বাড়িতে ফিরে সেই যে ওয়াশরুমে ঢুকেছে পরী এখনো ফেরার নাম নেই। ১ঘণ্টা হতে চলল এখনো গোসল করছে। মেহেনুবা আধ ঘণ্টা ধরে ঘরের মধ্যে পায়চারী করছে। রেহেনা বেগম একটু পরপর এসে দরজায় ধাক্কাচ্ছেন। এবারও তিনি রুমে এসে দেখেন মেহেনুবা একা রুমে বসে আছে। মেহুর উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করেন,
তোমাকে | মুন্নি আক্তার প্রিয়া | পর্ব – ১৬
“পরী এখনো বের হয়নি?”
“না আন্টি।“
তিনি এবার দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলেন,
“পরী হয়েছে কী তোর? কখন ঢুকেছিস গোসল করতে? বের হ বলছি তাড়াতাড়ি। জ্বর বাঁধাবি নাকি তুই।“
পরী নিশ্চুপ হয়ে শাওয়ারের নিচে বসে আছে। কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। কান্নার জন্য গলা অনেকখানি দেবে গেছে। কিন্তু মায়ের চিৎকার-চেচামেচিতে এখন কথা বলতেই হলো।
“আসছি মা।“
রেহেনা বেগম রাগে গিজগিজ করতে করতে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়। মিনিট দশেক পর পরী ওয়াশরুম থেকে বের হয়। মেহু বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলে,
“ভাই তুই মানুষ নাকি অন্যকিছু? এতক্ষণ ধরে কেউ গোসল করে?”
পরী নিশ্চুপ। মাথার টাওয়ালটা খুলে চুল ঝেড়ে টাওয়াল বারান্দায় মেলে দিয়ে রুমে আসে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াতে থাকে। মেহু ধৈর্য হারা হয়ে পরীর পাশে দাঁড়ায়। আয়নার মধ্যে পরীর মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,
“কী হয়েছে বলবি তো?”
পরী এবার মেহুর দিকে তাকিয়ে বলে,
“কী হবে?”
মেহু পরীর চোখমুখ দেখে আৎকে উঠে বলে,
“তোর চোখমুখ ফুলে এমন লাল হয়ে আছে কেন? তুই কান্না করেছিস এতক্ষণ?”
এরই মধ্যে রুমে আবার রেহেনা বেগম আসেন। পরী মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
“মা আমি প্রান্তকে বিয়ে করতে রাজি।“
পরীর এমন সিদ্ধান্তে তিনি অবাকই হলেন। মেহুর দিকে একবার তাকিয়ে পরে পরীর দিকে দৃষ্টি নিবিষ্ট করে বলেন,
“এই সিদ্ধান্তের কারণ?”
“কোনো কারণ নেই। আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই বিয়ে করব।“
“এটা তোর মনের কথা নয়।“
“মনের কথা দিয়ে কী হবে? মুখে যেটা চেয়েছি সেটাই দাও তুমি।“
রেহেনা বেগম পরীর গালে হাত রেখে বলেন,
“আমি আমার মেয়েকে চিনি।“
পরী বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে কেঁদে ফেলে। রেহেনা বেগম পরীর চোখের পানি মুছে বলেন,
“তুর্যকে ভালোবাসিস তাই না?”
“কী হবে ভালোবেসে ওকে বলো তো? ও তো আমায় ভালোবাসে না। ও একটা স্বার্থপর।“
“একটা ভুল করলেই বুঝি সে স্বার্থপর হয়ে যায়?”
রেহেনা বেগমকে তুর্যর সাপোর্টে কথা বলতে দেখে মেহু ও পরী দুজনই অবাক হয়। টলমল করা অবাক চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে পরী।
রেহেনা বেগম স্বল্প হেসে বলেন,
“আজ তুর্য যেটা তোর সাথে করেছে সেটা সত্যিই ঠিক করেনি। ওর বোঝা উচিত ছিল এই কাজে একটা মেয়ের ইমোশনে ঠিক কতটা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু একটা ভুলের জন্য তো তুই ওকে স্বার্থপর উপাধি দিতে পারিস না।
হ্যাঁ, ও ওর বোনের জন্য তোর কাছে অনেকবার এসেছে। নিজের বোনের কথা ভেবে তোকে প্রান্তর থেকে দূরে থাকতে বলেছে। কিন্তু তুই কি আসলেই শুধু তুর্য বারণ করেছে বলে প্রান্তর থেকে দূরে থেকেছিস? এর আসল কারণ এটাই ছিল যে তুই তুর্যকে ভালোবাসিস। আর ঠিক এজন্যই তুই প্রান্তর থেকে দূরে থেকেছিস। তাহলে এই ইস্যুটাকে টেনে কীভাবে বলতে পারিস তুর্য স্বার্থপর?”
“তুমি এসব…”
“আমি এসব কীভাবে জেনেছি এটা জানা কি জরুরী? জরুরী এটাই যে তুই জেদ ও রাগের বসে একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছিস। তুই তো প্রান্তকে ভালোবাসিস না। শুধুমাত্র তুর্যর ওপর রেগে তুই প্রান্তকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিস। জেদ আর রাগে কখনো সংসার টিকে না পরী। সংসার টিকে ভালোবাসায়, বিশ্বাসে। তোর জেদের কারণে প্রান্তকে বিয়ে করা মানে প্রান্তকে ঠকানো। তোর নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রান্তকে বিয়ে করলে তোর আর তুর্যর মধ্যে তফাৎ রইল কোথায়?
মধ্যা কথা হচ্ছে সংসারটা কোনো ছেলেখেলা নয়। ইচ্ছে হলো খেললাম। ইচ্ছে হলো ভেঙে ফেললাম। বিয়ের আগে দশটা সম্পর্কের ব্রেকাপ হলেও একটা সময়ে ঠিক নিজেকে মানিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু বিয়ে! একটা লিখিত পবিত্র সম্পর্ক। বিয়ের পর ডিভোর্স কিন্তু ব্রেকাপের মতো স্বাভাবিক কোনো শব্দ নয়। একটা মেয়ের জীবনে ডিভোর্স খুব ভয়ংকর শব্দ। সমাজে ডিভোর্সি মেয়েদের কোনো সম্মান নেই। এরা অনেকবেশি অবহেলিত, নিপীড়িত।“
মায়ের প্রত্যেকটা কথা যুক্তিযুক্ত। আর সত্যি তো এটাই পরী প্রান্তকে ভালোবাসে না। তুর্যর কর্মকাণ্ডে রেগেই এই সিদ্ধান্ত। শুধুমাত্র রাগের বশবর্তী হয়ে অন্য একজনের ভালোবাসাকে নিয়ে খেলা মানে তো তার ইমোশনেও হার্ট করা! পরী এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রেহেনা বেগম পরীর মুখ দেখেই যা আন্দাজ করার করে ফেলেছে। মায়ের থেকে কি আর কিছু লুকানো যায়?
তিনি পরীর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,
“আমার মেয়ে কখনো কোনো ভু্ল সিদ্ধান্ত নেবে না আমি জানি। তোর সময় নেওয়া উচিত। সবকিছু নিয়ে ভাবা উচিত। একটা ভুল কিংবা একটা সত্যি দিয়ে কখনোই একটা মানুষকে পুরোপুরি চেনা যায় না। তোর মনকে প্রশ্ন কর তোর মন কী চায়! তুর্যকে নিয়ে আমি এতগুলো কথা বললাম তার এক্সট্রা কোনো রিজন নেই। তুর্যর পরিবারের তিথি ও ওর মা ব্যতীত তুর্য আর ওর বাবা ভীষণ ভালো মানুষ। ওর বাবা নিজে এসে মেয়ে ও স্ত্রীর কর্মকাণ্ডের জন্য তোর বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে গেছে। অত বড় মানুষটার কি দায় ছিল ক্ষমা চাওয়ার? কিন্তু চেয়েছেন। কারণ তার মানবতা আছে। তুর্য ওর বাবার মতোই হয়েছে। তাই ওর মা আর বোনের কীর্তি দিয়ে আমি ওকে বিচার করিনি।“
একটু থেমে তিনি আবার বলেন,
“তুর্য বাসায় এসেছে তুই আসার প্রায় কিছুক্ষণ পরই। ওই আমায় সব বলেছে। ও তোর সাথে কিছু কথা বলতে চায়। আমি ওকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।“
তিনি চলে যাওয়ার আগে মেহুর দিকে তাকিয়ে বলেন,
“তুমি রুমেই থেকো।“
“জি আন্টি।“
রেহেনা বেগম রুম থেকে বের হয়ে তুর্যকে পাঠিয়ে দেন। তুর্য অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে পরীর সামনে এসে দাঁড়ায়। পরীর চোখে তখনও পানি টলমল করছে। তবুও পরী চেয়ে আছে তুর্যর মুখের দিকে। তুর্য ঠোঁট কামড়ে ধরে পরীর দিকে তাকায়। অদ্ভুত বিষয়! তুর্যর চোখগুলোও টলমল করছে। মেহু দুজনকে কথা বলার স্পেস দিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়।
সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে এসেছে প্রায়। বৃষ্টিও থেমে গেছে অনেকক্ষণ। তবে শীতল বাতাস এখনো পুরো রুমে চলাচল করছে। পরীর ভেজা চুলগুলো বেয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই পরীর। সব ধ্যান শুধু এখন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির দিকে।
তুর্য আবারও মাথা নিচু করে বলে,
“আমি সত্যিই জানতাম না তুমি আমায় ভালোবাসো। কখনো বলোওনি আর বুঝতেও দাওনি। আমি যদি একবারের জন্যও বুঝতে পারতাম তাহলে কখনোই তোমাকে এভাবে হার্ট করতাম না। বিশ্বাস করো, আমি চেয়েছিলাম তুমি আসার পর সবটা বলেই তোমায় এই ড্রামাটা করব। কিন্তু তুমি আসার আগেই রিনি এসে পড়েছিল। তাই কিছু বলতে পারিনি তোমায়। পরশু রিনির বিয়ে। ভেবেছিলাম আমার পাশে অন্য কাউকে সহ্য করতে না পেরে অন্তত ফিরে আসবে। কিন্তু ও ওর জায়গায় অনড়। আর যখন জানলাম তুমি আমায় ভালোবাসো তখন সত্যিই আমি হতভাগ। নিজেকে এতবেশি ছোট আর অপরাধী মনে হচ্ছে যে তোমার চোখের দিকেও তাকাতে পারছি না আমি। আমি সবকিছুর জন্যই মাফ চাইছি তোমার কাছে। তোমাকে প্রয়োজন হিসেবে ব্যবহার করার ইনটেনশন আমার কখনোই ছিল না পরী। তুমি প্রান্তকে বিয়ে করতে চেয়েছ। আমার ওপর রেগেই এই সিদ্ধান্ত নাও বা ভেবে! শুধু বলব, তোমার যেটা ভালো মনে হয় তুমি সেটাই করতে পারো। তবে আমায় ভুল বুঝে থেকো না প্লিজ।“
কথা বলতে বলতেই তুর্যর গলা ধরে আসছিল। পরীর সামনে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তিটুকুও বোধ হয় বিসর্জন যাচ্ছিল। তাই তো নিজের কথাগুলো শেষ করেই একটাবারও পরীর পানে না তাকিয়ে চলে যায়।
পরী চোখের পানি মুছে বিছানার ওপর বসে পড়ে। মেহু রুমে এসে পরীর পাশে বসে। পরীর কাঁধ জড়িয়ে ধরে বলে,
“তুর্য ভাইয়াকে মাফ করে দে প্লিজ।“
পরী দু ফোঁটা চোখের পানি ফেলে বলে,
“নিজেকে বড্ড বেশি হেল্পলেস মনে হচ্ছে এখন।“
“আমি জানি। কিন্তু রাগের বশে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিস না পরী। তোর কাছে এটাই আমার অনুরোধ। প্রান্ত ভাইয়াকে বিয়ে করলে না তুই হ্যাপী হবি আর না প্রান্ত ভাই। সংসারে অশান্তি লেগেই থাকবে। যা থেকে যেকোন খারাপ কিছু হতে পারে। তুই বুঝতে পারছিস পরী?”
“আমি এতবেশি অসহায়বোধ হয়তো আগে কখনোই করিনি রে!”
তিথি জ্বরে বিছানা থেকেই উঠতে পারছে না। জ্বরের ঘোরে আবোলতাবোল বকছে। প্রান্তকে দেখার বায়না করে যাচ্ছে অনবরত। মেয়ের অসুস্থতায় না পেরে তুর্যর বাবা প্রান্তর বাড়িতে যায়। তুর্যর পরিবারের সাথে প্রান্তর পরিবারের সম্পর্ক আগে থেকেই ভালো। তাই তাকে দেখে প্রান্তর মা খুশি হয়ে বলেন,
“আরে ভাই এতদিন পর বাড়িতে আসলেন। আজকাল তো আপনাদের কোনো খবরই নেই।“
তিনি চিন্তিত হয়ে বলেন,
“ব্যস্ত সময় কাটছে রে বোন!”
“আপনাকে এমন চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন? কোনো সমস্যা?”
তিনি লম্বা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলেন,
“সমস্যার তো শেষ নেই। প্রান্ত কোথায়?”
“ও তো বাহিরে।“
“ওকে একটু দরকার ছিল। বাসায় আসলে একটু আমার বাড়িতে যেতে বলিয়েন।“
“কোনো সমস্যা হলে ভাই আমাকে খুলে বলেন।“
তুর্যর বাবা বেশ ইতস্ততবোধ করেন। তা বুঝতে পেরে প্রান্তর মা বলেন,
“কোনো সঙ্কোচ ছাড়াই বলে ফেলুন ভাই। কোনো সমস্যা থাকলে সেটাও বলেন।“
“কী আর বলব বোন! মেয়েটা তো প্রান্তর জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে।“
“তিথি? তিথি প্রান্তকে পছন্দ করে?”
“শুধু পছন্দ? কী কী যে করে ফেলেছে। অন্ধ হয়ে গেছে ভালোবাসার পাগলামিতে। মা-মেয়ের কিছু কর্মে তো লজ্জায় শেষ আমি।“
“তিথি তো কখনো আমায় কিছু বলেনি।“
“আমরাও জানতাম না আগে।“
“কিন্তু ভাই আমি যতটুকু জানি প্রান্ত পরীকে পছন্দ করে।“
“সমস্যা তো এখানেই রে বোন।“
“আচ্ছা আমি প্রান্তর সাথে এই বিষয়ে কথা বলব। এখন আমি ওকে ফোন করে বলে দিচ্ছি আপনাদের বাসায় যেতে।“
“ঠিকাছে।“
.
.
রাত ৮:২০ মিনিট
প্রান্ত একাই এসেছে পরীদের বাসায়। পরীর সাথে একা কথা বলতে চায়। পরীর মানসিক অবস্থা ভালো নয় এটা রেহেনা বেগম জানেন। কিন্তু পরীর বাবা বা প্রিয়ম এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে তিনি কথা না বাড়িয়ে পরীর সাথে কথা বলতে দিতে রাজি হোন। তবে একটু অবাকও হোন প্রান্তকে একা আসতে দেখে। তিনি ভেবেছিলেন প্রান্ত হয়তো পরিবার নিয়েই আসবে বিয়ের কথা বলতে।
পরী আর প্রান্ত মুখোমুখি বসে আছে। পরীর দৃষ্টি মেঝেতে। আর প্রান্তর দৃষ্টি আড়ষ্ট হয়ে বসে থাকা সামনের পরীর দিকে। কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই প্রান্ত স্পষ্টভাবে বলে,
“তুমি তুর্যকে ভালোবাসো?”
পরী অবাক হয়ে ভ্রু বাঁকা করে তাকায় প্রান্তর দিকে। প্রান্তর মুখের ভাবমূর্তি দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। প্রান্ত নিজেই বলে,
“পরী আমি এত বোকা নই! যে মেয়েটা দুদিন আগেও বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে সেই মেয়েটা আজ হঠাৎ করেই নিজে বিয়ের কথা বলছে। এর পেছনে কোনো কারণ ছাড়াই? আমি জানতাম না তুমি তুর্যকে ভালোবাসো। জানার চান্সও ছিল না তুমি না বললে। আজও জানতাম না যদি তখন তোমার পিছনে আসা তুর্যকে না দেখতাম। তুর্য আমায় নিজেও তখন কিছু বলেনি। কিন্তু পরিস্থিতি আমায় যা বোঝার বুঝিয়ে দিয়েছে। তুমি আমায় ভালোবেসে বিয়ে করতে চাইলে আমি পরিবারসহই আসতাম আজ। তুমি এখন একটা ঘোরের মধ্যে আছো। সময় নাও তুমি। এরপর যেই ডিসিশন নেবে সেটাই মেনে নেব। তুমি যদি তুর্যকে ভালোবেসে থাকো তাহলে আমি কখনোই তোমার পথের কাঁটা হব না। আর যদি তুমি সজ্ঞানে আমায় বিয়ে করতে চাও তাহলে এই বিয়ে হবে। কোনো জোরজবরদস্তি নেই ভালোবাসায়!”