লেখক মৌরি মরিয়ম

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩১

কতক্ষণ পর তিতির ক্লান্ত হয়ে মাটিতে পা রাখলো। মাটিতে ভর দিতেই তিতির টের পেল ও সব শক্তি যেন হারিয়ে ফেলেছে, দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। মুগ্ধর কোমরটা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঢলে পড়লো মুগ্ধর বুকের উপর। নিঃশ্বাস পড়ছিল ঘন ঘন। মুগ্ধ তিতিরের মুখটা ধরে উপরে তুলল তারপর নিজের ঠোঁট দিয়ে...

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩২

সেই পাগলী তিতির আর আজকের তিতিরের মধ্যে অনেক পার্থক্য। ৪ বছর পর্যন্ত সত্যি কোনো পার্থক্য ছিল না। গত সাত মাসে যেন হঠাৎই বড় হয়ে গেল। তিতির ডানদিকে কাত হয়ে নিজের হাতের উপর মাথা শুয়ে আছে। এই বিছানায় ওর বউ হয়ে শোবার কথা ছিল, আর আজ অসুস্থ হয়ে শুয়ে আছে।

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩৩

হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠতেই মুগ্ধর ভাবনায় লাগাম পড়লো। উঠে গিয়ে দরজা খুলল, মা এসেছে। ভেতরে ঢুকেই জিজ্ঞেস করলো, -“তিতির কোথায়?” -“আমার ঘরে।” মা সোজা মুগ্ধর ঘরে চলে গেল। মুগ্ধ দরজা লাগিয়ে ঘরে ঢুকতেই মা বলল, -“একি অবস্থা হয়েছে মেয়েটার!” মা বিছানায় তিতিরের পাশে বসেছে।

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩৪

কাঁদতে কাঁদতে তিতিরের নিঃশ্বাস আটকে যাচ্ছিল। বার বার মনে একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছিল যে, মুগ্ধকে আর ও পাবেনা। আর ঠিক তখনই ওর চোখে ভেসে উঠছিল মুগ্ধর সাথে কাটানো দিনগুলো, ওদের সব স্পেশাল মুহূর্তগুলো! কত স্বপ্ন, কত প্ল্যানিং, কত কথা দেয়া নেয়া সব এভাবে শেষ হয়ে যাবে?

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩৫

প্রত্যেকটা মানুষই সবকিছুর একটা নির্দিষ্ট স্টক নিয়ে পৃথিবীতে আসে। সেই স্টক শেষ হয়ে গেলে যেমন আর পাওয়া যাবে না তেমনি শেষ না হলেও মৃত্যুর আগে যেভাবেই হোক শেষ হতে হবে। তিতিরের সুখের স্টক শেষ বোধহয়। আর কষ্টের স্টকে তো হাতই পড়েনি এতদিন। ছোটবেলা থেকে কেঁদেছে অনেকবারই তবে সেটা শুধুই সুখে,আবেগে।

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩৬

সবসময় এরকমই হয় নিজ থেকে তিতির কখনোই এগিয়ে আসে না। কিন্তু মুগ্ধ যখন একবার শুরু করে দেয় তিতির আর ছাড়তেই চায়না। নেশা হয়ে যায় ওর। বুদ্ধদেব গুহ লিখেছেন, ‘মধুতে যে মরে তাকে বিষ দিয়ে মারতে নেই।’ কোন বইতে যেন লিখেছেন? ‘সবিনয় নিবেদন’ নাকি ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ তে?

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩৭

তিতির চোখ মেলে দেখলো গাড়িতে ও একা। মুগ্ধ নেই, গাড়ি একটা শপিং মলের সামনে পার্ক করা। এটা কোথায় বুঝতেও পারছে না। তিতির মোবাইল বের করে মুগ্ধকে কল করলো, -“হ্যালো, আমার ঘুমকুমারীর ঘুম ভেঙে গেল?” -“হুম। আপনি আমাকে একা রেখে কোথায় চলে গেছেন?”

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩৮

মুগ্ধ বাথরুম থেকে বের হয়ে নতুন কেনা টাওয়াল টা নিয়ে সোজা বারান্দায় চলে গেল। ডিভানে বসে শার্টটা খুলে ছুড়ে ফেলল ফ্লোরে। টাওয়াল টা পড়ে প্যান্ট টা খুলে সেটাও ছুড়ে ফেলল। রাগে নিজের চুল নিজেই ছিঁড়লো। তান্নাকে পেলে এখন খুন করতো ও।

প্রেমাতাল | পর্ব – ৩৯

-“উফ, এবার নামাও। আমি টায়ার্ড হয়ে গিয়েছি।” কোনমতে হাসি থামিয়ে তিতির একথা বলল। মুগ্ধ ওকে তালগাছ থেকে নামিয়ে ওভাবেই পা ভাজ করলো। তিতির সেই ভাজ করা পায়ে হেলান দিয়ে বসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, -“তালগাছে উঠালে তুমি আর টায়ার্ড হলাম আমি।” -“স্বাভাবিক, কারন তুমি অতিরিক্ত হেসেছো।” তিতির বলল, -“গরম লাগছে।”

প্রেমাতাল | পর্ব – ৪০

সকাল সকাল গাড়ি ছুটে চলেছে গোয়াইনঘাটের পথে। শহর ছেড়েছে অনেকক্ষণ। গোয়াইনঘাট থেকে নৌকায় করে যাবে বিছনাকান্দি। মুগ্ধ ড্রাইভ করতে করতে বলল, -“একটা সুপুরুষ ছেলের সাথে কিস করতে করতে একটা মেয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারে আমি আগে জানতাম না। তাও আবার দাঁড়ানো অবস্থায়!” তিতির মন খারাপ করে বলল, -“আর কত পচাবে?” -“আজীবন