এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা – সিজন ২ | পর্ব – ১৪

–সময় টা প্রায় ডিসেম্বরের মাঝামাঝি।শহরে সম্পূর্ণ শীতের ঢল নেমেছে।গাছ পালা রাস্তা ঘাট কিছুই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।গাছ পালা ভিজে নেয়ে উঠেছে তারা ও মনে হয় কাঁপছে শীতে। রাস্তার সাইডে কিছু মানুষ এত ভোরেই বেরিয়েছে কর্মসংস্হানের খোজে।রাস্তা মেরামত এর কাজ চলছে তারা এ রাস্তার কাজ ই করছে।রাস্তার পাশে বসে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছে তারা।কুয়াশায় মোড়ানো শহরে বিহান ভাই এর বাইকের পেছনে ছুটে চলেছি আমি।উত্তরের ঠান্ডা বাতাসে শরীর হীম করে তুলছে।উনি বাইকের হেড লাইট জ্বালিয়ে রাস্তা দেখছেন।বাইকের আয়নায় উনার মুখ দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট। আমি এক নজরে তাকিয়ে আছি বাইকের আয়নার দিকে।এই মানুষটার মাঝে এত সজীবতা কেনো?কেনো এতটা নিঁখুত সুন্দরের অধিকারী হয়েছেন উনি।একটা ছেলেকে কেনো এত সুন্দর হতে হলো।উনার পোশাক, কথা বার্তা,চলাফেরা এটিটিউড সব কিছু যেনো সম্পূর্ণ অন্য রকম।ঠোঁটের চারদিক হালকা কালচে আবরণে ঢাকা আর মাঝে গোলাপি কতক্ষণ তাকিয়ে দেখে মুগ্ধ আমি।

উনি আমার দিকে ঘুরে বললেন, আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকলে পড়ে যাবি।আর এভাবে তাকিয়ে থাকলে আমার অসুবিধা হচ্ছে বাইক চালাতে।

কথাটা বেশ মিহি কন্ঠে বললেন উনি।আমি বেশ লজ্জা পেয়ে গেলাম উনার কথা শুনে,মানে উনি বুঝে গিয়েছেন উনাকেই দেখছি।সাথে সাথেই চোখ সরিয়ে নিলাম আমি।হঠাত উনি বাইক ফুল স্পিডে চালানো শুরু করলেন,আমার অবস্থা পড়ে যায় যায় অবস্থা।

“উনার শার্টের কলার টেনে ধরে বললাম,আস্তে চালান না পড়ে যাচ্ছি।”

“উনি বললেন,আমাকে ধরে না বসলে তো পড়বি আর এভাবে কলার টেনে ধরলে দুজনে পড়ে যাবো ফলে কি হবে জানিস,তুই ও বিধবা হবি আর আমিও বউ হারাবো।বলেই উনি আবার সামনে তাকালেন।”

কি অদ্ভুত আর অধ্যাতিক কথা উনার।উনি ইচ্ছা করেই বাইক এলোমেলো চালানো শুরু করলেন।উনার এই ইচ্ছাকৃত বাইক এলোমেলো চালানোর বিরুদ্ধে ও কিছু বলতে পারছি না।দ্রুত উনার কোমর জড়িয়ে ধরলাম আমি,উনাকে ধরা ছাড়া আর কোনো উপায় ও নেই।উনার পেটের কাছের হুডির কাপড় জোরে খামচে ধরলাম।বাধ্য হয়েই উনাকে আষ্টে পিষ্টে কোমর সহ জড়িয়ে ধরে বসতে হলো আমাকে।অবশেষে বাইক তার গন্তব্য পৌছালো।

“বাইক থেকে নামার পরে আমার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করএ বললেন, আমি বলে ধৈর্য ধরে বাইক চালিয়েছি।অন্য কেউ হলে পারতো না।যে ভাবে কোমর জড়িয়ে বসেছিলি, কতক্ষণ নিজেকে কন্ট্রোল রাখা যায়,ভাজ্ঞিস ভুল ভাল কিছু করি নি।”

“আমি মুখ বাকিয়ে বললাম,জোরে চালালেন কিজন্য?”

“তার নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে।এখন উদ্দেশ্য সাকসেস।”

“কি উদ্দেশ্য সাকসেস।”

“উনি মাথার মেলমেট খুলে এক হাত চুলের মধ্য চালাতে চালাতে বললেন,একটু ভাবলেই তো অনেক কিছুর উত্তর পেয়ে যাস।সব কিছুতে প্রশ্ন করিস বলেই গোলক ধাঁধায় পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছিস তুই আর কেউ তোর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।”

মনে মনে বলছি এইভাবে হেলমেট খুলে হাত চুলের মধ্য চালিয়ে আমার দিকে ঝুঁকে এসে আমাকে একশ ভোল্টেজ এর ক্রাশ না খাওয়ালেও তো পারেন বিহান ভাই।

এরই মাঝে একজন ভদ্রলোক ঘরের দরজা খুলে বাইরে এসে বললেন,,

“বিহান এসছো, ভেতরে এসো।কাল তোমার ফোন পেয়ে অবাক হয়েছি আর অনেক খুশি ও হয়েছি।”

জায়গাটা এস এম সুলতান এর বাড়ির পাশেই। এ বাড়ি থেকে এস এম সুলতানের বাড়ি স্পষ্ট দেখা যায়।এক তলার এক ইউনিটের একটি বাসা।অতি সাধারণ এ বাড়িতে একজন বিসিএস ক্যাডার প্রফেসর থাকেন।পেশায় তিনি একজন প্রফেসর বিজ্ঞান বিভাগের যার নাম মশিউর রহমান।ম্যাথের টিচার হিসাবে মহিলা কলেজে আছেন।উনার কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছে উনি বিহান ভাই কে খুব স্নেহ করেন।উনার সাথেই উনার ঘরের ভেতরে প্রবেশ করলাম আমি।উনার ঘরের ডায়নিং এ গিয়ে বসলাম আমরা দুজন।এ ঘরের ওয়ালে বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক দের ছবি টাঙানো আছে।আমি রুমের প্রতিটা ওয়াল তাকিয়ে তাকিয়ে ভাল ভাবে দেখছি।
আমরা বসার পাঁচ মিনিটের মাঝেই স্যারের ওয়াইফ কফি আর বিস্কুট নিয়ে এলেন।বিহান ভাই আর স্যার দুজনে কফি খেতে খেতে কথা বলছেন।

“স্যার কাল রাতে তো বললাম ই আপনাকে সব টা।”

“হুম কাকে পড়াতে হবে বিহান।তুমি এতটা সিরিয়াস কেনো? ”

“স্যার এইযে সে,সাথে করেই নিয়ে এসছি।”

“স্যার আমার দিকে একবার তাকিয়ে বিহান ভাই কে বললেন, তোমার কি হয়।”

“শী ইজ মাই ওয়াইফ স্যার।”

“তুমি বিয়ে করেছো?”

“বিহান ভাই একটু লাজুকতার সাথে বললেন,জ্বী স্যার!বাট আমি বাসায় থাকি না তাই ওকে পড়াতে পারি না।এইজন্য আপনার কাছে নিয়ে এসছি।এখন ওর প্রচুর স্ট্যাডির প্রয়োজন।ম্যাথে বেশ খানিক টা উইক আছে।কোথায় কোথায় কোচিং করে আর কি পড়ে জানিনা।কোনো কোচিং এর পড়ানো আমার পছন্দ হচ্ছে না স্যার।”

“বিহান আমার থেকে অনেক বেশী ট্যালেন্ট তুমি।আমার জীবনে তোমার মতো স্টুডেন্ট আমি কখনো পাই নি।এখনো সব ব্যাজে তোমার কথা বলি।তারা মোটিভেট হয় তোমার কথা শুনে।আমার জীবনে তোমার মতো পড়াকু,শান্ত,আর মনোযোগী স্টুডেন্ট পাইনি।”

“স্যার সব ই আপনাদের দোয়া আর ভালবাসা।ওর নাম দিয়া স্যার।আমি চাই দিয়া আমার থেকেও ভাল কিছু করুক।দিয়ার মা বাবার অনেক স্বপ্ন তাই দিয়াকে ও লেখাপড়ায় মনোযোগী আর ভাল গাইড দেওয়ার প্রয়োজন।”

“বিহান এজন্য ই তুমি সারাজীবন আমার প্রিয় ছিলে।আজকাল কার ছেলেরা বিয়ে করে ঘরের বউ কে নিয়ে না ভেবে বাইরে নিয়ে বেশী সিরিয়াস।একমাত্র তোমাকেই দেখলাম নিজের ওয়াইফ কে নিয়ে অনেক সিরিয়াস।”

“স্যার প্লিজ আপনি আপনার সব টা দিয়ে ট্রাই করুণ।”

“ও স্টুডেন্ট কেমন?”

“আমার থেকেও ভাল।বাট গাইড লাইনের অভাব স্যার।আপনি পড়ালেই বুঝবেন স্যার।তাছাড়া ও খুব ই শান্তশিষ্ট ভদ্র মেয়ে।”

“ওয়াইফ কে অনেক ভালবাসো। ”

“বিহান ভাই এর মুখে লাজুকতা।”

“কাল থেকে বিকাল ৩ টায় পাঠিয়ে দিও।”

“না স্যার ওকে সকাল ৫ টায় পড়ান আপনি।”

“অত ভোরে এই শীতের সময়ে কিভাবে আসবে।তার থেকে বিকালেই ভাল হবে।”

“না স্যার প্লিজ রিকুয়েষ্ট আপনি ওকে ৫ টায় পড়ান।।”

“ঠিক আছে ও যদি আসতে পারে তাহলে আমার কোনো অসুবিধা নেই।”

“ঠিক আছে স্যার আজ আমরা আসি।”

দুইটা জিনিসে অবাক হলাম খুব পরিমাণে।
উনি আমাকে বেয়াদব মহিলা, অসভ্য কত কি বলেন।অথচ স্যার এর কাছে আমাকে ভাল স্টুডেন্ট এর পাশাপাশি নম্র ভদ্র বললেন।হোয়াট ইজ কাহিনী।
তারপরের কাহিনী কি?স্যার বিকালে পড়াবেন।উনি এইভাবে জোর করছেন কেনো এত ভোরে পড়ানোর জন্য।আমাকে জব্দ করতেই উনি এসব করছেন।আমাকে বিরক্ত করা অশান্তি তে রাখা টায় উনার একমাত্র উদ্দেশ্য সেটা বুঝতে আর বাকি নেই আমার মানুষ মানুষের পিছে যে কিভাবে লাগতে পারে তা উনাকে না দেখলে বোঝার উপায় নেই।

এই কাকডাকা ভোরে আবার ফিরে এলাম বাড়িতে।এ বাড়ির কেউ এখনো ঘুম থেকে ওঠে নি।মামি কিচেনে রান্নায় আয়োজন করছে পাশে মারুফা খালা ও সাহায্য করছে।বিহান ভাই উপর থেকে জোরে বললেন আম্মু একটা ব্ল্যাক কফি পাঠাও আমার জন্য।
এই একজন ব্ল্যাক কফি ছাড়া জীবনে আর কিছুই চিনলো না।মামি কফির জন্য পানি গরম করতে দিয়ে আমার হাতে নুডুলস দিয়ে বললো খেয়ে নে মা।খেয়ে আবার কম্বলের৷ নিচে যা।আজ সূর্য উঠবে কিনা তার ঠিক নেই।আবার ঘুমিয়ে পড় গিয়ে, রান্না শেষ হলে আমি ডাকবো।নুডুলস খেতে খেতে বললাম মামি পানি গরম হয়ে গিয়েছে তোমার ছেলের কফি পাঠাও না হলে কাফ ই ভেঙে দিবে।মামি স্বভাব সুলভ হাসি দিয়ে বললেন এই দায়িত্ব আমি তোকে দিলাম।আমার রাগি ছেলেটার রাগ কমিয়ে শান্ত করার দায়িত্ব তোর।আর আমি জানি এটা তুই পারবি।নুডুলস এর প্লেট রেখে বললাম মামি আগুনে ঝাপ দিয়ে পুড়ে মরতে বলছো আমাকে।তোমার ছেলে এই ভাল এই খারাপ কি নিয়ে রেগে যায় সেটাও কেউ বোঝে না।দয়া করে আমাকে ওই দায়িত্ব দিও না।

মারুফা খালা কফি নিয়ে গিয়েছে আধাঘন্টা হয়েছে।মামি বলছেন দেখ দিয়া মারুফার কান্ড।সেই গিয়েছে এখনো এলো না।ফ্রিজ থেকে মাছ,মাংস বের করতে হবে কিন্তু মারুফার খোজ নেই।তুই বস আমি তোর মামাকে চা টা দিয়ে আসি।মামি মামাকে চা দিতে গেলে তখন মারুফা খালা আসেন।

–আমি বললাম খালা কোথায় ছিলে এত সময়।মামি বকবে খুব।

–বিহান বাবা সুচ চাইছিলো,সেটা বিভাদের বাসা থেকে আনতেই তো দেরি হলো।

-সুচ সুতো দিয়ে কি করবেন উনি খালা।

-সেটা তো জানিনা তবে
দিয়া মা বিহান বাবা ডাকে।এক্ষুণি যেতে বলেছে।

-আমি রান্নাঘর থেকে বিহান ভাই এর রুনে গিয়ে বললাম আমাকে ডাকছেন আপনি?

-হ্যাঁ

-আবার কি প্রাইভেট এ যাওয়া লাগবে।

-উনি প্যান্টের পকেট থেকে হাত বের করে আমার দিকে ঝুঁকে এসে বললেন,
“যেতে ইচ্ছে করছে বুঝি।”

-“আমি চোখে তাকিয়ে বললাম,দেখুন ক্লিয়ার বলে দিচ্ছি,শীত কালে আমি একদিন ও অত সকালে উঠতে পারবো না।না মানে না।”

-কেনো?”

-কারণ আমি সদ্যবিবাহিতা বউ,কোন বউ অত ভোরে পড়তে যায়।”

-তাহলে কি করে?মিস দিয়া অরুফে মিসেস বিহান?

-তা জানিনা তবে স্বামি নিয়ে এক ঘরে ঘুমিয়ে থাকে।”

-আর।

-আর আবার কি?

-শুধু সুয়েই থাকে আর কিছুই না।

-আমি কিভাবে বলবো।

-ওকে ফাইন আমরাও কাল থেকে সুয়ে থাকবো।

-পাগল নাকি আপনার সাথে কে সুয়ে থাকবে।

-শর্ত দুইটা হয় সুয়ে থাকতে হবে না হয় প্রাইভেট চয়েজ তোর অপশন দিয়ে দিলাম।

-ইম্পসিবল!

-পসিবল না হলে আর কি করার ভোর চার টায় উঠে হাঁটতে হাঁটতে এস এম সুলতানের বাড়ির পাশে হেঁটে যাবি।স্যার এর বাসায় পৌছাতে যেনো এক মিনিট ও লেট না হয়।

-আপনি কি পাগল নাকি অত ভোরে আমি কিভাবে যাবো।তখন তো প্রায় রাত থাকে।

-তার জন্য ই তো অপশন দিয়েছি বেয়াদপ বিবাহিত মহিলা।

-স্যার যেখানে বিকালে পড়াবেন,সেখানে আপনার এত আপত্তি কিসের আমি বুঝলাম নাহ।কি সমস্যা কি আপনার বিহান ভাই।

-যতদিন ভাই ডাকবি ততদিন কিছুই বুঝবি না।

-তাহলে কি অন্য কিছু বলে ডাকবো?

-ঘন ঘন ভাই ডেকে আহত না করে আঙ্কেল ডেকে নিহত করাটাই বেটার বলে মনে হয়।লিসেন দিয়া, ভাই,আঙ্কেল টাইপ যে কোনো সম্মোধন,নানা-দাদা টাইপ বাদে অন্য যা কিছু বলে ডাকতে পারিস।

-আমি ড্যাব ড্যাব করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।

-উনি ভ্রু নাচিয়ে বললেন সব মাথার উপর দিয়ে গেলো তো।
চোখ অফ কর ষ্টুপিড মহিলা একটা।

-কেনো?

-তোকে চাঁদে নিয়ে যাবো তাই?অফ কর আগে।

-চোখ অফ করে উনার সামনে দাঁড়ালাম আমি।

-কিছুক্ষনের মধ্যই গলায় উনার হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে গেলাম আমি।মনে হচ্ছে কোনো গহনা পরাচ্ছেন আমাকে।

-উনি আমার গলায়,কানে,হাতে, শিউলি ফুলের মালা পরিয়ে দিয়েছেন।মাথায় দিয়েছেন শিউলি ফুলের টায়রা। কপালে দিয়েছেন ফুলের টিকলি।পায়ে দিয়েছেন ফুলের নূপুর পরিয়ে।

আয়নায় নিজেকে দেখে মুগ্ধ আমি।শিউলি ফুল বরাবর ই প্রিয় আমার।ভীষণ প্রিয় এই ফুল আমার কাছে।নিজেকে দেখে সত্যি মুগ্ধ আমি।ছোট বেলায় বলেছিলাম বিহান ভাই এই ফুল আমার ভীষণ প্রিয়।আমার প্রিয় বলেই বিহান ভাই এ বাড়িতে ফুল গাছ টা লাগিয়েছিলেন।বলেছিলেন ফুল কুড়াতে আসবি সেই বাহানায় হলেও রোজ সকালে তোকে দেখার সুযোগ পাবো আর একটু রাগিয়ে দিতে পারবো।

উনি আমায় পেছনে থুতনি তে হাত ঠেকিয়ে মিষ্টি হেসে দাঁড়িয়ে বলছেন,শিউলি ফুল কেউ একজনের ভীষণ প্রিয়।সেদিন থেকে আমার আঙিনায় শিউলি ফুলের বসবাস অনবরত চলছে।বেলা অবেলায় শিউলি ফুলের প্রেমে পড়েছি আর তাকে ভেবেছি।ইস তাকে শিউলি কন্যাতে এতটা নেশাক্ত না লাগলেও তো পারতো।এখন তার শ্বশুরের ছেলে তার প্রেমে পড়লে এই দোষ টা কি শ্বশুরের মেয়ে নিবে।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।