কলেজে অরুনার সাথে দেখা হলেই অরুনা হেসে জিজ্ঞেস করত ওর কথা। অরুনা দিনে দিনে অভির চালচলনে পরিবর্তন দেখে মনক্ষুণ্ণ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে অরুনার অভির ওপরে খুব রাগ হয়, কিন্তু অভির মেজাজ দেখে কিছু বলে না।
একদিন অভি অরুনাকে বুঝাতে চেষ্টা করে, “দ্যাখ ভাই, আমি অরুনিমার পেছনে পরে নেই, চিন্তা করিস না।”
অরুনা ওর দিকে প্রশ্ন ভরা চাহনি নিয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “তুই নিজেকে জিজ্ঞেস করে উত্তর দিচ্ছিস ত?”
অরুনার চোখের চাহনি যেন অভিকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিল, “তুই বুকের ওপরে হাত রেখে আমাকে উত্তর দে, আমি বিশ্বাস করে নেব।”
অভি পারেনা বুকে হাত রেখে উত্তর দিতে, তাও অরুনাকে শান্ত করার জন্য বলে, “দ্যাখ আমি পরীকেই ভালবাসি। পরীর প্রতি আমার ভালবাসায় কোন ভাটা পরেনি। আমি শুধু এই খেলার শেষ দেখতে চাই, আমি জানতে চাই ওদের মাথায় কি চলছে।”
নিতম্ব বেশ পুরুষ্টু কিন্তু একটু ছোটো, বয়সের সাথে সাথে বেড়ে উঠবে। ঊর্ধ্বাঙ্গে হাতকাটা বুকে আটা সাদা রঙের গেঞ্জি। নরম বুকের সাথে লিপ্টে আছে আর সুগোল বক্ষ দুটি কে যে ফুলইয়ে দিয়েছে। দুই বক্ষের যেন ছোটো দুই শৃঙ্গ এবং তার ওপরের নুড়ি পাথরের মতন অঙ্গটি বেশ ভালো ভাবে বোঝা যাচ্ছে। মানস চক্ষে অভি দেখতে পায় যে ওর ঊর্ধ্বাঙ্গে ওই গেঞ্জির নিচে কোন অন্তর্বাস নেই।
ধরা গলায় বলে ওঠে, “আমি পাপ করেছি পরী।”
পরী বিশ্বাস করতে পারে না অভির কথা, আঁতকে ওঠে, “কি?” পরী ওর চুলের মুঠি ধরে অভির মুখ ওপর দিকে করে, সোজা চোখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে, “কি বলতে চাইছ?”
অভির দুগাল দিয়ে চোখের জল গড়িয়ে পরে, চাপা সুরে বলে,”অরুনিমা…”
পরী যেন নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারেনা। চুলের মুঠি ছেড়ে দিয়ে চিবুকে আঙ্গুল স্পর্শ করে জিজ্ঞেস করে, “অরুনিমা কি? কি করেছ ওর সাথে?”
বুদ্ধিমতী পরী মায়ের সামনে মনের খুশি লুকিয়ে মাথা নিচু করে হেসে অভিকে অভিবাদন জানায়, “কেমন আছো অভিমুন্যু? পড়াশুনা ঠিকঠাক চলছে ত?”
মাথা নত করে অভিবাদন জানায় অভি, বুকের মধ্যে খুশির বান ডেকেছে, কিন্তু মায়ের সামনে ঠিক করে প্রকাশ করা যাচ্ছে না, দুজনেই দুজনার মনের অবস্থা বুঝে নিয়ে মুখ টিপে হাসে। সিঁড়ি দিয়ে চড়ার সময়ে অভি পরীর দিকে তাকায়। পরীর প্রিয় পোশাক, শাড়ি, শাড়ি ছেড়ে পরী যেন আর কিছু পড়তে জানে না। আকাশী রঙের শাড়িতে পরীকে বেশ সুন্দরী দেখাচ্ছে। সিঁড়ি চড়ার সময়ে অভি লক্ষ্য করল যে পরীর পায়ে রুপোর নুপুর, হাঁটার সময়ে মৃদু ছনছন আওয়াজ করছে আর সেই আওয়াজ যেন অভির বুকে এসে মাতিয়ে তুলছে।
প্লেনে অরুনা আর পরী পাশাপাশি বসে, করিডোরের অন্য দিকে অভি। অরুনা জানালার ধারের সিটে বসে হাতের ওপরে মাথা রেখে একমনে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে। পরী একটা সুন্দর সবুজ রঙের সালোয়ার পড়েছিল। পরী প্রথম বার প্লেনে চাপে কিন্তু সেই উৎসাহ ছাপিয়ে ওর মনের ভেতরে অরুনার চিন্তা বেশি করে ভর করে। সকালের খাবার দিয়ে যায় এয়ারহোস্টেস, পরী খাবারের বহর দেখে অভির দিকে তাকায়। অভি ওকে জানায় যে ও এক্সিকিউটিভ ক্লাসে ভ্রমন করছে।
অভি কাপড় বদলে নিয়ে বিছানার ওপরে ডায়রি খুলে বসে পরে সারা দিনের খরচ খরচা লেখার জন্য। পরী জামা কাপড় বদলে নেবার জন্য বাথরুমে ঢুকে পরে। কিছু পরে পরী বাথরুম থেকে বেড়িয়ে আসে আর ওকে দেখে অভির সব অঙ্ক গুলিয়ে যায়।
পরী ওর দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “মনে আছে প্রথম রাতের কথা আর প্রথম ঝগড়া।”
অভির মুখ হাঁ, পরীর পরনে গোলাপি রঙের পাতলা রাত্রিবাস। যদিও পরনের কাপড় গোড়ালি পর্যন্ত কিন্তু ওর কাঁধ অনাবৃত আর ওর পেলব দেহের সাথে লেপটে থাকে কাপড়। প্রেয়সীর শরীরের প্রত্যেক বাঁক ওর লুব্ধ চোখের সামনে উন্মুক্ত যেন, উন্নত বক্ষের মাঝে ছোটো নুড়ি পাথর শোভা পায়। সুগোল বক্ষ জোড়া যেন হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকছে। বক্ষ বিভাজনের অধিকাংশ অনাবৃত আর ঘরের মৃদু আল যেন ফর্সা মসৃণ ত্বকের ওপরে পিছলে যাচ্ছে।
অভি বিছানা থেকে নেমে পরীর পায়ের কাছে বসে পরে, রাত্রিবাস নিচের থেকে টেনে নামিয়ে দেয়। পরী শরীরকে আলতো করে মুচরে, অভিকে সাহায্য করে গায়ের থেকে কাপড় খানি খুলে ফেলতে। অভির চোখের সামনে পেটের ওপরে শুয়ে প্রেমের আগুনে থরথর কাপে প্রেয়সীর উন্মুক্ত দেহ পল্লব। পা জোড়া এঁকে ওপরের সাথে শক্ত করে চেপে ধরা, মনে হয় যেন মাঝখান থেকে একটি ঘাসের পাতাও যেতে পারবে না। প্রেমের কাপনে বানংবার দেহের ওপরে ঢেউ খেলে যায়। অভি এই প্রথম বার প্রান প্রেয়সীকে জন্মদিনের পোশাকে দেখে। এই কামার্ত দেহ পল্লব যে কোন মুনি ঋষির ধ্যান ভঙ্গ করে দিতে পারে।
অভি ঘুম চোখ রগড়ে সুপ্রতিমদাকে জিজ্ঞেস করে, “পরী কোথায়?”
সুপ্রতিমদা, “শালা, সারা রাত ধরে তুমি তোমার পেরেক গুঁজে যাবে আর ভাবছ যে সকাল বেলায় ও তোমার পাশে থাকবে? বোকা… ওঠ…”
মাথা চুলকে সুপ্রতিমদার দিকে হেসে বলে, “বোকা… তুই যেন হাতে নিয়ে নাড়াচ্ছিলি, তুই কি পেরেক গুঁজিসনি মাখনের মধ্যে?”
দুজনেই হেসে ফেলে গত রাতের কথা ভেবে। সুপ্রতিমদা বলে, “পাঁচটা মেয়েই সকালে উঠে পরে, হাঁটতে গেছে স্পিতির দিকে।”
অভির গায়ে কোন কাপড় নেই, সুপ্রতমদার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। সুপ্রতিমদা মেঝে থেকে অভির প্যান্ট তুলে ছুঁড়ে মারে অভির মুখের ওপরে। শয়তানি হেসে বলে, “উঠে পর এবারে বোকা… তাড়াতাড়ি তৈরি হয়েনে, স্রে আটটা বাজে, এতক্ষণে মনে হয় মেয়েরা এসে গেছে।”
পরেরদিন সকাল সকাল দুজনে তৈরি হয়ে পরীর গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা হয়ে যায়। দিদার বারি পৌছাতে প্রায় ঘন্টা তিনেক লেগে যাবে। পরী একটা লম্বা সাদা রঙের স্কার্ট পরে আর সাদা ফ্রিল শার্ট। একে ফর্সা তাঁর ওপরে সাদা রঙের পোশাকে ঠিক যেন দুধে স্নাত এক অপরূপ মূর্তি। কোলকাতায় গ্রীষ্ম কালে বড় ঘাম দেয়, তবে বাস চলার দরুন হাওয়ার জন্য কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়। ওরা সেই বেড়ানোর গল্পে মেতে ছিল, লাহুল স্পিতির গল্প। পরী দুষ্টুমি করে ওকে রিতিকার স্নানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে খেপিয়ে তোলে।
দিদার বাড়িতে অভিদের বেড়ানোর দিন ফুরিয়ে আসে। বাবা মা রবিবার সকালের প্লেনে বম্বে থেকে ফিরে আসছে। শনিবার বিকেলের মধ্যে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। কোলকাতা ফিরে যাবার ঠিক আগেরদিন, দিদা ঠাকুর ঘরে বসে সন্ধ্যে প্রদিপ দিচ্ছিলেন ঠাকুর কে। অভি চুপিচুপি এসে দিদার পেছনে বসে পরে। দিদা খুব মন দিয়ে একটা ধার্মিক বই পড়ছিলেন। সন্ধ্যে প্রদিপের আলোয় দিদার চোখের কোল চিকচিক করতে দেখে। বুকের মাঝে মোচর দিয়ে ওঠে অভির, দিদার ব্যাথা ভরা চোখ দেখে, ছোটো মেয়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ব্যাথা। পুজো শেষে দিদা বুঝতে পারেন যে অভি ওর পেছনে বসে আছে। ঘাড় ঘুরিয়ে অভির দিকে স্নেহ সুলভ দৃষ্টি তে তাকিয়ে দেখলেন।