পাথরের বুকে ফুল | পর্ব – ২৪

ওয়াসেনাত অরিএানের হাতের উপড় মাথা দিয়ে গা এলিয়ে আছে।আর অরিএান একদৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।কিছুসময়ের ব্যবধানে কি হয়ে গেছে কিছুই তার মাথায় ডুকছে না। রিমন আচ্ছা মত লোকটাকে মেরেই চলেছে।পার্টির সবাই প্রায় উপড়ে চলে এসেছে।ওয়াসেনাতের বাবা তাকে এভাবে দেখে হতভম্ভ হয়ে বসে পরে।ওয়াসেনাতের মা বার বার জিগ্যেস করছে ওয়াসেনাত কোথায়?তাই তার ফুফু বেশ টিটকারি মেরে হাহুতাশ করে বলে উঠে………
__হায় আল্লাহ এটা কি হল?তোর এমন হল কিভাবে?ওই লোকের সাথে কি তোর কিছু হয়েছে?দেখ তেমন কিছু না হলেও মান সম্মান সব তো শেষ।কি ভাবে এখন আমরা মুখ দেখাবো সবাই কে?এখানে কত বড় মাপের মানুষ জন রয়েছে তার উপড় মিডিয়াও আছে।কালকেই খবরেরকাগজে, টিভিতে এটা নিয়ে কথা হবে।
__কি হয়েছে আমার মেয়ের? কোথায় ও?ওয়াসু কোই তুই(চিৎকার করে কেঁদে বলে উঠে)
__কি হয় নাই সেটাই বল। তোর মেয়ের যে কি হবে কে যানে।আর তো মনে হয় না বিয়া সাদি দিতে পারবি।কত বড় লোক পোলাই না পাইছিলি।ওরা ও তো এখন এখানে আছে। তারা কি এত কিছু দেখার পরে বিয়া দিব?মনে হয় না।
__কি সব বলছেন আপনি চুপ থাকে না।ওয়াসেনাত কোই(ওয়াসেনাত নিজের রক্তাক্ত হাত দিয়ে মায়ের হাত ধরে নিজের কাছে বসায়)

ওয়াসেনাতের মা হাতরাতে হাতরাতে ওয়াসেনাতের মুখে অজস্র চুমু খায়।আর বলে……
__কিছু হয় নি মা তুই এত কান্না করছিস কেন?চল আমারা বাসায় চলে যাই।তোর ফুফু এমনেই এমন করছে।ওয়াসুর আব্বু যানতো ওয়াসু ভয় পায় বেশি।মনে হয় কিছু দেখে ভয় পেয়েছে চল আমরা চলে যাই।

ওয়াসেনাত কাঁদতে কাঁদতে গলা বসে গেছে।তাই সে কথাও বলতে পারছে না।ওয়াসেনাতের বাবা বলে উঠে…….
__স্যার আমরা এবার যেতে চাই।আমি আমার কলিজাটাকে এভাবে দেখতে চাই না।
__না ও এখনেই থাকবে।(চিৎকার করে)

সবাই ফিসফিসানি বন্ধ করে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অরিএানের চিৎকার শুনে।ওয়াসেনাতের বাবা সহ সবাই অবাক।অরিএান নিজের শীতল চোখ মুহুর্তেই রক্তাক্ত লাল করে ফেলে নিজের ব্লেজার খুলে ছুড়ে মারে।তারপর সকলের সামনে ওয়াসেনাতকে কোলে তুলে নিয়ে নিচে নিয়ে যায়।ওয়াসেনাতকে একটা সোফায় বসিয়ে ফাশ্টএইড বক্স নিয়ে আসতে বলে। অরিএান খুব যত্ন করে ওয়াসেনাতের হাতে,পায়ে কাটা জায়গায় স্যাভলন লাগিয়ে দেয়।ওয়াসেনাতের দৃষ্টি শূন্যে ভাসছে।তার দুনিয়ার খবর নেই বললেই চলে।ওই লোকটাকে অরিএানের বডি গার্ডসরা ধরে নিচে নিয়ে এসেছে।সবাই এক দৃষ্টিতে ওয়াসেনাত আর অরিএানকে দেখছে।অরুপ আর ইহান ভিতরে জ্বলে যাচ্ছে কিন্তু কিছু বলছে না।কারন যে লোক এই সব করেছে সে খুব প্রভাবশালী। তাই তারা পিছনেই দাঁড়িয়ে আছে।ওয়াসেনাতের বাবা প্রচণ্ড রূপে অবাক হয়।অরিএানের কার্যকলাপের চাইতেও অরুপ দের ব্যবহারে। রিমি ওয়াসেনাতের হাতগুলো ধরে আছে। ও বাদে আর কেউই ওয়াসেনাতের পাশে ঘেষছেনা।অরুপ একফোঁটাও এগিয়ে এলো না।যে খারাপ সময়ে তার মেয়ের পাশে দাড়ায় নি সে এমন ছেলের সাথে তার মেয়ের বিয়ে দিতে চেয়েছিলো। ভাবতেই তার কষ্ট হচ্ছে।

ওয়াসেনাতের ফুফু আবার বলা শুরু করে………..
__ভাই তুই চিন্তা করিস না।আমার কাছে একটা ভাল পাএ আছে।ওই অরুপ ওয়াসেনাতকে আর নিজের বউ বানাবে না।দেখ তাদেরও তো মান সম্মান আছে।এমন ধর্ষণ হতে হতে বেচেঁ যাওয়া মেয়েকে কি তারা নিজের বাড়ির বউ বানাবে?না তো।তুই চিন্তা করিস না।আমার কাছে ভালো পাএই আছে।তাদের মুদির দোকান আছে তিন চারটা।ছেলে কিন্তু লাখে একটা।আহহহহ্(আর বলতে পরালো না অরিএান তার গলা চিপে ধরে বলে উঠে…………
__ওয়াসেনাতের ফুফু বলে আমি আপনাকে এত সময় সোজ্জ করছিলাম কিন্তু এবার আর না।আমি আমার ওয়াসেনাত সম্পর্কে একটা বাজে কথাও আপনার এমন বাজে মুখে শুনতে চাই না।(বলেই ছুড়ে মারে)

অরিএান এবার ওয়াসেনাতের সামনে হাটুগেড়ে বসে পড়ে আর বলে উঠ………..
__কাঁদবে না প্লিজ কলিজাটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। তুমি শুধু ৫ মিনিট দেও আমি এখনই আসছি।কাঁদবে না প্লিজ।

বলে উঠে দাঁড়িয়ে লোকটির সামনে যায়।অরিএান সামনে আসতেই লোকটির আত্না উড়ে যায় যায় অবস্থা। অরিএান নিজের রক্তাক্ত চোখের দৃষ্টি লোকটির দিকে নিক্ষেপ করে বলে উঠে…………
__মি.ফারুক কি যেন বলে ছিলেন?ও হ্যাঁ আমার প্রোডাক্ট। তোর প্রোডাক্ট মানে কি?? (চিৎকার করে বলে নিচে ফেলে লাথি মাড়া শুরু করে।উপস্থিত সবাই অরিএানের মাইর দেখে আৎকে উঠে।)
__রিমন আমার জিনিস গুলো নিয়ে আয়।
__সামন্য একটা মেয়ের জন্যে আমার সাথে শত্রুতা করছিস অরিএান?(কাশতে কাশতে বহু কষ্টে বলে উঠে)
__সামান্য মেয়ে?কে সামান্য মেয়ে?যাকে আমি আমার জীবন মনে করি সে? যাকে না দেখলে দম বন্ধ হয়ে আসে তাই সম্পূর্ন রুম জুড়ে যার ছবিতে মুড়িয়ে রেখেছি সে?যায় ভয়েস রেকট করে সারা দিন শুনি সে??যার পবিত্রতা সব সময় বজায় রাখতে চাই সে?বল কুত্তার বাচ্চা? তোই আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস। যাকে বলে অরিএানের কলিজায় হাত।তোর একটুও হাত কাঁপল না? ওর মত মেয়ের গায়ে হাত দিতে?এই হাত দিয়ে টার্চ করেছিস তাই না।(রিমনের হাত থেকে ছুড়ি নিয়ে হাতের আঙ্গুল গুলো এক টানে ফেলে দিয়ে আবার বলে উঠে…………
__তুই যানস।আমি কখনো ওর দিকে ভালোভাবে তাকায় না?কেন যানস?ওর দিকে তাকালেই আমি ডুবে যাই।ওকে আমি কখনো ভালোভাবে ছুয়েও দেখি নি। আমি এমন কিছুই করতাম না যাতে ওর পবিএতায় দাগ লাগে আর তুই অনায়াসেই ওকে ছুঁয়ে দিলি?কিভাবে বল?তোর সাহস আমাকে প্রচণ্ড ভাবে ইনপ্রেস করেছে।বুঝলি।

চারিদিকে পিন পিনে নিরবতা। অরিএানের যে এত ভয়ঙ্কর একটা রূপ আছে এটা অনেকেরই অজানা ছিল।সাংবাদিকেরা অনেক আগেই নিজেদের ক্যামেরা নামিয়ে রেখেছে।অনেক বড় বড় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান ও ছিল কিন্তু তারাও কিছু করছে না।কারন তারা যানে অরিএান শুধু এদেশে না অন্য অনেক দেশেও তার প্রভাব বিস্তার রয়েছে।তারা অরিএানের সাথে পেরে উঠবে না তার উপর অরিএান অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে।এখানে তাদের নাক না গলানোই তাদের ভালো মনে হচ্ছে।

উপস্থিত সবাই লোকটির অবস্থার থেকেও অরিএানের ওয়াসেনাতের প্রতি ভালোবাসা তাদের আরো অবাক করেছে।তারা শুধু ভাবছে অরিএানের মত একটা কঠিন মনের মানুষ এতটা কিভাবে ভালোবাসতে পারে?কিভাবে?উপস্থিত সবার মাঝে মাদৌলিও ছিল সে নিজেও অবাক হয়। অরুপ আর ইহানের নিজেদের কাছেই নিজেদের ছোটো মনে হচ্ছে তারাও তো ওয়াসেনাতকে ভালোবাসে তবে কেন এগিয়ে গেল না?দুজনের মনের অবস্থাই এক।

__ভাই মাপ করে দেন আমি জানতাম না ওই মেয়ে আপনার gf(হাতজোড়া করে বলে উঠে)
__কে আমার gf?(চিৎকার করে)
__ওই মেয়ে।
__ও আমার জান। আমার নিশ্বাস। gf না হারামজাদা (বলেই মাথা থেকে গলা আলাদা করে ফেলে)

উপস্থিত সবাই ভয়ে চোখ বুজে নেয়।আর মেয়েরা তো বিকট ভাবে চিৎকার করে উঠে।ওয়াসেনাত নিজের মায়ের কোলে মুখগোঁজ। তার বাবা সহ সবাই আঁৎকে উঠে এমন কিছু করবে অরিএান এটা তারা স্বপ্নেও ভাবতে পারে নি।অরিএান এবার চিৎকার করে বলে উঠে…………
__হ্যাঁ আমি মেয়েদের সাথে অনেক রাত কাটিয়েছি। এটার জন্যে আমি নিজেই অনুতপ্ত আর লজ্জিত। কিন্তু কখনো কোনো মেয়েকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে খারাপ ভাবে টার্চ করি নি।তারা নিজের থেকেই আমার কাছে আসতো।আমার জীবনটাই তখন উলটপালট ছিল।কিন্তু এই একটা মেয়ে সব চেন্জ করে দিয়েছে।আমার জীবন অন্ধকারে ডাকা ছিল আর এই মেয়েটাই ফেইড়ি লাইটের আলোর মত আমার জীবন টাকে আলোকিত করেছে।একটা খারাপ মেয়ে যেমন মানুষের ধ্বংসের কারন ঠিক একুই ভাবে ভালো মেয়ে জীবনটাকে সুন্দর করার কারন।আর এই মেয়েটাও ঠিক একুই ভাবে জীবন সুন্দর আর আলোকিত করেছে আমার।হ্যাঁ আমি ভালোবাসি তোমায়। খুব ভালোবাসি(ওয়াসেনাতের কাছে হাটুগেড়ে বসে তার হাতগুলো নিজের হাতে অবদ্ধ করে)দেখো আমি জানি না তুমি আমাকে ভালোবাস কি না।কিন্তু বিশ্বাস কর তোমার ভালোবাসার আমার প্রয়োজন নেই আমার একার ভালোবাসাই আমাদের জন্যে এনাফ। আম সরি জান আমার জন্যেই তুমি এত কষ্ট পেয়েছ।আর না। যারা তোমাকে কষ্ট দিবে আমি তাদের শেষ করে দিব।তুমি কি আমাকে একসেপ্ট করবে ওয়াসেনাত?? (করুন শুরে বলে উঠে)

সকলেই তাকিয়ে আছে এই অরিএানকে সবার অজানা।এই অরিএানের মাঝে ভালোবাসর সমারোহ। ওয়াসেনাতের বাবা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে।এই ছেলেটা তার মেয়েকে এত ভালোবাসে?সত্যিকি কাউকে এত ভালোবাসা যায়?তার নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। তার মেয়ের জন্যে তো সে এত বেস্ট ছেলেও আল্লাহর কাছে খুঁজে নি কিন্তু তিনি দিয়েছে।ওয়াসেনাত তার দৃষ্টি সরু করে অরিএানের দিকে তাকায়।ইশশশ কেমন হয়েছে ছেলেটার অবস্থা। এই কিছু সময়ে সেই বেস্ট লুকটা হারিয়ে গেছে।এখন কেমন যেন অগোছালো লাগছে তাকে। সাদা শার্টাতে রক্ত লেগে আছে হাতেও রক্ত।কি ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে। অরিএান এবার ওয়াসেনাতের হাত ছেড়ে ওয়াসেনাতের বাবার সামনে দাড়ায়।ওয়াসেনাতের বাবা ব্যাপারটায় অবাক হয়।অরিএান তাকে উদ্যেশে করে বলে উঠে…………
__আপনি আমাকে চিনেন।আমি জানি আমি খারাপ।কিন্তু আমি যদি আমার সব পাপ কাজের জন্যে আপনার কাছে হাতজোড়া করে ক্ষমা চাই আপনি কি করবে?

ওয়াসেনাতের বাবা হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কি বলছে অরিএান খান তার কাছে হাতজোড়া করে ক্ষমা চাচ্ছে। কিন্তু সে তো শুনেছে অরিএান সরিও বলে না। উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।অরিএান খান ক্ষমা চাচ্ছে? ভাবা যায়।ওয়াসেনাতের বাবা বলে উঠে……….
__স্যার কি বলছেন আপনি?আমি ক্ষমা করার কে? আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান।আর আমি আপনার একজন বেতনভুক্ত কর্মচারী মাএ।আমি কিভাবে…
__আল্লাহর বিধানে আছে যার প্রতি অন্যায় করবে তার কাছে ক্ষমা চাইবে।আর আমি তো ওয়াসেনাতের প্রতি অন্যায় করেছি।তাই তার বাবা হিসেবে আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আপনি কি আমাকে ক্ষমা করে নিজের কলিজার টুকরা মেয়েটাকে আমার করতে দিবেন??
__মানে(অবাক হয়ে)
__আমি এই মুহুর্তে এই সব মানুষের সামনে ওয়াসেনাতকে চাই।আমি আমার ফুলকে নিজের কাছে রাখতে চাই।আমি ওয়াসেনাতকে বিয়ে করতে চাই।এই মুহুর্তে। আপনি কি আমাকে মেনে নিবেন।

ওয়াসেনাতের বাবা সহ উপস্থিত সবাই অবাক।এটা কি বলল।ওয়াসেনাত তার ঝাপসা চোখগুলো দিয়ে জোড়পূর্ব তাকিয়ে আছে অরিএানের দিকে।ওয়াসেনাতের বাবার চোখে মুহুর্তেই অবার পানি চলে এলো।সে ভাবতেই পারেনি অরিএান এমন কিছু বলবে।তিনি বলে উঠে……….
__আপনি তো যানেন আমার মেয়ের সাথে কি হয়েছে।ওর সাথে জোড়িয়ে নিজের সম্মানে দাগ লাগাতে চান??(তিনি দেখতে চাচ্ছে অরিএান জবাবে কি বলে ?এই জবাবের উপড় ভিত্তি করে তিনি তার রায় দিবেন)
__ভালোবাসা কি যানেন?আমিও যানতাম না?আপনার ওই মেয়েই শিখিয়েছে।ছোটো ছোটো বাচ্চাদের মাঝে নিজেকে উজাড় করে সে আমাকে শিখিয়েছে ভালোবাসার নতুন মানে।নিজের হাতে তাদের খাইয়ে দিয়ে বুঝিয়েছে ভালোবাসার আসল মানে।তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে বুঝিয়েছে ভালোবাসার মূল মন্ত্র। সে বুঝিয়েছে অন্যের মাঝেই তুমি নিজের প্রাপ্তি পাবে।আর ওই মেয়ের জন্যে আমার সম্মানে দাগ লাগবে?হাস্যকর ব্যাপর। ভালোবাসা বন্ধ দরজায় নয় জনসম্মুখে প্রকাশ করাটাই বড় ব্যাপার।দরজার আড়ালে তো অবৈধ ভাবে অনেকেই ভালোবাসি বলে কিন্তু সবার সামনে তা ফুস।কিন্তু আমি আমার ভালোবাসাকে পবিত্র করতে চাই সব কিছু থেকে।ওকে ছাড়াতো আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে আর আপনি মানসম্মানে আটকে আছেন?দোষিকে দোষারোপ করেন নির্দোষকে না।ওই জানোয়ার দোষি আপনার কলিজার টুকরা না।আমাদের সমাজে ধর্ষকের চাইতে ধর্ষিতা বেশি নির্যাতিত হয়।কিন্তু কেন?এই জানোয়ারের মত সাথে সাথে এই সব কাপুরুষদের বিচার করলে আর কেউ মেয়েদের ইজ্জতের উপড় হাত দিবে না।আর আমি এই মুহুর্তে ওয়াসেনাতকে বিয়ে করতে চাই।আপনি আপনার মতামত দেন প্লিজ।
__আমি………(বলার আগেই অরুপ এগিয়ে এসে বলে…)
__আঙ্কেল ওয়াসেনাতের সাথে তো আমার বিয়ে আগেই ঠিক করা আছে। আমি ওয়াসেনাতকে যে কোন পরিস্থিতি গ্রহণ করতে পারবো।আজ যদি তেমন কিছুও হতো তবেও আমি ওকে গ্রহণ করতাম।আপনি চাইলে আমি এখনই ওয়াসেনাতকে বিয়ে করবো।

ওয়াসেনাতের বাবা স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে পরে।অরিএানের বুক ধকধক করেই চলেছে।যদি ওনি অরুপকে মেনে নেয়।তবে।ওয়াসেনাতও তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে।সে যানে তিনি অরুপকেই নির্বাচন করবে।কারন তিনি অরিএানের চাইতে অরুপকে বেশি পছন্দ করে।সবার মাঝে এক ভায়াবহ নিরবতা বিরাজ করছে। ইহান এগিয়ে আসতেই ওয়াসেনাতের বাবা বলে উঠে……..
__আসতে হবে না তুমি কি বলবে আমার জানা আছে।অরিএান এবং অরুপ সরি স্যার এখন আমি আপনাকে নাম ধরেই বলব।তো শুন।আমিও ভালোবেসেই বিয়ে করেছি।তাই ভালোবাসার মাপকাঠি একটু আকটু যানি।ভালোবাসা কি? তুমি বল অরুপ???
__ভালোবাসা মানে সুখ দুঃখে পাশে থাকা।একজন আর একজনকে ভালো রাখা।দুজনের প্রয়োজনে দুজন পাশে থাকা।এমনই আরো অনেক কিছু নিয়েই ভালোবাসা।
__ভালোবাসা প্রয়োজন মানে না অরুপ।ভালোবাসায় এটার কোন জায়গা নেই।তোমাকে এটা এ জন্যেই জিগ্যেস করিছি তুমি আমার মেয়ের যগ্য কি না এটা দেখার জন্যে।কিন্তু অরিএান আগেই প্রমাণ দিয়েছে সে আসলেই ওয়াসেনাতের যগ্য।তাই অরিএানের সাথেই তার বিয়ে হবে।সরি।

ওয়াসেনাত এবং অরিএান কারোরি বিশ্বাস হচ্ছে না তার বাবা কিভাবে অরিএানকে পছন্দ করেলেন।উপস্থিত সবার মাঝেই একটা খুশির হাওয়া বইছে।কিছু মানুষ বাদে।অরিএানতো খুশিতে পাগল প্রায়।রিমন কাজি অনতে চলে যায়।অরিএানের দাদা অনেক আগে থেকেই সব দেখেছে আর রিমনের কাছে শুনেছে।তিনি এবার ওয়াসেনাতের বাবার কাছে গিয়ে দাড়ায় ওয়াসেনাতের বাবা তাকে দেখেই অবাক হয়ে বলে উঠে…………
__বাবা….
__কেমন আছিস তৌপিক?
__আপনি এত বছর পরে। আপনি যানেন আমি আপনাকে কত খুঁজেছি। কোথায় ছিলেন বাবা।আমি এখনও অাশিকের কোম্পানিতেই চাকরি করি ছাড়ি নি।যবে থেকে কোম্পানি ওই ইমানের কাছ থেকে অরিএান নামের ছেলে কিনে নিল তবে থেকেই এই কোম্পানিতে আছি।আপনাদের সাথে কত কি হয়ে গেল আমি কিছুই করতে পারি নি।আর আশিকের তো একটা ছেলেও ছিলো কোথাই ও ওকেও কি?? (জড়িয়ে ধরে)
__না।ওকে কিছু করতে পারে নি।অরিএানকে নিয়ে বিদেশে চলে গিয়েছিলাম।ভয় হত যদি ওরা অরিএানকেও মেরে দেয় আমার আশিকের মত।কিন্তু এখন সে বড় হয়েছে তাই আর ভয় নেই।
__অরিএান আশিকের ছেলে(অবাক হয়ে)
__হুম।তবে সব কথা পরে হবে আগে ওয়াসেনাত অরিএানের বিয়ে হবে।অরিএান এই দিনের জন্যে অনেক অপেক্ষা করেছে।
__আমারতো বিশ্বাসই হচ্ছে না।আশিকের ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হচ্ছে!!

অরিএান সব রেডি করে ফেলেছে।কিন্তু ওয়াসেনাত তেমন হাটতে পারছেনা তাই তাকে এভাবেই রাখতে বলা হয়।অরিএানের কাছে যেকোন ভাবেই ওয়াসেনাতকে হুর লাগে।রিমনকে বলে তার রুমের আলমারি থেকে একটা টকটকে লাল নতুন শাড়ি আনিয়ে ওয়াসেনাতের সামনে গিয়ে বলে…………
__তোমার জন্যে অনেক শাড়ি কিনে রেখে ছিলাম।তোমাকে আমি কখনো শাড়িতে দেখি নি।তাই বিয়ের পরে সব সময় শাড়ি পরবে বলেই এত শাড়ি কিনা।আমি কখনই আমাদের বিয়ে এভাবে হোক চাই নি।কিন্তু নিয়তির উপড় কিছু নেই।নো টেনশন মাই জান তুমি ভেবো না আমি আমার টাকা বাচাছি। আমাদের বিয়ে আবার ধুম ধামে হবে কিন্তু আপাতোত তোমাকে নিয়ে রিক্স নিতে চাই না।আমার শ্বশুর আব্বুর আবার মত কখন পাল্টে যায় বলা যায় না।সো এখনই বিয়ে করে নেওয়া উচিত হবে।ঠিক বলেছি না!!তুমি রাগ করো না রাগলে তোমাকে কিউটের ডিব্বা লাগে।মন চায় আদর দিতে।এটা মাথায় দিয়ে দি??(শাড়িটা খুলে মাথায় দিতে দিতে বলে উঠে)
__দিয়ে তো দিলোই আবার বলে কি না দিয়ে দি?(ভাঙা গলায় বিড়বিড় করে বলে উঠে)
__জানু তুমি কিন্তু কুটনিদের মত মনে মনে বিড়বিড় কর।(বলেই এক দৌড় দেয়)

ওয়াসেনাত না চাইতেও হালকা হাসে।ওয়াসেনাতের ফুফুর অবস্থা কাহিল।তিনি এখনও কাশেই চলেছেন।আর দূরে দূরে থাকছেন কারন তার অরিএানকে ভয় লাগছে।ফ্লোরেই মাঝে ফুলের পর্দা দিয়ে একপাশে অরিএান আর এক পাশে ওয়াসেনাতকে বসিয়ে দেওয়া হয়।অরিএানের গায়ে সাদা পান্জাবী, মাথায় একটা টুপি আর ওজু করার ফলে তার মুখে হাতে পানির বিন্দু বিন্দু কনারা ভর করেছে।সবাই খুশি শুধু মাদৌলির, ইহানের, আর অরুপ এর পরিবারের রিমি বাদে।রিমিতো ওয়াসেনাতের পাশেই বসে আছে।

খুব সুন্দর ভাবে দুজনের বিয়ে সম্পূর্ণ হয়।কবুল বলার সময় ওয়াসেনাত নিজের বাবা, মা,রিমি,তার ভাই দের জড়িয়ে খুব কেঁদেছে। কিন্তু তার কষ্টের পরেই খুশির ঝিলিক হয়ে অরিএান তার মাথা শাড়ি দোপাট্টার মাঝে ডুকিয়ে নিজেকে আর ওয়াসেনাতকে আয়নায় দৃশ্যমান করে।অরিএান ওয়াসেনাতের নীলাভ পানি ভর্তি চোখের দিকে তাকিয়ে আছে আর ওয়াসেনাত অরিএানের জলজল করে জ্বলে উঠা সবুজ চোখের দিকে।

ইশশশ কি দৃশ্য কারো যেন নজড় না লাগে🤗😜
#চলবে………….🍁

যান বিয়ে দিয়ে দিলাম এবার আমাকে বালতি বালতি ধন্যবাদ দিয়ে উদ্ধার করেন।🥳
ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন…………….🍂

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।