামিরা আর তার মা দেশে থাকেন।

সামিরা খুবি বদমেজাজি,রাগি আর জেদি একটা মেয়ে তবুও সে আদুরে কারন তার মা বাবার একটাই মেয়ে। মুলত বেশি আদরেই সামিরা বিগড়ে গিয়েছে।সে মানুষকে মানুষ মনে করে না যখন যা ইচ্ছা তাই করে এমনকি কথায় কথায় মানুষের গাঁয়ে পর্যন্ত হাত তুলে। কিন্তু সামিরা যাই করুক কেউ তাকে কিছু বলার সাহস পায় না।তার একটা কারন আছে। সামিরাকে সবাই ভয় পেলেও
সামিরারো ভয়ের একটা কারন আছে।
কারনটা হল শহরের নাম করা গুন্ডা জনির একমাত্র ক্রাশ সামিরা।

জনিকে সামিরা একদম পছন্দ করে না কিন্তু জনি তাকে খুব পছন্দ করে।জনির ভয়ে সামিরার দিকে কেউ চোখ তুলে তাকানোর সাহস পায় না ।
সামিরা সেটার সুযোগ নিলেও জনিকে সে ভয় পায়।কারন জনির মায়া দয়া বলতে কিছু নেই যখন তখন খুন করতেও হাত কাঁপে না তার।

সামিরা কলেজে পড়লেও সে তার বাবার বিজনেস দেখাশুনা করে মুলত তার মা বিজনেস সামলান সামিরা মাঝে মাঝে তার মাকে সাহার্য্য করে।বাবা মা ২ জনেই প্রফেশনাল হওয়ায় সামিরাও কিছুটা বিজনেস মাইন্ডের হয়েছে।আজ সামিরা আর তার মা গ্রামে একটা প্রজেক্ট দেখতে গিয়েছিল। প্রজেক্ট দেখে সামিরা আর তার মা গাড়ি করে ফিরছিল তখন কিছু লোক এসে তাদের গাড়ি আটকালো।

সামিরার মা ভয় পেলেন কারন জনি হুটহাট এমন অনেক কিছুই করে যা তাদের ভয়ের কারন হয়ে দাঁড়ায়। সামিরার মা বলল কে আপনারা? আমাদের আটকালেন কেন?

একজন এগিয়ে এসে বলল দেখুন না ম্যাডাম একটা ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় নদীর পাড়ে পড়ে আছে আর অবস্থা শোচনীয় কিন্তু এখনো বেঁচে আছে ওকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিতে হবে এখানে কোন গাড়ি নেই আপনারা যদি ওকে একটু নিয়ে যেতেন খুব উপকার হত।

সামিরাঃ না না আমরা এই ঝামেলা নিব কেন? আপনারা অন্য ব্যবস্থা করুন।

সামিরার মাঃ ছি সামিরা কি বলছো এসব? একটা ছেলে মারা যাচ্ছে ওকে আমাদের নেয়া উচিত।
আপনারা ওকে তুলে দিন আমরা নিয়ে যাচ্ছি।

সবাই মিলে ছেলেটিকে সামিরাদের গাড়িতে তুলে দিল।

অজ্ঞান ছেলেটি নাবিল।নদীর স্রোতের টানে এই পর্যন্ত এসেছে।তবে সে বেঁচে আছে….গুলি হাতে লেগেছে তাই মৃত্যুর সম্ভবনা নেই বল্লেই চলে কিন্তু দুর্বল হয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।