১৬ বছর বয়স | পর্ব – ৩৯ (পরিশোধ)

সকালে আগে আমার ঘুম ভাঙলো। শাওন আজও আমাকে পিছন থেকে কোমড় জড়িয়ে ধরে আছে। আমি হালকা ঘাড় ঘুরিয়ে ওনার দিকে তাকালাম। উনি এখনো ঘুমাচ্ছেন।আমি ওনার হাতটা আস্তে করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেই উনি নড়েচড়ে আমার আরো কাছে চলে আসলেন আর সেভাবেই ধরে রইলেন।
কি করব এখন! শাশুড়ীর গুনধর ছেলে ত সকাল সকাল উঠত। কিন্তু এখন দেখো!
ওদিকে স্নোবেলটাকে কাল রাত থেকে দেখলাম না। হয়ত শাওনের কাজিনরা নিয়ে গেছে। ওর কাছে যেতে হত।
কিন্তু এখন ওঠার উপায় নেই। তাছাড়া আমি ওনাকে ঘুম থেকে উঠাতেও চাচ্ছিনা। তাই অপেক্ষা করতে লাগলাম।
অপেক্ষা করতে করতে একঘন্টা হয়ে এলো তাও উনি ঘুমাচ্ছেন। বুঝিনা উনি এক পাশে ফিরে যে আমাকে ধরে থাকেন অন্যদিকে ফিরতে ইচ্ছে করেনা? এদিক ওদিক না ফিরে ঘুমায় কিভাবে একপাশে ফিরেই!
“মিলা আজ কি আর বের হতে ইচ্ছে করছে না?” দরজার বাহিরে থেকে বলল নিপা। পাশে অন্য কাজিন গুলোও আছে। ওরা সবাই বাহিরে অনেক হাসাহাসি করেছে।
আমি সাথে সাথে শাওনের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে বসলাম বিছানা থেকে নামার জন্য।
কিন্তু শাওন আমার হাত ধরে নিল। আমি চমকে ওনার দিকে তাকালাম। উনি এক হাত ভাজ করে তার উপর মাথা উঁচু করে রেখে আমার দিকে মুচকি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছেন। অর্থাৎ উনি এখন আমাকে ছাড়বেন না।
আমি গলায় স্বর নামিয়ে অনুরোধ করে বললাম, প্লিজ এখন যেতে দিন আমাকে। সবাই কি মনে করবে!
শাওন বলল, ওকে।
উনি আমার হাত ছেড়ে দিলেন। আমি সাথে সাথে বিছানা ছেড়ে নামলাম কিন্তু শাড়ির আঁচলে টান অনুভব করে থেমে গেলাম।
ব্যস্ত হয়ে পিছনে ঘুরেই অবাক হয়ে গেলাম। উনি উঠে বসে আমার শাড়ির আঁচলটা হাতে ধরে নিয়েছেন।
আমি নিচু গলায় বললাম, “কি শুরু করেছেন আপনি?”
ওদিকে বাহিরে দাড়িয়ে ওরা সবাই হেসেই যাচ্ছে।
শাওন অন্য হাত দিয়ে ইশারা করে বলল,”এখানে আসো।”
আমি শাড়ির আঁচল টেনে নেওয়া চেষ্টা করে বললাম, “কখনই না, আমি জানি ত আপনি আমার সাথে আবার কি কি সব করবেন।”
শাওন শাড়ির আঁচলটা হাতে পেচিয়ে এক টান দিতেই আমি ওনার কাছে চলে এলাম। আমার হাত দুটো এসে পরলো শাওনের কাধের উপর। উনি গম্ভীর চোখে তাকিয়ে আমার মুখের সামনে এসে পরা চুলগুলো সরিয়ে দিলেন। আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম।
বাহিরে থেকে আবার কেউ দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলল, “তোরা কি আজ আর বের হবি না?”
বলেই সবাই হাসতে লাগল।
আমি শাওনের উপর থেকে হাত সরিয়ে নিলাম তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে বললাম, “ছাড়ুন এখন, প্লিজ।”
“বকুলকে বলবা আমাদের মধ্যে সব স্বাভাবিক আছে। আর আমি তোমাকে আদরও করি।” শাওন বলল।
আমি হকচকিয়ে গেলাম আর শাওনের দিকে তাকালাম। কিন্তু উনি মজা করছেন না। বরং সিরিয়াস হয়ে কথাটা বলেছেন।
আমি কি বলব বুঝতে না পেরে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম।
“আর এখন আগে শাওয়ার নেও তারপর রুম থেকে বের হও।” বলেই শাওন আমার শাড়ির আঁচল ছেড়ে দিল আর বাথরুমের দিকে ইশারা করল।
আমি উঠে দাড়ালাম। সাথে সাথে শাওন আবার আমার হাত ধরল।
আমি চমকে তাকালাম।
“তোমার সবকিছু আমাদের কাবাডে রাখা।” বলেই শাওন ওর কাবাডের দিকে ইশারা করল।
তারপর আমার হাত ছেড়ে দিল।
আমি এগিয়ে গিয়ে কাবাড খুললাম। ওনার একটা কথা “আমাদের কাবাড” আমার মুখে হাসি নিয়ে এলো। আমি সব নিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেলাম।
সব ত করলাম কিন্তু শাড়ি কি করে বাথরুমে পরব? রুমে ত আবার উনি আছেন।
তাই মাথায় তোয়ালে বেধে শাড়িটা কোন রকম গায়ে জড়িয়ে বের হয়ে এলাম।
উনি নেমে খাটে বসে ছিলেন। আমাকে বের হতে দেখে বললেন, “আমার জন্য ওয়েট করো।”
বলেই উনি জামাকাপড় নিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেলেন।
আমি এবার একটা হাফ ছেড়ে নিজের শাড়ি ঠিক করতে লাগলাম।
উনি খানিকক্ষণ বাদেই একটা সাদা শার্ট আর আকাশী রঙ এর জিন্স পরে মাথা মুছতে মুছতে বের হয়ে এলেন।
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিলাম। উনি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে কাছে এগিয়ে আসতে লাগলেন। আমি দরজার কাছেই দাড়িয়ে ছিলাম। তাই তাড়াতাড়ি রুমের দরজা খুলে বের হয়ে গেলাম। উনি নাহলে আবার আমাকে জ্বালানো শুরু করে দেবেন।
কিন্তু বের হতে না হতেই উনি এসে আমার হাত ধরে নিলেন। আমি চমকে ওনার দিকে তাকালাম।
“বলেছি না অপেক্ষা করতে, একসাথে নিচে যাব।” শাওন ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলল।
আমি কি বলব বুঝতে না পেরে তাকিয়ে রইলাম।
“চলো এখন।” বলেই শাওন আমার হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলো। সিড়ির কাছে এসেই আমি হাত ছাড়িয়ে নিলাম। শাওন আমার দিকে প্রশ্নসূচক চোখে তাকালো।
“স..সবাই দেখবে।” আমি চোখ নামিয়ে বললাম।
শাওন আবার আমার হাত ধরে নিয়ে বলল,”আমি সবার দেখা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিনা তাই তুমিও ঘামানো বন্ধ করো।”
আমি আর কিছু বললাম না।
নিচে সবাই বাসা সাজাচ্ছে। আমাদের দেখে কাকিমনি বলল, “এত সময়ে আসতে ইচ্ছে হলো?”
নিপা বলে উঠল,”ডেকে ডেকে গলা ব্যথা হয়ে গেল তাও সারা দিল না।”
সবাই হাসতে লাগল।
“হয়েছে তোর?” শাওন ভ্রুকুচকে নিপাকে বলল।
“না। এখন মিলাকে লাগবে আমাদের। কাজ আছে।” চোখ পাকিয়ে বলল নিপা।
অন্য কাজিনরাও কোমড়ে হাত দিয়ে হ্যা সূচক মাথা নাড়ল। পলক এক কোনায় দাঁড়িয়ে চুপচাপ হাসছে।
“আমি জানি ত কি কাজ। ওকে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করার কাজ। তাই ভুলে যা। ও আমার সাথেই থাকবে।” শাওন সিরিয়াস হয়ে বলল।
নিপা রেগে কাকিমনিকে বলল, “মা দেখেছো? কিভাবে বউ এর হয়ে আমাদের সাথে ঝগড়া করছে।”
কাকিমনি কিছু না বলে শুধু হাসলেন।
আমি মাথা নিচু করে রইলাম। উনি এখনো আমার হাত ধরেই আছেন। ছাড়াছাড়ির নাম নেই।
শাওন ওদের পাত্তা না দিয়ে আমাকে চেয়ারে নিয়ে বসালো আর আমার পাশে বসল।
আমার শাশুড়ী সিড়ি দিয়ে তখনি নিচে নেমে এসে দাড়ালেন।
“সবার খাওয়া শেষ। তোদের জন্য অপেক্ষা করতে করতে শেষ আমরা।” বলতে বলতে পিশিমনি আমাদের সামনে আলু ভাজি আর রুটি রাখলেন।
“কুমড়ো ভাজি নেই?” আমি আর শাশুড়ী দুইজন একসাথেই বলে উঠলাম।
আমি চমকে শাওনের মায়ের দিকে তাকালাম।
সবাই স্তম্ভিত হয়ে গেল কিন্তু পরক্ষণেই হেসে দিল।
শাওনও নিঃশব্দে হেসে দিল।
“যাক এতদিনে তোমার মধ্যে সুবুদ্ধি হয়েছে।” শাওনের মা শক্ত মুখে তাকিয়ে আমাকে বললেন।
এটা প্রশংসা নাকি না, বুঝলাম না।
“কুমড়ো আজ নেই।” কাকিমনি বললেন।
“সমস্যা নেই।” শাওন বলল।
“শাওনের কুমড়ো ত এখন মিলা।” বলে উঠল পিশামনি।
সবাই আবার হেসে দিল। শাওন আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিল।
“এখন কথা না বলে ওদের খেতে দে।” শাওনের মা সবাইকে বলল।
শাওন আমার তিনটা প্লেট সাজালো একটা আমার সামনে রেখে অন্যটা ওর মায়ের জন্য এগিয়ে নিয়ে গেল।
শাওনের মাকে এই প্রথম আমি হাসতে দেখলাম। শাওন ওর মা কে নিয়ে এসে আমার পাশের চেয়ারে বসালো।
আমি সরে যাওয়ার জন্য উঠতেই শাওনের মা শক্ত মুখে বললেন, তোমাকে উঠতে বলেছি?
আমি অপ্রস্তুত হয়ে তাকিয়ে আবার বসলাম।
শাওন ওর প্লেট নিয়ে আমার পাশে এসে বসলো। আমার যে কেমন অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে সেটা আমিই জানি। ভাবা যায় শাশুড়ীর পাশে বসে খাচ্ছি!
শাওন আমার দিকে প্রশ্নসূচক চোখে তাকালো। আমি না সূচক মাথা নেড়ে খেতে লাগলাম।
“আজ বৌভাত। শাড়ি চেঞ্জ করে আমি যেটা দেব সেটাই পরবে তুমি।” শাশুড়ী বললেন আমাকে।
আমি ওনার দিকে চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম।
খাওয়া শেষ হতেই শাশুড়ী আমাকে বললেন, আমার রুমে এসো, শাড়ি নিয়ে যাও।
আমি ওনার পিছু পিছু ওনার রুমে গিয়ে ঢুকলাম। এই প্রথম আমি আমার শাশুড়ীর রুমে ঢুকলাম। উনি একটা অনেক সুন্দর কালো খয়রী রং এর শাড়ি আমার হাতে দিলেন।
“এটা পরে এসো।” উনি আমাকে বললেন।
উনিও শাওনের মতই হাসে না। শাওনের মত বলতে শাওন আগে যেমন গোমড়ামুখু ছিল তেমন। হয়ত সুইটির শোকে। নাকি উনি এমনই?
আমি শাড়ি নিয়ে বের হয়ে এলাম।
রুমে এসে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম। তারপর শাড়ি পরতে লাগলাম। শাড়িটি সত্যিই অনেক সুন্দর। আমি শাড়িটা ঠিকভাবে পরে নিলাম।
“it suits you perfectly.” পিছন থেকে বলে উঠল শাওন।
আমি অনেক বেশিই চমকে উঠলাম। উনি কিভাবে….? আমি ত দরজা বন্ধ করেছিলাম। তাহলে?
আমি স্তম্ভিত হয়ে দাড়িয়ে রইলাম। পিছনে ঘুরলাম না।
এটাই হওয়ার বাকি ছিল মনে হয়। আমি এখন কি করব! উনি আমার শাড়ি পরা পুরোটা…।
আমি মাথা নিচু করে রইলাম। আর এক হাত দিয়ে শাড়ির আঁচল চেপে ধরলাম।
“আমি দেখতে চাই নি। তোমার দোষ। তুমি বেলকোনি চেক করোনি।” শাওন শান্ত গলায় বলল।
এখন উনি সহজেই আমার ঘাড়ে দিয়ে দিলেন। উনি ইচ্ছে করেই সবটা… সত্যিই উনি অনেক বেশিই খারাপ। আমার এই পরিস্থিতিতে এখন অদৃশ্য হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।
আমি ওভাবেই দাঁড়িয়ে রইলাম। উনিও আর কোনো কথা বলছেন না। পিছনে ঘুরতেও ত কেমন লাগছে। কিন্তু এভাবে আর কত সময়! নিচে সবাই অপেক্ষা করছে হয়ত।
“কি করেছ তুমি আমার উপর?” শাওন বলে উঠল।
কি বলছেন উনি এসব? আমি আবার কি করলাম!
“মিলা নিচে আয়।” পিশিমনি নিচ থেকে জোর গলায় বলল।
আমার পা ত নড়ছেই না। কারণ পিছনে ঘুরতে পারব না আমি।
“যাও। নাকি থাকতে চাচ্ছ?” শাওন বলল।
আমি কোনোদিকে না তাকিয়ে তাড়াতাড়ি ঘুরেই দরজার কাছে এগিয়ে গেলাম।
তারপর দরজা খুলে বের হয়ে এলাম। শাওন আবার পিছন থেকে এসে আমার হাত ধরল।
আমি হকচকিয়ে গেলাম আর ওনার দিকে না তাকিয়েই বললাম, “কি করতে চাচ্ছেন আবার!”
“একসাথে যেতে চাচ্ছি।” শাওন বলল।
উনি আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে নিচে নেমে এলেন।
সবাই নিচে অপেক্ষা করছিল। কাকা, কাকি আর প্রভাতীও এসেছে।
আমি শাওনের কাছ থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই উনি আমার দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকালেন।
“স্নোবেলের…কাছে…যাব।” আমি থেমে থেমে বললাম।
শাওন আমার হাত ধরে রেখেই আমার কাছে এসে আস্তে করে বলল, “তোমার স্নোবেল ভালো আছে। চিন্তা করা লাগবে না।”
“ওকে ছাড় এখন। কেউ নিয়ে যাবে না তোর মিলাকে।” বলল কাকিমনি।
শাওন তাও আমার হাত ধরেই রইল।
কিন্তু লাভ হলো না। কাকিমনি আমাকে জোর করে ওনার কাছ থেকে নিয়ে গেলেন।
সত্যিই হাসি পাচ্ছে উনি যা শুরু করেছেন।
সেদিন অনেক ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কাটলো। অনেকের সাথে পরিচয় হতে হল। কিন্তু উনি সারাদিনে আমাকে চোখের আড়াল হতে দিলেন না।
কিন্তু রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে হয়ে গেল আরেক কান্ড। খাওয়া শেষ করতেই শাওনের ফোনে একটা কল আসলো। শাওন ফোন তুলে কথা বলতে বলতে
এক সাইডে চলে যাওয়ার সাথে সাথে নিপা আমাকে এক হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগল। সাথে অন্য কাজিন রাও ছিল। ওরা নিয়ে আমাকে এক কোনার ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে বলল, “একদম চুপ চাপ এখানে থাকবা, দেখি এখন তোমাকে কিভাবে খুজে বের করে।”
বলেই দরজা বন্ধ করে দিলো। আমাকে কিছু বলার সুযোগই দিলো না।
এখন বোকার মত বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। এ কেমন জ্বালা! রুমটা গোডাউনের মত।
মাকড়সার জালে ভরা আর চারিদিকে আবছা অন্ধকার।
এখন ওই গরিলা আমাকে খুজে না পাওয়া অব্দি হা করে বসে থাকতে হবে আমার!
আমি রুমটার ভিতরটা দেখতে লাগলাম। রুমটার সাথে একটা বেলকোনিও আছে। আমি এগিয়ে গিয়ে বেলকোনিতে দাড়ালাম।
চাঁদ ত দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু বাহিরে আলো ভালই আছে। আমি মুগ্ধ চোখে বাহিরের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
আচমকা শাওন আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল। আমি একটু চমকে গেলাম।
উনি একটা সস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, “পেয়ে গেছি।”
আমি ঘাড় ঘুরিয়ে শাওনের দিকে তাকালাম। উনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলেন।
আমি চোখ সরিয়ে সামনের দিকে তাকালাম। ওনার চোখের দিকে বেশি সময় তাকিয়েই থাকতে পারি না আমি।
“ছাড়ুন এখন।” মাথা নিচু করে বললাম আমি।
উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমাকে ওনার দিকে ঘুরালেন। কিন্তু কিছু না বলে তাকিয়ে রইলেন।
আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম, “কি? কিছু বলবেন?”
“আমার যেটা পাওনা সেটা কবে পাব আমি?” শাওন আমার ঠোঁটের দিকে ইশারা করে বলল।
আমি সরু চোখে তাকিয়ে বললাম,”দিয়েছি ত। তাও একটা না, চারটা।”
শাওন প্রশ্ন সূচক চোখে তাকিয়ে বলল, মানে?
আমি ওনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, “মানে আবার কি? চার বার দিয়েছি। পরিশোধ হয়ে গেছে। আপনার কি মনে হয়? আপনি একাই ঘুমিয়ে থাকার সময় সুযোগ নিতে জানেন? আমি জানিনা? হুহ।”
বলেই মুখ ভেংচি দিয়ে একটু ভাব নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।
উনি জায়গায় দাড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।
এখন আমিও বলব না কখন দিয়েছি। হুহ। বুঝুক কেমন লাগে!

চলবে…

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।