নিস্তব্ধতা গ্রাস করছে পুরো জমিদার বাড়িতে। কোথাও কোন শব্দ নেই। ঝিঁ ঝিঁ পোকারাও মুখ বন্ধ করে রেখেছে। তারাও বুঝেছে এই পুরোনো আমলের বাড়িটি একটা মৃ*ত্যুপুরি। এই বুঝি কোন শব্দ হলো! এই বুঝি লা*শ পড়লো। নতুন খেলা শুরু হয়েছে যেন! বাঁচা ম*রার খেলায় জয়ী হবে কে? তা বলা বাহুল্য।
পরীর দিকে তাকিয়ে আছে শায়ের। পালককে কেন মেরেছে তার উত্তর সে দেয়নি এখনও। দিবে কিনা তাও শায়েরের ভাবান্তর দেখে বোঝা যাচ্ছে না। সে শুধু পরীকে দেখছে। প্রিয়তমার সৌন্দর্যে ঝলসে যাচ্ছে হৃদয়,চোখ জ্বলছে তবুও মন ভরছে না। পরীর নতুন রূপের দগ্ধ হচ্ছে সে। চোখ থেকে অশ্রু ঝরছে পরীর। সে পারছে না স্বামীর কাছে কঠোর হতে। এতো কিছু জানার পরেও ওর মনে হচ্ছে কোথাও একটা কিন্ত রয়ে গেছে। যা পরী এখনও জানে না। নওশাদ যে সম্পূর্ণ সত্য বলছে তার তো কোন প্রমাণ নেই। শুধুমাত্র নওশাদের কথার উপর ভিক্তি করে সে শায়ের কে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে? এটা হতে পারে না। পরী অশ্রুসিক্ত আঁখি মেলে শায়েরের দিকে তাকালো। কথার প্রসঙ্গ পাল্টে বলে,’আমাকে ভালোবাসবেন মালি সাহেব?’
চমকে তাকালো শায়ের। পরী আবার তার মত বদলে ফেলেছে। খানিকটা দূরে দাঁড়ানো পরী। শাড়ির আঁচল টা বুক থেকে নামিয়ে পরী শায়েরের দিকে এগোতে লাগল,’আমার শরীরে অনেক ক্ষত মালি সাহেব। আপনার ভালোবাসা দিয়ে সব সারিয়ে দিন।
আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে। আর সহ্য করতে পারছি না।’
দড়ি দিয়ে বাঁধার কারণে পেটে লম্বা দাগ হয়ে আছে। উ*ন্মুক্ত সেই স্থান নীলচে বর্ণ ধারণ করেছে। ফর্সা শরীরে তা জ্বলজ্বল করছে। এক পলক সেদিকে তাকিয়ে পরীর মুখ মণ্ডলে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে শায়ের। পেটের ক্ষতের থেকে পরীর চোখের ক্ষত আরো গভীর। যা সারানোর ক্ষমতা ওর নেই। পরীর মুখোমুখি হয়ে দাঁড়াল শায়ের। শাড়ির আঁচলটা ঠিক করে দিয়ে পরীর চোখে চোখ রাখলো,’আপনি আমাকে ভালোবাসেন?’
হঠাৎই পরী শায়েরের বুকে সামুদ্রিক ঢেউ এর মতো আছড়ে পড়লো। শায়ের নিজেও কালবিলম্ব না করে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল তার পরীজানকে। অল্প সময় আলাদা ছিলো দুজনে অথচ মনে হচ্ছে বহুকাল আলাদা ছিলো দুজনে। পরী নিজেও সমস্ত শক্তি দিয়ে ধরেছে শায়ের কে। ওরা দুজনেই খুব ভাল করে জানে ওরা একে অপরের থেকে দূরে থাকতে পারবে না কখনোই। শায়ের যত অন্যায় করুক না কেন পরী ওকে ছাড়তে পারবে না।
-‘আপনি কি পালককে সত্যিই হ*ত্যা করেছেন?’
শায়েরের বুকে মুখ গুঁজে বলে উঠল পরী। শায়ের দেরি না করেই জবাব দিলো,’আপনাকে মিথ্যা বলার সাহস আমার নেই পরীজান। হ্যা আমিই পালককে মে*রেছি।’
শায়েরের বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে পরী। চোখের জল মুছে বলে,’কেন মে*রেছিলেন তাকে? সে কি ক্ষতি করেছিল আপনার?’
-‘আপনার আমার মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি আমি পছন্দ করি না। তাই পালককে মরতে হয়েছে। শুধু তাই নয় শেখরকেও রাখি নি। ভবিষ্যতেও কাউকে আসতে দেবো না।’
বেশ শান্ত স্বরেই জবাব দেয় শায়ের। এতে কিছুটা রেগে গিয়ে পরী বলে,’এজন্য আপনি পালককে মারবেন কেন? ভালোবাসা চাওয়া কি অপরাধ? আপনিও তো বলেছিলেন মেয়েরা ফুলের মতো। তাদের শুধু ভালোবাসার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। লড়াই করার জন্য নয়। তাহলে আপনি কেন মারলেন তাকে?’
-‘আমি তার সাথে লড়াই করিনি। তাকে তার প্রাপ্যটুকু দিয়েছি। ভালোবাসা নিয়ে নোংরা খেলা আমি পছন্দ করি না।’
-‘কি এমন খারাপ দেখলেন তার মাঝে আপনি?’
-‘আপনার আমার মাঝে তৃতীয় ব্যক্তির আগমন আমি হতে দিবো না। আপনি ওই প্রসঙ্গ বাদ দিন। আমি আর এই বিষয়ে কোন কথা বলবো না।’
পরী মুখ ফিরিয়ে নিলো। বিতৃষ্ণায় ভরে যাচ্ছে মনটা।
সে আর শায়েরের দিকে তাকালো না। তখনই শায়ের কক্ষ ত্যাগ করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার ফিরে এলো। হাতে করে সে একটা মলমের কৌটো নিয়ে এসেছে। কাছে এসে পরীর হাত ধরে বলে,’এদিকে আসুন মলম লাগিয়ে দিচ্ছি।’
যত রাগ শায়েরের উপর পরী দেখাক না কেন দিন শেষে শায়েরের স্পর্শ পেলে পরীর রাগ মিলিয়ে যায় নিমিষেই। এই পুরুষটিকে সে ফেরাতে পারে না কিছুতেই। পরীকে পালঙ্কের উপর বসিয়ে আঁচল সরিয়ে দেয়। শক্ত করে বাঁধার কারণে দাগটা হয়েছে। শায়ের হাত বুলায় নীলচে দাগে। তারপর মলমটা লাগাতে থাকে,’আপনাকে বেঁধেছিলো কে? নওশাদ??’
-‘নাহ কবির।’
-‘ওকে মে*রে ভালো করেছেন। নাহলে ওকে আমিই মে*রে দিতাম।’
-‘কেন?’
-‘আপনাকে ছুঁয়েছে সে। ওর বেঁচে থাকার অধিকার নেই।’
মৃদু হাসে পরী,’আমাকে ছুঁয়েছে বলে আপনি কবিরকে মা*রতে চান। আর কবির আমার আপাকে ছুঁয়েছে বলে আমি তাকে মে*রে দিয়েছি। আপনার আমার মাঝে অনেক তফাত তাই না?’
-‘আপনার আমার মাঝে তফাত আছে পরীজান। আপনি পবিত্র একটা ফুল। আর আমি ভুল,ভুল মানুষদের প্রিয় থাকতে নেই। তাই তো আমার প্রিয় আমার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।’
-‘বলুন না পালক কি এমন পাপ করেছিল যে আপনি তাকে এই শাস্তি দিলেন?’
শায়ের দাঁড়িয়ে গেল,’বারবার একই প্রশ্ন কেন করছেন? এই প্রসঙ্গ বাদ দিন।’
-‘তাহলে বের হয়ে যান এখান থেকে।’
শায়েরের উত্তরের আশা না করে ওর হাত ধরে টেনে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দরজা আটকে দিলো পরী।
দরজা ঘেষে মেঝেতে বসে পড়ল পরী। হাঁটুর উপর মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে নিলো। পানিতে ভিজে উঠল ঘন পাপড়ি গুলো। পরী বলে উঠল,’আপনার সাথে আর যেন কখনও না দেখা হয় মালি সাহেব।’
-‘আপনার জন্য আর কেউ আসুক বা না আসুক আমি আসব পরীজান। আমার ভালোবাসা একটুও কমবে না পরীজান।’
সারারাত ওভাবেই কেটে গেলো দুজনের। পরী দুচোখের পাতা এক করতে পারেনি। সকাল হতেই সে ঘর থেকে বের হয়। দরজার পাশেই শায়ের কে হেলান দিয়ে বসে থাকতে দেখে। চোখ বন্ধ শায়েরের, বোঝাই যাচ্ছে সে ঘুমাচ্ছে। পরী ওখান থেকে চলে এলো। অন্দরের উঠোনে এসে পুরো বাড়িতে চোখ বুলালো।
পরীর মনে পড়ল সোনালীর কথা। কতো কানামাছি খেলেছে সে বোনের সাথে। সোনালীর চোখ বেঁধে পরী চারপাশে ছোটাছুটি করতো। সাথে রুপালিও এসে যোগ দিতো। তিন বোন মিলে মাতিয়ে রাখতো জমিদার বাড়ি। কিন্ত আজ সেই বাড়িকে মৃত্যুপুরি মনে হচ্ছে। সময়ের ব্যবধানে কতকিছু বদলে গেলো!
পরী রুপালির ঘরে গেল। পিকুল ঘুমাচ্ছে রুপালি বসে আছে। পরী ঢুকতেই রুপালি সোজা হয়ে বসে। পরী কিছুক্ষণ রুপালিকে দেখে বলে,’আব্বা কেন আমাকে মারতে চায় তা আমি পুরোপুরি জানি না আপা। তুমি কি জানো?’
-‘হুম।’
-‘আর কিছু না লুকিয়ে সব বলো আমাকে।’
-‘কাছে আয়,বস এখানে!’
পরী বসলো রুপালির পাশে।
-‘বড় আপা প্রাণবন্ত ছিলো জানিস পরী। সে না বলা কথা বুঝে যেতো। আম্মার মনের কথা সবচেয়ে বেশি বুঝতো বড় আপা। আপা যখন ছোট তখন সে দেখতো কাকা আম্মার সাথে খারাপ আচরণ করে। কিন্ত আব্বা কিছুই বলে না। সব জেনেও কেন আব্বা কিছু বলে না এটা আপার ভালো লাগেনি। সবসময় এসব চিন্তা করতো আপা। তবে তার উত্তর পেতো না। রাখালের সাথে প্রেম করার পর ওর প্রশ্ন গুলো চাপা পড়ে যায়। কিন্ত আবার সেই প্রশ্ন সামনে আসে যেদিন কাকা আম্মাকে বৈঠকে একা পেয়ে সুযোগ নেয়। ওইদিন আপা আম্মাকে বাঁচায়। সেদিন আব্বার সাথে আপার অনেক ঝগড়া হয়। যার ফল ভোগ করে আম্মা। আব্বা এখনও আম্মার গায়ে হাত তোলে। এজন্যই আম্মার শরীর সবসময় অসুস্থ থাকে। আমি এখানে না থাকলেও জানি,যে পালক সব জানতে পেরেছিল। আম্মার শরীরের দাগ গুলো দেখে পালকের বুজতে বাকি থাকে না এসব কিছু আব্বার কাজ। পরী আমাদের আম্মার ঘরে ঢোকা নিষেধের একটাই কারণ ছিলো তা হলো আমরা যেন এটা জানতে না পারি আব্বা একটা নর*পিশাচ। আমরা কোন ভুল করলে আব্বা আম্মাকে প্রচুর মারতো। ছোট আম্মাও কম মার খায়নি। জুম্মান কে আব্বা সাথে করে নিয়ে গেছে পরী। ওকেও আব্বা নিজের মতো তৈরি করবেন। তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছোট আম্মা এখন নিজেই ঘরে বসে আছেন।’
-‘কি হয়েছে ছোট আম্মার?’
-‘জুম্মানকে সে খারাপ হতে দিবে না। এই প্রতিবাদই তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আব্বা আঘাতে রক্তাক্ত করেছে তাকে। আম্মা এখন তার কাছেই আছেন। যাই হোক পরের কথায় আসি। পালক সব পুলিশকে বলে দিতো বিধায় তাকে মে*রে ফেলা হয়েছে।’
-‘আর সোনা আপাকে কেন মে*রেছে?’
-‘সোনা আপা সব সত্য জেনে গিয়েছিল। তুই জানিস বন্যার সময় অনেকে মারা গিয়েছিলো?’
-‘হুম।’
-‘ওরা অসুখে মারা যায়নি। ওদের মেরে ফেলা হয়েছিল। তারপর ওদের দামি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলো চড়া দামে বিক্রা করে দেন আব্বা। এইকাজ অনেক আগে থেকেই করে আসছেন তিনি। ডাক্তারদের ও নিজ আয়ত্বে রেখেছেন তিনি। ইতিহাসের কোন জমিদারের চরিত্র ভালো ছিল না। আজও নেই। তাদের দু চারটে র*ক্ষিতা না থাকলে চলেই না। আম্মা যে কি কষ্ট করেছে তা আমি বুঝেছি কবিরকে বিয়ে করার পর। মেয়েরা সবকিছুর ভাগ দিতে পারলেও স্বামীর ভাগ দিতে পারে না। এতে স্বামী যতোই খারাপ হোক না কেন? কবির যখন অন্য নারীর কাছে যেতো তখন আমি ওই রাতটা কীভাবে কাটাতাম তা তুই বুঝবি না পরী। তুই এমন একজন পুরুষ কে স্বামী হিসেবে পেয়েছিস যে শুধু তোর উপরেই আসক্ত। অন্য কোন নারীর দিকে সে চোখ তুলে তাকায়নি কখনো স্পর্শ তো দূরের কথা।
আব্বার এইসব জঘন্য কাজে আপা প্রতিবাদ করে। কিন্ত আব্বা তা মেনে নেয় না। তিনি আম্মার উপর জুলুম করে আপাকে থামাতে। এতে আপা ক্ষিপ্ত হয়ে আব্বাকে খুন করতে যায়। আরও অশান্তির সৃষ্টি হয় তখন। আম্মা তখন আপাকে দমিয়ে রাখে। তোর তখন চার বছর বয়স। কি বুঝবি অতটুকু বয়সে। আম্মা বুঝতে পেরেছিল যদি আপা বেশি কথা বলে তাহলে আব্বা আপাকে মারতেও দ্বিধা বোধ করবে না। তাই আম্মা আপাকে বাঁচানোর জন্য চুপ থাকতে বলে। কিন্ত তা আর হলো কই? রাখালের সাথেই পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে যায়। রাখাল কে অনেক মারে তখন। আপা সেটা দেখে আব্বার উপর আক্রমণ করে। তাই আব্বা সেদিন আপাকে মেরে ফেলে। কিন্ত গ্রামের সবাইকে এটা বলে যে আপা পালিয়ে গেছে।
তুই প্রতিশোধ প্রবণ সেটা তুই ভালো করেই জানিস। আপাকে তুই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসিস। অস্ত্র হাতে নেওয়ার সাহস তোর আছে। আব্বা সেটা ভাল করেই জানে। শশীল কে তুই মেরেছিস সেটা জানতে পেরে আব্বার মনে ভয় ঢুকেছে। কারণ সে জানতো তুই একদিন না একদিন ঠিকই আপার মৃ*ত্যুর কথা জানতে পারবি। আর সেদিন আব্বাকেও ছাড় দিবি না তুই। এজন্য তোকে আগেই মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন। কিন্ত আম্মা তোকে এই বাড়ির ভেতর আগলে রেখেছেন বলে তোর কোন ক্ষতি হয়নি। আম্মা সবসময়ই অসুস্থ থাকে কি জন্য জানিস? তোকে বাড়ি থেকে বের করার জন্য বলতো আব্বা। কিন্ত আম্মা তা করতো না সেজন্য আব্বা খুব মারতো আম্মাকে। আমরা যাতে না জানতে পারি তাই আমাদের আম্মার ধারে কাছেও ঘেষতে দিতো না।
দাদীকে তুই খারাপ ভাবতি পরী। আমিও ভাবতাম কিন্ত একবারও ভেবে দেখিনি দাদী কেন এমন করতেন? দাদী নিজেও জমিদারের স্ত্রী ছিলেন। তাহলে সেও আম্মার মতোই কষ্ট পেয়েছেন। দাদী সবসময় আম্মাকে কাকার থেকে বাঁচিয়েছেন। শুধু কাকা নয় আরও খারাপ মানুষের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। সবার সামনে কঠোর থাকলেও আম্মার কাছে তিনি নিজের মা হিসেবে থেকেছেন। আমরা ভুল বুঝেছি দাদীকে।
জানি না এর শেষ কোথায়? আমার ছেলের ভবিষ্যত কি? কিন্ত পরী এখনও সময় আছে। শায়েরের সাথে চলে যা। তুই ওর সাথে ভালো থাকবি।’
পরী উঠে দাঁড়াল বলল,’একটা অপরাধীর সাথে আমি যেতে পারবো না। আব্বার সাথে সেও অপরাধ করেছে। শাস্তি তো তারও প্রাপ্য।’
-‘শায়ের অতোটা পাপ করেনি যা ক্ষমার অযোগ্য। তুই পারবি ওকে ক্ষমা করতে।’
-‘তাকে শাস্তি পেতে হবে তাহলেই সে ক্ষমা পাবে।’
কক্ষ ত্যাগ করে পরী। যাওয়ার সময় জেসমিনের ঘরে গিয়ে তাকে দেখে আসে। খুব বাজে ভাবে সে মেরেছে জেসমিন কে। যা দেখে রাগ দমাতে পারে না
পরী। তাই নিজ ঘরে চলে যায়। শায়ের কে সে আগের মতোই দেখে। তবে এবার সে জেগে ছিলো। পরীকে দেখেই সে উঠে দাঁড়াল।