সময় গড়াল ঢালু রাস্তায় নিচের দিকে গড়িয়ে পড়ার মতো৷ বিয়ের ছুটিতে বাড়ি এসেছে সৌধ। একমাসের জন্য স্মৃতি আপু আর দুলাভাইও এসেছে৷ বড়ো ভাই সৌরভ এসেছে এক সপ্তাহ আগে। চৌধুরী বাড়িতে বিয়ে মানেই বিরাট ব্যাপার। একমাস আগে থেকেই তোরজোড় শুরু হয়৷ স্মৃতিসৌধ নামক আলিশান বাড়িটা আত্মীয়স্বজনে ভরে ওঠে।
বিয়ের কেনাকাটা বাকি নেই খুব একটা। সৌধর ছুটি পেতে দেরি হয়েছে। তাই স্মৃতি আপু আর দুলাভাই মিলে সিমরানকে নিয়ে শপিং করেছে। আজ সৌধ এসেছে। তাই স্মৃতি আপু সৌধকে আদেশ করল, আগামীকাল সিমরানকে নিয়ে বেরুতে। বাকি যা কেনাকাটা আছে দু’জন মিলে সেরে নিতে বলল। স্মৃতি আপুর খুব আদরের সিমরান। সৌধ নিধিকে ভালোবাসত। জানত স্মৃতি আপু। বড়ো বোন হিসেবে সব সময় সাপোর্ট করত ভাইকে৷ কিন্তু নিধির বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর যখন জানতে পারল সিমরান সৌধকে ভালোবাসে। তখন থেকে মনে প্রাণে সিমরানকে ভাই বউ হিসেবে চাইত৷ আজ সে চাওয়া পূরণ হতে যাচ্ছে। সিনুর কাছে শুনেছে সৌধর সঙ্গে খুব একটা কথা হয় না। এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে। তবু প্রয়োজন ব্যতীত তাদের মধ্যে ফোনালাপ হয়নি। সৌধকে ভালোবাসার পাশাপাশি ভীষণ শ্রদ্ধা করে সিমরান। ভয়ও পায়। সবমিলিয়ে নিজে থেকেও ফোন করেনি৷ এই যে দূরত্ব, একে অপরের মধ্যকার জড়তা। এসব তো কাটাতে হবে? এর জন্য অবশ্যই তাদের একে অপরকে সময় দিতে হবে। বোঝাপড়া, ভাব বিনিময়, বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, গভীর প্রণয়ানুভূতি সব কিছুর মিশ্রণেই তো স্বামী, স্ত্রীর সম্পর্ক পূর্ণতা পাবে। বিয়ের আর মাত্র চারদিন বাকি। তবে কেন এত দূরত্ব? স্মৃতি আপু একদম মানতে পারল না। সিমরানকে কল করে জানিয়ে দিল, আগামীকাল সৌধর সঙ্গে বেরুতে হবে৷ স্মৃতি আপুর কথা শুনে সন্ধ্যাবেলা সৌধকে কল করল সিমরান। সৌধ তখন গিটার নিয়ে বসেছে মাত্র। ফোন বেজে ওঠতেই রিসিভ করে বলল,
‘ ভালো আছিস? ‘
‘ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো? ‘
‘ এই তো..। ‘
‘ কাল বেরুচ্ছি আমরা? ‘
‘ হু। ‘
একটুক্ষণ চুপ রইল সিমরান৷ বুকের ভেতর অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেল। ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল,
‘ কী করছ? ‘
‘ নাথিং। গিটার নাড়াচাড়া করছিলাম। ‘
‘ আচ্ছা। ‘
ফোন কেটে দিল সিমরান। সৌধ আলতো হেসে ভাবল, সম্পর্কটা আগের মতো থাকলে সিনু এখন গান শোনার আবদার করত। আগের চেয়ে অনেক বদলে গেছে মেয়েটা। সেই সঙ্গে অনেক বেশি জড়তা কাজ করছে ওর মধ্যে। সারাক্ষণ ভয়ে থাকে। মেপে মেপে কথা বলে। না জানি কী বলে আর ভুল হয়ে যায়। ওই মেয়েটা এত যত্ন নিয়ে ভালোবাসতে জানে? অনেক বেশিই আশ্চর্য হয় সৌধ। বিরবির করে বলে,
‘ নারীর ছলনা পুরুষকে নরকে ধাবিত করে। আর
ভালোবাসা স্বর্গে ভাসায়। ‘
নিজের ঘরে চুপচাপ শুয়ে আছে সুহাস৷ মনের বিষণ্নতা দেহে উপচে পড়ছে তার। বাড়ি ভর্তি আত্মীয়। ক’দিন পর বোনের বিয়ে। কোথায় সে হাসি মুখে সকল দায়দায়িত্ব পালন করবে। বোনকে শশুর বাড়িতে পাঠাবে। তা না। সারাক্ষণ বিষণ্ন চিত্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে সে জানতে পেরেছে নামী আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছে। জানিয়েছে তার শশুর। শশুরের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছে, তাদের মধ্যেকার ঝামেলার কথা বাবাকে জানায়নি নামী। কারণ, বাবা তাকে প্রশ্ন করেছিল,
‘ তোমারও বেড়াতে আসার কথা ছিল বাবা। নামী বলল কাজ পড়ে গেছে। কবে নাগাদ আসতে পারবে জানিও। ‘
সুহাস হাসিমুখে উত্তর দিয়েছে,
‘ সময় সুযোগ করে জানাব। ‘
খুব ইচ্ছে করছিল নামীর সঙ্গে একবার কথা বলতে। মুখ ফুটে বলতে পারেনি৷ নিজেকে ভীষণ অসহায় লাগছে। এ জীবনে কতশত ভুল করল সে। যখন ভুলগুলো করে তখন একবারের জন্যও অনুভব করে না, ভুল হচ্ছে। ভুলের প্রতুত্তরে মাশুল দিতে গিয়েই টের পায় মস্তবড়ো ভুল হয়ে গেছে। ভুলটা কি এতই বেশি ছিল যে এভাবে ছেড়ে চলে যাবে নামী? দীর্ঘশ্বাস ফেলল সুহাস। সিমরাম এলো সে সময়। ভাইয়ের পাশে বসে মাথায় হাত রেখে বলল,
‘ ভাবিপুকে মিস করছ? ‘
কপাল থেকে হাত সরিয়ে বোনের দিকে সরল চোখে তাকাল সুহাস। স্মিত হেসে ওঠে বসতে বসতে বলল,
‘ সিনু, বিয়ে নিয়ে, দাম্পত্য জীবন নিয়ে ভালো কোনো অভিজ্ঞতা নেই আমার। খুব ভয় হচ্ছে তোকে নিয়ে। এতকিছুর পর তোর কোনো প্রকার কষ্ট দেখলে আমি সহ্য করতে পারব না। শোন, কক্ষনো কোনোকিছু লুকাবি না আমাকে। যে কোনো সমস্যায় সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবি। সৌধ আমার বন্ধু তাতে কী? তোর চেয়ে বেশি প্রাধান্য আমি সৌধকে দিব না।’
সিমরানের চোখ দু’টো টলমল হয়ে ওঠল। আস্তে করে মাথা রাখল ভাইয়ের কাঁধে। একহাত নরম করে জড়িয়ে ধরে বলল,
‘ আমাকে নিয়ে টেনশন করো না তো। সৌধ ভাইয়ের সঙ্গে মাত্রই কথা হলো। কাল আমাকে নিয়ে কেনাকাটা করতে বের হবে।’
‘ সৌধ কল করেছিল! ‘
একটু মিথ্যার আশ্রয় নিল সিমরান। কারণ এতে তার ভাইয়া খুশি হবে। বলল,
‘ হ্যাঁ। বলল কাল বেরুবে আমার সঙ্গে। ‘
বিষণ্ন, হতাশাগ্রস্ত মুখে এক মুঠো রোদ পড়ল যেন। সিমরান প্রসঙ্গ বদলে বলল,
‘ ভাবিপুকে মিস করছি খুব। ভাবিপুও কতকিছু মিস করে গেল বলো? এক কাজ করো ভাইয়া, বিয়ের কাজ মিটে গেলে তুমি ভাবিপুর কাছে যাও। ‘
শ্বাস আঁটকে এলো সুহাসের। বলল,
‘ আমি গেলে নামী খুশি মনে স্বাগত জানাবে না। আর না ফিরে আসবে। ও যে কাজে গেছে তা শেষ করুক। যদি না ফেরে তখন দেখা যাবে। একটা সম্পর্ক তো এভাবে চলে না তাই না? শুরু থেকেই ছিন্নভিন্ন সম্পর্ক আমাদের। ও পিএইচডি শেষ করুক। এরপর সরাসরি প্রশ্ন করব, আমার সাথে থাকতে চাও কি না? ‘
মাথা তুলে তীক্ষ্ণ চোখে তাকাল সিমরান। বলল,
‘ যদি না করে? ‘
‘ ডিভোর্স করে দিব! ‘
আঁতকে ওঠল সিমরান। ভাই রেগে গেছে টের পেয়ে বলল,
‘ কুল ব্রো। রাগের মাথায় এসব বলছ। ঠান্ডা হয়ে কথা বলো। ভাবিপু তোমার সাথে থাকতে না চাইলে ডিভোর্স করে দেয়া অনুচিত হবে। সে রাগের মাথায় এমন সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। তাই বলে তুমিও রাগ করে মেনে নিবে? তোমরা তো দু’জন দু’জনকে ভালোবাসো! ‘
‘ ভালোবাসাটাই আজ পর্যন্ত বুঝে ওঠতে পারলাম না সিনু। ‘
নিজের প্রতি তীব্র তাচ্ছিল্য ভরে কথাটা বলল সুহাস৷ সিমরানের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। তার ভাই এত কষ্ট পাচ্ছে। তীব্র অসুখে দিন কাটাচ্ছে। আর সে সুখের দিকে ধাবিত হচ্ছে। মানব জীবনের এ কেমন চক্র?
.
.
সৌধর ছোটো থেকে বড়ো বেলা যত বন্ধু, বান্ধবী আছে৷ সকলকেই বিয়ের ইনভাইটেশন কার্ড পাঠানো হয়েছে। ঘনিষ্ঠ বন্ধু, বান্ধবরা দু-তিন আগেই এসে পড়েছে৷ নিধির ঠিকানায়ও বিয়ের কার্ড পাঠানো হয়েছে। সবার ধারণা সে আসবে না। সৌধর আরেক বন্ধু আজিজ। সে আজ সাতসকালে এসে উপস্থিত হলো৷ এসেই হৈচৈ লাগালো। প্রাচী, আইয়াজ, আর আজিজ মিলে সিদ্ধান্ত নিল, আজ পুরোনো বন্ধুরা মিলে তাদের ক্লাব অর্থাৎ বিগবস ক্লাবে মিট করবে। আজকে সৌধর পরিকল্পনা অন্যকিছু। সিমরানকে নিয়ে বেরুবে সে। সেই পরিকল্পনা বরবাদ হলো আজিজের কলকলানিতে। সে জোঁকের মতো সবাইকে চেপে ধরল৷ কেনাকাটা কালও করা যাবে। বা সন্ধ্যায়। কিন্তু সব বন্ধুদের সন্ধ্যার পর ভাগে নাও পাওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে নিধি! সে তো আর বাচ্চা নিয়ে সন্ধ্যার পর বের হবে না। হাজব্যান্ডকেই বা কী জবাবদিহি করবে? সৌধ জানে না বিয়েতে নিধি আসবে কিনা। তবে আজ প্রাচীরা মিলে বিগবস ক্লাবে আসতে বলল আসার সম্ভাবনা নিরানব্বই পার্সেন্ট। তাই ভাবুক হয়ে পড়ল সৌধ। ভাবনায় বিভোর সৌধকে দেখে আজিজ বলল,
‘ কী দোস্ত, হবু ভাবিকে ম্যানেজ দিতে পারবি না? নাম্বারটা দে আমি পরিয়ে ফেলি। তাছাড়া সুহাস থাকতে চিন্তা কী? সুহাসকে কল কর। ‘
সৌধ বিরক্ত হলো। কঠিন দৃষ্টিতে একবার তাকিয়ে পকেট থেকে ফোন বের করল। কল দিল সিমরানকে। বুকের ভেতর অস্বস্তি হচ্ছে তার। দোটানা অনুভূতি হচ্ছে। এক মন বলছে বন্ধুদের সময় দিতে। আরেক মন প্রশ্ন তুলছে, সিনুর প্রতি অন্যায় হবে না? অবহেলা হয়ে যাবে না? সে দোটানা কাটাতেই সিমরান কল ধরলে শান্ত গলায় প্রশ্ন করল,
‘ আজ যদি বেরুতে না পারি? ‘
ফোনের ওপাশে চঞ্চলিত হৃদয়টা দপ করে স্থির হয়ে গেল। আশাহত স্বরে প্রশ্ন করল,
‘ কোনো কাজ পড়ে গেছে? তাহলে কাল যাই… ‘
‘ হ্যাঁ, কাজ পড়ে গেছে। ‘
‘ আচ্ছা। ‘
সিমরান সহজে মেনে নিল। যা সৌধর ভেতরে আরো বেশি জটলা পাকালো। নিজের প্রতি নিজেই অসন্তুষ্ট হলো কিছুটা। সিনু কি মন খারাপ করল? কাজ আছে শুনে মেনে নিল ঠিক। কিন্তু কী কাজ জানতে পারলে কষ্ট পাবে? ভাববে কি বন্ধু নয় আসলে নিধিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি আমি? আচমকা বুকের ভেতর মুচড়ে ওঠল। এই মুচড়টা কেন ওঠল? সিনুর চেয়ে নিধির গুরুত্ব বেশি হোক। সৌধর ভেতরে থাকা মন এটা চায় না বলেই কী? তার ভেতরের হৃদযন্ত্র এই নিষ্ঠুরতা মেনে নিতে পারল না বলেই কী তীক্ষ্ণ মুচড় অনুভব করল বুকে?
সিমরান ফোন রেখে দিতে উদ্যত হয়েছে। অমনি ত্বরিত কণ্ঠে ডাক দিল সৌধ,
‘ সিনু? ‘
চমকে ওঠল সিমরান। হাতটা কেঁপে ওঠল একটু। শুঁকনো গলায় বলল,
‘ হুহ, কিছু বলবে? ‘
ঢোক গিলল সৌধ। পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা আজিজ, প্রাচী, আইয়াজের দিকে একবার দৃঢ় দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। বুক চিরে বেরিয়ে এলো, রুদ্ধশ্বাস। এরপর দৃষ্টি ঘুরিয়ে স্থির রাখল সম্মুখের দেয়ালে। শান্ত কণ্ঠে বলল,
‘ আজিজ, প্রাচী ওরা চাইছিল আমরা পুরোনো বন্ধুরা মিলে ক্লাবে আড্ডা দিই আজ। আরো তিনদিন বাকি আছে। আগামীকাল আমরা বেরুই কী বল? আজ ওদের সময় দিই? ‘
সহসা মৃদু হাসিতে মুখ ভরে ওঠল সিমরানের। বুকের ভেতরটা যেন প্রশান্ত নদীতে রূপান্তরিত হলো। একদম মাখনের মতো নরম হয়ে গেল মন। বলল,
‘ আচ্ছা। নো প্রবলেম। আমি একটুও মন খারাপ করিনি। কাল তো যাচ্ছিই। কাল আমরা একসঙ্গে কেনাকাটা করে বাইরে খেয়ে বাড়ি ফিরব ঠিক আছে? ‘
উল্লসিত কণ্ঠ সিমরানের। সৌধ সায় দিয়ে আবার ডাকল,
‘ সিনু? ‘
‘ বলো। ‘
‘ নিধি আসতে পারে। ‘
এক নিমেষে নিভে গেল সিমরান। কিঞ্চিৎ বিস্ময় নিয়ে প্রশ্ন করল,
‘ নিধি আপু আসবে? ‘
‘ সম্ভবত। ‘
বুকের ভেতর ধুকপুক করে ওঠল মেয়েটার। একহাতে বুকের বা’পাশে চেপে ধরে ক্ষীণ কণ্ঠে বলল,
‘ আচ্ছা। ‘
সৌধ নিশ্চুপ। সিমরান কিয়ৎক্ষণ নীরবতায় থেকে বলল,
‘ থ্যাংকিউ। ‘
এ পর্যায়ে একপেশে হাসল সৌধ। বলল,
‘ রাখছি। ‘
ফোন কেটে যেতেই বুকের মধ্যিখানে ফোনটা চেপে ধরে বসে রইল সিমরান। অস্বীকার করবে না। সে চায় না নিধি আপু সৌধ ভাইয়ের আশপাশে থাকুক। এই যে আজ দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতেও ঘোর আপত্তি রয়েছে তার৷ কিন্তু সৌধ ভাই নিধি আপুকে কেন্দ্র করে যে প্রাধান্যটা দিল তাকে। এতে নিজের মাঝে একদম চৌধুরী সাহেবের বউ বউ অনুভূতি টের পেল। অনুভব করল অদৃশ্য এক অধিকার বোধ। যা স্ত্রী হিসেবে প্রতিটি মেয়ের থাকে। তারও তৈরি হচ্ছে! তিন কবুল পড়েনি। তবু মনে মনে সম্পর্কের যে সমীকরণ তৈরি হয়েছে। এতেই ভবিষ্যতটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একদিকে মন খারাপ অন্যদিকে নিজেকে সুখী অনুভব করল সিমরান। মনে মনে পণ করল, আজ সারাদিন যখন খুশি তখন সৌধ ভাইকে কল করবে। নিধি আপু পাশে থাকুক, কাছে থাকুক। তার কল রিসিভ করতে হবে ডক্টর সৌধ চৌধুরীকে। যতক্ষণ না সে ফোন ছাড়বে ততক্ষণ ফোন ধরে থাকতে হবে। যদি এর হেরফের হয় সে চুপ করে থাকবে না। সরাসরি চলে যাবে ক্লাবে। নিধি আপু আর সৌধ ভাই যদি পাশাপাশি বসে থাকে। সে গিয়ে মাঝখানে বসবে। মাঝখানে জায়গা না হলে একদম সৌধ ভাইয়ের কোলে ওঠে বসে থাকবে।
আবোলতাবোল ভাবনা গুলো ভাবতে ভাবতে অস্থির হয়ে ওঠল মেয়েটা। আকস্মিক অনুভব করল বুকের গভীরে কোথাও একটু যন্ত্রণা হচ্ছে। যাকে পাত্তা দিতে চাইল না সে। বিরবির করে মনকে বুঝাল বলল,
‘ ওরা শুধু বন্ধু হিসেবেই মিট করছে ব্যস। কিছুই হবে না৷ কোনো ভয় নেই। যেখানে সৌধ ভাই নিজে ফোন করে কিছুটা অনুনয় সুরেই কথা বলে জানালো সবটা। সেখানে এত চিন্তা করার কিছু হয়নি। নিধি আপু ম্যারেড, বিউটিফুল একটি বেবি আছে। আর সৌধ ভাই তার সঙ্গে কমিটেড। ‘
সব অস্বস্তি দূরে ঠেলে স্বস্তি ভরে শ্বাস নিল সিমরান।
তার অবস্থা মানসিক টানাপোড়নে রূপ নিয়েছিল৷ আকস্মিক ফের কল এলো সৌধর। সিমরান অবচেতনেই রিসিভ করল। ওপাশ থেকে ভেসে এলো সৌধর বিচলিত কণ্ঠস্বর,
‘ আমরা সন্ধ্যার পর বের হচ্ছি সিনু। আজ যখন কথা ছিল আজই বের হবো। এই গরমে দিনের চেয়ে সন্ধ্যাবেলাটাই বেস্ট হবে। ছ’টা ত্রিশে বাড়ির সামনে থাকব। রাখছি এখন।’