লাভার নাকি ভিলেন | সিজন – ২ | পর্ব – ৮

আকাশঃ মেঘলা চল বাসায় যাই…
মেঘলা সবাইকে বিদায় জানিয়ে আকাশের সাথে রওনা হল।

আকাশঃ মেঘলা গিফট নিবি না…??

মেঘলাঃ আর কিসের গিফট..??

আকাশঃ ভেলেন্টাইন গিফট?

মেঘলাঃ না না আর কিছু লাগবে না।

আকাশঃ আমাকে দিবি না?

মেঘলাঃ আমার কাছে তো টাকা নেই

আকাশঃ তুই আসলেই মাথা মোটা

মেঘলাঃ ও বুঝেছি বলেই আকাশের গালে চুমু খেল আকাশ সাথে সাথে গাড়ি থামিয়ে বলল এভাবে গিফট দিলে হয়? ভাল করে দে

মেঘলাঃ উহু আর না…

আকাশঃ একটা প্লিজ

মেঘলাঃ খুব খারাপ তুমি।

আকাশ মন খারাপ করে আবার ড্রাইভ শুরু করল তখন মেঘলা আবার চুমু খেল

আকাশ মনে মনে খুশি হল কিন্তু প্রকাশ করল না।

রাস্তায় এসে আকাশ নাবিলকে ডেকে নিল।

নাবিল এসে মেঘলাকে জিজ্ঞাস করল কিরে কেমন লাগল?

মেঘলাঃ একটাও কথা বলবি না কি ভয় পেয়েছিলাম জানিস?এভাবে ভয় দেখালি?

নাবিলঃ ভয় দেখাব কেন? আর একবার খেলে ত সত্যি সত্যি ওখানে পাঠিয়ে দিব বুঝেছিস?

মেঘলাঃ তোকে পাঠাবো

নাবিলঃ আমি তো একটা সিগারেট ও খাইনা আমাকে পাঠাবি কেন?

মেঘলাঃ তোকে আর আকাশ কে পাগলা গারদে পাঠাবো।

নাবিল আর মেঘলার ঝগড়া করতে করতে বাসায় গেল নাবিল আর আকাশ আকাশের ঘরে গেল আর মেঘলা নিচেই থেকে গেল…

আকাশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল তখন মেঘলা কফি নিয়ে রুমে আসল।

আকাশঃ আরে আগে তো চেঞ্জ করবি ফ্রেস হবি তারপর না কফি… এত গিন্নি হতে হবে না।এসেই রান্না ঘরে ডুকে গেছিস।
আকাশ এত গুলি কথা বললেও মেঘলা কিছু বলল না।মুখ ঘোমরা করে দাঁড়িয়ে আছে।

নাবিলঃ সমস্যা কি? মুখটা শুকনো কেন?

মেঘলাঃ কিছু হয়নি নিচে যা তোরা বলে মেঘলা চলে গেল।

আকাশ আর নাবিল মেঘলার কথামত নিচে গেল….নিচে গিয়ে নাবিল আর আকাশ ২ জনেই বেশ অবাক হল
কারন নিচে আকাশের বাবা মা আর মেঘলার বাবা মা কথা বলছে।

নাবিলঃ মা তোমরা কখন আসলে…

নাবিলে মাঃ ওমা মেয়েটাকে তুই বাসা থেকে বের করে দিলি নিতে আসব না বুঝি?

এরিমধ্যে মেঘলাও নিচে এসেছে মেঘলা বাইরে থেকে ফিরে চেঞ্জ করেনি তাই মেঘলাকে দেখে তার মা আকাশের মাকে উদ্দেশ্য করে বলল ভাবি মেঘলাও রেডি হয়ে গেছে তাহলে এবার আমরা যাই।

নাবিলের মাঃ নাবিল তুই কি আমাদের সাথে যাবি নাকি পরে আসবি।

মেঘলাকে নিতে এসেছে শুনে মেঘলার কাঁদো কাঁদো অবস্থা হয়ে গেছে।
আকাশ ও কিছু বলতে পারছে না।মাথা নিচু করে বসে আছে।

নাবিলের মাঃ আমি যানি আকাশ চায় মেঘলা এখানে থাকুক আর মেঘলাও তাই চায়।কিন্তু বিয়ের আগে এখানে থাকবে কি করে?তবে চিন্তা করো না আকাশ আমরা সিধান্ত নিয়েছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়েটা দিয়ে দিব।কিন্তু যত দিন না বিয়ে হচ্ছে মেঘলা আমাদের বাসায় থাকুক এই তো কয়েকটা দিনের ব্যাপার শুধু ।
তুমি কি বলো কবে বিয়েটা করতে চাও আকাশ?

বিয়ের কথা শুনে আকাশ আমতা আমতা করছে, তার হাব ভাব দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সে বিয়ে করতে চায় না।

নাবিলের মাঃ কি হল আকাশ তুমি কি কোন কারনে বিয়েটা করতে চাও না?

আকাশঃ আন্টি না মানে … আসলে কিভাবে যে বলব বোঝতে পারছি না। বলছি যে
বিয়েটা কি এখন না হলেই নয়?

কথাটা সবাই অবাক হল। যে গতকালও বিয়ে করতে চেয়েছিল আজ সে আজ বিয়ে করতে চাচ্ছে না সেটা কারোরের হজম হল না।

মেঘলা মনে মনে ভাবছে কি বলছে এসব আকাশ? তারমানে ও আমায় বিয়ে করতে চায় না?
ধুর কিসব উল্টাপালটা ভাবছি… আকাশ নিশ্চুই সকালের মত মজা করছে।

তাই মেঘলা আকাশের পিছনে থেকে ফিসফিস করে বলল কি বলছো এসব আকাশ?এমন বললে আমাকে এখানে থাকতে দিবে না বলো যে তুমি বিয়ে করতে রাজি। এটা মজা করার সময় না।

মেঘলা কথাগুলি আসতে আসতে বললেও আকাশ মেঘলাকে ধমক দিয়ে বলে উঠল তুই চুপ থাকনা। বিয়ে বিয়ে করে মাথা খারাপ করে দিচ্ছিস কেন? আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি নাকি বিয়ে তো হবেই এত তাড়া কিসের বিয়ে করার জন্য একেবারে পাগল হয়ে গেছিস।লজ্জা করে না নিজের বিয়ের কথা নিজেই বলছিস?

কথাটা শুনে মেঘলার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল।আকাশের কথায় বেশ অপমান বোধ হল মেঘলার।প্রায় কাঁদোকাঁদো অবস্থা হয়ে গেছে মেঘলার।

নাবিলের মাঃ বোকার মত কাঁদছিস কেন মেঘলা? আকাশ যদি বিয়ে করতে না চায় আমাদের এত দরকার কি বিয়ে দেওয়ার?পানিতে পড়ে গেছিস নাকি তোর কি কেউ নেই?
শোন বাবা আকাশ ছেলেরা রং পালটায় যানতাম কিন্তু এত তারাতাড়ি পালটায় সেটা যানতাম না।আর আমাদের পরিবার এতটাও ফালতু নয় যে মেয়ের বিয়ের জন্য উঠে পরে লাগব আমরা চাইলে ১ দিনের মধ্যেই মেয়ের বিয়ে দিতে পারি তাই মেঘলাকে অপমান করার আগে ২ বার ভেবে কথা বলো। আর তুমি বিয়ে না করে মেঘলাকে এই বাড়িতে রাখতে চাও এটা কেমন কথা? মেঘলা তো রক্ষিতা নয় যে বিয়ে না করেই নিজের কাছে রাখবে।আমরা ওকে নিয়ে যাচ্ছি ভবিষ্যতে তুমি ওর সাথে কোন যোগাযোগ না করলেই খুশি হব।
আকাশের সাথে কথা শেষ করে মেঘলার মা মেঘলাকে বললেন চল মেঘলা..

মেঘলা মাথা নিচু করে আছে।

আকাশঃ আন্টি আপনি বুঝতে পারছেন না আমি বিয়ে করব কিন্তু একটু সময় দরকার প্লিজ আন্টি রাগারাগি করবেন না।আমার ব্যাপারটা একটু বুঝোন।

মেঘলাঃ এতদিন বলেছিলেন আপনার ক্যারিয়ারের জন্য কাউকে কিছু বলতে চান না কিন্তু এখন তো সবি হয়েছে তবুও বিয়ে করতে চান না।বিষয় টা মা কতটা বুঝেছে জানি না তবে আমি ঠিকি বুঝেছি।আর কিছু বুঝাতে হবে না। আমি চলে যাব।মা চলো যাই। মেঘলা নাবিলের দিকে তাকিয়ে বলল কি রে তুই কি থাকবি?

নাবিল শয়তানি হেসে দিয়ে বলল না আমি থাকব না তবে তুই এ বাড়িতেই থাকবি।
কথাটা শুনে উপস্থিত সবাই অবাক হল।বেশি অবাক হল মেঘলা।

মেঘলাঃ তুই কি দেখতে পারছিস না আমাকে কিভাবে অপমান করছে তারপরেই আমি…???

নাবিলঃ হুম তারপরেও তুই এখানেই থাকবি ওই বাড়িতে তোর কোন জায়গা নেই…

নাবিলের মাঃ বাড়াবাড়ির একটা লিমিট আছে নাবিল কাল অনেক বাড়াবাড়ি করেছো আমরা কিছু বলি নি এখন আবার শুরু করেছো ভুলে যেও না ওই বাড়িটা শুধু তোমার নয় মেঘলারো যাক গে পাগলের সাথে কথা বলে লাভ নেই। তুমি তো ছোট বেলা থেকেই ওকে সহ্য করতে পার না এখনো হয়ত নিশ্চই হিংসা হচ্ছে কিন্তু ভুলে যেও না ওর বাবা মা এখুনো জীবিত। দরকার হলে তুমি আর বাসায় ফিরো না।কিন্তু মেঘলা ফিরবে।যে বোনের সম্মান রাখতে পারে না তার ভাই হওয়ার কোন যোগ্যতা নেই। মেঘলা চল তুই দেখি নাবিল কি করে আটকায় তোকে…??

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।