রাতের ঝড়ে যে এতো বড় তান্ডব চালাবে তা নূরনগরের কারো জানা ছিল না। সে যে একটা নিষ্পাপ প্রাণ কেড়ে নিল। কিন্ত পালক কিভাবে পানিতে পড়ে গেল তা কেউই বুঝতে পারল না। পানির কাছেই বা কেন গেল?ইতোমধ্যেই সারা গ্রামে পালকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছে। চোখের পানি ফেলছে অনেকেই। মেয়েটা অনেক ভাল ছিল এই কথাটা সবার মুখে শোনা গেল। ভিড় জমেছে জমিদার বাড়ির প্রাঙ্গনে। নারী পুরুষ বাচ্চাদের আনাগোনা বাড়ছে। শহুরে ডাক্তারের লাশ দেখে যাচ্ছে এক এক করে।
সাদা কাপড়ে ঢাকা পালকের নিথর দেহ পড়ে আছে। তার থেকে খানিকটা দূরে রুমি কাদার মধ্যে বসে আছে ওর পাশে মিষ্টি একই ভাবে বসে আছে। মাঝরাতে যখন এই লৌহমর্ষক খবরটা পেলো তখন থেকেই কেঁদেছে। কিন্ত এখন কাঁদার শক্তি দুজনেই হারিয়েছে। তাই শুধু পালকের লাশের দিকে তাকিয়ে আছে। স্থির সে দৃষ্টি। কিছুটা দূরে গাছের শেকড়ের উপর নাঈম আর শেখর বসে আছে। আসিফ চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। কাল রাতে যখন সবাই বাগান বাড়িতে পৌঁছালো তখন ঝড় একটু কমেছে। পুরো বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পালককে ওরা পেল না। ওদের সাথে গ্রামের লোকেরাও খুজল। কিন্তু পেল না। কেউ একজন বাড়ির পেছনে গেল খুঁজতে। যেখানে কেউই যায় না। পানিতে উপুড় হয়ে ভাসছে পালক। হারিকেনের আলোয় লোকটা ভালো করে কিছু দেখল না তবে চিৎকার দিয়ে সবাইকে ডাকল।
কয়েকজন শায়েরের আদেশে সাথে সাথেই পানিতে নেমে পড়ল। সবাই মিলে ধরাধরি করে পালককে ডাঙায় তুলে আনে। নাঈম দ্রুত পালকের হাত ধরে। কিন্ত পরক্ষণেই ছেড়ে দিয়ে নিজের শরীরের ভর ছেড়ে দিল মাটিতে। চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ল। শেখর আসিফ বুঝেও ছুটে গিয়ে পালকের হাত ধরল এবং ওরাও নাঈমের পাশে বসে পড়ল। এটুকু সময়ের মধ্যে কি হয়ে গেল?
রাতেই পালককে জমিদার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। রুমি মিষ্টি এসে পালকের লাশ দেখেই কাঁদতে লাগল। ওভাবেই সকাল হয়ে গেল।
নাঈম পালকের দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে আছে। এই পালকের সাথে কত মজা করেছে ওরা। একসাথে ক্লাস করেছে গল্প করেছে। একসাথে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে। কত আনন্দ করে ছ’জন এই গ্রামে এসেছিল। এখন ফিরতে হবে পাঁচজন কে। ভাবতেই অবাক লাগছে। নাঈমের এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে পালক আর নেই। পানিতে ডুবে মারা গেছে। কি অদ্ভুত,যে পানি মানুষের জীবন বাঁচায় সেই পানিই মানুষের জীবন কেড়ে নেয়।
পালকের মৃত্যুটা শায়ের ও মানতে পারছে না। হঠাৎই এরকম ঘটনা ঘটে যাবে তা সে ভাবতেও পারেনি। তাছাড়া মেয়েটার সাথে কাল ওর বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয়েছিল। তাকিয়ে ছিল শায়েরের দিকে। অথচ কিছু সময়ের ব্যবধানে মেয়েটা আর নেই। আর কথা বলবে না। যে চোখে শায়ের পালকের অনুভূতি পড়েছিল সে চোখ জোড়া আর খুলবে না।

কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে শায়ের গেল আফতাবের সাথে কথা বলতে। মালাকে নিয়ে আফতাব ভোরে ফিরেছে। পালকের খবর পেয়ে মালাও কেঁদেছে। মেয়েটা সত্যিই খুব ভাল ছিল। এভাবে মেয়েটা পৃথিবী ছাড়বে তা মালাও বোঝেনি।
অন্দরের বারান্দায় পরীকে বুকে জড়িয়ে বসে আছে মালা। জেসমিন কুসুম আর জুম্মান ও আছে। বেশ কয়েকজন মহিলা ও এসেছে। ওদের দেখে আবার চলে যাচ্ছে। পরী এখনও মালাকে ধরে আছে। অনেক দিন পর মায়ের বুকে মাথা রেখেছে সে। হঠাৎ পালকের কথা মনে পড়তেই মাথা তুলে তাকালো বলল,’আম্মা ডাক্তার আপা!!’

-‘চুপ থাক পরী। কথা কইস না যা হওয়ার তা হইছে। তুই শান্ত থাক।’
চোখ থেকে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু বের হতে লাগল। সে বলল,’আম্মা ডাক্তার আপা কইছিল আমার লগে গল্প করবে। কিন্ত সে তো আর আইলো না আম্মা। আমার অনেক কষ্ট হইতাছে আম্মা।’
মালা মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে, ‘কান্দিস না পরী। আমার মাইয়া তো নরম না। এতো কান্দে তো না। তাইলে এতো কান্দিস ক্যান।’
মালা আবার পরীকে জড়িয়ে নিলো। পরী ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগল। শক্ত করে জড়িয়ে ধরল মালাকে।
ঠিক তখনই মিষ্টি রুমি অন্দরে ঢুকল। পরী চট করে মাথা তুলে তাকায়। যন্ত্রমানবের মতো হেটে আসছে দুজনে। সিঁড়ি বেয়ে দুজন দোতলায় চলে গেল। কিছুক্ষণ পর নিজেদের ব্যাগ নিয়ে এলো ওরা। মালার সামনে গিয়ে রুমি ভাঙা গলায় বলল,’আমরা চলে যাচ্ছি ভালো থাকবেন। বুঝতে পারিনি যে, হাসিখুশি ভাবে এসেছিলাম আর যেতে হবে কাঁদতে কাঁদতে। পালক কে এভাবে হারিয়ে ফেলব জানলে কখনও এখানে আসতাম না।’
বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লো রুমি। চোখের জল মুছতে মুছতে অন্দর থেকে বের হয়ে গেল। ওরা চলে যাচ্ছে শুনে পরী উঠে দাঁড়াল বলে উঠল,’আমি একবার দেখব ডাক্তার আপারে। আম্মা আমি বাইরে যামু। আম্মা আমারে একবার যাইতে দেন।’

নাঈমরা নিজেদের ব্যাগ গুছিয়ে নিয়েছে। পালক কে নিয়ে এখনই শহরে রওনা হবে সবাই। পালকের বাবা মা শহরে থাকেন। ওখানেই দাহ করা হবে পালককে।কোন মুখে ওরা পালকের বাবা মায়ের সামনে দাঁড়াবে তাই ভেবে পাচ্ছে না ওরা।
ঘাটে বিশাল ছই ওয়ালা নৌকা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সম্পান সহ আরো দুজন মাঝি। নৌকা করেই পালককে শহরে নিয়ে যাওয়া হবে। নাঈম শেখর আসিফ গেল পালককে নৌকায় তুলতে। নাঈম পালকের দেহে হাত দিতেই একটা নারী কন্ঠস্বর ভেসে আসে।

-‘একটু দাঁড়ান,আমি দেখমু আপারে।’
ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে পরী দৌড়ে এলো। নাঈম ছেড়ে দিলো পালক কে। হাটু মুড়ে সে পাশেই বসে রইল। পরী ছুটে গিয়ে নাঈমের পাশেই বসে। পালকের মুখের ওপর থেকে কাপড়টা নাঈম সরিয়ে দিলো। পালকের মুখটা দেখেই কেঁদে ফেলল পরী। সাদা হয়ে গেছে মুখটা। ঠোঁট দুটো কালচে বর্ণ ধারণ করেছে। কি জানি কতক্ষণ পানিতে ছিল?মলিন কোমল দেহটা শান্ত হয়ে আছে।
পরী আলতো করে পালকের গালে হাত রাখলো। শরীর বরফের ন্যায় ঠান্ডা।
-‘অনেক কষ্ট হইছে আপনার তাই না আপা?এখন আপনে শান্তিতে ঘুমান কেউ বিরক্ত করবো না। একটা কথা মনে রাইখেন এই পরী আপনার কথা কোনদিন ভুলবে না। সোনা আপার মতো আপনেও আমার আরেক আপা। ভালো থাইকেন।’
দুফোটা অশ্রু বিসর্জন দিয়ে উঠে দাঁড়াল পরী। পিছিয়ে এলো পালকের থেকে। নাঈম হাত বাড়িয়ে দিলো পালকের দিকে। তিনজন মিলে পালককে ধরে নৌকাতে তুলল। শায়ের যাচ্ছে ওদের সাথে। সবাই নৌকায় বসতেই সম্পান বৈঠা ফেলল। পরী দৌড়ে ঘাটে গেল। অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে রইল। নাঈম চোখ ঘুরিয়ে তাকালো পরীর দিকে। চোখদুটো ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। হয়ত এই গ্রামে আর আসা হবে না ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো নাঈম। বেশিক্ষণ দাঁড়াল না পরী। কুসুম এসে টেনে নিয়ে গেল পরীকে। এখানে থাকাটা ঠিক হবে না।

আজকে নৌকার সবাই চুপ। মনে হচ্ছে নৌকায় কেউই নেই। শুধু সবার শ্বাস প্রশ্বাস শোনা যাচ্ছে। ভারি সে নিঃশ্বাস। মিষ্টি পালকের মাথায় হাত রেখে বলল,’কখনো ভাবিনি তুই এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবি। আমরা তোকে খুব ভালোবাসি পালক।’
কেদে ওঠে মিষ্টি সাথে রুমিও। কিন্ত নাঈম শেখর আসিফ স্থির। ওদের ও ইচ্ছা করছে কাঁদতে। কিন্ত পুরুষদের যে কান্না মানায় না।অশ্রু শোভা পায় নারীর চোখে। পুরুষের চোখে থাকে কঠোরতা। তাই ওরা তিনজন পুরুষ চুপ করে বসে রইল। শায়ের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে মাঝেমাঝে পালকের দিকে তাকিয়ে গভীর ভাবনায় নিমজ্জিত হচ্ছে আবার বাইরের দৃশ্য দেখছে।

অন্দরের বারান্দায় পা ছড়িয়ে বসে আছে পরী। পরনের ঘাগড়াটা হাটু অবধি উঠে আছে। ওড়নাটাও পাশে পড়ে আছে। অবুঝের ন্যায় বসে আছে পরী। অনুভূতিহীন চাহনিতে তাকিয়ে আছে পেয়ারা গাছটির দিকে। সেখানে একটা হলদে পাখি বসে আছে। পাখিটার নাম পরীর অজানা। একটা পাকা পেয়ারা খাচ্ছে পাখিটা। পরী দিকবেদিক ভুলে পাখিটা দেখায় মগ্ন হয়ে আছে। পরীর ইচ্ছে হচ্ছে পাখি হতে। না থাকবে পরিবার না থাকবে কষ্টের পাহাড়। এমন সময়ে লাঠি ভর দিয়ে আবেরজান আসলো। তিনি সবসময় নিজের কক্ষেই থাকা খুব একটা বের হন না। পালকের খবর শুনে তিনি বের হয়ে এসেছেন। এতক্ষণ মালার ঘরে ছিলেন। নিজের ঘরে যাচ্ছিলেন। পরীকে ওরকম অবস্থায় দেখেই লাঠির খোঁচা দিয়ে বললেন,’অই মাইয়া এমনে কাপড় উঠাইয়া বইছোস ক্যান?পাও ঢাক কইতাছি। তোর বাপে আইসা পড়বো। কি মাইয়া যে হইছে আল্লাহ ই জানে। ওই কথা হুনোস না।’
দাদির চেঁচামেচিতে পাখিটাই উড়ে গেল। যার দরুন বিরক্ত হলো পরী। কোন কথা না বলে ওড়না হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়াল। দৌড়ে চলে গেল ছাদে। পাঁচিল ঘেষে দাঁড়াল সে। উদাস উদাস লাগছে পরীর। ও নিজেই চেয়েছিল শহুরে ডাক্তাররা চলে যাক আজ তাই হলো। কিন্ত ওদের চলে যাওয়াকে মানতে পারছে না পরী। পালকের কথা মনে পড়তেই কান্না আসছে ওর বারবার। জুম্মানের মুখে পরী একদিন শুনেছিল ভালো মানুষ নাকি বেশিদিন বাঁচে না। কথাটা জুম্মানকে ওর মাদ্রাসার হুজুর বলেছিল। পরী ভাবল পালক ভালো ছিল বলেই অকালে হারিয়ে গেল।
সারাদিনে কিছুই মুখে তুলল না পরী। মালা এসে জোরাজুরি করেও পরীকে খাওয়াতে পারল না।নিজ কক্ষের এক কোণে চুপটি করে বসে আছে পরী। জুম্মান তখন পরীর ঘরে ঢুকল হাতে একটা লাঠি নিয়ে। পরীর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,’আপা দেখো পানি অনেক কমে গেছে। আমি লাঠি দিয়া মাপছি।’
পরী ঘুরে তাকালো জুম্মানের দিকে। লাঠির মাঝখান বরাবর ধরে দেখালো জুম্মান। পরী মৃদু হেসে বলে,’ভাল বুদ্ধি তো তোর। এমনে পানি মাপা শিখাইলো কে তোরে?’
-‘নাঈম ডাক্তার বাবু।’
-‘ওহ্। আচ্ছা উনি কি ডাক্তারগো দিয়া আইছে।’
জুম্মান চোখ কুচকে বলে,’উনি কে আপা?’
-‘আরে ওই যে আব্বার লগে থাকে। পাঞ্জাবি পইড়া থাকে,চোখে সুরমা পড়ে।’
জুম্মান এবার খিলখিল করে হাসতে লাগল পরীর কথা শুনে। তা দেখে পরীর রাগ হলো বলল,’হাসোস ক্যান?আমি কি হাসার কথা কইছি?’
-‘সোজাসুজি কইলেই তো পারো শায়ের ভাই। তা না কইরা কি কইতাছো? আসে নাই শায়ের ভাই। মনে হয় রাত হবে।’
-‘আইলে গিয়া খবর আনবি কি হইলো?’
জুম্মান মাথা নেড়ে জানান দিলো সে কাজটি করবে।তার পর দৌড়ে গেল লাঠিটা পানির মধ্যে পুঁততে। নাঈম জুম্মান কে শিখিয়েছিল এইভাবে পানি মাপতে হয়। খুব সহজেই জুম্মান শিখে নিয়েছে। সে খুশিও হয়েছে নাঈমের প্রতি।
সন্ধ্যা নামতেই মাগরিবের নামাজ পড়ার জন্য ওযু করতে কলপাড়ে গেল মালা। কিন্ত সে অবাক হলো পরীকে আসতে দেখে। পরী এসে ওযু করতে লাগল।

-‘নামাজ পড়বি?’ মায়ের প্রশ্নের জবাবে পরী ছোট্ট করে ‘হুম’ বলে। মালা ভড়কায়। পরীকে অনেক বার সে নামাজ পড়তে বলেছিল। কিন্ত পরীর কোন হেলদোল নেই। মালা বলল,’নামাজ পড়লে সব ওয়াক্ত পড়তে হইবে কিন্ত। ‘
পরীর ততক্ষণে ওযু করা শেষ। ও উঠে দাঁড়িয়ে বলল,’আমি এখন থাইকা প্রতিদিন নামাজ পড়মু আম্মা। আমার সব প্রিয় মানুষ গুলোর লাইগা দোয়া করমু।’
মালা আর কথা বলল না। দাদির জন্য বালতি করে ওযুর পানি নিয়ে পরী চলে গেল। মালা চেয়ে রইল মেয়ের যাওয়ার পানে। মেয়েকে নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তা মালার। শুধু রাগ আর জেদ দেখাতেই পারে। বুদ্ধিসুদ্ধি একেবারেই নেই। এনিয়ে মালার যত চিন্তা।

রাত যখন একটু গভীর হয় তখন জুম্মান এসে খবর দিলো শায়ের এসেছে। কিন্ত সে শায়েরের সাথে কথা বলতে পারেনি। আফতাব আর আখিরের সাথে কথা বলছিল শায়ের তখন। জুম্মান আরো বলল,’ কাকা শায়ের ভাইরে গালাগালি করতাছে।’
পরী চট করে বলে উঠল,’ক্যান??’
-‘ভাই সব দেইখা রাখতে পারল না ক্যান ডাক্তার আপা মরলো কেমনে?আরও কত কথা। এই কাকায় অনেক শয়তান রে আপা। সুযোগ পাইলেই ভাইরে গালাগালি করে।’
আখিরের নামটা শুনতে ইচ্ছা করে না পরীর। নিজের কাকা বলে সম্মান ও দেয় না। এই লোকটার প্রতি ঘৃণা ছাড়া কিছুই আসে না পরীর। আজ এমনিতেও মন ভাল নেই ওর। তাই আর বেশি কিছু ভাবল না পরী। চুপচাপ শুয়ে পড়ল।

কিন্ত রাত যত গভীর হলো পরীর খিদে তত বাড়লো। সারাদিন কিছু খায়নি। রাতে জুম্মান খেতে ডাকলেও গেল না। কিন্ত এখন আর খিদে সহ্য করতে না পেরে হারিকেন নিয়ে ছুটে গেল রন্ধনশালায়। ভাত বেড়ে গপাগপ খেতে লাগল সে। তখনই দরজায় টোকা পড়ল। বৈঠক ঘর থেকে কেউ অন্দরের দরজার কড়া নাড়ছে। পরী এটো হাতে ঘোমটা টেনে গিয়ে দরজাটা হাল্কা করে খুলল।
রাগন্বিত কন্ঠে শায়ের বলল,’এতক্ষণ লাগে তোর দরজা খুলতে?আমার খাবার নিয়ে আয়।’
বলেই চলে গেল শায়ের। পরী থ মেরে দাঁড়িয়ে রইল। পরক্ষণে মনে করল হয়তো কুসুম কে মনে করেছে শায়ের। নয়তো পরীকে ধমক দেওয়ার সাহস আছে ওই সামান্য কর্মচারীর?পরী গিয়ে শায়েরের জন্য ভাত বাড়লো তার পর আস্তে করে বৈঠক ঘরে পা রাখল।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।