১৬ পৃষ্ঠায় | পর্ব – ১৫

এনোন ভালোই পায়ে ব্যাথা পেয়েছে নিনি ধরে উঠালো তাকে উঠানোর সময় এনোন কানে আস্তে করে বলল,, রাতে দরজা ভালোভাবে বন্ধ করোনি কেন প্রিভেসি নষ্ট করে দিছে।”
লজ্জায় লাল হয়ে গেল নিনি।
সামনে তাকিয়ে দেখলো প্রণালি ও সৌরভ এসেছে।
ভ্রু কুটি করল এনোন। নিনি যেন মহা খুশি সে গিয়ে জড়িয়ে ধরল সৌরভ কে। এনোন পায়ের সাইড টা ঘষতে লাগলো ব্যাথায়।
প্রণালি তাকে দেখে বলেন,, এসব হয়েছে কেমনে?”
এনোন শুধু এক পলক তাকালো নিনি সামনে এসে বলল,, এক বাচ্চা মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে উনার এমন অবস্থা হয়ে গেছে।”
নিনি ভ্রু কুঁচকে বলল,, জানলে কিভাবে তোমরা?”
সৌরভ বলল,, না জানার কারণ কি?”
প্রণালি ও সৌরভ দুজনেই বসে তাকে লেকচার দিতে লাগল। সাবধানে চলার জন্য কিন্তু এসব কথায় কানে নিচ্ছে না এনোন। সে আছে নিজের চিন্তায়।
সৌরভ নিনি কে জিজ্ঞেস করলেন,, কেউ নেই! রাতে শুধু তোমরা দুজন ছিলে?”
সাথে প্রশ্নের তাল মিলালো প্রণালি। নিনি হ্যা বলতেই এনোন এবার তাকালো সবার দিকে। সৌরভ ভ্রু উঁচু করে অবাক হওয়ার মতো ভান ধরলো।
এনোনের মতিগতি দেখে প্রণালি জিজ্ঞেস করেন,, বাসায় কবে যাবেন?”
“কালকে” হাসি মুখে বলল নিনি।
আরো কিছুক্ষণ থেকে বেরিয়ে গেল তারা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল এনোন। ভ্রু কুটি করল নিনি।
এনোন নাক মুখ কুঁচকে ফেলে বলল,, এতো কথা বলে কেন এরা!”
নিনি ঠোঁটের কোণায় চাপা হাসি রেখে বলল,, তো চুপ করে থাকবে নাকি? কোথাও গেলে কথা বলতে হয় সবাই আপনার মতো হয়ে থাকলে দুনিয়া চলবে না।”
এনোন এক ভ্রু উঁচু করে অবাক হয়ে বলল,, বাহ এসব কথা তুমি বলছো! উহম্ উহম্”
অন্যদিকে মুখ ফিরালো এনোন।
নিনি আর কথা বাড়ালো না সে গিয়ে ব্যাগ থেকে কি যেন খুজছে। এনোন দরজার দিকে তাকালো তারপর উঠে লক করে তার দিকে এগিয়ে গেল। আশেপাশে কোন খেয়াল নেই নিনির সে আছে কিছু খোজার তালে।
তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল এনোন। ভয়ে হালকা লাফিয়ে উঠলো। ঘাড় ফিরিয়ে তাকালো এনোনের দিকে সে চোখ বুজে কপাল ঠেকে রেখেছে তার কাঁধে। নিনি আবারো ব্যাগে মনোযোগ দিতেই এনোন এবার তার দুহাত সহ নিয়ে জড়িয়ে ধরল।
নিনি অস্বস্তি হয়ে বলল,, কি করছেন আপনি! আমাকে মোবাইল খুজতে দেন, ব্যাগে রেখেছিলাম কিন্তু পাচ্ছি না।”
এনোন কাঁধে থুতনি রেখে বলল,, মাঝে মাঝে সময় দিতে হয় কারোর জন্য।”
“সবাইকেই সময় দেয় আমি আর কাকে দিব” হাত ছাড়িয়ে আবারো নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে বলল নিনি।
“যে তোমার পাশে আছে” মিষ্টি হেসে বলল এনোন।
“কে আছে?” অতি ব্যস্ত সুরে বলল নিনি। মোবাইল সে খুঁজেই পাচ্ছে না দেখে বিরক্ত শব্দ তুলল। তার অবস্থা দেখে প্রচন্ড বিরক্ত হলো এনোন। কাঁধে দাঁত বসিয়ে দিল সে।
নিনি ‘আহহ’ শব্দ তুলে লাফিয়ে তার দিকে ফিরে সেই জায়গা ঘষতে ঘষতে বলল,, এ কি করলেন আপনি? উফফ!”
“আমাকে অদৃশ্য মনে হয় তোমার?” রেগে মেখে বলল এনোন। এতক্ষণ বলা সব কথা মাথায় আসলো নিনির। এনোন যে এটেনশন নিতে চেয়েছিল এতক্ষণ।
নিনি আফসোসের সুর তুলে বলল,, ওহ~~ আচ্ছা!”
বলে আবারো ঘুরলো ব্যাগের দিকে।
এনোন বিরক্ত হয়ে তার শাড়ির আঁচল টেনে নিজের দিকে ঘুরালো।
নিনি পিলক চমকালো এনোন তার কোমড় আকড়ে ধরে ঝুঁকে বলল,, ইগনোর করছো?”
“মোটেও না, আমি মোবাইল খোঁজার চেষ্টা করছি কিন্তু পাচ্ছি না।” হতাশ গলায় বলল।
এনোন বিরক্তিতে কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখ বন্ধ করে খুলল তারপর বলল,, এটার জন্য এমন করার দরকার নেই, না পেলে পরে আরেকটা কিনে দিব।”
হতাশ হয়ে নিঃশ্বাস ফেলে বলল,, পাব না কেন! পাবো অবশ্যই পাবো ভালোভাবে খুজলে পেয়ে যাবো।”
“অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করে নিই আগে” অদ্ভুত স্বরে বলল এনোন। এর অর্থ বুঝলো না নিনি,
বিচিত্র চেহেরা করে বলল,, মানে?
তারপর এনোনের চেহারা দেখে সবকিছু বুঝে ফেলল সে তার কাঁধ ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলল,, না, এখন না কেউ এসে যাবে!”
“তোমার মতো গাধা না যে দরজা খোলা রেখেই এসব করবো।” ঠাট্টা করে বলল এনোন। ঘাড় বেঁকে দরজার দিকে তাকালো। এনোন তার দিকে ঝুঁকতেই চোখ খিচে বন্ধ করে নিল কাঁধের কাছে শার্ট খামচে ধরল ‌। অনেকটা কাছে আসতেই দরজাই টোকা পড়লো। নিনি চোখ খুলে ফট করে এক হাত দিয়ে তার মুখ ঢেকে ফেলল। বলল,, কেউ এসেছে।”
মুখ থেকে হাত সরিয়ে দরজার দিকে তাকালো এনোন। প্রচন্ড মাত্রায় বিরক্ত হয়েছে সে।
পেশেন্ট বেডে বসে নিনি কে বলে,, দরজা খুলো!”
নিনি ঠোঁট চেপে হাসলো। লজ্জাময় সেই হাসি। দরজা খুলতেই হড়বড়িয়ে ভেতরে ঢুকলেন সর্ণালি।
সাথে উজ্জল সাহেব ও সিনান।
ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলেন,, কোন অসুবিধা হয়েছে তোর?”‌
এনোন মুচকি হেসে মাথা নাড়লো। এ যেন শান্তি হলেন সর্ণালি। কিছুক্ষণ পরেই নার্স আসলো এনোনের সবকিছু ভালোভাবে চেক করে কিছু না বলেই চলে গেল।
সিনান অবাক হলো তার কান্ডে বলল,, এ আবার কেমন নার্স? কিছু না বলেই চলে গেল।”
উজ্জল সাহেব বেরিয়ে গেলেন। সর্ণালি নিনি কে ধমকে বলেন,, মোবাইল কই তোমার? কতক্ষণ যাবত কল করছি রিসিভ করছিলে না কেন?”
ঠোঁটে কিঞ্চিৎ দূরত্ব সৃষ্টি হলো। মোবাইল সাইলেন্ট অবস্থায় কোথায় হারিয়ে গেছে। নিনি মাথা নিচু করে বলল,, মোবাইল আমি পাচ্ছি না।”
ভারি চমকালেন সর্ণালি বলেন,, এ কেমন মেয়ে মোবাইল ও যত্ন করে রাখতে পারে না, এনোন তোর কোন সমস্যা হয় নি তো সত্যি করে বল।” বলে এনোনের দিকে তাকালেন তিনি।
এনোন আশ্বস্ত কন্ঠে বলল,, কোন সমস্যা হয়নি…আর তুমি এমন করছো কেন? রিল্যাক্স!”
থামলেন সর্ণালি। কিন্তু তার আগে কটাক্ষ চোখে নিনির দিকে তাকালেন একবার। আধাঘন্টা পর উজ্জল সাহেব এসে বলেন,, ডাক্তারের সাথে কথা বলে এসেছি, কালকের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না আজকেই নিয়ে যেতে পারবো এনোন কে।”
এ শুনে যেন সবার মুখে হাসি ফুটলো। সর্ণালি এনোন কে বলেন,, বাসা থেকে শার্ট এনেছি তোর জন্য ওটা পড়ে নে।”
মাঝখানে নিনি দ্রুত বলল,, শার্ট আগের থেকেই আছে।”
কপাল ভ্রু কুঁচকে তাকালো এনোন। সর্ণালি হাসি মাখা মুখ করে বলল,, আচ্ছা! ওটা পরিয়ে দাও ওকে।” বলে সরে আসলেন তিনি। সবাই বেরিয়ে যেতেই নিনি শার্ট নিয়ে তার সামনে আসলো।‌
সেই ধূসর রঙের শার্ট দেখে পিলক চমকালো এনোন।
#১৬_পৃষ্ঠায়
পর্ব – ১৫ #নতুন_শুরু (বাকি অংশ)
লেখিকা – Zaira Insaan
হিম হাওয়ায় নিবদ্ধ পরিবেশ। তপ্ত রোদ কাঁচের গ্লাস ভেদ করে মুখে পড়ছে নিনির। বাহিরে প্রচন্ড গরম কিন্তু তা অনুভব করতে পারছে না সে। গাড়ির এসির বাতাসে ঠান্ডা হয়ে আছে। গালে হাত রেখে বাহিরে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আছে। কয়েক মাস কেটে গেল। এই কয়েক মাসে অনেক কিছুই পরিবর্তন ঘটেছে। সে সাথে নিজেকেও অনেক পরিবর্তন করেছে এক পুরুষের কারণে। আজ তার অদ্ভুত রকমের ইচ্ছা জাগছে। এই রৌদ্রজ্বল রক্তিম পরিবেশে বের হতে। গরম হাওয়া নিজের গায়ে মাখতে। যদি এ ইচ্ছা কেউ শুনলে নির্ঘাত তাকে পাগল বলবে। অনেকেই দ্রুত গতিতে ছুটে চলছে এই গরম থেকে বাঁচতে।
তাকে এমন নিরলস ভাবলেশহীন হয়ে থাকতে দেখে তার পাশে বসে ড্রাইভ করতে করতে এনোন বলে উঠে,, কি হয়েছে তোমার?”
পিলক চমকালো নিনি। আনমনে হয়ে থাকতে হঠাৎ এক ধ্বনি কানে বেজে উঠতেই চমকে উঠে, বলে,,, “কিছু না।”
“মন খারাপ?” সামনের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেই প্রশ্ন করল এনোন।
“কিছুটা”
সাথে সাথে গাড়ি থামায় এনোন। হালকা ঝুঁকে হচকচিয়ে গেল নিনি। আঁটসাঁট ‌কন্ঠে বলল,,
“কিসের জন্য মন খারাপ? কি হয়েছে?”
ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলল নিনি তারপর ধীরস্তে কন্ঠে বলল,,
“এমনেই কিছুই ভালো লাগছে না।”
“হঠাৎ!” ভ্রু কিঞ্চিৎ কুঁচকে ফেলল এনোন।
“বাসায় যাবো” মুখ গোমরা রেখে বলল। এনোন তার দিকে এক পলক তাকিয়ে গাড়ি র্স্টাট দিল। তার হঠাৎ এমন মুড দেখে চিন্তিত হতে লাগল এনোনের।
বাসার সামনে গাড়ি থামাতেই নিনি নেমে সোজা চলে গেল। তার ব্যবহার বুঝতে পারলো না এনোন শুধু থ মেরে তাকিয়ে রইল।
__________
এনোন রুমে আসতেই দেখে নিনি বিছানার এক কোণায় বসে বারান্দার দিকে তাকিয়ে আছে। এনোন পাশে গিয়ে বসলো। নিনি নিজেকে আরো গুটিয়ে নিল। গোপনে ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে এনোন বলল,,
“কি হয়েছে এমন হয়ে আছো কেন?”
“বিয়ের কই মাস হচ্ছে?” মুখে গাম্ভীর্য ভাব রেখে প্রশ্ন করল নিনি।
“নয় মাস চলছে” কপাল কুঁচকে বলল সে।
“হুমম, কিন্তু এই নয় মাসে আপনি আমাকে ভালোভাবে চিনেন নি।” আড়চোখে তাকালো নিনি।
বিষয়টি বুঝলো না এনোন। চেহারা বানিয়ে ফেলল সে। তর্জনি দিয়ে কপাল ঘষে বলল,,
“মানে?”
“আজ কই তারিখ?”
“সাত তারিখ!” ক্যালেন্ডার দিকে এক পলক দেখে বলল এনোন।
“কালকে কি?” এক ভ্রু উঁচু করে বলল নিনি।
“কি?” না জেনে বলল এনোন।
আফসোসের দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লো নিনি তারপর বিড়বিড় করে,, পুরুষ জাতি বোধহয় এমনি হয়!”
“বলো! কালকে কি?” আবারো প্রশ্ন করতেই নিনি রক্তিম চোখে তাকিয়ে বলে,,
“মনে যেহেতু নেই তাহলে মনে করিয়ে লাভ কি! সরেন সামনের থেকে” বলে তাকে সরিয়ে চলে গেল। এনোন এখনো বুঝতে পারলো না নিনি এতো ছ্যাত করে উঠলো কেন?
__________
রাতে এক সাথে খেতে বসতেই নিনি বলল,,
“কালকে আমি কলেজের ফ্রেন্ডদের সাথে ঘুরতে বের হবো।”
“কেন?” খেতে খেতে প্রশ্ন করল এনোন। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে নিনি হতাশার সুর তুলে বলল,,
“আপনার হয়ত মনে নেই কিন্তু আমার বন্ধুর মহলে সবারই মনে আছে তাই কালকের সারাটি দিন এদের সাথেই কাঁটাবো।” বলে উঠে যেতেই এনোন তার হাত ধরে নিল বলল,,
“খাবার খেয়ে নাও”
“খাওয়ার ইচ্ছা অনেক আগেই মরে গেছে তাই আমার হাত ছাড়ুন” বলে হাত ছাড়িয়ে নিতে চাইলো নিনি।
“এ সময়ে তোমার আরো খাওয়া উচিত, সো কথা না বাড়িয়ে খেতে বসো।” বলে তাকে টেনে বসালো। তারপর মুখের কাছে খাবার তুলে ধরলো। নিনি আড়চোখে তাকালো একবার তারপর শত অভিমান ভুলে তারই হাত থেকে খাবার টুকু খেয়ে নিল।
খাওয়ায় দিতে দিতে এনোন বলল,,
“কালকে কোথাও যেতে হবে না কারোর সাথে, তোমাকে আমি পারমিশন দিচ্ছি না।”
চোখ অবাকে বড়বড় করলো নিনি। সাথে সাথে রাগের ভিড় জমলো। বলল,,
“কেন?”
“রেস্ট নিতে হবে তোমার”
“কোন রেস্ট ফেস্ট লাগবে না আমার, আমি কালকেই বাহিরে যাবো ওদের সাথে নাহয় আপনার সাথে” বলে জিদে ঠোঁট চেপে ধরে বুকে দুহাত গুজে দিল। ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে এনোন তারপর বলল,,
“কালকে তোমাকে আমি ঘুরতে নিয়ে যাবো ওদের সাথে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, ওদের বিশ্বাস করে রিস্ক নিতে চাইনা আমি”
খুশিতে গদগদ হয়ে গেল নিনি। খিলখিল করে হেসে বলল,, সত্যি?”
“হুম”
খিলখিল করে হাসতে লাগলো নিনি। নিষ্পলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল এনোন। ঠোঁটের কোণায় তারও হাসি ফুটে উঠল।
___________
ঘুমাতে এসে ঝপ করে জড়িয়ে ধরল নিনি বুকে মুখ গুঁজে দিল সে। এনোন তার কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বলল,,
“উনিশে পা রাখতে চলেছেন আপনি…কি ভাবছিলেন আমার মনে নেই?”
চরম অবাক হলো নিনি ঠোঁটে কিঞ্চিৎ দূরত্ব সৃষ্টি হলো। তাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে টুপ করে চুমু বসিয়ে দিল তার গালে। দ্রুত জিভ ভিজিয়ে ঠোঁট জোড়া বন্ধ করলো সে তারপর আমতা আমতা আমতা করে বলল,,
“আপনার মনে আছে?”
“একটা মাত্র বউ মনে থাকবে না কেন?”
রেগে ফুঁসে গেল নিনি বলল,,
“এক মাত্র বউ মানে?” হালকা শব্দ তুলে হেঁসে দিল এনোন। তার অধর নগলে গাঢ় স্পর্শ করলো সে। বলল,,
“এতো রেগে যাও কেন? বেশি রাগলে আমাদের অনাগত বাচ্চাও এমন হবে সো বি কুল!”
এক ঝাঁক লজ্জা পেয়ে বসল নিনির। ফুলা গাল গুলো রক্তিমে ছেয়ে গেল। তার বুকে মুখ গুজে বলল,, ঘুমাতে দেন তো!”
মুচকি হাসি দিলো এনোন।
___________
ঘুমের ঘোরে খালি কিছু অনুভব করতে পারলো নিনি। চোখ খুলতে পারছে না তাও কিছু সময় নিয়ে ধীরে ধীরে চোখ খুলল সে। চারপাশ আঁধারের গহীনে ডুবে আছে। পাশ ফিরলো সে এনোন নেই! হড়বড়িয়ে উঠে বসলো সে। দু এক বার ডাক দিল,, “আপনি কই?”
কিন্তু কোন সারা শব্দ পাওয়া গেল না। রুমটাও অদ্ভুত রকমের অন্ধকার হয়ে আছে। তার উপর এনোন ও নেই। ঘামতে লাগলো সে। পায়ের কাছ থেকে চাদর সরিয়ে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালো হাতরিয়ে মোবাইল খোঁজার ও চেষ্টা করলো কিন্তু পেল না। এই অন্ধকার জগতে আসতে আসতে হেঁটে সামনে পা বাড়াতে লাগলো নিনি। রুম থেকে বেরিয়ে আসলো সে হল রুম পুরো টা অন্ধকার হয়ে আছে। রান্নাঘরের বাতি সবসময় জ্বালানো থাকে আজ সেটাও বন্ধ হয়ে আছে।
নিনি কিছু একটা আঁচ করতে পারলো তারপর হালকা হেঁসে বলল,, আপনি আমাকে সারপ্রাইজ দিচ্ছেন তাই না?”
বিপরীতে কোন উত্তর আসলো না। এবার এক ধরনের ভয় কাজ করতে লাগলো তার। ঘেমে মেখে চুপসে আছে সে।
আবারো গলা ঝেড়ে শুকনো ঢোক গিলে বলল,, আপনি আমাকে ভয় লাগালোর চেষ্টা করছেন? কোথায় আপনি? দেখেন এবার আমার প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে প্লিজ সামনে আসুন!”
পরিবেশ নিস্তব্ধ হয়ে আছে। শুধু তারই আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতেও তার ভয় কাজ করছে কিনা কি হয়ে যায়! এনোন থাকলে সাহস হতো। তার মনে হচ্ছে এনোন পুরো ঘরের লাইট অফ করে তাকে ভয় দিয়ে পরে সারপ্রাইজ দিবে। দু এক শুকনো ঢোক গিললো সে। এখন আর সেটা মনে হচ্ছে না এনোন নামক এক ব্যাক্তি ঘরে আছে বলেও তার মনে হচ্ছে না। নিজের হৃৎপিণ্ডের স্পষ্ট শব্দ শুনতে পাচ্ছে। শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত ও ঘন হয়ে আসলো। বাজে বাজে খেয়াল আসতে লাগলো তার মনে।
চোখের কোণার থেকে অশ্রুজল গড়িয়ে পড়তে লাগল কান্না ভেজা ভাঙা কন্ঠে বলল,,
“আপনি যদি এখনি না আসেন তাহলে আমি অন্ধকারে সিঁড়ি থেকে নেমে নিজের ক্ষতি করে ফেলবো”

চলবে…

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।