-“এত হাসছেন কেন, শুনি?” -“এমনি।” -“এমনি না, আপনি খুব খারাপ। খালি মনে মনে কি যেন ভাবেন আর হাসেন।” মুগ্ধ একথার পর আবার হাসলো। তিতির এবার রেগেমেগে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, -“আপনি আসলেই খুব খারাপ!” তারপর হাটা শুরু করলো। মুগ্ধ দৌড়ে ওকে ধরলো। পাশাপাশি হাটতে হাটতে বলল, -“সরি সরি, আর হাসবো না।
মুগ্ধ-তিতির আলো ফুটতেই মানে ৫ টার দিকে রওনা দিয়েছিল। ৩ ঘন্টা হাটা আর প্রায় ১ ঘন্টা বাস জার্নির পর ওরা থানচি পৌঁছেছিল। থানচি গেস্ট হাউজে ঢুকেই মুগ্ধ রিসিপশনের দিকে গেল। পিছন পিছন গেল তিতির। ঘড়ির কাটা ছিল তখন ৯ টার আশেপাশে।
গেস্ট হাউজের বিল মিটিয়ে, আর্মি ক্যাম্পে এন্ট্রি করে তারপর নৌকার ঘাটে গেল ওরা। নৌকা খুঁজছিল মুগ্ধ। হঠাৎ কোত্থেকে এক ছেলে দৌড়ে মুগ্ধ দাদা মুগ্ধ দাদা করতে করতে এল। তাকে দেখেই মুগ্ধর সেকি আনন্দ। তিতির বুঝলো না এই পাহাড়ী ছেলেটার সাথে এমন কি সম্পর্ক মুগ্ধর! কাছে আসতেই তাকে জড়িয়ে ধরে বলল, […]
গেস্ট হাউজটা আসলে একটা কটেজের মত। চারদিকে ঘিরে আছে একটা বারান্দা। কটেজে মোট ৪ টি ঘর। প্রত্যেকটি ঘরে দুটো করে বিছানা। আর দুই বিছানার মাঝেও অনেক যায়গা। ফ্লোরিং করার প্ল্যান ছিল বাকিদের। কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেল। কোথায় চলে গেল সাফিরা।
আবার এলোযে সন্ধ্যা, শুধু দুজনে। চলোনা ঘুরে আসি অজানাতে যেখানে নদী এসে থেমে গেছে…” গানটা শেষ হতেই তিতির বলল, -“উফফ সত্যি খুব ভাল গান আপনি। আর গানটাও এত জোস। একদম পারফেক্ট এখানে এই পরিবেশে।” মুগ্ধ হাসলো আর খেয়াল করলো তিতিরের ভয়েসটা একটু অন্যরকম হয়ে গেছে। একদম ঘুমে জড়ানো।
পাহাড়ে ওঠাটা যতটা কঠিন ছিল নামাটা আরো বেশি কঠিন মনে হলো তিতিরের। নিচে তাকাতেই ভয় করছে। এত খাড়া পাহাড়! মুগ্ধ বলল, -“আরে এভাবে পা ফেলছো কেন? এত ভয়ের কিছু নেই।” -“ভয়ের কিছু নেই মানে? কোথায় পা ফেলবো সেটাই তো বুঝতে পারছি না।”
পুরাদস্তুর জঙ্গল যাকে বলে! কখনো বাঁশঝাড়, কখনো বিশাল বিশাল নাম না জানা গাছ, কখনো বিভিন্ন রকমের লতা, ছোট বড় পাহাড়! তার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে ঝিরিপথটি। হাটতে হাটতে তিতির খেয়াল করছিল দোলা সাফির সাথে ঝগড়া করছে। ঝগড়ার টপিক কোমড় সমান পানি সাফি ওকে হাটিয়ে পার করিয়েছে।
জলপ্রপাতের পানিতে ভাসতে ভাসতে আর স্রোতের ধাক্কা খেতে খেতে তিতিরের সারা শরীর যেন অসাড় হয়ে পড়ছিল। তিতির পানি থেকে ওঠার কথা মুগ্ধকে বলতে গিয়ে দেখলো কোনো কথাই বলতে পারছেনা। কথা বলার জন্য যে মিনিমাম শক্তিটুকু দরকার তা ওর ওই মুহূর্তে ছিলনা। কিছুক্ষণের মধ্যেই মুগ্ধ বলল, -“এইযে তিতিরপাখি, চলো এবার
মুগ্ধ তিতিরকে না পেয়ে নিজের বাসায় ফিরে এল। ভাল লাগছে না কিছু! সারারাত বাসের ঝাঁকুনি আর তিতিরকে নির্ভয়ে অপলক দেখার লোভ! এই দুটো কারনে ঘুমাতে পারেনি ও। ভেবেছিল বাসায় এসে ঘুমাবে। কিন্তু কিসের ঘুম কিসের খাওয়া। তিতিরকে কিভাবে পাবে সেই চিন্তায় ও অস্থির! যদিও বাসা চেনে কিন্তু কয় তলায় থাকে
তিতির মুগ্ধকে জড়িয়ে ধরার পর মুগ্ধও তিতিরকে ধরলো কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের জন্য। তারপর ছেড়ে দিয়ে বলল, -“এইযে তিতিরপাখি! এবার ফোন নাম্বারটা বলো।” -“01*********” -“আচ্ছা এবার বাসায় গিয়ে ভেজা কাপড় ছাড়ো। আমি বাসায় গিয়ে কল দিচ্ছি।” -“আচ্ছা, কিন্তু একবার শুনেই নাম্বারটা মনে রাখতে পারবেন?” মুগ্ধ নাম্বারটা বলল।