সিরিজ মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ১ | ভালবাসার রাজপ্রাসাদ এর পরবর্তী গল্প

এটি একটি নারীর জীবনের গল্প, এই নারী তার ভালবাসার পাত্রকে হারিয়ে কান্না আর বেদনাকে বুকে বেঁধে জীবনের পথে চলার চেষ্টা করেছে। এই সমাজের কঠিন নিয়মাবলির বন্ধনে এই নারী তার ভালোবাসা হারিয়েছে। এই সমাজ দুটি অজানা অচেনা মানুষকে একসাথে জীবন অতবাহিত করার প্রশ্রয় দেয় কিন্তু যারা একে ওপরকে প্রান দিয়ে ভালবাসে তাদের ভালবাসার মুল্য দেয় না। সমাজ বড় কঠিন, বড় নিষ্ঠুর। এই নারীর জীবনে অনেকে আসে, অনেকে তাকে স্বপ্ন দেখায়, অনেকে তাকে ভালোবাসা দেখায়, কিন্তু সত্যি কি সে তার ভালোবাসা খুঁজে পায়?
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ২ | অন্নপূর্ণা বিসর্জন ১

মহালয়ার দুদিন পরের ঘটনা। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে আমি বাথরুমে দাঁত ব্রাস করছিলাম, ঠিক সেই সময়ে ফোন বেজে ওঠে। বাবু অনেক সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়েন, আর সেদিন বাবু সকাল সকাল বাজারে সেরে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। ফোন যখন বেজে ওঠে তখন বাবু ফোনের কাছেই ছিলেন আর ছোটমা রান্না ঘরে ছিলেন। বাথরুম থেকে আমি ওদের কথা শুনতে পাই। বাবু, “পরীকে কি এই সব কথা জানাতে হবে?”
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ৩ | ম্লান আশার আলো

রোজ রাতে ওর ডায়রি খুলে বসতাম আর ওর হাতের লেখা পড়ে মনে হত যেন ও মার পাসে বসে আমার সাথে কথা বলছে। বুকের মাখে এক নতুন আশার আলো উঁকি দিয়ে ওঠে। ছোটমা আর বাবু আমার হাসি মুখ দেখে খুশি। ওরা ভাবে যে আমি পুরানো কথা ভুলে গেছি, কিন্তু আসল কথা যে আমার বুকে, ও যে ডায়রির মাধ্যমে রোজ রাতে আমার সাথে কথা বলে।
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ৪ | শ্বেত পাথরের মূর্তি

কেউ চলে গেলে কি কারুর জীবন থেমে যায়? পুবালি ছেড়ে চলে যাবার পরে কি অরুন্ধুতির জীবন থমকে গিয়েছিল, না অরুনা আবার ফিরে পেয়েছিল তার জীবন। আমিও মন কে প্রবোধ দেই যে আমার দূর্ভাগ্যের জন্য আজ আমাদের এই দশা। ভাগ্য আমাদের একসাথে এনেছিল এক সময়ে, কিন্তু সেই ভাগ্যের পরিহাসে আমরা দুইজন আজ পৃথক পৃথক পথে চলে গেছিলাম। এই জীবনের পাতায় পাতায় যা লেখা সেটা আমাদের মেনে নিতে হবে। দিন যায়, আমি আমার মন শক্ত করতে চেষ্টা করি। কিন্তু বারে বারে পাপী মন মানে না, বারে বারে তার কথা মনে পরে যায়। দিনে দিনে আমি শুকিয়ে গেছিলাম। ছোটমা বাবু দুজনেই আমার শরীর খারাপ দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন।
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ৫ | সাদা ঘোড়ার রুপকথা

আমি মজা করে বলি, “তোমাদের বয়স হয়েছে, তোমরা এখন ঘুরতে যাও একা একা।” বাবু বললেন, “তুমি এখন আমাদের একমাত্র সন্তান, তোমাকে একা ছেড়ে কি করে যাই?” বাবুর কি গলা ধরে এসেছিল সেই কথা বলার সময়ে, হয়ত হ্যাঁ, ঠিক বুঝতে পারিনি আমি। বাবু, “তুমি যদি আমাদের সাথে না যেতে চাও তাহলে আমরা কোথাও যাবো না।” ডাইনিং টেবিলের আবহাওয়া কেমন ভারী হয়ে ওঠে ঘুরতে যাওয়ার কথা বার্তা নিয়ে। আমি ওকে ছাড়া পাহাড়ে ঘুরতে যাবার ইচ্ছে নেই, ওদিকে বাবু আর ছোটমা আমাকে ছাড়া ঘুরতে যাবেন না।
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ৬ | ভাঙ্গা ধানের শীষ

চারপাশে অসম্ভব রকমের ভিড়। প্যান্ডেলের ভেতরে ঢুকতে যাবে দেবব্রত, ঠিক সেই সময়ে থমকে দাঁড়িয়ে পরে আমার দিকে হাথ বাড়ায়। আমি ক্লাচ থেকে মোবাইল বের করে সুপ্রতিমদাকে ফোন করতে যাই। কিন্তু দেবব্রতর অনুরোধ মাখানো চাহনি দেখে থাকতে পারিনা। দেবব্রত আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে, “আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি, মিতা।”
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ৭ | ভাঙ্গা ধানের শীষ ৪

বাবু, “কি করা যায় বলত? পরী নিশ্চয় লুকিয়ে লুকিয়ে কারুর সাথে যোগাযোগ রেখেছে।” ছোটমা, “একদম বাজে ব্যাপার তাহলে। কিন্তু ও কি করে যোগাযোগ করতে পারে?” বাবু, “আমার মনে হয় ও করেনি। আমি একদিন ওর ফোনের লগ দেখেছিলাম, তাতে ত কোন অন্তর্জাতিক কল ছিলনা।” ছোটমা, “আমি এইসবের মানে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।” বাবু, “আমিও কিছুই বুঝতে পারছিনা এ সব কি?”
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ৮ | পরীর আত্মসমর্পণ

আগস্টে আমি আঠাশ বছরে পা দিলাম। আমি নিজেকে শামুকের খোলে মধ্যে গুটিয়ে নেই, আমার ঘর থেকে খুব বের হতাম। কলেজ শেষ, রান্না ঘর আর আমার ঘর আমার সব কিছু ছিল। বাইরের জগতের সাথে একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ছোটমা বাবু আমার চেহারা দেখে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন। মা চলে যাওয়ার পরে আমি যেন কোন কিছুতে আর খুশি খুঁজে পাইনা। সেই সাদা ঘোড়া আর কোনদিন আমার কাছে ফিরে আসবে না, সেটা আমি ভালো ভাবে বুঝতে পেরে গেছিলাম।
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ৯ | পরীর আত্মসমর্পণ ২

মৈথিলী আমার ব্যাথিত মুখখানি নিজের দিকে তুলে ধরে। ওর সমবেদনার স্পর্শে আমার চোখের পাতা ভিজে ওঠে। আমার মাথা নিজের বুকের ওপরে চেপে ধরে বলে, “কোথায় আছে ও, বলো। আমি সব ব্যবস্থা করে দেব, তুমি চলে যাও। এখানে যা হবে সব আমি সামলে নেব, আমি তোমাকে এই ভাবে পুড়তে দেখতে পারব না।”
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়

মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় | পর্ব – ১০ | সপ্তপদীর বহ্নিশিখা

হিমাদ্রি হেসে বলে, “হ্যাঁ, নিশ্চয়, কেন নয়। আমার কিছু প্রশ্ন আছে, সেগুলোর একটু উত্তর চাই, আর দুজনে পরস্পরকে একটু জেনে নেওয়া ভালো। তাই নয় কি, শুচি? একদিনের দেখায় কি আর মানুষ চেনা যায়।” আমি, “বাড়িতে চলে আসো। ছোটমা বাবু তোমাকে দেখে খুব আনন্দিত হবেন।” হিমাদ্রি, “কেন আমার সাথে একা বের হতে ভয় করছে?” ওর হাসি মজার কোন ভাবাবেগ আমার হৃদয়কে নাড়াতে পারেনা। আমি শান্ত গলায় উত্তর দেই, “না, তবে ছোটমাকে জিজ্ঞেস করতে হবে।”