' শান্তা ওর হাতে আপনার নাম লিখেছে ধূসর ভাই। ও কেন লিখবে আপনার নাম? আপনার নাম শুধু আমি লিখব,আর কেউনা।'
পিউয়ের গাল ভিজে চুপচুপে। ঘন পাপড়ি বেঁয়ে পানি পরছে এখনও।
দুরুদুরু বুক কাঁ*পে। ভেতরটা ছটফটায়। উদগ্রীব,ব্যকুল চোখদুটো সম্মুখের লম্বাচওড়া মানুষটার মুখমন্ডলে। এই যে সে কাঁ*দলো, অনেক শোকে হা-হুতাশ করল, এসব কী ধূসর ভাই কে পারল ছুঁতে?
কাজ ফেলে ছুটে এলেন তারা। জিজ্ঞাসা নিয়ে সাথে এলেন বাকীরাও। মিনা বেগম শুধালেন,
' কী হয়েছে?'
' ওনারা এসে গেছেন। '
এক বাক্যে তটস্থ হলো সবাই। বসে থাকা সকলে তৎপর উঠে দাঁড়াল।
সাদিফ ভেজা তোয়ালে চেয়ারের হাতলের ওপর রাখল। হাত দিয়ে চুল ঝাড়তে ঝাড়তে এসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়াল। পড়নে কালো ট্রাউজার শুধু। উদাম ফর্সা গা বেয়ে পানি পরছে এখনও।
মৈত্রী কাঁ*দছে। চকচকে অশ্রুতে গাল ভেজা। জীবনের এতগুলো বছর কেটেছে,অসংখ্য ছেলের থেকে পেয়েছে প্রেমের প্রস্তাব। কখনও ফিরে তাকায়নি অবধি। অথচ এই প্রথম বার কাউকে ভালো লাগল,ভালোবাসল,কিন্তু মানুষটা রইল অধরা।
শান্তা ভ্রুঁ তুলে বলল ' দু-হাজার কম দিলো?'
' তাইতো দেখছি।'
' কত্ত বড় ধরিবাজ! ঠকালো আমাদের। দেখাচ্ছি মজা!'
সে তে*ড়ে যেতে নিলে পুষ্প থামিয়ে দিল। টেনে ধরে বলল
' যাসনা! এখন বললেও বিশ্বাস করবেনা।
পুষ্পর সরু নাক লালিত। একটু পরপর ফুলছে কান্নায়। ঠোঁটদ্বয় চেপে রেখেছে। মলিন চেহারা আর ভেজা দুটো চোখ চেয়ে আছে গেইটের দিকে। যেখান থেকে এইমাত্র গত হলো সৈকতদের গাড়ি। পুষ্পর চোখ ভরে ওঠে ফের।
পুষ্পর সঙ্গে সেই লুকোচুরি, প্রেম -প্রেম চোখাচোখি পর্যন্ত হয়নি। মেয়েটারও যে মন খা*রাপ! সেই যে জানলা দিয়ে বাইরে চেয়েছে,আর ফেরেনি কোনও দিক। ধূসর ভাইয়ের অন্ধকার চেহারা প্রভাব ফেলেছে ওর মনেও।
পুষ্পর চোখ,মনোযোগ সেদিকে সরতেও পারল না,চট করে ওকে ঘুরিয়ে কাছে টেনে নিল । মেয়েটা চোখ বড় বড় করে তাকায়। শরীর শিহরিত হয় ইকবালের বুকের সঙ্গে মিশে।
' আই লাভ ইউ জান। তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচব না। বাঁচতে হলে একসঙ্গে বাঁচব,ম*রতে হলে একসঙ্গে মর*ব। আমাকে ছেড়ে যেওনা, প্লিজ জান।'