বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪১

বদ্ধকক্ষের ভিতরে ঘন্টাখানেক সময় নিয়ে জেরা করা হলো ময়না’কে৷ তবুও তার মুখ থেকে আশানুরূপ উত্তর পাওয়া গেল না। শুধু নির্লজ্জের মত ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদল আর বলল,
-‘বিশ্বাস করেন বড়ো ভাবি, বিশ্বাস করেন নতুন ভাবি আমি কিছু করি নাই। আমারে ছাইড়া দেন আমনেগো পায়ে পইড়া কই, আমারে ছাইড়া দেন।’
ব্যর্থ হয়ে শবনম শাহিনুর’কে জিজ্ঞেস করল,
-‘নুর, তুমি ওর সামনেই আসল ঘটনাটা বলো তো।’
চোখমুখে কঠিন্যতা ফুটিয়ে তুলে শাহিনুর বলল,
-‘বিয়ের পরের দিন আমার বক্ষবাস খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এটাতো আপনি জানেন। কিন্তু ডাক্তারসাহেবের সেন্ডো গেঞ্জির কথা জানেন না৷ আমাদের দু’জনের এই দুটো জিনিস ওর কোন কাজে লেগেছে, আজ ওকে জবাব দিতেই হবে!’
ময়না আঁতকে ওঠল৷ কান্নার শব্দও বেড়ে গেল তার। বিভিন্ন ভাবে মিথ্যা কথা বলে আসল কারণটা লুকিয়ে গেল৷ যা শবনম,শাহিনুর দু’জনই বুঝতে পারল। শেষে শবনমের আদেশে ময়না’কে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হলো। শুধু তাই নয় পাঁচফোড়ন গৃহ থেকেও চিরতরে বিদায় দেওয়া হলো। সবশেষে একটুও স্বস্তি পেল না শাহিনুর। মনের ভিতর খচখচ করতে শুরু করল। তার অস্বস্তি টের পেয়ে শবনম বলল,
-‘নুর, আমার ধারণা ময়না’কে এ বাড়িরই কেউ নিয়ে এসেছিল। হয়তো কালো জাদু করার জন্যই তোমাদের পোশাক চুরি করিয়েছে ও’কে দিয়ে!’
ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইল শাহিনুর। পুনরায় শবনম বলল,
-‘এমনটা হয়। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করার জন্য, সংসারে অশান্তি করার জন্য বা কাউকে নিজের আয়ত্তে আনার জন্য কালোবিদ্যার আশ্রয় নেয় অনেকে। এরপর থেকে সাবধানে থেকো। হাতের নখ কেটে মাটিতে গেড়ে ফেলো, চুলগুলোও পলিথিনে জমিয়ে পরে মাটিতে পুঁতে ফেলবা। নখ আর চুল কিন্তু কালোজাদু’তে বেশি সাহায্য করে।’
বিস্মিত হয়েও হলো না শাহিনুর৷ যেখানে একজন মানুষের দ্বারা অপর মানুষের প্রাণ নাশ হয়, সেখানে এইসব জাদুও সম্ভব। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সন্দেহের বাণ পলাশের দিকেই ছুঁড়ল সে।

প্রায় একমাস হয়ে গেল। প্রণয়ের প্রতি পূর্বের চেয়েও অধিক উদাসীনতা বাড়তে লাগল শাহিনুরের। এই একমাসে রাত গভীর হলে যতবার প্রণয় তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ হতে চেয়েছে ততবারই সে ফিরিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ শাহিনুরের পূর্বের ন্যায় আচরণ বোধগম্য হলো না। ভালোবাসা, রাগ সবটাই শুধু নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে প্রণয়। জোর জুলুম করে শারীরিকভাবে মিলিত হওয়া তার স্বভাব বিরুদ্ধ। পালঙ্কের দু’প্রান্তে প্রাণহীন হয়ে পড়ে থাকে দু’জন। যখন ঘুমে বিভোর হয়ে যায় সে তার পানে গোপনে তাকিয়ে থাকে শাহিনুর। মন ভরে, চোখ ভরে দেখে তাকে। মনের তৃষ্ণা মেটায়, চক্ষের তৃষ্ণা মেটায়। রোজরাতে ঘুমের ভান করে শাহিনুরের এই গোপন ভালোবাসা অনুভব করে সে।
প্রতিদিনের মতো আজও ঘুমিয়ে পড়ার ভান করে ভারি নিঃশ্বাস ছাড়তে শুরু করল প্রণয়। শাহিনুরও হাঁটুতে মাথা কাত করে রেখে তাকিয়ে রইল তার দিকে। দু’জন মানুষ কেউই কারো মনের কথোপকথন শুনল না। শাহিনুরের নিরবতা, উদাসীনতার রহস্য খুঁজে পায় না প্রণয়৷ আর শাহিনুর ভাবে, সে একজন খু’নি। একজন খু’নির সঙ্গে আর যাইহোক ঘরবাঁধা যায় না। পলাশ যেমন খু’নি সেও খু’নি৷ পার্থক্য এটুকুই পলাশ নিরপরাধ একজন মানুষ’কে নৃশংসভাবে খু’ন করেছে। আর সে অপরাধী’কে খু’ন করেছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অপরাধ। তাই সে নিজেও অপরাধ করেছে। ভবিষ্যতে আরো অপরাধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে তার দ্বারা। আজ যদি সংসারের লোভে, প্রণয়ের ভালোবাসার লোভে এই অপরাধ সে না করে তাহলে কোনদিন পলাশের মতো জঘন্য মানুষের শাস্তি হবে না। দুনিয়ার কোন আদালত শাস্তি দিতে পারবে না পলাশ’কে। যতদিন পলাশ বেঁচে থাকবে ততদিন পাঁচফোড়ন গৃহ অভিশাপ মুক্ত হবে না। মুক্ত হবে না বাইজি গৃহের ঐ অসহায় নারীগুলো। শান্তি পাবে না মান্নাত বুবুর আত্মা! সবুর উদ্দিন’কে খু’ন করে সে রেহাই পেয়েছে। কিন্তু পালাশের বেলায় কখনোই রেহাই পাবে না। হয়তো প্রণয় নিজেই রেহাই দেবে না তাকে৷ সবশেষে যখন খু’নের দায়ে তার জেল হবে, ফাঁসি হবে তাকে ছাড়াই বাঁচতে হবে প্রণয়কে। সেই বেঁচে থাকা যেন কঠিন না হয় তাই এখন থেকেই অভ্যাস করাচ্ছে। মাঝের কয়েকটা মাস ভুলে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না বোধহয়। চোয়াল বেয়ে দুফোঁটা অশ্রুপাত ঘটলো। নাক টানার শব্দ শুনতেই সহসা চোখ মেলে তাকাল প্রণয়। ভ্রুযুগল কুঁচকে বলল,
-‘লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছো বাঁধা দেইনি। দেখবে আর কাঁদবে তবুও বাঁধা দেব না, এটা ভাবলে তুমি ভুল ভেবেছো!’
মৃদু কেঁপে ওঠল শাহিনুর৷ ত্বরান্বিত হয়ে অশ্রুজল মুছে কপট রাগ দেখিয়ে বলল,
-‘তার মানে আপনি ঘুমের ভাণ করছিলেন? ছিঃ।’
শরীর টান টান করে ওঠে বসল প্রণয়। প্রগাঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে, অধরকোণে কুটিল হাসি ফুটিয়ে তুলে বলল,
-‘চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ো ধরা৷’
ইতস্ততভাবে চারপাশে দৃষ্টি বুলিয়ে আমতা আমতা করে সে বলল,
-‘আমি আপনাকে দেখছিলাম না।’
কিঞ্চিৎ বলপ্রয়োগ করেই শাহিনুরের বাহু চেপে ধরল প্রণয়। দৃঢ়স্বরে বলল,
-‘আমি মিথ্যা পছন্দ করি না নুর।’
ব্যথায় চোখ বন্ধ করে ফেলল শাহিনুর। পরোক্ষণেই চোখ খুলল। প্রণয়ের চোখে চোখ রেখে অকপটে জবাব দিল,
-‘আমি চুরি করে আপনার দিকে তাকাইনি। দেখার ইচ্ছে হয়েছে তাই তাকিয়ে ছিলাম। চুরি হলে দরজা,জানালার ফাঁকফোকর দিয়ে চুরি করেই দেখতাম।’
হাত নরম করে দিলো প্রণয়। বাঁকা হেসে মৃদুস্বরে বলল,
-‘যাক শুনে খুশি হলাম। আমার বউয়ের রোজ রাতেই আমাকে দেখার ইচ্ছে হয়, কী সৌভাগ্য আমার!’
হকচকিয়ে গেল শাহিনুর৷ তারমানে রোজ রাতেই প্রণয় ঘুমের ভাণ করে থাকে? লজ্জায় মাথা নত হয়ে গেল তার। দেহটাও মৃদু কেঁপে ওঠল। এভাবে ধরা পড়বে ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। জটিল থেকে সহজ কোন বিষয়ই লুকানো যায় না লোকটা’কে। তাহলে সে কেন তাদের সম্পর্কে দূরত্ব আনছে এটা বুঝে না কেন? ছোট্ট একটি নিঃশ্বাস ছেড়ে প্রণয়ের দৃষ্টিজোড়ায় নিজেরদৃষ্টি নিক্ষেপ করল। তার চোখেমুখের দুষ্টু হাসি দেখে তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলল,
-‘আপনি হাসছেন? হ্যাঁ হাসবেনই তো। আপনি কী করে বুঝবেন…।’
-‘কী বুঝবো?’
-‘আপনি কী করে বুঝবেন একটা মেয়ে তার স্বামী’কে খুব ভালোবাসলে সরাসরি তার দিকে ভালোবাসার চোখে তাকাতে পারে না৷ তাই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে। আমিও দেখছিলাম। এতে অন্যায়’টা কী হয়েছে বুঝতে পারছি না।’
এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে সহসা থেমে গেল শাহিনুর৷ ঘটনার আকস্মিকতায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো৷ শেষে প্রচণ্ড লজ্জিত হয়ে ধীরে ধীরে পালঙ্ক থেকে নেমে দাঁড়াল। প্রণয় হাসবে না কাঁদবে? কোনোটাই বুঝতে পারল না। তবে শাহিনুর’কে আটকানোর প্রয়োজন বোধ করল৷ শাহিনুর যখন পিছু ঘুরে এক কদম পা বাড়ালো অমনি তার আঁচল টেনে ধরল প্রণয়। ধীরে ধীরে সেও পালঙ্ক ছেড়ে নেমে দাঁড়াল। শাহিনুর চোখ বন্ধ করে ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করল৷ প্রণয় একদম তার পিছনে দাঁড়িয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
-‘স্বামী’কে এতখানি ভালোবেসেও দূরে থাকা অন্যায়, কাছে না আসা পাপ!’
বুকের ভিতর ধক করে ওঠল। সর্বাঙ্গে কম্পন ধরে গেল একটি কথা স্মরণ হতেই, সে অন্যায় করছে, পাপ করছে। দীর্ঘদিনের দূরত্বের পর আবারও তাদের পূর্ণ মিলনের এক নিবিড় রজনীর সমাপ্তি ঘটলো। রাতের সমাপ্তি’তে নিজের বক্ষঃস্থলে নিশ্চিন্তে ঘুমানো প্রণয়’কে দেখে সহসা শাহিনুরের হৃৎপিণ্ড কেঁপে ওঠল। অন্তঃকোণে পুনরায় প্রশ্ন জাগল,
-‘কী করবে সে? কোন পথে আগাবে? যে পথে প্রণয়ের সঙ্গ পাবে না সে পথ কতটা সহজ হবে?’
[৬৯]
টুকটাক ব্যস্ততা, নিজেকে সবার থেকে গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় ক’দিন যাবৎ অঙ্গনের কাছে যাওয়া হয়নি। রোজ নিয়ম করে অঙ্গনের কাছে যাওয়া, তাকে ওষুধ খাওয়ানো, দীর্ঘসময় বসে গল্প করা প্রত্যাহিক জীবনেরই একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ এসব থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলে হয়তো তার ক্ষতি হবে না। কিন্তু অঙ্গনের হতে পারে৷ কারণ সে স্বাভাবিক নয়। এই যে এতদিন ধরে তাদের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে৷ তাকে পাশে পেলে ছেলেটার চোখেমুখের অসীম উচ্ছলতা সবটা আকস্মিকভাবে ভেঙে গেলে হয়তো সহ্য করতে পারবে না। যেমনটা পারেনি রোমানার মৃত্যু’কে! এসব চিন্তা করতে করতেই অঙ্গনের কক্ষের সামনে এসে দাঁড়াল শাহিনুর। চাবি দিয়ে বদ্ধ কক্ষের তালা খুলে ভিতরে ঢুকতেই দেখল, বেঘোরে ঘুমাচ্ছে অঙ্গন। বাচ্চাদের মতো হাত,পা ছড়িয়ে ডান হাতের বৃদ্ধা আঙুল মুখে ঢুকিয়ে ঘুমাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখে
মিষ্টি করে হাসল শাহিনুর। পুরো কক্ষে সচেতন দৃষ্টি বুলিয়ে ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ফেলল। বিরবির করে বলল,
-‘এই গরমে ভাই’টা ফ্যান না দিয়েই ঘুমাচ্ছে। কেউ যে এসে ফ্যানটা চালু করে দেবে তাও না। কারো নজর নেই। অসুস্থ হয়েছে বলে সবার অবহেলার পাত্র হয়ে গেছে মানুষ’টা!’
বলতে বলতেই ফ্যানের সুইচ অন করে বেরিয়ে পড়ল সে। উদ্দেশ্যে নিজের কক্ষে যাওয়া। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনার কাছে তার পরিকল্পনা তুচ্ছ হয়ে গেল।দরজায় তালা লাগিয়ে পেছনে ঘুরতেই সহসা পলাশ’কে অতি নিকটে দেখে চমকে ওঠল। বিশ্রী ভঙ্গিতে কিঞ্চিৎ হাসলো পলাশ। ইতস্ততভাবে এক কদম পিছুতেই দরজায় পিঠ ঠেকে গেল শাহিনুরের। অশ্লীল দৃষ্টিতে তাকিয়ে অশ্লীল ভঙ্গিতে জিহ্বা দিয়ে সিগারেটে পোড়া ঠোঁটজোড়া ভিজিয়ে নিল পলাশ। এক ঢোক গিলে আশপাশে সচেতনভাবে নজর বুলাল শাহিনুর। এ মুহূর্তে কী করা উচিৎ তার? চিৎকার করে সবাই’কে ডাকা, নাকি কৌশলে নিজেকে রক্ষা করে চলে যাওয়া? নিমিষেই কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমলো তার। পলাশ ধীরে ধীরে এতটাই কাছে চলে এসেছে যে আরেকটু কাছে এলেই গা’য়ের সাথে গা লেগে যাবে। শাহিনুর উপায়ন্তর না পেয়ে কিছু বলার জন্য উদ্যত হতেই শক্তপোক্ত হাত দিয়ে তার নরম উদরে চাপ দিল নরপশু পলাশ। মুহূর্তেই সারা শরীরে আগুন ধরে গেল তার। দ্বিতীয় বারের মতো সেই বীভৎস ছোঁয়া পেয়ে নরম হাতে কষিয়ে এক থাপ্পড় লাগাল ঘৃণ্য মানুষটার গালে৷ প্রকৃতি যেন উচ্চস্বরে হেসে ওঠল৷ তাচ্ছিল্যসহকারে পলাশ’কে বলতে লাগল,
-‘সময়ের চাকা থেমে থাকে না জমিদার পুত্র, সময়ের চাকা ঘুরে গেছে। শেষ পর্যন্ত এক বাইজির মেয়ের হাতে তোকে থাপ্পড় খেতে হলো!’
প্রথমবার এই স্পর্শে পালিয়ে ছিল শাহিনুর, দ্বিতীয়বার এমন প্রতিক্রিয়া দেবে একটুও আশা করেনি পলাশ। অপমান বোধ করল খুব, পুরুষত্বে ভয়ানক আঘাতও পেল। সামান্য এক বাইজির মেয়ের এতবড়ো সাহস যে তার গা’য়ে হাত তোলে! সহসা শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠল পলাশের। শাহিনুর ও’কে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে উদত্য হতেই ঘোমটার ওপর দিয়েই চুলের মুঠিতে ধরে এক টান দিল। সঙ্গে সঙ্গে মৃদু আর্তনাদ করে পলাশের হাত থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করল শাহিনুর। পলাশ একহাতে ওর চুলের মুঠি অপরহাতে ওর নরম গালে শক্ত এক থাপ্পড় লাগাল। ফলশ্রুতিতে ঠোঁটের কোণা বেয়ে রক্তিম তরল টপটপ করে পড়তে শুরু করল মেঝেতে। কাতর স্বরে একবার ‘মা গো’ ডেকে ওঠল শাহিনুর! কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে পিছন থেকে পলাশ’কে টেনে ধরল পল্লব। অরুণা চোখমুখ শক্ত করে পলাশের গালে দু’টো থাপ্পড় বসালো। ক্রোধে ফেটে পড়ে কাঁপতে কাঁপতে বলল,
-‘তুমি ভুলে যাইয়ো না পলাশ জমিদার বাড়ির কর্ত্রী এখনো বেঁচে আছে৷ লজ্জা করা উচিৎ ছোটো ভাইয়ের বউয়ের দিকে কুনজর দেও ছিঃ ছিঃ। এ বাড়িতে তোমার মুখ আর দেখতে চাই না আমি!’
মুহূর্তেই বাড়ির সকলে এসে ভিড় জমালো অঙ্গনের কক্ষের সামনে। শবনম এসে শাহিনুর’কে বুকে টেনে নিল। আট মাসের পেট নিয়ে পলাশের দিকে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল মুনতাহা।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।