ক্রোধান্বিত কন্ঠে হুংকার ছড়লো,
-' আব্বা...আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন! আমার উদ্দেশ্য সফল হতে যতো সময় লাগবে ততো হিংস্র হবো আমি, ঠিক ততোটাই নৃশংসরূপে সফলতা অর্জন করবো আমি হুহ।'
একমাস পর - পাঁচফোড়ন গৃহে এখন চরম বিপর্যস্ত অবস্থা। রোজ নিয়ম করে কোলাহল শুনতে পাওয়া যায়
কৌশলে প্রণয় তার এবং নুরের মধ্যেকার সম্পর্ক জানতে চাচ্ছে, এর পেছনে সঠিক কারণ বোধগম্য হলো না রঙ্গনের৷ তবুও বড়ো ভাই এমন একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে উত্তর না দিয়েও উপায় নেই।
শাহিনুর সুদূরপ্রসারী এক ভাবনার অতল গহ্বরে তলিয়ে গেছে। আর শারমিন তার সর্বাঙ্গে দৃঢ়তা বজায় রেখে এক পা দু'পা করে এগিয়ে গেলো কক্ষের ভিতরে থাকা একটি কাঠের আলমারির সামনে।
তখনি বাইজি গৃহের ভৃত্য এসে জানিয়ে গেলো, প্রণয় চৌধুরী এসেছে এবং জরুরি তলব করেছে তাকে।
বাইজি গৃহের প্রধান বৈঠকখানায় বসে আছে সে৷
শুনতে পেলো শারমিনের গেঙানিও৷ ঘাড় কাত করে শারমিনের দিকে তাকালো। করুণ কন্ঠে বললো,
-' তুমি আর আমি আরো কিছুকাল বাঁচতে পারতাম শারমিন। '
গোঙাতে গোঙাতেই শারমিন অলিওরের মুখে থুতু ফেললো। সঙ্গে সঙ্গে পলাশ শারমিনের গালে ঠাশিয়ে এক থাপ্পড় মারলো।
শারমিনের খোলা চুল মেঝেতে বিছিয়ে পড়ে আছে। চুলের ভাঁজে ভাঁজেও রক্তিম তরলে নিমজ্জিত। পরিহিত হলদে রঙের জর্জেট শাড়িটি দেখে বোঝার উপায় নেই তার রঙ হলুদ ছিলো!
-' আজ এই জোৎস্নামাখা রাতটি স্মরণীয় হবে তোমার আমার মাখামাখি তে! '
শাহিনুরের কর্ণকুহরে পলাশ চৌধুরী'র বলা কুরুচিপূর্ণ বাক্য'টি বজ্রপাতের ন্যায় আঘাত করলো।
অর্ধন'গ্ন অবস্থায় শাহিনুর'কে দেখে থমকে গেলো প্রণয়। সহসা দৃষ্টিজোড়া সংযত করে নিলো৷ পেছনে মান্নাতের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। ইশারায় শাহিনুরের কাছে যেতে বললো তাকে। মান্নাত হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে শাহিনুর'কে ধরলো।
জন্মদাত্রী, শ্রদ্ধেয় আম্মা। এ জীবনে সেই মমতাময়ীর ছায়া আর পাওয়া হবে না,পরম স্নেহশীল হাতের স্পর্শটি আর মাথায় রাখবেনা। আশ্চর্যান্বিত হয়ে মুগ্ধ নয়নে আর মা'কে দেখা হবে না৷