বন্যার পানিতে ভেসে আসা কচুরিপানা গুলোর দিকে একমনে তাকিয়ে আছে শায়ের। গভীর চিন্তায় সে যেন ডুবে আছে। তার ভাবখানা আকাশের চাঁদ টাও যেন বুঝতে পারছে না। সম্পান নৌকা ঘুরিয়েছে জমিদার বাড়ির দিকে। ছইয়ের ভেতরে বিন্দুসহ আরেকজন কে দেখে শায়ের সেদিকে পা বাড়ায়নি। বাইরে এসে ছইয়ের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোন কথাও সে নিজ ইচ্ছায় বলেনি। সম্পানের কথায় শুধু সে হু হা করছে। শায়ের আসাতে ওরা তিনজনই বিরক্ত। সুন্দর মুহূর্ত টাকে দিলো শেষ করে। কিন্তু মুখে কেউই কিছু বলল না। পরীর মাথাটা গরম হয়ে আছে। ইচ্ছা করছে এই ছেলেটাকে এখন ধাক্কা মেরে বন্যার পানিতে ভাসিয়ে দিতে। অনেক দিন পর সে লোকচক্ষুর আড়ালে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। আর ওর সব আশা আকাঙ্ক্ষা শায়ের শেষ করে দিলো!পরীর এসব ভাবনার মাঝেই শায়ের বলে উঠলো,’তোমাদের বিরক্ত করলাম তাই না সম্পান?’
চকিতে তাকালো সম্পান মুখে সামান্য হাসি ঝুলিয়ে সে বলল,’না সাহেব। এইডাই তো আমার কাম।’
শায়ের শব্দ করে হেসে উঠলো। ঘাড় ঘুরিয়ে সম্পানের দিকে তাকিয়ে বলল,’মুখে না বললেও মনে মনে ঠিকই তুমি বিরক্ত হয়েছো। যাই হোক বিন্দুকে আর বাপের বাড়িতে না রেখে শ্বশুর বাড়ি নেওয়ার ব্যবস্থা করো তাহলে দেখবে আমার মতো আর কেউ তোমাদের বিরক্ত করতে আসবে না আর তোমাদের ও লুকিয়ে ঘুরতে যেতে হবে না।’

সম্পান চুপ থাকলো। আপনমনে বৈঠার হাল ধরে সে। পানির কলকল শব্দে মুখরিত হচ্ছে চারিদিক। দুজন রমনি বসে আছে ছইয়ের ভেতর আর দুজন পুরুষ নৌকার দুপাশে দাঁড়িয়ে আছে। পানির শব্দ ছাড়া কেউই কোন শব্দ শুনতে পারছে না। প্রকৃতির যেন এই গুমোট ভাবটা পছন্দ হলো না। তাই সে মেঘকে খানিকটা নাড়া দিতেই বাঘের মতো গর্জে ওঠে সে। এতে বিন্দু খানিকটা ভয় পেয়ে বলে,’মেঘের অবস্থা কিবা মাঝি? বৃষ্টি আইবো নি?ঝড় হইবো নি?’

‘এতো ডরাস ক্যান বিন্দু?আমি আছি,শায়ের দাদা আছে,পর,,’ থেমে গেল সে। পরীর নামটা আনতে চেয়েও আনলো না তারপর আমতা আমতা করেই সে বলল,’মাইয়া মাইনষের এতো ডরাইলে চলে?’
বিন্দু জবাব না দিলেও শায়ের জবাব দিলো, ‘মেয়ে মানুষ হলো ফুলের মতো নিষ্পাপ। তাদের কোমলতা প্রকাশ পায় তার সুবাসে। ওই পরিস্ফুটিত ফুলকে বিনা অনুমতিতে স্পর্শ করতে হয়না। বিশেষ অনুমতি পত্র নিয়েই তাদের স্পর্শ করতে হয়। যদি কেউ বিনা অনুমতিতে তাকে স্পর্শ করে তাহলে তার কঠোরতা দেখা যায়। বিষাক্ত কাঁটা। যেই কাটা পার করার সাধ্য কোন পুরুষের নেই। সেখানে প্রকৃতির এই গর্জন নিছক অতি সাধারণ। মেয়ে নামক ফুলদের কাজ শুধু সুবাস ছড়ানো নয়। মাঝে মাঝে কাঁটার মতো বিষাক্ত ও হতে হয়।’
একটু চুপ থেকে শায়ের বলল,’কি বলো সম্পান?’

‘এক্কেবারে ঠিক কইছেন দাদা। আমিও বিন্দুরে সবসময় কই যে একটু শক্ত হ। খালি ভয় পায়। আমি যহন না থাকমু তহন,,’

বিন্দু হুড়মুড়িয়ে উঠে বাইরে এলো সম্পানকে কথা শেষ করতে না দিয়েই জোরে বলল, ‘তোমারে না কইছি এমন কথা কইবা না? তারপরও ক্যান এমন কথা কও বারবার?আর মরার কথা কইবা না কইয়া দিলাম।’

বোকা বনে গেলো সম্পান। সে বলল কি আর মেয়েটা বুঝলো কি!! তবে সম্পানকে নিয়ে বিন্দু একটু বেশিই ভাবে। কতখানি ভালোবাসে সেটা যদি বিন্দু বোঝাতে পারতো তাহলে নিজেকে শান্ত করতে পারত। কিন্তু ভালোবাসার পরিমাপ আজ পর্যন্ত কেউই করতে পারেনি। সেখানে বিন্দুও ব্যর্থ। সম্পান বলে,’আমি কইলাম কি আর তুই বুঝলি কি?অহন কথা কইস না কেউ দেখলে খারাপ ভাববো। যা ভিতরে গিয়া বস।’
রাগে গজরাতে গজরাতে পরীর পাশে গিয়ে বসে। পরী অতো কিছু খেয়াল করল না। ওর মনে শায়েরের কথাগুলো ঘুরছে। মেয়েদের দুটো রূপের কথা সে ফুল দ্বারা বুঝিয়েছে। যা পরীর ভালো লাগলো। তবে মুখ ফুটে কোন কথা বলল না। এরই মধ্যে সম্পান মাঝি গুনগুন করে গান ধরলো। নদী সম্পর্কিত গানগুলো খুবই সুন্দর হয়। সেরকমই একটা ভাটিয়ালি গান ধরেছে সে। চোখ বন্ধ করে তা অনুভব করছে পরী। পনের বছরের জীবনে সে এই গ্রামটাকে হাতেগোনা কয়েকবার দেখেছে। বাকি জীবনটা বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে কেটে গেছে। কিন্তু ওর বড় দুবোনের জীবন ছিল আলাদা। ওরা হেসে খেলে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়িয়েছে। ঠিক আর পাঁচটা মেয়ের মতোই। কিন্তু পরীর জীবন কেন আলাদা করে দেখছে মালা তা জানে না সে। মা’কে অনেক প্রশ্ন করেও উওর মেলেনি।
পরীর ভাবনা ছেদ করে চড়চড় করে বৃষ্টি পড়তে লাগলো। গর্জে উঠলো মেঘ। ঝুমঝুম শব্দ তুলে পানিতে পড়তে লাগলো বারিধারা। বিন্দুর ডাকে সম্পান দ্রুত ছইয়ের ভেতরে এসে বসে। কিন্তু শায়ের এলো না। সে বাইরে দাঁড়িয়ে ভিজতেছে দেখে সম্পান বলে,’ও দাদা ভেতরে আইয়া বহেন। এমনে থাকলে পুরা ভিজা যাবেন তো!’

‘ভেতরে দু’জন নারী আছে সম্পান। তাদের অনুমতি ছাড়া ভেতরে যাই কিভাবে??’

সম্পান ভারি অবাক হলো। মেয়েদেরকে শায়ের সম্মান করে সেটা জানে সম্পান। কিন্তু এতোটা সম্মান করে তা জানতো না। সে বলল,’বিন্দু কিছু কইব না দাদা!!’

এবার শায়ের কিছু বলল না। তবে ভেতরেও ঢুকলো না। পরী ভারি অবাক হচ্ছে শায়েরের কাজে। তারমানে শায়ের এটা বোঝাতে চাইছে যে পরী অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত শায়ের ভেতরে এসে বসবে না। তাই পরী বলল, ‘আপনে ভেতরে আইয়া বহেন। আমাগো কোন সমস্যা হইবো না।’
অনুমতি পেয়ে শায়ের ভেতরে এসে সম্পানের পাশে বসলো। এতটুকু সময়ে সে ভিজে একাকার। পাঞ্জাবীর হাতা গুটিয়ে মাথার চুল হাত দিয়ে ঝাড়তে লাগলো সে। পরী নিজের ঘোমটা ভালো করে টেনে দিলো। তারপর হারিকেনের কমানো আচ বাড়িয়ে দিতেই আলোকিত হলো নৌকা। ওড়নার ফাক গলিয়ে আড়চোখে সে শায়েরকে দেখে নিলো একবার। এরপর অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে রইল।
এরপর আবার নিরবতা পালন করছে নৌকা জুড়ে। ঢেউয়ে ঢেউয়ে দুলছে নৌকা। চারজন এমন ভাবে বসে আছে যেন এই নৌকায় তারা সাত সমুদ্দুর তের নদী পার করবে। এগিয়ে যাবে নতুন দেশে। কিন্তু শুধু বিন্দু আর সম্পান হলে হতো। পরী আর শায়েরের পথটা তো সম্পূর্ণ আলাদা। ওরা দুজন এসেই তালগোল পাকিয়ে দিলো। তা ভেবে মুখ চেপে হাসলো বিন্দু। কিন্তু এভাবে আর কতক্ষন। ঢেউয়ের তালে নৌকা কোনদিকে যাচ্ছে তাও বোঝা মুশকিল। তাই সম্পান ছইয়ের মধ্যে গোজা প্লাস্টিকের বস্তাটা নিয়ে লম্বা টুপি আকারে বানিয়ে পড়ে নিলো। তারপর আবার গিয়ে নৌকার হাল ধরলো।

আজকে খুব সহজেই অন্দরমহলে ঢোকা গেছে। তবে ভয়ের বিষয়ে হচ্ছে আজকে আফতাব বাড়িতে না থাকলেও আঁখির আছে। আঁখির বৈঠক ঘরের একপাশের ঘরে শুয়ে আছে। হয়তো তিনি কিছুই টের পাননি। কিন্তু পরীর ঘর কোনটা সেটা তো ওরা জানেই না। খোঁজা তো মুশকিল হয়ে যাবে। তবুও পা বাড়ায় দু’জনে। অন্দরমহলের বেশিরভাগ ঘরই তালাবদ্ধ। হয়তো কেউ থাকে না বিধায় তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে একবার হোঁচট খাওয়া হয়ে গেছে শেখরের। নাঈম টেনে না ধরলে হয়তো মুখ থুবড়ে পড়তো। যেতে যেতে সামনেই পড়লো মালার ঘরটি। সেখানে উঁকি দিয়ে দেখল মালা শুয়ে আছে। একা নয় সাথে জেসমিন ও আছে। সে মালার সেবা করছে। মালার প্রতি জেসমিনের এতো ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারল না নাঈম। ওখানে সময় ব্যয় না করে দুজনে আবার সামনে এগোলো।
এবারে ওরা পৌঁছালো সেই ঘরে যেখানে পালক মিষ্টি আর রুমি থাকে। নাঈম ওদের দেখে দ্রুত শেখরকে নিয়ে ঢুকে পড়লো। তারপর দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দিলো। ওদের এসময় দেখে রিতিমত ভয়ে কাপছে পালক,মিষ্টি,রুমি। এই মুহূর্তে যদি কোন অঘটন ঘটে তাহলে ওরা অনেক বড় সমস্যায় পড়বে।
রুমি দৌড়ে এসে বলে,’তোরা ভেতরে ঢুকলি কিভাবে?কেন এসেছিস এখানে?’
শেখর একটু ভাব নিয়ে বলে,’শান্ত হ একটু। আমরা দুজন তো সেই পরীকে দেখতে এসেছি যার ডানা নেই।’

‘তো যা না। তোর জন্য পরী লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সাদরে গ্রহন করবে বলে।’

পালক রুমিকে চুপ করিয়ে দিয়ে আস্তে করে বলল,’আস্তে কথা বল কেউ শুনতে পেলে আমাদের খবর হয়ে যাবে।’
এবার নাঈম একটু বিরক্ত হয়ে বলে,’তোদের কথা শেষ হলে বল পরীর ঘর কোনটা।’

পালক নাঈমকে থামানোর জন্য বলে,’তোর আসাটা কি খুব জরুরি ছিল নাঈম?এতো জেদ কেন করিস বলতো তুই? এখন যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে কি হবে? আমার কথা শোন আর ফিরে যা।’
কিন্তু নাঈম নাছোড়বান্দা। সে যখন এসেছে তখন পরীর ঘরে যাবেই। তাই ও বলল,’তুই না বললেও পরীর ঘর আমি পেয়ে যাব। চল শেখর।’
শেখরের হাত টেনে নিয়ে বের হলো নাঈম। পালক চেয়েও কিছু বলতে পারলো না। এই ছেলেটা প্রতি মুহূর্তে ওদের চিন্তায় ফেলে দেয়। অথচ নিজের একটুও চিন্তা হচ্ছে না। ধরা পড়লে যে কি হবে!!
আবেরজান নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন। বাইরে থেকেও শোনা যাচ্ছে। আর নিজের ঘর তো কাঁপিয়ে ফেলছে। দুহাতে কান চেপে ধরে শেখর বলল,’এই বুড়িটা দেখছি দেওয়াল ফাটিয়ে দেবে। নেহায়েৎ দেয়ালগুলো অনেক মজবুত তা না হলে জমিদার মশাইকে প্রতিদিন দেওয়াল তৈরি করতে হতো।’

প্রতুত্যর না করে নাঈম পা বাড়ায় তার সামনের ঘরে। অন্ধকার সম্পূর্ণ অন্দরমহলের ফাঁক ফোকর দিয়ে চাঁদের আলো ঢুকছে। সেই আলোতে সাবধানে পা ফেলছে নাঈম আর শেখর। পরীর ঘরে ঢুকতেই ওরা চারিদিকে চোখ বুলায়। কিঞ্চিৎ আলোকিত ঘরটাতে সবকিছু স্পষ্ট নয়। কিছুটা সন্দেহ নিয়েই ঘরে ঢুকলো নাঈম। কারণ সবগুলো ঘরই বন্ধ। আর এটাই শেষ ঘর। কিন্তু ঘরে ঢুকে চাঁদের আবছা আলোয় একটা অবয়ব দেখতে পেলো পালঙ্কের উপর। পা টিপে টিপে পালঙ্কের কাছে এগিয়ে গেল নাঈম। বুকটা কেমন ধুকধুক করছে। শেখর পেছন থেকে এসে ফিসফিস করে বলল,’এটাই কি পরী?’

হাতের ইশারায় শেখরকে চুপ থাকত বলল সে। এখন কথা বলার সময় নয়। আশেপাশে তাকিয়ে নাঈম বুঝতে পারলো এটাই পরীর ঘর কেননা একজন কিশোরী মেয়ের ঘর যেমন হয় এই ঘরটাও ঠিক তেমনই। কিন্তু বিছানায় শুয়ে থাকা ব্যক্তিটি কি আদৌ পরী? গাঁয়ের কাথাটা হাল্কা টেনে সরাতেই জুম্মানের মুখটা দেখতে পেলো সে। দু’জনেই চমকে তাকালো ছোট্ট জুম্মানের দিকে। তাহলে পরী কোথায়?? একটু দূরে সরে এলো নাঈম। শেখর একপলক জুম্মানের দিকে তাকিয়ে বলল,’এটাও কি পরীর ঘর নয়? তাহলে কোনটা?’

‘নাহ এটাই পরীর ঘর।’ শেখর বিষ্ময়কর কন্ঠে বলে,’তাহলে পরী কোথায়??’

কিছুক্ষণ ভাবলো নাঈম তারপর বলল, ‘আমার মনে হচ্ছে পরী বাড়িতে নেই। রাতের আঁধারে সে কোথাও গিয়েছে। কিন্তু কেন?’

শেখর ও বেশ ভাবনায় পড়ে গেল। সত্যি তো!পরী যদি অন্দরমহলে থাকতো তাহলে এতক্ষণ টের পেয়ে যেতো। হয়তো ওদের ধরেও ফেলতো তারমানে সত্যি সত্যি পরী বাড়িতে নেই। তাহলে গেলো কোথায় পরী?

নৌকা যখন জমিদার বাড়ির ঘাটে এসে ভিড়লো তখন বৃষ্টি থেমে গেছে। শায়ের নেমে গিয়ে কোন দিকে না তাকিয়েই চলে গেল। এমনকি সম্পানের সাথে কথাও বলল না। শায়ের চলে যাওয়ার কিছু সময় পর পরীও নামলো। বিন্দু ও সম্পানকে বিদায় জানিয়ে বাড়ির পেছনের দিকে চলে গেল। সেখানে একটা বড় পেয়ারা গাছ উঠে গেছে দেওয়াল পর্যন্ত। গাছ বেয়ে উঠে দেওয়াল টপকালো পরী। তারপর বড় আমগাছটা বেয়ে উঠলো অন্দরমহলের ছাদে। আমগাছটায় ছোট ছোট ডালপালা বেশি থাকায় উঠতে অসুবিধা হয়নি পরীর। তাছাড়া গাছে চড়ার অভ্যাস ওর ছোট থেকেই আছে। ছাদের দরজাটা খুলে সে ভেতরে ঢুকলো। নিজের ঘরে আসতেই জুম্মানকে এলোমেলো হয়ে ঘুমিয়ে থাকতে দেখলো পরী। ছেলেটা বড্ড ঘুম কাতুরে। একবার ঘুমিয়ে পড়লে দিন দুনিয়া ভুলে যায়। কানের কাছে ঘন্টা বাজালেও সে টের পাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না সূর্যের আলো চোখে এসে পড়ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তার ঘুম ভাঙবে না। এজন্যই পরী যেদিন ঘর থেকে বের হয় সেদিন জুম্মানকে নিজের সাথে রাখে। পরীর বের হওয়ার কথা জুম্মানও জানে। সর্বদা সে তার বোনকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকে।

কিন্তু ঘরে এসেই নতুনত্বের গন্ধ নাকে এলো পরীর। এটা যে কোন পুরুষের গায়ের গন্ধ সেটা বেশ বুঝতে পারছে সে। তাহলে কি তার অনুপস্থিতিতে কেউ এখানে এসেছিল?হ্যা তাই হবে। কিন্তু কার এতবড় সাহস যে পরীর ঘরে আসে!! হারিকেনের আঁচটা বাড়িয়ে দিয়ে চারিদিকে চোখ বুলায় পরী। মেঝেতে চোখ দিতেই কাদা মাখা পায়ের ছাপটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একজন নয় দুইজন পুরুষ এসেছিল এই ঘরে। তবে তারা কারা? হারিকেন হাতে নিয়ে পুরো অন্দরমহল ঘুরে এলো পরী কিন্তু কাউকেই দেখলো না।
তাই মাথায় ঘোমটা টেনে সে অন্দরমহলের দরজা খুলে বৈঠক ঘরে পা রাখতেই সামনে শায়েরকে দেখতে পেলো। গায়ের পাঞ্জাবি টা খুলে সে মাথা মুছতেছে। এভাবে খালি গায়ে লোকটাকে দেখেই মুখ ঘুরিয়ে নিল পরী। দূর থেকে পরীকে দেখে তাড়াহুড়ো করেই আরেকটা পাঞ্জাবি গায়ে জড়ালো শায়ের।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।