লেখক নাঈমা হোসেন রোদসী

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১১

উত্তাল বাতাসের ধাক্কায় জামা কাপড় তাল মিলিয়ে উড়ছে। চুলগুলো মুখ ঢেকে দিচ্ছে বারংবার, তিন চার সরিয়ে দিয়েছিলো প্রানেশা। এখন আর বলছেনা, নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে টানটান হয়ে তাকিয়ে আছে সে। সকাল বাজে আটটা। দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ায় চোখের পাতা থেকে নিদ্রা বিদায় নিয়েছে। হাত মুখটা ধুয়ে এক ড্রেসেই জানালার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১২

এক হাতে প্রানেশাকে জড়িয়ে আরেক হাত পকেটে গুঁজে হাঁটছে সুফিয়ান। প্রানেশা বেজায় খুশি। এক্সাইটমেন্টে তার হাত পা কাপছে। অনলাইন, ম্যাগাজিন, টিভি নিউজে বিভিন্ন জায়গায় নুসা লেম্বগান আইসল্যান্ডের সৌন্দর্যের বিস্তারিত শুনেছে। বিশ্বাসই হচ্ছেনা তার, যে আজ সেও এই জায়গা ঘুরবে, হাত দিয়ে ছুয়ে দেবে।

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১৩

প্রানেশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বসে আছে সুফিয়ান। এই পনেরো মিনিট যাবৎ অনবরত হিচকি তুলে কান্না করেছে প্রানেশা। এখন মনে মনে নিজেকেই বকছে সুফিয়ান। প্রানেশার ওয়াটার ফোবিয়া আছে৷ এই কথাটা সুফিয়ানের মনে ছিলো না। নিজের প্রতি এত রাগ কখনো লাগেনি যতটা আজ লাগছে।

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১৪

মেঘ জমতে জমতে ঘন এক আস্তরণ ফেলেছে আকাশের বুকে ৷ হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। নিকষ কালো আধার জাপটে ধরেছে আলোকে ৷ যেনো কোনোভাবেই আলোকে পৃথিবীর বুকে যেতে দেবেনা। আলো প্রাণপণে চেষ্টা করছে বিধায় এখন অব্দি হালকা আলোর রেশ দেখা যাচ্ছে।

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১৫

আপন মানুষের হঠাৎ বদলে যাওয়া আমরা কখনোই মেনে নিতে পারিনা। আমরা ভরকাই, চমকে যাই, হতবাক হই। আর তা যদি নিজের সবচেয়ে কাছের মানুষ ‘স্বামী ‘ নামক মানুষটি৷ তাহলে, আঘাতের পরিমাণ হয় আরও দগদগে।

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১৬

‘প্রাণ, যদি শোনো। আমি একজন খুনী, তাহলে তুমি কী আমায় ঘৃণা করবে!’ কথাটা ভীষণভাবে আকুতিভরা টলটলে শোনালো প্রানেশার কানে৷ প্রানেশা সুফিয়ানের ঠিক বাম পাশে হাঁটুতে মাথা দিয়ে নির্বিকার ভঙ্গিতে বসে ছিলো। খুনের কথা শুনে প্রানেশার হয়তো এই মূহুর্তে আতংকিত হয়ে চেচামেচি করে ওঠার কথা অথচ সুফিয়ানের মায়া চোখের উপর

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১৭

সেসময়টা ছিলো খুব প্রাণবন্ত, জীবন্ত । আমরা সবাই মিলে ট্যুরে যাওয়ার প্ল্যান করলাম। ফায়েজ বললো সিঙ্গাপুরের কথা, জয় বললো লন্ডন, কিন্তু আমি আর ইভানান ঠিক করলাম দেশের ভেতরে কোথাও ঘুরার। ফায়েজ বললো ওর নানা বাড়িটা খুব সুন্দর। সেখানে পুরনো জমিদার বাড়ি, একটা লেক, একটা পার্ক আর জিন বাড়ি

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১৮

কোকিলপুর ‘ গ্রামের থেকে সুফিয়ান ফিরেছে আজ এক মাস। এই এক মাসে সুফিয়ান প্রতিটি নিঃশ্বাস নেয়ার সময় প্রানেশাকে মনে করেছে। গভীর ভাবে উপলব্ধি করেছে ওই অচেনা মেয়েটাকে ছাড়া শান্তিমতোন নিঃশ্বাস নেয়া সম্ভব না। মেয়েটার ওই ভেজা ঠান্ডা পবিত্র মুখটা প্রতি রাতেই সুফিয়ান স্বপ্ন দেখে।

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ১৯

‘এমন হাসছিস কেনো তুই? ‘ প্রানেশার মা মিসেস আরা খাবার বাড়তে বাড়তে প্রশ্ন করলো প্রানেশাকে ৷ প্রানেশা তখন মগ্ন তার মনের মানুষের চিন্তায়। আজ ছয়মাস যাবৎ সেই অজানা লোকটার সাথে কথা বলছে সে৷ কিছুক্ষণ আগেই ফোন দিয়ে পাগলামো কথাবার্তা বলে প্রানেশাকে হাসালো৷ প্রাণেশার এখন একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে যেনো।

অঙ্গারের নেশা | পর্ব – ২০

লাইব্রেরির একটা কোণায় বই হাতে বসেছিলো রেয়ান। মন দিয়ে প্রতিটা লাইনে ডুবে আছে। টেবিলের সামনে দুই জোড়া জুতোআলা পা দাঁড়াতেই উপরে মাথা তুললো রেয়ান। দেখা গেলো নীল চোখের পুরুষকে, অর্থাৎ ইভানান। চোখে প্রতিদিনের মতোন চশমা নেই।