পাথরের বুকে ফুল | পর্ব – ৩৪

DNA টেস্ট করালে কেমন হয়… কথাটা ভাবতেই অমিতা উঠে বসে।তার মনের সকল অজানা প্রশ্নের উওর এই টেস্টই দিতে পারবে। কিন্তু অরিএানকে কিভাবে বলবে ভেবে পাচ্ছে না।অরিএান এখনো বসে আছে।অরিএানের হাত রক্তাক্ত হয়ে আছে।সে নিস্তেজ হয়ে বসে আছে।হঠাৎ অমিতা বলে উঠে………
__তোমার ওয়াসেনাতের খবর আমি দিব কিন্তু তার বিনিময়ে আমারও কিছু চাই…

অরিএান চকতরে অমিতার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে…..
__সব দিয়ে দিবো।আমার সব সম্পদ আপনার নামে দিয়ে দিব আমার সম্পদ বাবার মত মিলিয়ন না বরং বিলিয়ন বিলিয়ন সব আপনার শুধু ওয়াসেনাতকে দিয়ে দেন প্লিজজজ। ওর নিশ্চুই খুব কষ্ট হচ্ছে আমি যানি ও প্রচণ্ড কষ্টে আছে।প্লিজজজজ যা লাগবে তাড়াতাড়ি বলেন!!(অরিএান অমিতার পায়ের কাছে এসে বলে উঠে)

অমিতা গভীর ভাবে দেখছে..খুব মন দিয়ে দেখছে..এতটা কাছ থেকে দেখে তার DAN টেস্ট করার প্রয়োজন ভিত্তি হিন মনে হচ্ছে। সে দেখছে ছেলেটা তার নিজের কার্বনকপি হয়েছে।ইহানও তার মতই হয়েছে কিন্তু চোখগুলো পায়নি। অরিএান তো সব পেয়েছে তবুও সে কিভাবে এমন করতে পেরেছে কিভাবে… ঘৃন্নায় তার শরীর রিরি করে উঠছে..ছেলেটা তাকে কতটা লোভী ভাবে… ইশশশশ কি জঘন্য মা সে ভাবতেই কেমন যেন লাগছে… অরিএান তার বিলিয়ন সম্পদ তাকে অফার করছে…ছিইই..
__ওয়াসেনাত তোমার বাবার পুরনো বাড়িতে আছে।যাও ও সত্যিই খুব অসুস্থ হয়ে পরেছে।খাওয়া দাওয়া করে নাই তাই…

অরিএান কথাটা শুনেই উঠে দাড়িয়ে পরে।সে ভাবতেও পারে নি তার বাবার ওই বাড়িতে ওয়াসেনাতকে রাখতে পারে।আসলে বাড়িটাতে সে বিগত বছরগুলোতে কখনো যায় নি বাড়িটাও অমিতার নামে তাই মুলতো যাওয়া হয় নি..অরিএান দৌড়ে বাহির আসার সময় একবার অমিতার দিকে তাকায়… অমিতার চোখে আজ অশ্রুর খেলা…১৫বছর আগেও সে এই ভাবে অমিতার পা ধরে ছিল তখন তিনি হেসেছিল যা ছিল হৃদয় কাপাঁনো কিন্তু আজ কাঁদছে ব্যাপারটা অবাক করার হলেও অরিএান অবাক হল না সে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে উঠে………
__কি চাই তা তো বললেন না মিসেসস অমিতা চৌধুরী
__যা চাই তা পাওয়ার ক্ষমতা বহু আগেই হারিয়েছি।নিয়তি আমার করুন পরিণতি লিখে রেখেছে…শাস্তি প্রয়োজন… অনেক বেশি…
__মাফ করে দিলাম….

কথাটা বলে অরিএান এক বিশাল হাসি দিয়ে বাহিরে চলে যায়।অমিতার মনে হচ্ছে কেউ তার হৃদয়ে এক বিশাল পাহাড় সমান পাথর চাপিয়ে চলে গেছে…তিনি নিচে বসে অরিএানের হাত থেকে পরা রক্ত ছুয়ে দিতে দিতে এক হৃদয় বিদারক আতর্নাদ করে কেঁদে উঠে..একটা মানুষের সব চাইতে বড় শাস্তিই হল… যখন সে নিজের ভুল বুঝতে পারে আর যার সাথে সে অন্যায়টা করে সে যদি তাকে বিনা শাস্তিতে বিনা কইফিয়তে মাফ করে দেয়…এটা পৃথিবীর সব চাইতে বড় আর ভয়ঙ্কর শাস্তি যা অরিএান তার বিশাল হাসির মাধ্যমে তার নিজের না হয়ে উঠা মা কে দিয়ে গেছে…..এর চাইতে বড় শাস্তি অমিতার জন্যে আর কি হতে পারে….নিজেকে সে নিজেই কোষতে শুরু করে সে আসলেই জঘন্য মা……..

অরিএানের আজকে নিজেকে কেমন যেন খুব হালকা হালকা লাগছে। যেন সে বিনা পরিশ্রমে এক ভয়ঙ্কর শাস্তি দিয়ে দিয়েছে।অরিএান নিজের গাড়ি তার বাবার পুরনো বাড়ির সামনে দাড় করায় কিন্তু সমস্যা হল ভিতরে গুণ্ডাপাণ্ডা ভরপুর।অরিএান একা বলে তার ভয় করছে না আমেরিকায় সে রেসলিং চ্যাম্পিয়ন ছিল কিন্তু সমস্যাটা হল যদি ওয়াসেনাতের কোনো ক্ষতি করে। না সে এমন হতে দিতে পারবে না তাই একটু ভেবে চিন্তে তাকে ভিতরে যেতে হবে…অরিএান প্রচণ্ড ধিরে বিনা সাউন্ডে বাহিরের সব গুণ্ডাপাণ্ডার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে..ভিতরে ডুকতেই পুরনো স্মিতি তার হৃদয়ে ভর করে।এখানেই তো সে তার অতি প্রিয় বাবাকে হাড়িয়েছে… যদি ওয়াসেনাতের কিছু হয়ে যায়…ব্যাপারটা ভাবতেই অরিএানের মাথার ঘাম ঝরতে শুরু করে… উপড় থেকে বিকট চিৎকার আসছে আজ প্রায় তিন দিন পরে সে এই সাউন্ড শুনতে পাচ্ছে… ওয়াসেনাত চিৎকার করে বলছে…….
__আমি মরে যাবো তবুও সাইন করবো না……..

অরিএান রুমের কাছে এসে থমকে দাড়িয়ে পড়ে ওয়াসেনাতের হেজাব সহ চুলের মুঠি ইহানের হাতে। ঠোঁটর কোন বেয়ে রক্ত পড়ছে….চোখ বুজে আসছে… শরীর দূর্বল হয়ে নেতিয়ে পরেছে।তার ফেইড়িপরীকে সে কিছুতেই এভাবে আশা করে নি…. সবার জীবনে আলো ছাড়ানো যার কাজ সেই এমন নিভু নিভু আলোর মত হয়ে আছে।অরিএানের শরীর রাগে কেঁপে উঠে… মাথা পেটে যাচ্ছে… আজ এই ইহানের কপালে কি আছে আল্লাহই ভালো যানে।অরিএান কিছু না বলেই এলোপাথাড়ি মারামারি শুরু করে।ইহানের লোকেদের মেরে বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।ইহান অরিএানকে দেখে ওয়াসেনাতকে ছেড়ে তাকে মারতে এগিয়ে যায়।দুজনের কেউ কারো থেকে কম নয়।দুজনেই রক্তাক্ত কিন্তু কেউ কোন কথাই বলছে না তাদের অবস্থা দেখে মনে হবে তারা এখন রেইসস করছে।তাই জিতাটাই মেইন। কিন্তু এই ধাপে অরিএান এইবার বেশিই এগিয়ে গেল অরিএান পাশের বড় ফুলদানি দিয়ে যেই না ইহানের মাথায় বারি দিবে ঠিক সেই সময় কেউ তার পাটা জড়িয়ে নেয়।অরিএান ভালো করে তাকিয়ে দেখে অমিতা… অরিএান তাকিয়ে আছে…ঠিক ১৫বছর আগে সে ঠিক এই ভাবেই তো ধরে ছিল কিন্তু তারা কেউ তো দয়া করল না।তবে আজ কেন করবে সে…না সেও করবে না.. অরিএান আবার ফুলদানীটা উপড়ে তুলে.. অমিতা চেঁচিয়ে বলে উঠে……
__ও তোমার নিজের মায়ের পেটের ভাই…
__তাই নাকি কবে থেকে বলবেন…(তাছিল্যের সুরে বলে উঠে)
__যানি মাফ হবে না তবুও মাফ চাই ছি..আমি যেহেতু ওয়াসেনাতের খবর তোমাকে দিয়েছি তার বিনিময়ে আমি ওর জিবন ভিক্ষা চাচ্ছি প্লিজজজজ
__অরিএান কারো ঋন রাখে না যা এই বার ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু আর কখনো ওর দিকে তাকালেও চোখ তুলে নিব

অরিএান ওয়াসেনাতকে কোলে নিয়ে দরোজাটা দিয়ে বাহিরে আসার সময় তার বাবার একটা ছবি দেখে। ছবিটা হাতে নিয়ে ওয়াসেনাতকে আবার কোলে তুলে নেয়।ওয়াসেনাতের কাটাঁ ঠোঁটে অরিএান নিজের ঠোঁট লাগিয়ে রক্তগুলো মুছে দেয়।ওয়াসেনাত দূর্বল হাসি দিয়ে লজ্জায় মুখ লুকায় অরিএানের বুকে…অরিএান বলে উঠে……
__মেয়ে জাতি বড়ই অদ্ভুত…কেন যানো??এরা যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেদের রূপ দেখায় এই যেমন এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে তুমি লজ্জায় রক্ত জবা হয়ে উঠেছ(বলে হেসে উঠে)

ওয়াসেনাত রাগি গলায় বলে উঠে…..
__আপনাদের নিজেদের লজ্জা নেই বলে কি আমাদেরও পেতে নেই নাকি… আর আপনি ওদের ফ্রিতে ক্ষমা করে দিলেন???আমি তো ভয়ে শেষ যদি মেরে দিতেন আমার বাচ্চাকে খুনির বাচ্চা বলা হত ইশশশশ আল্লাহ বাঁচিয়েছে…
__কে বলছে ক্ষমা করেছি??
__আমি নিজেই তো দেখলাম । আর আপনার মা আপনাকে চিনতে পেরেছে কিন্তু কিভাবে??
__প্রকৃতি বলে একটা ব্যাপার আছে জান।ওটাই প্রতিশোধ নেয় আর মহান আল্লাহ বলেছে যখন কেউ তার বান্দার উপড় জুলুম করে তখন যদি সে বান্দা তাকে ক্ষমা করেও দেয় তবে কিন্তু তিনি করেন না।আল্লাহ অন্যায় কারি এবং জুলুম কারিকে অপছন্দ করে।সো যার অন্যায়ের শাস্তি সে পাবে আমার তোমার কি।আমার তো মনে হয় না বিয়েটা আবার হবে তুমি বরং আমার সাথে আমার বাড়ি চল আমার এই সব প্যাড়াময় লাগছে।
__মানে কি অনুষ্ঠান না করে আমি আপনার বাড়ি যাবো না। কখনো না। বুঝলেন।
__এই কেন বলতো??তুমি বুঝতেই পারছো না যে ভাবে তোমাকে নিয়ে আমজনতা টানাটানি করছে আল্লাহ মালুম না যানি কি হয়। তোমাকে নিয়ে রিক্স নেওয়া মানে জীবন নিয়া টানাটানি। তাই আমি এখনই তোমাকে বাড়ি নিয়ে যাবো।
__না।কখনো না আমি অনুষ্ঠান করেই যাবো।
__আজিব ব্যাপার তুমি আমার সাথে কোমড় বেধে ঝগড়া করছ কেন??
__আমি কোমড় বেধে ঝগড়া করছি কে বলেছে??আমার কোমড় তো আপনার হাতের নিচে। আর আমি মোটেও ঝগড়া করছি না। যেটা ঠিক সেটাই বলছি।আর বাসায় চলেন। ছেলে মানুষও এমন ঝগড়া পারে?? আল্লাহ আপনাকে না দেখলে বুঝতাম না।
__কি
__বাসায় চলেন (চেঁচিয়ে বলে উঠে)

ওয়াসেনাতের মা প্রথমে চোখ খুলেই নিজের মেয়েকে দেখে খুশিতে প্রায় পাগল।আজকে অনেক বছর পরে নিজের কলিজার টুকরা ছেলেমেয়েকে দেখে তিনি প্রচণ্ড ভাবে আনন্দিত।

ওয়াসেনাত হলুদ পরী সেজে দাড়িয়ে আছে আয়নার সামনে। আজ তার গায়ে হলুদ। ব্যাপারটা ভাবতেই তার মুখে লাল আভা দেখা যাচ্ছে। জীবন তাকে বহু কিছু শিখিয়েছে। সাথে দেখিয়েছে।এই জীবনে নিজের বাবা মার মত মানুষ পেয়ে সে প্রচণ্ড ভাবে ভাগ্যবতী মনে করছে নিজেকে তার সাথে সে পেয়েছে অরিএানের মত জীবন সঙ্গী।যে তাকে নিজের চাইতেও ভালোবাসে।আর বাকি একটা দিন তারপরে সে ধর্মীয়, সামাজিক, নিয়ম,সব কিছু মেনে অরিএানের হয়ে যাবে।অরিএানের তাকে কতটা ভালোবাসে এটা তার বুঝার প্রয়োজন নেই। সেও যে তাকে একুই ভাবে ভালোবাসে তবে তা অরিএানের চাইতে অনেক ধাপ নিচে।অরিএানের মত সে অরিএানকে ভালোবাসতে পারবে না কিন্তু ওয়াসেনাতের মত তো তাকে ভালোবাসতে পারবে।এতেই হবে।ওয়াসেনাতের শরীর জড়িয়ে হলুদ লেহেঙ্গা। গলা, কান,হাত জড়িয়ে সাদা গোলাপের হাতে তৈরি গহনা। ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগলেও সত্যি ওয়াসেনাত আজ সাদা গোলাপে নিজেকে মুড়িয়ে রেখেছে।অরিএানের নির্দেশ যাতে ওয়াসেনাত সাদা গোলাপে নিজেকে সাজায়।তাই করা হয়েছে।ওয়াসেনাতের হাত জুড়ে সাদা গোলাপের তৈরি বালা স্টাইলের চুড়িতে রিমি বড় বড় ঝুড় লাগিয়ে দিচ্ছে। সাজ শেষে রিমি একবার তার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে…….
__চল ওয়াসু
__এখন কেন??
__পরে গেলে অরিএান ভাই জিবনেও যেতে দিবে না।
__মানে কি এমন কোথায় নিবি যে ওনি যেতে দিবে না??
__ভাগিয়ে নিয়ে যেতে চাই
__কাকে
__তোকে
__মানে কি পাগলের মত প্রলেপ না বোকে বলবি??
__ভাই আমি তোর মত সুন্দর মেয়েকে ছেড়ে যেতে চাইনা।তুই অরিএান ভাইকে ছেড়ে দে।আমি এখন তোকে নিয়ে পালাবো।ইশশশশ কি সুন্দর লাগছে তোকে। ছেলে হলে তুলে নিয়ে যেতাম।কিন্তু মেয়ে তো তাই অফার দিচ্ছি আমার সাথে চলে আয়।
__যা পাগল…

দুজই এক সাথে হেসে উঠে…

অরিএান আজ সাদা পান্জাবি আর নানা রং এর মিক্সরনে কটি পরেছে।দেখতে কি লাগছে তা না বললেই নয়। নিজ দায়িত্বে কল্পনা করে নিন।যাই হোক গাড়ি থেকে নেমেই সোজা ওয়াসেনাতকে যেখানে বসানো হয়েছে সেখানে হাজির হয়।অরিএান যে কিভাবে দিন গুলো পার করছে আল্লাহ মালুম। তার তো ইচ্ছে করছে এই মুহুর্তেই ওয়াসেনাতকে নিজের সাথে নিয়ে যায়।কিন্তু কিছুই করার নেই।অরিএান থ মেরে দাড়িয়ে আছে।আজ হলুদ পরীকে যে কেমন লাগছে সে এটা বলে বুঝাতে পারবে না।সে তো বরাবরই এই মেয়েতে ঘায়েল হয়েছে।প্রতিটি রূপ যেন নতুন কিছু তুলে ধরে এই মেয়ের মাঝে।ইশশশ এত কেন সুন্দর ও ভাবতেই অরিএানের খারাপ লাগছে।মেয়েটা যদি আর একটু কম সুন্দর হত তবে তো আর ওকে নিয়ে এত এত টেনশন নিয়ে ঘুড়তে হত না।আজ শুধু অরিএান না ওয়াসেনাতও তাকে পালক বিহিন ভাবে দেখে চলেছে।দুজনের চোখের পাতাই নিজেদের চোখের প্রতি মগ্ন দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে।

অরিএান নিজের বলা কথা সত্য করেছে।সেই আগে ওয়াসেনাতকে নিজের হাতে হলুদ লাগিয়েছে।অরিএান ওয়াসেনাতের কানে কানে বলে…..
__সাদা গোলাপে কিন্তু তোমাকে সেই লাগছে..
__আচ্ছা আপনি সব সাদা গোলাপের পরতে বলেছেন কেন??
__তোমার প্রিয় ফুল তাই।
__আপনি জানলেন কি ভাবে??
__ওই দিনের কথা মনে আছে?? চুড়ি কিনেছিল তোমার জন্যে
__হুম
__ওই দিন তুমি চুড়িগুলো নেও নি কিন্তু সাদা গোলাপটা নিয়েছিলে তাই..
__ওহ
__সাদা গোলাপ পছন্দ কেন???
__সাদা গোলাপ সৌন্দর্য আর শান্তি একসাথে বহন করে তাই।
খুব সুন্দর করে অরিএান আর ওয়াসেনাতের হলুদ সন্ধ্যা শেষ হয়। আর একটা দিন পরেই তাদের বিয়ে।কিন্তু অরিএানের মনে হচ্ছে এক বছর পরে।তার যে একটা দিন এক বছরের মত এটা সে কাকে বুঝাবে ভেবে পাচ্ছে না🥺🥺বেচারা

অরিএান আর ওয়াসেনাত প্রচণ্ড অবাক হয়ে সামনে থাকা মানুষ গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে। তারা এটা ভাবতেও পারছে না সামনে থাকা ব্যক্তিরা তাদের সাথে এমন করতে পারে।কি ভাবে পারলো এটা করতে.. কি ভাবে.. ওয়াসেনাত প্রচণ্ড শীতল গলায় বলে উঠে…..
__ভাইউ কাজি কই পেলে?? এখন তো রাত দুইটা বাজে।আমার যত দূর মনে হয় এক কি তিরিশ মিনিট আগেই তোমরা এটা করেছে।বল??

রিমন নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। কি বলবে ভেবেও পাচ্ছে না।ওয়াসেনাত ভাবতেও পারে নি তার জানের জিগার বন্ধু তাকে এভাবে ধোকা দিবে।ইশশশ কি ধান্ধা বাজ বান্ধুবি খাওয়াতে হবে বলেই এমন করেছে সে এটা সিউর..আজ যদি অরিএান রাত দুইটা বাজে গাড়ি পাঠিয়ে তাকে নিজের বাসায় না আনতো তবে তো সে জানতেই পারত না। আল্লাহ🥺🥺অরিএান এবার নিজের অবাক হওয়াকে কাটিয়ে বলে উঠে……..
__ডাফার আগে বললেই পারতি আমি নিজে তোদের বিয়ের বেবস্থ করতাম।এভাবে পালিয়ে বিয়ে করার মানে কি??আর রিমির বাবা মা কি ভাবে বলত??আর ভাই ওয়াসেনাতের কথাটাও যুক্তি যুক্ত তুই এত রাতে কাজি পেলি কই??

অরিএানের এমন মজা করে বলা রিমনের পছন্দ না হলে ও তার ভয়টা একটু কেটেঁছে।তাই সে একটু করুন গলায় বলে উঠে…….
__দেখ ভাই আমি তোর মত অত বড় প্রেমিক না যে জীবন দিয়েও প্রেমিকা বা বউকে বাচামু।আর অত ধৈর্য ধরে কোনো মেয়েকে পটাতেও পারমু না।তাই তুলে নিয়ে কাজির বাসায় বিয়ে করে নিয়েছি।প্রথম দিন থেকেই ওকে আমার পছন্দ কিন্তু বলতে পারি নি।কিন্তু আজ হলুদের অনুষ্ঠানে শুনেছি ওর জন্যে ছেলের লাইন লেগে আছে আর আমার শ্বশুর এর মধ্যে একটা ছেলেকে ঠিক করেই ফেলেছে।তাই উপায় না পেয়ে তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলছি।
__সাবাশ বেশ করেছিস তবে ওকে কি বলে ব্লাকমেইল করেছিস??আসলে মেয়েদের তো একটা ব্যাপারে অনেক বুঝাতে হয় আর তাও বুঝে না কিন্তু ব্লাকমেইল জিনিসে তারা সব করতে পারে।এই যেমন আমি ওয়াসেনাতকে এখানে আনতে বলেছিলাম আমি ছাদ থেকে লাফিয়ে জীবন দিব যদি না আসে।তো তুই কি ব্লাকমেইল করলি তা বল..
__তেমন কিছু না শুধু বলেছিলাম তুমি আমাকে বিয়ে না করলে আমি একটা গান কিনবো যাতে তিনটে বুলেট থাকবে আর ওই তিনটা বুলেটের মধ্যে একটা দিয়ে তোমার জামাইকে মারবো, একটা দিয়ে তোমাকে,আর বাকিটা আমার মানে আমি নিজেকে মারব।বাসস হয়ে গেছে(কথাটা বলেই দাতঁ কেলিয়ে হেসে উঠে…সাথে সাথে রিমির টগবগ করা লাল চোখ দেখে আবার মুখ অপ করে নেয়)

ওয়াসেনাত এবার রিমি দিকে ফিরতেই বেচারা কাচুমাচু করে চোখ সরানো শুরু করে।ওয়াসেনাত রাগি গলায় বলে উঠে…..
__শালি ব্লাকমেইল করেছে আর তুই নাচতে নাচতে বিয়া করে নিলি??কেমন বেস্টু?? উপড়ে আল্লাহ আছে তিনি তোর বিচার করবে। তুই কিভাবে আমারে ছাড়া বিয়া করে নিল। ভাই ওই টাইমেও তো কল করে বলতে পারতি ওয়াসু আমার বিয়া খাইতে চাইলে তাড়াতাড়ি আয়
__ওয়াসু বিয়ে খাওয়া যায় না বিয়েতে যে খাবারের আয়োজন করে ওগুলো খাওয়া যায়।তুই ভুল কেন বলছ..
__এই তোর লজ্জা করে না এত বড় অন্যায় করে আবার আমার ভুল ধরসসস….ফাউলল মাইয়া আজ থেকে তোর আর আমার বন্ধুত্ব শেষ। কাট্টি…. (হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলের সাথে রিমিরটা মিলিয়ে বলে উঠে)
__আরে তুমি শুধু শুধু ঝগড়া করছ।রিমি একখন সম্পর্কে তোমার জা এবং ভাবি। আর রিমন।তুইত সেই লেভেলের প্রেমিক।ভালো করেছিসস। ভালোবাসার মানুষের সাথে নো কম্প্রোমাইজ।

বলেই রিমন আর অরিএান হেসে উঠে। ওয়াসেনাত আর রিমি হাবার মত তাকিয়ে আছে। তাদের তো এই হাসিতে গা জ্বলে যাচ্ছে……..

চলবে……….🍁

ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন….আর কালকে বিয়ে সবার দাওয়াত রোইল..আসবেন কিন্তু 🥳🤣🤣
সবাইকে রহমতের মাস রোজার শুভেচ্ছা 🍂💕

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।