একটা মানুষ কোন লেভেল এর ফাজিল হলে আর খারাপ হলে তার মেয়েকে ভয় দেখানোর জন্য তার বাবার পাঞ্জাবী মধ্য রাতে নিয়ে বকুল গাছে গিয়ে আটকাতে পারে।আমার বাবার পাঞ্জাবীর দিকেই নজর গেলো উনার।মনে চাইছে মারাত্মক আকারের একটা প্রতিশোধ নিয়ে নেই কিন্তু কিভাবে নিবো সেটাই তো বুঝতে পারছি না।
আকাশে শুভ্র মেঘের ছড়াছড়ি প্রকৃতির উত্তাল হাওয়া বইছে।ছাদে দাঁড়িয়ে আছি বিষন্ন মন নিয়ে।বিহান ভাই ঢাকা যাওয়ার আগে আমার রুমে এসছিলেন আর উনার হোয়াটস এপ এ একটা মেসেজ এসছিলো।মেসেজ টা সাটার টেনেই দেখছিলাম।প্রেয়সী নামে সেভ করা কারো নাম্বার।একটা লাল লাভ স্টিকার পাঠিয়েছিলো সে।
“প্রিয়,, কখনো ভাবিনি তোমার থেকে এমন চমৎকার গিফট পাবো।এই গিফট শুধু গিফট ই নয় আমার জীবনে তোমার আগমনের সূচনা। তোমাকে নিয়ে কত শত বার কবিতা লিখেছি কিন্তু তোমাকে বলতে পারি নি।তুমি আমার সেই অনুভূতি যার উপর রেগে গেলেও অন্য রকম অনূভুতি জাগ্রত হয়।যার রাগ আমার কাছে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
আমার মতো আইলসার কাছে দিয়েছে কাপড় আয়রণ করতে।আমি এমনি তে ভাল একটা পারি না তার উপর কাপড় কিছু হলেই রক্ষে নেই।নিজে তাই ঘুচিমুচি কাপড় পরে ঘুরে বেড়ায়। আমার ড্রেস সব শুভ ভাইয়া আয়রন করে দেয়।কাপড় আয়রন এর ভয়ে ড্রেস ধুয়ে পানি চিপে না ফেলে পানি অবস্থায় নেড়ে দেই যাতে কাপর ঘুচিমুচি না
নড়াইল জেলার এক ঐতিহ্যবাহী মেলার নাম “সুলতান মেলা”চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান কে কেন্দ্র করেই এ মেলার আয়োজন করা হয়।এইদিনে সব কাজিনরা মিলে আমরা নৌকা ভাড়া করে নৌকা বাইচ দেখতে যায়।
সারারাত না ঘুমিয়ে খুব ভোরে এসে টার্মিনাল দাঁড়িয়ে রইলাম কারণ বিহান ভাই এখান থেকেই বাসে উঠবেন।বিভোর ভাই এর কাছে খবর নিয়েছি কাল থেকে সে কিছুই খায় নি।মামা মামি সবাই চিন্তিত কি নিয়ে রাগ করেছে তাদের ছেলে।তার রাগের কারণ কারো জানা নেই।সে তার ব্যাক্তিগত কিছু কাউকেই বলে না।
শ্যামাপাখি জানো,
আমি দিন দিন কত দুষ্টু হয়ে যাচ্ছি।তোমার দেওয়া ছবি আমি কতশত বার জুম করে দেখেছি।তোমার ওই গাড়ো লিপিস্টিক এর দিকে তাকিয়ে নেশাক্ত হয়ে গেছিলাম। এই পিচ্চি শুনছো তোমাকে শাড়িতে নীল রঙে রাঙানো নীলাভ সৌন্দর্যের অধিকারী লাগছে।
ওয়াল ঘেষে দাঁড়িয়ে আছি আমি আমার হাত শক্ত ভাবে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন বিহান। উনার মুখশ্রির অদলে বেশ পরিবর্তন সেই রাগি ভাবটা আর নেই।আমি উনার থেকে নিজেকে ছড়ানোর চেষ্টা করছি।নিঃসন্দেহে বিহান ভাই একজন শক্ত পক্ত শক্তিশালী মানুষ উনার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা যে বৃথা চেষ্টা তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
বাসের মধ্য বিহান ভাই এর কাঁধে মাথা দিয়ে ঝিমিয়ে পড়েছি আমি।চোখ মেলে চাইতেই পারছি না।মাথা টা ঝিম ঝিম করছে আমার।বিহান ভাই মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।একটা গ্যাসের ট্যাবলেট আর সাথে একটা বমির ওষুধ খাইয়ে দিলেন।
পূবালি হাওয়াতে চুল গুলো এলোমেলো ভাবে উড়ছে, কখনো নিজের চোখে মুখে তো কখনো বিহান ভাই এর চোখে মুখে।মনের মাঝে ভীষণ ভালো এক অনুভুতি কাজ করছে। এই মুহুর্তে একটাই গান মনে পড়ছে এই পথ যদি না শেষ না তবে কেমন হতো তুমি বলোতো।কিন্তু উনাকে বলা যাবে না।উনার মনে এক মুখে আরেক।