নাবিলের মাঃ বাড়াবাড়ির একটা লিমিট আছে নাবিল কাল অনেক বাড়াবাড়ি করেছো আমরা কিছু বলি নি এখন আবার শুরু করেছো ভুলে যেও না ওই বাড়িটা শুধু তোমার নয় মেঘলারো যাক গে পাগলের সাথে কথা বলে লাভ নেই। তুমি তো ছোট বেলা থেকেই ওকে সহ্য করতে পার না এখনো হয়ত নিশ্চুই হিংসা হচ্ছে কিন্তু ভুলে যেও না ওর বাবা মা এখুনো জীবিত। দরকার হলে তুমি আর বাসায় ফিরো না।কিন্তু মেঘলা ফিরবে।যে বোনের সম্মান রাখতে পারে না তার ভাই হওয়ার কোন যোগ্যতা নেই। মেঘলা চল তুই দেখি নাবিল কি করে আটকায় তোকে…??
নাবিলঃ বাড়াবাড়ি আমি করছি নাকি তোমরা করছো?
এটা কেমন হচ্ছে যানো? ধরো গাছে পানি দিলাম আমি সবস্ত ঝড় থেকে আগলে রাখলাম আমি আর হটাৎ তুমি এসে বললে গাছটা তুমি পুঁতে ছিলে তাই ফল তোমার…
স্বার্থপরের ও তো একটা লিমিট থাকে মা তোমাদের তো সেটাও নেই।এতদিন মেঘলার মা বাবা ভাই কোথায় ছিল? আজ হটাৎ উদয় হল যে। এই পরিবার মেঘলাকে ঠাঁই না দিলে কবেই ওকে জানুয়ারে টেনে নিয়ে যেত।
আর কি যেন বললা? মেঘলা এখন এখানে থাকলে নাকি রক্ষিতা হয়ে যাবে তা মা আমাকে একটা কথা বলো এতদিন মেঘলা কোথায় ছিল? মংগলগ্রহে? নাকি এখানে?তখন রক্ষিতা হয় নি এখন মা বাবার পরিচয় পাওয়ার ফলে যদি তাকে রক্ষিতা হতে হয় পর তাহলে তো আমি বলব এমন মা বাবা মাকে পরিচয় দেয়ার কোন দরকারেই নেই।
মেঘলা আগেও যেমন ছিল এখনো তেমনি থাকবে.. এখানেই থাকবে আর মেঘলা তোকে বলছি মা বাবা পেয়েছিস বলে মনে করিস না তোর পিঠে পাখা গজিয়েছে বেশি উড়লে পাখা চেঁটে দেওয়ার ক্ষমতা আকাশের আছে আর ও না পারলেও আমি আছি। আর আমার পরিবারে আমার কথায় শেষ কথা বুঝেছো?আমি এত ভদ্র নই যেটা বল্লাম সেটাই হবে।
মেঘলাঃ ভাইয়া তো আকাশের চেয়েও খারাপ। আকাশের চেয়েও ত্যাড়া (মনে মনে)
মেঘলা কেঁদে কেঁদে বলল ভাইয়া তুই আমায় একটুও ভালবাসিস না?
নাবিলঃ না বাসি না। বাসি না জন্যই তো তোকে বাসায় নিব না কারন ওখানে থাকলে আস্তে আস্তে মা বাবার প্রতি দুর্বল হয়ে যাবি এখন যেমন এই বাড়ির জন্য কাঁদিস বিয়ের পর ওই বাড়ির জন্য কান্না করবি,তোকে ভালবাসি না জন্যেই তো তোকে কাঁদাতে চাই না।তার চেয়ে যেভাবে আছিস সেটাই ভাল নয় কি?
মেঘলার মাঃ আমি তো এভাবে ভাবি নি…
নাবিলঃ সহজ কথা সহজে কবে বুঝেছিলে যে আজ বুঝবে।আকাশ মেঘলাকে কতটা ভালবাসে সেটা এক মুহুর্তেই ভুলে গেছো ও মেঘলাকে পাওয়ার জন্য পুরো সমাজের কাছে ছোট হয়েছিল।নিজের সব বিসর্জন দিতে চেয়েছিল সব ভুলে গেছো কি আজব মানুষ তোমরা,তুমি না হয় ভুলে গেলে কিন্তু মেঘলা কি করে ভুলে গেল? কি পরিমান স্বার্থপর ও সেটাই ভাবছি।
মেঘলা এসে নাবিল কে জড়িয়ে ধরে বলল ভাইয়া আকাশ যে বলল আমায় বিয়ে করবে না সেটা কিছু না? বিয়ে করবে না তাহলে এখানে থাকব কেন?
নাবিলঃ হা হা হা যে তোকে বিয়ে করার জন্য সবার সামনে তোকে রেপ করতে চেয়েছিল সে তোকে বিয়ে করবে না এটাও তুই ভাবলি?
সত্যি আকাশের কি কপাল…???এমন একটা মেয়েকে কি করে ভালবেসেছে আকাশেই জানে আমার জিএফ এমন মাথা মোটা হলে সেদিনি ব্রেকাপ করতাম।আচ্ছা মেঘলা তুই কি বাংলা কথা বুঝিস না? আকাশ একবারো বলে নি বিয়ে করবে না।বলেছে পরে করবে।
মেঘলাঃ শুধু আমার দোষেই দেখছিস পরে কেন এখন নয় কেন?
নাবিলঃ আকাশ তুই কি সত্যিই একে বিয়ে করতে চাস আমার তো মনে হয় না একে বিয়ে করলে কখনো সুখি হবি..
মেঘলাঃ ভাইয়া…????????
নাবিলঃ ভুল কি বল্লাম তুই এত মাথা মোটা আর পুরাই আকাশের উল্টো তাহলে ম্যাচ হবে কি করে?
দেখ মেঘলা আকাশ আর আমি ২ জনেই সদ্য সদ্য দলে জায়গা পেয়েছি এতদিন মারামারি করেছি ঠিকি কিন্তু পলিটিক্স এর আসল মানে কি সেটা ত আমরা কেউই ঠিকমত জানি না। আকাশ যেহেতু বড় একটা পদ পেয়েছে ওকে ওর জায়গা বুঝে নেওয়ার একটু সময় দে। ও তো পালিয়ে যাচ্ছে না আর তোর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও তো কিছুদিন পর তাহলে পরিক্ষার আগে বিয়ের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে বিয়েটা পরিক্ষার পরে হোক।
নাবিলের মাঃ এটা আগে বল্লেই তো এত ঝামেলা হত না।
নাবিলঃ বলতে হবে কেন? এই সহজ কথা টা না বুঝার কি আছে? ও বলার আগে আমি যদি বুঝতে পারি মেঘলা কেন বুঝবে না? আর ওকে বলার সুযোগ দিলে তো বলবে।আচ্ছা মেঘলা আকাশ কি আমাকে কিছু বলেছে? এভাবে যদি ভুল বুঝে তাহলে তো ২ জনেই কখনই সুখি হবি না।
আকাশঃ থাক থাক নাবিল আর বলিস না এমনেতেই কেঁদে ফেলেছে আর কাঁদাস না বেচারি ঘাবড়ে গেছে।
নাবিলঃ দেখ কত কেয়ার করে তবুও তুই বুঝিস না এখুনো বুঝেলে সামনে অনেক বিপদে পড়তে হবে আমি এটা নিয়েই ভয় পাচ্ছি।
মেঘলাঃ দরকার নেই আমার বিয়ের..!! তোর বন্ধুকে বিয়ে করার কোন সখ নেই আমার.যা চালাক মেয়ের সাথে নিয়ে বিয়ে দে। আমি তো শুধু রাগ করেছি তুই জানিস আমি যদি বলতাম আমি বিয়ে করব না তাহলে এতক্ষনে মেরে আমার গাল লাল করে দিত। বলে হন হন করে উপড়ে চলে গেল।
নাবিলের মাঃ সব না হয় বুঝলাম কিন্ত মেঘলা আমাদের কাছে যাবে না?
নাবিলঃ কেন যাবে না অবশ্যই যাবে ও ওখানে গিয়ে থাকবে তবে যখন ইচ্ছা যাবে তবে ওর মনে রাখতে হবে এটাই ওর বাসস্থান। আমি মেঘলাকে খুব ভালবাসি মা তাই আমি চাই ও সারাজীবন আকাশের সাথে থাকুক কখনো যেন ওদের মধ্যে কোন ঝামেলা না হয় কারন আমি জানি আকাশের মত করে মেঘলাকে কেউ কখনো খুশি রাখতে পারবে না। আমি সারাজীবন মেঘলার মুখে হাসি দেখতে চাই। নাবিলের কথা শেষ হওয়ার আগেই
আকাশ এসে নাবিল কে জড়িয়ে ধরল,
আকাশঃ দোস্ত তোর মত করে কেউ কখনো আমাকে বুঝবে না।
নাবিলঃথাক আমার সাথে এত আহ্লাদ করতে হবে না তুই বরং উপড়ে যা আর ম্যাডামের রাগ ভাংগা। খুব ক্ষেপেছে।
আকাশ মুচকি হেসে উপড়ে চলে গেল।
নাবিলঃ চিন্তা করছো কেন মা আংকেল আন্টি তো আছেই তাই না।চলো বাসায় চলো সকালে এসে আমি মেঘলাকে নিয়ে যাব।
নাবিল তার মা বাবা কে নিয়ে বেরিয়ে চলে গেল।
আকাশ মেঘলাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য দরজায় নক না করেই রুমে ঢুকে গেল আর ঢুকার সাথে সাথেই আকাশের ১২ টা বেজে গেল কারন মেঘলা ড্রেস চেঞ্জ করছিল।
২ জন মুখিমুখি হওয়ায় ২ জনেই চিৎকার করে উঠল মেঘলা তাড়াতাড়ি ওড়না টেনে শরীর ঢাকল,
তারপর গালাগালি শুরু করল
মেঘলাঃ আপনি এত অসভ্য কেন? বেহায়া,বেসরম ফাউল ছেলে একটা আমার সব দেখে ফেলল????
আকাশ কি বলবে বুঝতে পারছে না।
মেঘলাঃ এমন ছেলে জীবনে দেখি নি… অভদ্র কারো ঘরে ঢুকলে দরজায় নক করতে হয় যানো না?
আকাশঃ আজব আমার কি দোষ তুই দরজা লক করিস নি কেন?
মেঘলাঃ রাগে মনে নেই তাইবলে তুমি নক না করে ঢুকে যাবে?
আকাশঃ থাক থাক এত চেঁচানোর কি আছ? আমি কিছু দেখি নি…
মেঘলাঃ মিথ্যা কথা সব দেখেছো..????
আকাশঃ আচ্ছা দেখেছি থাক না একটু দেখলে কি হয়…
মেঘলাঃ তারমানে সত্যি সত্যি দেখেছেন আ আ আ আ……. ????????????
আকাশঃ আরে বাবা দেখলেও দোষ না দেখলেও দোষ সত্যি দেখি নি বিশ্বাস কর…
মেঘলাঃ আমার সব শেষ আমি আর বাঁচতে চাই না,ইঁদুরের মরার বিষ খাব…
আকাশঃ আচ্ছা বাইরে গেলে এনে দিব তবু এখন চেঁচিয়ে কান খেয়ে ফেলছিস না?
মেঘলাঃ তারমানে আমি আত্মহত্যা করি আপনি সেটা চান?
আকাশঃ আহ কি ঝামালার পড়লাম যাই বলি তাই দোষ… এমন হবে যানলে আমি কি আর এই ঘরে আসি….
মেঘলাঃ????????????
আকাশঃ নিজে থেকে থামবি নাকি থাপ্পড় মেরে থামাব?
আরে বাবা আজ হোক কাল হোক বিয়ে তো হবেই আমি দেখলে কি হয়েছে?কিন্ত আমি কিছু দেখিনি।
মেঘলাঃ কে কাকে বিয়ে করবে? আমি তো বুঝি না মাথা মোটা আমাকে বিয়ে করতে হবে না।আর আপনি করলেও আমি আপনাকে করব না..!!!
আকাশঃ এসব কি আমি বলেছি? নাবিল বলেছে আমাকে শুনাচ্ছিস কেন? আমি তো বলি নি।
মেঘলাঃ তার মানে আমি বুদ্ধিমতি?
আকাশঃ হুম।
মেঘলাঃ কিছু দেখেন নি বলুন
আকাশঃ দেখি নি।আচ্ছা তাহলে মাফ করে দিলাম। এখন এখান থেকে যান আমি চেঞ্জ করি
আকাশ মেঘলার কাছে গিয়ে আস্তে করে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল একটা কথা ইমপর্টেন্ট কথা বলি?
মেঘলাঃ হুম বলুন…
আকাশঃ আমার কিন্তু বেশি বুঝা মেয়ে পছন্দ না তাই তোকে ভালবাসি আর আমি সব দেখেছি…বলেই আকাশ দৌড়।
মেঘলাঃ তারমানে কি আমা বোকা বানালে…??
আকাশ দৌড়াতে দৌড়াতে বলল অবশ্যই। আর বোকা বানানোর কিছু নেই তুই এমনেতেই বোকা দাঁড়া প্রমান দেই দেখ তুই এখন তুই আমাকে তাড়া করছিস ভুলে গেছিস তোর গায়ে কাপড় নেই মাথা মোটা ছাড়া কি কেউ এটা করতে পারবে নাকি?
মেঘলা ঘরের ভিতর থেকে চেঁচাচ্ছে
ওই গুঁইসাপের বাচ্চা,বদের হাড্ডি,কুটনীবুড়ির জামাই হাতের কাছে একবার পাই আজ তোর একদিন কি আমার একদিন শুধু জামা টা পালটানোর অপেক্ষা।
আকাশ হাসতে হাসতে চলে গেল।
মেঘলা জামা পাল্টেই আকাশের ঘরে গেল আর গিয়ে কোনো কথা বলার আগেই আকাশকে মারতে শুরু করল।
আকাশঃ আরে মারছিস কেন এটা তো ঠিক হচ্ছে না আমি তোকে দেখেছি শাস্তি হিসেবে তুই আমাকে দেখতে পাড়িস। মারামারি কেন করবি?এটা সঠিক বিচার না বলতে বলতে আকাশ একটা একটা করে শার্ট এর বোতাম খুলতে শুরু করল।
মেঘলা চোখ বন্ধ করে বলল এসব কি ধরনের অসভ্যতা?
আকাশঃ এটাই সঠিক বিচার…. আমি তোকে দেখিছি এবার তুই ও দেখ। আমাকে যত খুশি দেখ আমার কোন আপত্তি নে, কিরে চোখ বন্ধ কেন তাকা বলছি…
মেঘলা ২ হাতে মুখ ঢেকে বলল ছি ছি ছি কি বেসরম ছেলে…
আকাশঃ যদি দেখতে না পারিস তাহলে এই দেখাদেখির বিষয়টা সারাজীবনের জন্য ভুলে যা….
মেঘলাঃ কি বুদ্ধি মাথায়? আচ্ছা আচ্ছা মাফ করে দিয়েছি….
আকাশঃ আমি কি ক্ষমা চেয়েছি?
মেঘলাঃ এমন বেহায়া ছেলেকে কেউ বিয়ে করবে না।
আকাশ মেঘলাকে একটানে নিজের কাছে নিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে লল বিয়ে করবি না আমায়?
মেঘলাঃ আমি কি মানা করেছি?আপনি তো বলেছেন আমি বোকা আমার সাথে নাকি আপনি সুখি হবেন না।
আকাশঃ পাগলি কোথাকার তুই যেমন আমার তেমন টাই পছন্দ…. আমি তোকে ভালবাসি শুধুই তোকে বুঝিছিস? হয়ত সবার মত বুঝাতে পাড়ি না কিন্তু বিশ্বাস কর আকাশের মন প্রান জুড়ে আছে একটাই নাম লিখা আর সেটা হল মেঘলা।
হ্যা এটাও ঠিক তোর পর আমি যদি কাউকে ভালবাসি সেটা হল নাবিল…কারন ওর মত করে আমাকে কেউ বুঝে না। তোদের ২ টা ভাই বোনকেই আমার সেই লাগে….
মেঘলাঃ হুম ভাইয়া সত্যিই অনেক ভাল আর একটা কথা আমিও তোমাকে ভালবাসি…!!!
আকাশঃ জানি তবে যদি ভালবাসিস তাহলে কথা দে আর কখনো আমাকে ভুল বুঝবি না…
মেঘলাঃ আচ্ছা কথা দিলাম….