তুলির আজ স্কুল বন্ধ তাই সে ড্রইং রুমে তার প্রিয় কার্টুন দেখছে। তন্দ্রা নীল রঙের লং জামা পড়ে ফ্রেশ হয়ে নিয়েছে। হিজাব করার মাঝেই‚ মিসেস তাহেরা ঘরে এলেন। তন্দ্রার দেরি হচ্ছে বলে তিনি ডাকতে এলেন। টেবিলে খাবারও বেড়ে এসেছেন ম্ব্যের জন্য।
ভার্সিটিতে আজ প্রথম বর্ষের স্টুডেন্টদের নবীন বরণ হচ্ছে। কালো রঙের লং গাউন পড়েছে তন্দ্রা। ইলোরা শাড়ি পড়তে বলেছিল। শাড়িতে খুব একটা কমফোর্টেবল ফিল আসে না তন্দ্রার। তাই সে ইলোরার কালো শাড়ির সাথে মিলিয়ে কালো গাউন পড়ল।
“এভাবে কান্না করলে সবাই ভাববে আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করেছি। এই বিয়েতে তুমি কী খুশি না? কাজী সাহেবকে বলে সব ক্যান্সেল করে দিব?”
বিছানায় কোলবালিশ জড়িয়ে শুয়ে আছে স্বাক্ষর। বারবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছে। রাতের সাড়ে বারোটা বাজতে চলল। স্বাক্ষর বিছানায় শুয়েই এপাশ ওপাশ করছে। ঘুম আসছে না। বউয়ের সাথে সাথে ঘুমও আজ পালিয়েছে। কই বিয়ে করেছে বউ নিয়ে থাকবে বলে। তা না করে দুজনে আলাদা আলাদা ঘরে অবস্থান করছে। মি. ইলিয়াস মাহমুদ কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
“একদম পরীর মতো লাগছে রে তোকে। নোসপিনটা দারুণ মানিয়েছে৷”
“ভাইয়া তো কাল রাত থেকে তোর সাথে দেখার করার জন্য ছটফট করছে।”
শিরিনের কথায় তন্দ্রা লজ্জা পেল। আজ তার বেশ লজ্জা লজ্জা পাচ্ছে। তাকে আরও লজ্জা দেওয়ার জন্য হাসনা বলল‚
”কী দিয়ে জাদু করলি রে ভাইকে?”
স্বাক্ষর তন্দ্রার গালে শব্দ করে একখানা চুমু খেয়ে বলল‚
“অ্যালভিন মনে মন ভাবছে‚ এবার অন্তত অফ যা। তোদের রোমান্স দেখে আমার মতো সিঙ্গেলদের বুকটা তো ফে’টে যায়।”
“চলো ট্রুথ ডেয়ার খেলি সবাই৷”
“আমি এইসব খেলতে পারব না।”
মোবাইল নিয়ে ক্যারম খেলতে শুরু করে স্বাক্ষর। সে বাদে বাকি সবাই রাজি হয়ে যায়৷ সে এখানে বসে আছে এটাই অনেক। শিরিন অনুরোধের স্বরে বলে‚
“প্লিজ ভাইয়া। তুমি তো এইসব খেলা থেকে দূরেই থাক। আজ না-হয় আমাদের সাথে একদিন খেললে।”
তন্দ্রা মুখ ভেংচি কে’টে স্বাক্ষরের পা টিপে দিতে শুরু করল। মিনিট পাঁচেক পর স্বাক্ষর তন্দ্রাকে নিজের কাছে টেনে নেয়৷ কপালে উষ্ণ ওষ্ঠদ্বয় ছুঁয়ে দিয়ে‚ গাঢ় আলিঙ্গনে লেপ্টে রইল দুজনে।
স্বাক্ষরের এমন কথায় সবাই তন্দ্রার দিকে তাকাল। সবাই হয়তো বুঝার চেষ্টা করছে‚ তার সাজগোজের উৎস। এদিকে তন্দ্রা চোখ রাঙিয়ে স্বাক্ষরের দিকে তাকিয়ে রইল। লজ্জায় কারো দিকে তাকাতে পারছে না বেচারি। মিসেস সাহেরা তার অবস্থা বুঝতে পেরে বললেন‚
“আমি ওকে বলেছি‚ রেডি হয়ে থাকতে। মেয়েটাকে নিয়ে একটু বাইরে থেকে ঘুরে আয়৷”