প্রেমালিঙ্গণ | পর্ব – ১৯ (শেষ পর্ব)

সময় আর স্রোত কখনোই কারো জন্য অপেক্ষা করে না৷ তারা তাদের নিজ গতিতে এগিয়ে যায়। সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসার গভীরতা বাড়ে। বেড়ে যায় একে অপরের প্রতি দায়িত্ববোধ। কুয়াশায় ঘেরা সরু রাস্তা দিয়ে এক জোড়া কপোত-কপোতী পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছে। দুজনের হাত একে অপরের সাথে মুষ্টিবদ্ধ। রমনীর ঢেউ খেলানো লম্বা বেনী গাঁথা চুলগুলো হেঁটে যাওয়ার সাথে সাথে নড়েচড়ে যাচ্ছে। স্বাক্ষরের পুরো পরিবার গ্রামে বেড়াতে এসেছে। আগের বার রুবির বিয়েতে এসেছিল এখন তার ছোটো মামার বিয়েতে। এতোদিনে উনার সন্যাসী ট্যাগটা ত্যাগ করে ফেলেছেন তিনি৷ মন থেকে কিছু চাইলে হয়তো আল্লাহ তায়ালাও নিরাশ করেন না। বহু অপেক্ষার পর পছন্দের মানুষটাকে বিয়ে করে ঘরে তুলেছেন। অনেকদিন পর বাড়ির মানুষ গুলো আবারও একসাথে আনন্দময় সময় অতিবাহিত করছেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠা মাত্রই স্বাক্ষর তন্দ্রাকে নিয়ে বের হয়েছিল। কুয়াশা ঘেরা একটা সুন্দর সকাল দু’জনে উপভোগ করেছে। তন্দ্রার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল এমন একটা কুয়াশা ঘেরা সকালে প্রিয় মানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাতের মাঝে নিজের হাত ডুবিয়ে‚ গ্রামের আঁকাবাঁকা সরু রাস্তায় হাঁটবে। তন্দ্রা খুব করে উপভোগ করেছে আজকের এই সুন্দর সকালটা।

সময়ের স্বল্পতার কারণে দুদিন থেকেই স্বাক্ষরের পুরো পরিবার আবার ঢাকায় ফিরে এলো। আবারও প্রতিদিনকার মতোই নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে যায় তারা। স্বাক্ষর সবে মাত্র বাসায় ফিরেছে। তাকে দেখা মাত্রই অ্যালভিন প্রতিদিনকার মতোই “মিয়াও” করে উঠল। ড্রইং রুমে পুরো পরিবার বসে আছেন। তন্দ্রা তাদের ঘরের দরজার দিকে দাঁড়িয়ে উঁকি দিয়ে দেখছে স্বাক্ষর কখন ঘরে আসবে। তন্দ্রাকে দেখা মাত্রই স্বাক্ষর বলে‚

“সেজেছ যে‚ কোথাও দাওয়াত আছে নাকি আমাদের?”

স্বাক্ষরের এমন কথায় সবাই তন্দ্রার দিকে তাকাল। সবাই হয়তো বুঝার চেষ্টা করছে‚ তার সাজগোজের উৎস। এদিকে তন্দ্রা চোখ রাঙিয়ে স্বাক্ষরের দিকে তাকিয়ে রইল। লজ্জায় কারো দিকে তাকাতে পারছে না বেচারি। মিসেস সাহেরা তার অবস্থা বুঝতে পেরে বললেন‚

“আমি ওকে বলেছি‚ রেডি হয়ে থাকতে। মেয়েটাকে নিয়ে একটু বাইরে থেকে ঘুরে আয়৷”

তন্দ্রা দরজা থেকে সরে দাঁড়ায়। স্বাক্ষর ঘরে আসে৷ তন্দ্রা এখনও স্বাক্ষরের দিকে রেগে রেগে তাকাচ্ছে।

“কি হয়েছে বউ? রেগে আছ কেন?”

“তো কি করব? সেজেছি ভালো কথা তাই বলে সবার সামনে বলতে হবে?”

“ভুল হয়েছে বউ। ক্ষমা করে দাও।”

স্বাক্ষর টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে যায় ফ্রেশ হতে। এদিকে তন্দ্রা বিছানায় বসে বসে স্বাক্ষরের ফোনে ওদের রিসেপশনের ছবি গুলো দেখে। সময় খুব তাড়াতাড়িই অতিবাহিত হয়ে যায়। স্মৃতি হয়ে রয়ে যায় কিছু মধুর মুহুর্ত। মুখ মুছতে মুছতে স্বাক্ষর ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো। মিনিট পাঁচেক সময় নিয়ে তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিল। স্বাক্ষর রেডি হতেই তন্দ্রাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। ড্রাইভিং সিটে বসে তন্দ্রাকে একবার দেখে নিল স্বাক্ষর। যে কি-না জানালার দিকে মুখ করে তাকিয়ে আছে। স্বাক্ষর কিছুটা ঝুকে তন্দ্রার গায়ে শালটা ভালো করে পেচিয়ে দিল৷ দুজনের একবার চোখাচোখি হয়ে গেল। জানালা খোলাই রেখেছে‚ এতে নাকি তন্দ্রার ভালো লাগে। স্বাক্ষর ড্রাইভ করতে শুরু করল। জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস আসছে। বাতাসে বারবার চুলগুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে। তন্দ্রা চোখ বন্ধ করে তা উপভোগ করছে তবে কপালের উপর থাকা ছোট চুলগুলো খুবই বিরক্ত করছে তাকে।

লেকের পাড়ে এসে গাড়ি থেমেছে কিছুক্ষণ আগেই৷ মাঝখানে বড়ো একটা লেক। এর চারিপাশে সবুজ গাছগাছালি। রাতের বেলা তা দেখা না গেলেও দিনের আলোয় এর সৌন্দর্য হয়তো আরও বেশি। লেকের কিনারায় রেলিং দেওয়া। আর রেলিং ঘেঁষে ছোটো ছোটো রং বেরঙের লাইট। পরিবেশটা খুবই নিরিবিলি। স্বাক্ষর আর তন্দ্রা বেশ কিছুক্ষণ একে অপরের হাত ধরে হাঁটল। এভাবেই অনেকটা সময় অতিবাহিত হলো।

স্বাক্ষর তন্দ্রাকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে এলো। রেস্টুরেন্টের মনোরম পরিবেশটা তন্দ্রাকে মুগ্ধ করছে। আজ এক এক করে তার সকল গ্লানি দূর হয়ে যাচ্ছে। ভালো লাগার এই মুহুর্ত গুলো যদি এখানেই থেমে যেত। হলেও খুব একটা মন্দ হত না। রেস্টুরেন্টের ভেতরে অনেক কাপলও আছে। একটা ছেলে তার গার্লফ্রেন্ডকে ফুল দিচ্ছে। তন্দ্রা তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে।

ওদের খাওয়া শেষ হতেই দুজন রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে এলো। তন্দ্রা তার জায়গায় গিয়ে বসল। স্বাক্ষর ড্রাইভ করতে শুরু করল। একটা ফুলের দোকানের সামনে এসে গাড়ি থামল। স্বাক্ষর গাড়ি থেকে নামতে নিলেই তন্দ্রা বলে উঠল‚

“তোমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ফুলটাই হচ্ছি আমি। তাই দোকান থেকে ঘটা করে ফুল কিনে আনার প্রয়োজন নেই।”

“ফুলের সাথে ফুলের মেলবন্ধন দেখার সাধ জেগেছে। তুমি একটু অপেক্ষা কর৷ আমি এক্ষুনি আসছি।”

কিছু সময় পর স্বাক্ষর হাতে করে একগুচ্ছ গোলাপ আর বেলী ফুলের মালা হাতে করে নিয়ে এলো। বেলী ফুলের মালাটা নিজেই তন্দ্রার হাতে পড়িয়ে দিল। গোলাপ ফুল গুলোও দিল তার তন্দ্রাবতীকে৷ সাথে কপালে এক উষ্ণ ওষ্ঠদ্বয়ের স্পর্শ এঁকে দিল। এভাবেই দুজন আরও কিছু সময় নিজেদের মতো করে কা’টাল।

———————–

তন্দ্রার খাবারের প্রতি অনিহা খুব করে লক্ষ্য করেছেন মিসেস সাহেরা। এইতো সকালেও নাস্তা করার সময় একটু কিছু খেয়েই তন্দ্রা তার ঘরে চলে গেল৷ দুপুরের খাবারটাও ঠিক ভাবে খেতে পারেনি। তন্দ্রা তার ঘরের থেকে এরপর আর বের হয়নি। সারাক্ষণ শুয়ে বসেই ছিল৷ তার ভেতরে ভেতরে এক অস্বস্তি আর গুমোট অনুভূতি হচ্ছে৷ কোনো কিছুতেই যেন ভালো লাগছে না তার। বার বার গা গোলাচ্ছে আর একটু আধটু মাথাও ঘুরাচ্ছে। বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে করতে কখন যে‚ সে ঘুমিয়ে পড়েছে তার ইয়াত্তা নেই। রাতে স্বাক্ষর যখন ঘরে আসে তখনও তন্দ্রা বিছানায় শুয়েই ছিল। তাকে অবেলায় শুয়ে থাকতে দেখে কিছু ভ্রু কুঁচকাল স্বাক্ষর৷

“এই অসময়ে শুয়ে আছ কেন তন্দ্রাবতী? শরীর ঠিক আছে?”

“একটু বসবে তোমার সাথে কথা ছিল।”

“একটু অপেক্ষা কর। এক্ষুনি ফ্রেশ হয়ে আসছি৷”

মিনিট পাঁচেক পর স্বাক্ষর ফ্রেশ হয়ে তন্দ্রার কাছে আছে। তন্দ্রার চোখ মুখে দূর্বল চাহুনি। তাকে দেখে স্বাক্ষর বুঝার চেষ্টা করে। তারপর বলে‚

“হুম বলো!”

“কাল আমাকে একটু হসপিটালে নিয়ে যাবে?”

“কেন? কিছু হয়েছে কী?”

”আসলে দুদিন ধরে খাবার খেতে পারছি না। মুখে নেওয়ার আগেই কেমন গা গুলিয়ে আসছে৷ দূর্বল থাকার কারণে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না‚ মাথা ভার হয়ে আসছে৷”

তন্দ্রা কথাগুলো খুবই মনোযোগ সহকারে শুনছিল স্বাক্ষর৷ এরপর তন্দ্রার পালস চেক করল। তন্দ্রার পি’রি’য়’ড মিস গিয়েছে দু’মাস হচ্ছে। কিন্তু এই বিষয়টি এতোদিন তার মনেও ছিল না। তারপরও একবার প্রেগন্যান্সি টেস্ট করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করল স্বাক্ষর। তন্দ্রাকে কিছু না বলে বাইরে কোথাও যায় সে!

প্যাকেটে করে কিছু একটা নিয়ে স্বাক্ষর ঘরে আসে। তন্দ্রা তখনও শুয়েই ছিল। প্যাকেটটা ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখে সে ঘরের বাইরে গেল। মিসেস তাহেরা তখন ডাইনিং টেবিলে সবার জন্য খাবার বাড়ছিলেন।

“ছোটো মা। তন্দ্রাবতীর খাবারটা প্লেটে বেড়ে দিও তো।”

“ও কী এখানে খেতে আসবে না? দুপুরেও তো ভালো ভাবে কিছু খেল না।”

গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে মিসেস সাহেরা বলেন‚ “চেকআপ করে দেখিস তো বাবা; কী হয়েছে মেয়েটার!”

“হুম।”

স্বাক্ষর তন্দ্রার জন্য খাবার নিয়ে ঘরে এলো। তন্দ্রাকে বসিয়ে নিজ হাতে খাবার খাইয়ে দিল। কয়েকবার খাওয়ার পর তন্দ্রা আর খেতে পারল না। আবারও গা গুলিয়ে এলো তার। যেকোনো মুহুর্তে বমি হয়ে যেতে পারে৷ স্বাক্ষর তাড়াতাড়ি করে ড্রেসিং টেবিলের উপর রাখা প্যাকেট থেকে একটা টেবলেট বের করে আনল। এক গ্লাস পানি আর ঔষধটা তন্দ্রার দিকে এগিয়ে দিল।

পরের দিন সকালে তন্দ্রা আগে ঘুম ভেঙে গেল স্বাক্ষরের৷ সে উঠে তন্দ্রাকেও ডেকে তুলল৷ তন্দ্রা আড়মোড়া ভেঙে শোয়া থেকে উঠে বসল। স্বাক্ষর কাল রাতে ফার্মেসী থেকে প্রেগন্যান্সি কিট কিনে এনেছিল‚ সেটা তন্দ্রা হাতে দিল। বুঝিয়ে দিল কীভাবে ইউজ করতে হবে। কিছু সময় পর তন্দ্রা ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো। হাতে থাকা প্রেগন্যান্সি কিটটা স্বাক্ষরের হাতে তুলে দিল। স্বাক্ষর একবার পূর্ণ দৃষ্টিতে চোখ বুলায় সেখানে।

“পজেটিভ এসেছে?”

স্বাক্ষর কোনো উত্তর দিল না; খুশিতে তন্দ্রাকে জড়িয়ে ধরে। বাবা হওয়ার চাইতে খুশির খবর হয়তো আর কিছুতে হয় না। খুশিতে এই বুঝি কেঁদে দিবে সে; এমন অবস্থা হয়েছে৷ তন্দ্রাকে বিছানায় বসিয়ে কিছু সময়ের জন্য তার পেটে আলতোভাবে মাথাটা রাখে স্বাক্ষর। এরপর আবারও মুখ তুলে তাকাল তন্দ্রার দিকে। ধরা গলায় বলল‚

“বাবা হওয়ার অনুভূতিটা ঠিক কী তা বলে বুঝানো যায় না তন্দ্রাবতী। মায়েরা যেমন সন্তানকে পেটে ধারণ করে, তেমনই বাবা লালন করে বুকে। এইজন্যই হয়তো মায়ের সাথে নাড়ির টান আর বাবার সাথে থাকে আত্মার টান। বাবা হবার আনন্দে জীবনটা হঠাৎ করেই রঙিন হয়ে উঠেছে। ধন্যবাদ তোমাকে। আমাকে এই সুন্দর অনুভূতির সাথে পরিচয় করানোর জন্য।”

স্বাক্ষরের কথাগুলো এতোক্ষণ খুব মনোযোগ সহকারে শুনছিল তন্দ্রা। নিজের অজান্তেই চোখ বেয়ে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল। মা হওয়ার সুখটা সে যেন আজ থেকে অনুভব করতে পারছে৷ বাড়িতে ছোটো একটা প্রাণ আসতে চলেছে। যখন সে পৃথিবীতে আসবে তখন তো এই পরিবারে আনন্দের সীমা থাকবে না। চোখ বন্ধ করে পেটের উপর আলতো হাত রাখল তন্দ্রা। এখানে তাদের ভালোবাসার অস্তিত্ব একটু একটু করে বড় হয়ে উঠবে৷ আধো আধো বুলিতে মাম্মা পাপা বলে ডাকবে ওদের৷ স্বাক্ষর তার চোখের পানি মুছে দিয়ে আগলে নিল তন্দ্রাকে। তন্দ্রার প্রেগন্যান্সির খবর শুনে ওদের পরিবারে যেন খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। এরই মাঝে শুরু হয়ে গেছে‚ নতুন অতিথির আগমনের আপ্যায়ন ঠিক কীভাবে করবে তার প্ল্যানিং। তুলি তো কনফিউজড হয়ে আছে‚ নতুন অতিথি এলে তাকে ঠিক কী বলে ডাকবে! খালামণি নাকি ফূপিমণি?

মেঘাচ্ছন্ন আকাশটা আঁধারে ছেয়ে আছে। তন্দ্রার মন খারাপের সাথে পাল্লা দিয়ে মেঘেরও বুঝি আজ মন খারাপ। বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে ক্রমশ। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তন্দ্রার মন খারাপেরা। হুটহাট করে মন খারাপ হওয়াটা ইদানীং বেড়েই যাচ্ছে তন্দ্রার ক্ষেত্রে। স্বাক্ষরের সান্নিধ্য পেতে চায় বারবার কিন্তু তার ডাক্তার সাহেব খুব একটা সময় হয় না তাকে দেওয়ার মতো। লোকে ঠিকই বলে‚ ডাক্তার বিয়ে করা মানেই পানসে জীবন। মন খারাপ করে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে তন্দ্রা। অপেক্ষা করছে স্বাক্ষর কখন আসবে। কিছুই ভালো লাগছে না। প্রেগন্যান্সিতে মুড সুইং হওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু তার মুড সুইং হচ্ছে গিরগিটির মতো। এই ভালো এই খারাপ। স্বাক্ষর যে সেই কখন তার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে সেটা একমনা তন্দ্রা টেরই পেল না। স্বাক্ষর তন্দ্রাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল‚

“শহর জুড়ে বৃষ্টি নামুক। বৃষ্টির প্রতিটা ফোটা শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে যাক। দুটি হৃদয়ের গভীর প্রেমালিঙ্গণ হোক।”

কাল আকাশে মেঘ করলেও আজ আকাশে বিশাল চাঁদের দেখা মিলেছে। মৃদু বাতাস বইছে চারিদিকে। বেলকনিতে থাকা বেলী গাছটায় আজ সন্ধ্যেবেলায় অনেকগুলো ফুল ফুটেছিল। পুরো বেলকনিতে যেন ফুলের সুবাসে ম-ম করছে। মেদিনীতে রজনি ক্রমশ ব্যাকুল হচ্ছে। ক্লান্ত স্বাক্ষর বিছানার একপাশে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। তন্দ্রা তার পাশ থেকে উঠে গিয়ে স্টাডি টেবিলের চেয়ার টেনে বসল। তিনটে বইয়ের নিচে পড়ে থাকা বহু পুরনো একটা ডায়েরি বের করল৷ এই ডায়েরিটা আসলে স্বাক্ষরের৷ কলেজ পড়াকালীন সময়ে সে খুব ডায়েরি লিখত। আজ তন্দ্রারও কিছু একটা লিখতে ইচ্ছে করছে। তাই মনের ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিল সে। হাতে তুলে নিল স্বাক্ষরের প্রিয় কলমটাকে।

❝সত্যিকারের ভালোবাসার মতো ভয়ংকর ব্যাপার অন্যত্র নেই। কোনো ছেলে যখন নির্দিষ্ট কাউকে মন থেকে ভালোবাসে তখন পুরো কায়নাত ওলট পালট হয়ে গেলেও সে তাকেই চাইবে৷ এই ভালোবাসাটা হচ্ছে গুপ্ত খাজনার মতো; যে পায় সে ভাগ্যবতী। পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে‚ এক নারীতে আসক্ত পুরুষের ভালোবাসা।❞

প্রিয়তমার চোখেই সপ্ত রংয়ের রংধনুর বিস্তৃতের আঁধার
প্রস্ফূরিত পুষ্প বাঁচিবার অবলম্বন প্রেমিকের প্রাণঅঙ্গণে আকুলতার সমাহার
প্রেমপ্রেয়সীর উপস্থিতিতে মনগহিনে উত্তলতার জাগরন
অনুভূতির সীমারেখায় প্রণয়ের প্রেমালিঙ্গণ!

[কবিতাংশঃ মোহসিনা সুলতানা রুদ্রমনি]

সমাপ্ত!…….

লেখকের কথা: আসসালামু আলাইকুম। এখানেই শেষ করার কোনো ইচ্ছে ছিল না। ওভার থিংকিং এর জন্য কিছুটা ডিপ্রেসড আছি। এভাবে গল্পের জন্য আপনাদেরকে অপেক্ষা করিয়ে রাখতেও আমার ভালো লাগে না। আমার ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দোয়া করবেন আমার জন্য। সকল মন খারাপ যেন দূরে ঠেলে দিতে পারি৷ আপনাদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।