লাভার নাকি ভিলেন | পর্ব – ২৮

আকাশের মন খারাপ থাকলেও আকাশের সাকসেস এর জন্য তার বন্ধুরা পার্টি দিয়েছে আকাশ সেখানে গেল আর একটু রাত করেই বাড়ি ফিরল।

আকাশের বাড়িতেও আজ খুশির রব কারন আকাশ এত ভাল একটা অবস্থান পেয়েছে…
আকাশ বাড়ি ফিরে মা বাবার সাথে আনন্দ ভাগ করে নিয়ে তারপর নিজের রুমে ঢুকে দেখল মেঘলা এখুনো তার ঘরেই ঘুমিয়ে আছে মেঘলাকে দেখেই আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। এদিক ওদিক না ভেবে ঘুমের মধ্যেই এক ধাক্কায় মেঘলাকে নিচে ফেলে দিল।
মেঘলার শরীরে এমনেতেই আঘাত ছিল এখন আবার আঘাত পেয়ে ঘুম থেকেই চিৎকার করে উঠল মেঘলা।
মেঘলার চিৎকারে আকাশের মন কেঁদে উঠল।
কিন্তু মন খারাপ টা তার জেদের কাছে মন হার মানল।
মেঘলা নিচে পড়ে কাতরাচ্ছে চেস্টা করে উঠতে পাড়ছে না। এটা দেখেও আকাশ তাকে সাহার্য্য করল না। উল্টে বলল মেঘলা তুই কি জানিস তোকে দাদী যে সম্পত্তি দিয়েছে সেগুলি তোর ২১ বছর হওয়ার আগে তুই পাবি না? তাই ততদিন তুই ফকিন্নি ফকিন্নিই থাকবি…মানে আমার কাজের মেয়ে যদি ইচ্ছা হয় তোকে রক্ষিতাও বানাতে পাড়ি।
এতদিন এত ভালবাসলাম কিন্তু তোর তো ভাল লাগল না তাই এখন থেকে তুই এই বাড়ির কাজের মেয়ে হয়ে থাকবি….
আর শোন আমি খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করছি, বিয়ের আগে যদি আমার ইচ্ছা হয় তাহলে তোর সাথে একটু ফুর্তি করব বোঝেছিস অবশ্য ইচ্ছা হয়ত হবে না কারন আগামীকাল ইরা আসছে বিয়ের আগ পর্যন্ত এখানেই থাকবে।
মেঘলা ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে।
আকাশঃ জানিস ইরাকে বিয়েতে আমি কি কি দিচ্ছি?
মেঘলা……
আকাশঃ নগদ ১ কোটি টাকা ১ টা ফ্লাট আর ওর পছন্দমত যত অলংকার চায় ততগুলি অলংকার।
ভাবছি একটা গাড়ীও দিব। আর কি দেওয়া যায় বলতো মেঘলা?
মেঘলা কিছু বলছে না…
আকাশঃ নিশ্চুই ভাবছিস বাবার কাছ থেকে টাকা নিব তাই না? আরে না বাবার কাছে এত টাকা আছে নাকি যে দিবে? বাবার কাছ থেকে বা দাদির কাছ থেকে নিব না।এবার জিজ্ঞাস কর আমি এত টাকা কোথায় পাব?
আসলে পার্টি থেকে দিয়েছে আজকেই ডিল হলো…
মেঘলা জিজ্ঞাসু দৃস্টিতে আকাশের দিকে তাকাল।
আকাশঃ হুম যা ভাবছিস তাই,তুই ঠিকি ধরেছিস এগুলি সৎ পথের ইনকাম না। কাল একটা বস্তি ভেংগে দিব সবাইকে উচ্ছেদ করে দিব তার জন্য অগ্রিম ডোনেশান দিয়েছে।
মেঘলা অবাক হয়ে বলল আপনি কিছু টাকার জন্য এতগুলি মানুষকে ঘর ছাড়া করবেন? আপনার খারাপ লাগবে না?
আকাশঃ হা হা হা আজব কথা বলছিস সামান্য কিছু সম্পত্তি যদি তোকে বদলাতে পারে আমাকে পারবে না? এখন টাকার জন্য শুধু ঘরছাড়া কেন মুহুর্তের মধ্যে কয়েকডজন লাশ ফেলতেও আমি ২ বার ভাবা না।
আসলে টাকা ইনকামের খুব ইচ্ছা হয়েছে আর আমার জীবনে তো স্পট আছে তাইনা?
ছ্যাকা খাওয়া একটা ছেলেকে কোন মেয়ে বিয়ে করবে তাই এগুলো দিতেই হবে ইরাকে…
ইরার তো কোন খুঁত নেই দেখতে যেমন সুন্দরী তেমনি ভাল মনের মেয়ে ওকে বিয়ে করতে কিছু খরচা তো করতেই হবে তাই না…আমি তো শুধু ভাবছি আর কি দেওয়া যায়……??
মেঘলাঃ অসহায় মানুষগুলির স্বপ্ন গুলি এভাবে ভেংগে দিয়েন না প্লিজ। কারোর স্বপ্ন ভেংগে সুখি হওয়া যায় না।
আকাশঃ ঠিক বলেছিস সে জন্যই তুই কখনো সুখি হবি না। স্বপ্ন দেখার অধিকার সবার নেই, আর আমি কখনো কারো স্বপ্ন পূরন হতে দিব না।
সে যাই হোক তুই আপাতত এখান থেকে বিদায় হ…কাল থেকে তোর ডিউটি শুরু…
যাওয়ার কথা বলার পড়েও মেঘলা বসে আছে দেখে আকাশ ধমক দিয়ে বলল কি বল্লাম তোকে…?? ও আচ্ছা ভাল কথা ভাল লাগে না তাই না?বলে আকাশ মেঘলার চুল ধরে টেনে তুলে দরজার বাইরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।
মেঘলা গিয়ে দেওয়ালের উপড় পরল কপালে ব্যাথা পেল।
মেঘলা আহ বলতেই আকাশ এসে মেঘলার মুখ চেপে ধরে বলল এটা তো কেবল শুরু আমার কথার সাথে সাথে কাজ না করলে তোর কি দশা হবে নিজেই জানিস না। আকাশকে চিনতে তোর এখনো অনেক বাকি। তোকে আমি এখনও মারার মত করে মারি নি এবার থেকে প্রতিটা ভুলের শাস্তি কতটা ভয়ানক হবে তুই কল্পনাও করতে পারছিস না মেঘলা।
আর একটা ওয়ার্নিং দেই এখান থেকে পালানোর চেস্টা ভুলেও করিসনা। যদি করিস পা ২ টা এমন ভাবে ভাংগব যে সারাজীবন ব্যাথা করবে।
মেঘলাঃ ভাংগার বাকি কি রেখেছেন? যদি হাঁটতে পারতাম তাহলে কি এতক্ষন আপনার ঘরে থাকতাম কখন চলে যেতাম।
আকাশঃ আমার মুখে মুখে কথা বলার সাহস হয় কি করে তোর? আকাশ আবার মেঘলাকে টেনে তুলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল মেঘলা কিছুটা দূরে গিয়ে পড়ল আকাশ আবার তুলে বলল কি রে ঘরে যেতে পারবি? নাকি লাথি মারতে মারতে নিয়ে যাব?
মেঘলা কিছু বলল না তাই আকাশ আবার ধাক্কা মারল।
মেঘলাঃ ব্যাথা পেয়ে কেঁদে উঠল আর বলল আপনার কি একটুও মায়া দয়া নেই ? আমি ব্যাথা পাচ্ছি দেখতে পাচ্ছেন না?
আকাশ হা হা করে হেসে বলল ভাল লাভার তো হতে পাড়লাম না এবার না হয় ভাল ভিলেনই হই
কিন্তু তুই আমার সাথে কথা বলার সাহস পাচ্ছিস কি করে?
বোঝেছি তুই যাবি না নিয়ে যেতে হবে…
আকাশ মেঘলাকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে দেখে তার মা দৌড়ে এসে বলল কি করছিস এসব? আকাশ ছাড় ওকে ওর লাগছে তো…
আকাশঃ আমি জানি কাকে কিভাবে আর কোথায় মারলে তার কতটা লাগে তাই চিন্তা করো না বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটবে না আর ঘটলেও আমি ফাঁসব না যদি মার সহ্য করতে না পেরে মরে যায় ওকে পিস পিস করে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিব মাছে খেয়ে নিবে ঝামেলা মিটে যাবে….
রাবেয়া বেগমঃ আকাশ তুই এসব কি বলছিস তোর মুখে আটকাচ্ছে না? ছাড় ওকে…
আকাশঃ সময় খুব নির্মম মা কিছুক্ষন আগের আকাশ আর এখনের আকাশ মানুষটা এক হলেও তাদের মাঝে অনেক তফাত তাই বলছি মা সামনে থেকে সরে যাও। তানা হলে এমন কিছু ঘটবে যা সহ্য করতে পারবে না। নিজের বিপদ নিজে ডেকে এনো না। এই ফালতু মেয়েটস মরলেও তোমার কোন ক্ষতি হবে না কিন্তু আমাকে রাগালে কি হতে পারে আশা করি যানো…
এ বাড়িতে আজ থেকে আমার হুকুম চলবে আমি যেটা বলব সেটাই হবে এখানে বুঝেছ? তা নাহলে সবাইকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিব।
দুনিয়াতে জোর যার মুল্লক তার। আমি চাইলে তোমাদের এখুনি রাস্তায় দাঁড় করাতে পারি।
তুমি আমার মা তোমার সাথে আমার নাড়ির টান তাই কেউ না জানলেও তুমি জানো আমি এই মেয়েটাকে কত ভালবাসি কিন্তু আজ ওকে মারতে আমার একটুও খারাপ লাগছে না তাই অন্যকাউকে মারতেও যে আমার একটুও মায়া লাগবে না সেটা বোঝতেই পারছো? ভাল ভাবে বলছি মা যাও এখান থেকে আমার উপরে কথা বলার সাহস দেখিও না।
আকাশের কথায় আকাশের মাও ভয় পেয়ে গেল। আকাশ হাতের কাছে সাজানো ফুলদানি টা হাতে নিয়ে ছুড়ে টুকরা টুকরা করে দিয়ে চিৎকার করে বলল যাও এখান থেকে।
আকাশের মা বোঝল এখন কিছু বলে লাভ নেই তাই চলে গেল।
মেঘলাও ভয় পেয়ে বলল আমি একা একাই যেতে পাড়ব ভাইয়া..
আকাশঃ খুব ভাল যা তাহলে।
মেঘলা চেষ্টা করল কিন্তু হাঁটতে পাড়ল না।
আকাশ এসে মেঘলাকে কোলে নিয়ে হাঁটতে লাগল।
মেঘলাঃ এই তো মারছিলেন এখন আবার কোলে নিলেন কখন যে কি করে?(মনে মনে)
আকাশঃ ভুলে যাচ্ছিস আমি তোর মনের কথাও শুনতে পাই তাই বাজে বকা বন্ধ কর না হলে কোল থেকে ফেলে দিয়ে কোমর ভেংগে দিব।
মেঘলা ভয়ে ঢুক গিলল।
আকাশ মেঘলাকে রুমে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে কয়েকটা ট্যাবলেট হাতে দিয়ে বলল এগুলি খা…
মেঘলা তাকিয়ে আছে দেখে
আকাশ শক্ত করে মুখ চেপে ধরে ট্যাবলেট মুখে দিয়ে বলল খেয়ে নে। কথা না শুনলে কি করব বোঝতেই পাড়ছিস। বলে আকাশ চলে গেল।
মেঘলা মনে মনে ভাবছে আকাশ কি করে এত ভয়নায়ক হয়ে গেল? আমাকে মেরে পিস পিস করে কেটে নদীতে ফেলে দিব কি ভয়ানক কথা বাবা। ভাবতে ভাবতে মেঘলা ঘুমের দেশে পারি দিল।
এদিকে আকাশ ভাবছে মেঘলা তোর জীবন যদি নরক না বানাতে পারি আমিও আকাশ নই। কষ্ট কত প্রকার ও কি কি আমি তোকে বোঝাব।
রাত ২ টা….
আকাশের চোখে ঘুম নেই আকাশ মেঘলার ফোনে ফোন দিল। দিয়ে দেখল না আজ ওয়েটিং এ কথা বলছে না আর অনলাইনেও এক্টিভ নেই।
আকাশঃ আজ কেন বলছিস না? এবার কথা বল দেখি কত পারিস। আজ বেঁচে গেলি আজ যদি ওয়েটিং এ পেতাম হয়ত খুন তোকে করতাম।
আকাশ ঘুমের চেস্টা করল কিন্তু ঘুম আসছে না।
আমার ঘুম হারাম করে তুই শান্তিতে ঘুমাবি মেঘলা? না না না এটা তো হতে পারে না। ওকে এত শান্তি তো দেওয়া যাবে না বলেই আকাশ মেঘলার ঘরে গেল।
মেঘলা হাঁটতে পারে না তাই আকাশ ওকে বিছানায় দিয়ে যাওয়ার পর দরজা না লাগিয়েই ঘুমিয়েছিল।
আকাশ ঘরে গিয়ে ধমকের সুরে ডাকতে লাগল,
আকাশঃমেঘলা এই মেঘলা… হারামজাদি কুটনি বুড়ি উঠ বলছি….
কিছুক্ষন পর আদো আদো ঘুমে মেঘলা চোখ খুলে তাকাতেই আকাশ…….

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।