পাথরের বুকে ফুল | পর্ব – ১৭

এই দুইমাসে অরিএান নিজেকে ভেঙে এক নতুন অরিএানের জন্ম দিয়েছে।আগের অরিএানের সাথে এখন কার অরিএানের তেমন মিল নেই বলেই চলে।ব্যাপারটায় রিমন প্রচণ্ড আবাক।অরিএান এখন পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ পরে।রিমন তো মাঝ রাতে অরিএানের রুমের সামনে দিয়ে গেলে প্রচণ্ড রকমের ঝাটকা খায়।এটা দেখে যে অরিএান মাঝ রাতে নামাজ পরে আবার মাঝে মাঝে কি যেনো বলে কাঁদে।রিমনের মনে অনেক প্রশ্ন তবে কখনো জিগ্যেস করা হয় না।রিমন শুধু ভাবে ভালোবাসায় কি এতটাই ক্ষমতা সম্পূর্ন হয় যে একটা মানুষকে সম্পূর্ন পরিবর্ত করে ফেলা যায়।ওয়াসেনাত নামের মেয়েটাকে তার সত্যি পরী বলে মনে হয়। অরিএান ঠিকি বলে ও আসলে ফেইড়িপরী। যে অরিএানের জীবনকে নিজের আলোয় আলোকিত করছে। ভালোবাসা মানুষকে অন্ধ করে দেয় কথাটা কিন্তু সত্যি।কিছু কিছু ব্যাপারে অন্ধ হওয়াও ভালো।অরিএান ওয়াসেনাতের কথার মাঝেই আল্লাহ মহত্ত বুঝতে পেছে।আসলে এগুলো তো মা,বাবা নামের মানুষগুলোই শিখায়।কিন্তু অরিএান তো তাদের পায় নাই।একজন মানুষকে ভালো মানুষে রূপ দিতে হলে আর একটা ভালো মাধ্যমের প্রয়োজন।আর অরিএানের জীবনে সে মাধ্যম হল ওয়াসেনাত।

অরিএান আজ প্রচণ্ড খুশি আজ সে ওয়াসেনাতকে তার মনে কথা বলবে যদিও সে নানা ভাবে বুঝাতে চেয়েছে কিন্তু আজই আনুষ্ঠানিক ভাবে বলবে তাই ব্যাপারটা আলাদা।রিমন, দাদা সবাই তার অবস্থা দেখে হাসছে।ব্যাপারটা হাসারই।মাশহুর বিজন্যাস ম্যান অরিএান খান যে কিনা তুরি বাজিয়ে শতশত ডিল ফাইনাল করে সে আই লাভ ইউর মত একটা কথা বলতে এত ভয় পাছে।তাও আবার টানা ১ ঘণ্টা পর্যন্ত আয়নার সামনে দাড়িয়ে প্রেকটিজ করেই চলেছে।ব্যাপারটা আসলেই হাস্যকর। কিন্তু কিছু করার নেই তারা হাসতে পারচ্ছে না।অরিএানের রাগি চোখের দিকে তাকাতেই তাদের সব হাসি ফুসসস।

ওয়াসেনাত একটা সোফায় বসে আছে।গায়ে অরিএানের দেওয়া সেই জামাটা আর হিজাব।মাথায় অসংখ্য ঘামের ছড়া ছড়ি।নীলাভ চোখগুলো ঘোলাটে হয়ে আসছে।দেখেই মনে হচ্ছে সেন্সলেস হবে হবে ভাব।তার হাতে কিছু ছবি আছে যা অরিএান আর মাদৌলির ওই রাতের ছবি।সেখানে দুজনকেই বাজে ভাবে দেখা যাচ্ছে। ওয়াসেনাতের এগুলো দেখে এবং অরিএানের আসল রূপের কথা শুনে একটা বিকট চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু কিছু করার নেই মাঝে মাঝে কান্নারও মিরজাফর গীরি করে।ওয়াসেনাতের কোমল শরীর কাপঁছে এটা কোনো নরমাল কাপাঁ না এটাকে বলা হয় হাড় কাপানো কাপাঁকাপিঁ। সে কিছুতেই নিজেকে ঠিক রাখতে পারছে না।
__শুধু ছবি না।ভিডিও আছে।আগেই বলেছি তুমি ওকে যেমন মনে করো ও কিন্তু তেমন না।ওর উদ্যেশে হল তোমাকে ওর এক রাতের বেড পাটর্নার বানাবে। যেহেতু তুমি সবার থেকে একটু আলাদা তাই তোমাকে আলাদা ভাবে হেন্ডেল করেছে।যাকে বলে ভালোবাসার জালে ফেলে ফাঁসানো। যা ও তোমার সাথে করেছে।দেখ আমার ছেলে কিন্তু তোমাকে সত্যিকারের ভালোবাসতো তাই তোমাকে ওর আসল রূপ সম্পর্কে বলতে চেয়েছিলো তাই দেখ ওর কি অবস্থা করেছে।

ওয়াসেনাত ঘোলাটে চোখে সামনে তাকালো।সে এখন ইহানের রুমে বসে আছে আর তার সামনে ইহানের মা।ওয়াসেনাত কাপাকাপা পায়ে দাড়িয়ে ইহানের কাছে যায়।ইহানের গায়ে তার আর তার সে শুধু তাকিয়ে আছে। ওয়াসেনাতের কেনো যেনো এই তাকানকে খুব ভয় করছে।তার মনে হচ্ছে লোকটা তাকে চট করে ঝাপটে ধরতে চায়।কিন্তু ওয়াসেনাত এমন কিছুই চায় না তাই সে দুপা পিছিয়ে গেলো।ইহানকে নিজের রুমে রাখা হয়েছে।তার জন্যে তিনটা নার্সও রাখা হয়েছে।ওয়াসেনাত সম্পূর্ন রুমে একবার চোখ বুলিয়ে অবাক হল এখানে তার এত ছবি কথা থেকে এলো।সব ওই দিনের রেস্টুরেন্টের ছবি।এত অবাকতার মাঝে ওয়াসেনাত বলে উঠে…….
__আপনি এগুলো আমাকে কেনো বলেছেন??
__কারন আমার ছেলে তোমাকে ভালোবাসে তাই আমি চাই তুমি ভালো থাকো।
__ছবি গুলো কি আমি নিতে পারি??
__অবশ্যই

ওয়াসেনাত আর কথা বড়ালো না।গডগড করে হাটা ধরলো।তার মনের অবস্থাটা কি এটা সে নিজেও বুঝতে পারছেনা।সে ভাবছে তার তো খুব কাদার প্রয়োজন কিন্তু কেনো কান্না আসছে না??কেনো??হোয়াই?? এই হোয়াই এর কোনো আনসার নেই তার কাছে।এখন সে এটার আনসার খোজারও চেস্টা করছে না।

অরিএান বার বার ঘড়ি দেখছে।রিমন তার পাশে দাড়িয়ে মজা দেখছে। অরিএানকে এত টেনশনে সে আগে কখনো দেখেনি।অরিএানের বারবার ঘড়ি দেখা, ভ্রু কুচলে বিরক্তি ভাব নেওয়া,আবার পাইচারি করা, কিছুক্ষণ পর পর চেয়ারে বসে পরা ব্যাপারটা দারুন মজার যা রিমন মন দিয়ে উপভোগ করছে।অরিএান ৩ টা থেকে এখানে বসে আছে।আর এখন ৬ বাজে।আজ সে মাঠটাকে এক অপরূপ রং এ সাজিয়েছে। সব সাদা আর সাদা। সাদা নেটের পর্দা যা বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে খেলছে,সাদা গোলাপের ছড়াছড়ি,মাজে এক গোল টেবিল যার উপরে দুই পাশে দুটি লাল চারকোণা ছোটো কাপড় রয়েছে সাদার উপরে লাল কাপড় অস্থির লাগছে। মাজে একটি সুন্দর সাদা গোলাপের তোরা আছে।যাকে বলে এক গুচ্ছ সাদা গোলাপ।দুটি চেয়ার আছে।আর আইসক্রিম, ফুচকা,বিরিয়ানি তো আছেই তবে আর একটা জিনিসও আছে চকলেট যদিও ওয়াসেনাত চকলেট মোটেও পছন্দ করেনা তবে কিটকেট চকলেটা তার বেশ ভাল লাগে। অরিএান ওয়াসেনাতের সাথে দেখা করতে গেলেই অনেক গুলো নিয়ে যেতো। আর ওয়াসেনাত রাস্তার পথচারী বাচ্চাদের সব দিয়ে একটা নিজের কাছে রেখে অরিএানের সামনেই খাওয়া শুরু করতো মাঝে মাঝে অরিএান কেও এক পিজ দিত।ওয়াসেনাত যখন চকলেট খায় তখন তার ঠোঁটে লেগে যায় আবার আঙুল গুলোতেও লাগে তখন সে খুব যত্নের সাথে আঙুলগুলো চেটে চেটে খায়। আর অরিএানের মন তখন চকলেট হতে চায়।যদি সে চকলেট হত তবে তো সে ওয়াসেনাতের ঠোঁট জোড়া ছুতে পারতো।ইসসসস যদি হত।মাঝে মাঝে তো অরিএানের ভায়াবহ একটা কাজ করতে ইচ্ছে করে। তার ইচ্ছে করে ওয়াসেনাতের মাথার পিছনের অংশে নিজের হাত গুঁজে ওয়াসেনাতকে তার মুখের কাছে এনে তার শুষ্ক ঠোঁট জোড়া ওয়াসেনাতের চকলেটে আবৃত ঠোঁটে চেপে ধরতে।কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও সব সময় উপায় হয় না।

ওয়াসেনাত রাস্তা দিয়ে এলোমেলো হয়ে হাটছে।তার মুখদেখে বুঝার উপায় নেই সে কি ভাবছে।তবে এটা বুঝা যাচ্ছে সে তার বৈশিষ্ট্য বহন করছে।সব মানুষের কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে শুধু মানুষের না সকল বস্তুরই আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে ওয়াসেনাতেরও আছে।আনসিরিয়েস বিষয়ে তার রিয়েকশন হয় খুব সিরিয়েস টাইপের আর সিরিয়েস বিষয়ে তার ভাব এমন যে ব্যাপারটা একটা ফালতু ব্যাপার। এখন ওয়াসেনাতের কাছে ব্যাপারটা ফালতু মোটেও মনে হচ্ছে না। কিন্তু তার অবস্থা কি তা বুঝাও যাচ্ছে না।সে আসলে এটাই ভেবে পাচ্ছে না সে তো লোকটাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করেছিল।কিন্তু লোকটা তাকে এভাবে ঠকাতে পারল।কেনো।কেনো এমন করেছে।ওয়াসেনাতের মাথায় এটাই ঘুরপাক খাচ্চে।তাহলে কি সব নাটক। সব। এত কেয়ারি ভাব,এত না বলা ভালোবাসার বহির প্রকাশ, সব মিথ্যে।চোখগুলোও মিথ্যে বলেছে।কিন্তু কিভাবে।??চোখতো সত্যি কথা বহির প্রকাশ করে।সেই সবুজ আকতি ভরা নেশা ধরানো চোখও মিথ্যা বলতে পারে!!কথাগুলো ভাবতেই ওয়াসেনাতের বুক ভার হয়ে আশে। এই কেমন কষ্ট যা এত ভারি লাগছে।যেনো এখনই দম আটকে যাবে।এত ভারি কষ্টে ভরা বুক নিয়ে ওয়াসেনাতের হাটতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যাকে বলে দম বন্ধ টাইপের কষ্ট।ওয়াসেনাত শাবলিল ভাবে নিজের কষ্টগুলো নিয়ে হাটছে।তার সাবলিল ভঙ্গি দেখলে ওই প্রবাদ টার কথাই মনে পরে অল্প শোকে কাতর আর অধিক শোকে পাথর।যে এই প্রবাদের আবিষ্কারক সে হয়ত ওয়াসেনাতের এখন কার কথা ভেবেই এই প্রবাদ বলেছে।যদি সে ওয়াসেনাতের অবস্থা দেখত তবে হয় তো খুশিতে পাগল হয়ে যেত এটা ভেবে তার প্রবাদের কথা একশতে একশই মিলে গেছে।ব্যাপারটা ভাবতেই তার ছাতি চওড়া হয়ে যেত।ওয়াসেনাতের এক বুক কোমল ভালোবাসা এখন এক বুক কালো মেঘে ডাকা।আর ওই মেঘকে ঝাপটে ধরে আছে কষ্ট আর কষ্ট।

রিমন এই মহা মুল্যবান সুযোক হাত ছাড়া করতে চায় না সে যানে আজ অরিএানকে যে প্রশ্নই করা হবে সে ঠিক উওর দিবে তাই চট করে বলে বসে…..
__ভাই তোকে আমি মাঝ রাতে নামাজের বিছানায় কাঁদতে দেখেছি। কেনো রে
__জীবনে প্রচুর গুনাহ করেছি।তার জন্যে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই রাতে। ওয়াসেনাত বলে ছিলো মাঝ রাতের দোয়া মহান আল্লাহ বেশি কবুল করে।আর সে এটাও বলেছে শিরক বাদে যত গুনাহ আছে আল্লাহ সব গুনাহকে ক্ষমা করেন।তাই চেস্ট করছি আল্লাহর ক্ষমার জন্যে।তিনি যদি ক্ষমা করে দেন আর ওয়াসেনাতকে আমার করে দেয় এটার জন্যেই দোয়া করি।একটা ইন্টেরেস্টিং কথা কি যানোস আগে ঘুমের ঔষুধ ছাড়া ঘুম আসত না আর এখন শান্তির ঘুম তো আসেই সাথে আমার প্রতিটি দিন যায় অসাধারণ। ওয়াসেনাতের কারনেই এত সব। ও এখনো কেনো আসছে না।ও কি আসবে না??
__ইনশাল্লাহ আসবে চিন্তা করিস না।

রিমনের মনে আরো অনেক প্রশ্ন ছিলো তবে অরিএানের ছলছল করা সবুজ চোখের দিকে তাকিয়ে আর করতে পারে নি।সে শুধু মনে মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে শুরু করে আল্লাহ যাতে সত্যি ওয়াসেনাতকে অরিএানের করে দেয়।নাইলে অরিএান বাচঁবে বলে তার মনে হয় না।জীবনে অনেক কিছু অরিএান দেখেছে।অনেক কষ্ট পেয়েছে। আল্লাহ এবার তার কষ্ট লাগব করুক এই দোয়াই করে যাচ্ছে।

ওয়াসেনাত যাওয়ার পরেই ইহানের হালকা হালকা সেন্স ফিরছে। তার মা তো অবাক এমন ঘটনায়।ইহানের এত তাড়াতাড়ি ইনপ্রুব দেখে ডাক্তারও অবাক। আজ ২ মাস পরে এটাই তার পাস্ট ইনপ্রুবমেন্ট।তাই তারা আশা করছে ইহান তাড়াতাড়ি ভাল হয়ে যাবে।

অরিএান হাটুগেড়ে বসে আছে।চোখগুলো নিচের দিকে স্থির। আকাশে কালো মেঘের ঘনগটা। হালকা হালকা বৃষ্টি পরছে।এখনই জুম ধরে বৃষ্টি আসবে।অরিএানের সামনে ওয়াসেনাত দাড়িয়ে আছে।ওয়াসেনাতের মুখে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ফোটা। তবে তার চোখে কান্নার ছিটে ফোটাও নেই।ওয়াসেনাত গম্ভীর গলায় বলে উঠে……………
__মি.অরিএান খান।কেনো মিথ্যে বলেছেন??
__তোমার জন্যেই(নিচের দিকে তাকিয়ে)
__ওও হো আমি তো ভুলেই গেছি বেডপাটর্নার বানানোর জন্যে(চিৎকার করে)
__ভালোবাসি তাই(ওয়াসেনাতের চোখের দিকে তাকিয়ে)
__ভালোবাসা পবিত্র জিনিস আপনার অপবিত্র মুখে এটা নিয়ে কথা বলবেন না।আদম( আ)থেকে হযরত মুহাম্মদ (স) সবাই ভালোবাসার পবিত্রতা বরণা দিয়েছে।আর আপনি কিনা নিজের উদ্যেশ হাচিলের জন্যে এই পবিত্র ভালোবাসাকে হাতিয়ার বানিয়েছেন।কিভাবে পারলেন?? বলেন??
__ওয়াসেনাত আমার কথা শুনো…
__ছুবেঁন না। ঘেন্না হয় আমার। আমি আর যাই হোই একজন ভাল চরিএের অধিকারি হতে চাই।আপনার মত চরিএহিনের ছায়াও মারাতে চাই না। যে কিনা মেয়েদের ভোগ্য পন্যের চোখে দেখে।ইউ নো হোয়াট আই জাস্ট হেট ইউ।
__আই এম সরি। এভাবে বল না।আমি তোমাকে সত্যি ভালবাসি আমার ভালোবাসা একদম পবিত্র। তুমি ভুল বুঝবে বলেই মিথ্যে বলেছি।আমি তোমাকে ভালোবাসি।সত্যি ভালোবাসি।খুব ভালোবাসি। plzz বিশ্বাস কর।তুমি তো বলেছ সব দোষের ক্ষমা হয় তবে এখন কেনো তুমি ক্ষমা করতে পারছনা।কেনো(চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে বলে উঠে)

ওয়াসেনাত অরিএানের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।এই চোখ যে কতটা সত্যি বলছে এটা সে বুঝতে পারছে।কিন্তু তারপরেও বিশ্বাস করতে পারছে না।অনেক করে চাচ্ছে একটু বিশ্বাস করতে কিন্তু বিশ্বাস জিনিসটা হতেই চাচ্ছে না।কেনো তা ওয়াসেনাতের যানা নেই।ওয়াসেনাতকে এমন রুক্ষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে দেখে অরিএানের বুক ধুক করে উঠে।কারন সে বুঝতে পেরেছে এই দৃষ্টি তাকে ক্ষমা করতে চাচ্ছে না।অরিএান তবুও বলে উঠে……….
__ plzz ওয়াসেনাত আমাকে ছেড়ে যেওনা।তুমি হিনা আমি নিঃশ্ব।প্লিজ ক্ষমা করে দেওয়া যায় না।
__না যায় না।(বলেই ওয়াসেনাত হাটা ধরলো।তার এই সাদা ফুলের মোহনিয় ঘ্রাণও বিষাক্ত মনে হচ্ছে। দম নিতে কষ্ট হচ্ছে। সে কিছুতেই এই লোকের সামনে থাকতে পারবেনা। তাহলেই সে দূর্বল হয়ে পরবে।আর সে দূর্বল হতে চায় না।কিছুতেই না।)

অরিএান দৌড়ে ওয়াসেনাতের কাছে গিয়ে সামনে হাত জোড় করে বসে পরে।আকতু মিনতি কন্ঠে বলে উঠে……
__প্লিজ ফেইড়িপরী যেও না।আমি মরে যাবো।প্লিজ একটু বুঝতে চেস্ট করো।প্লিজ প্লিজ (চিৎকার করে)

অরিএানের প্রতিটি কথা ওয়াসেনাতের বুকের বন্ধ দরজায় গিয়ে বারি খাচ্ছে। কিন্তু ভিতরে ডুকতে পারছে না।কারন দরজাটা ওয়াসেনাত এখানে আসার আগেই তালা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।যাকে বলে সিলগালা।ওয়াসেনাত যে দিক দিয়ে এসে ছিল।সে দিকে চলে যেতে থাকে। জুম বৃষ্টি শুরু হয়।বৃষ্টিরা যেনো এই মুহুর্তেরই অপেক্ষায় ছিল।তারাও অরিএানের বুক ভাসানো কান্না দেখতে চাইছে।অরিএান আজ চোখের পানিতে নিজেকে পবিত্র করছে।রিমন দূরে দাড়িয়ে সব দেখেছে।তার চোখেও পানি।শুধু পানি না।পদ্মা মেঘনা টাইপের নদির মত পানি।অরিএানের ঘোর নিষেধ ছিল।তানা হলে সে অনেক আগেই ওয়াসেনাতের লাল গালগুলো রাগের চোটে আরও লাল করে দিত।কিন্তু রাগ করেও কি হবে মেয়েটা তো ভুল কিছু করে নি।কিন্তু অরিএান তো ক্ষমা চেয়েছে। তবে কেনো ক্ষমা করল না।অরিএানকে ডুলে পরতে দেখে রিমন দৌড়ে যায়।অরিএান সেন্সলেস হতে হতে শুধু একটা কথাই বলেছে….
__ভালোবাসি ফেইড়িপরী। খুব বেশি।

অস্পষ্ট ভাষায় শেষ বার বলে উঠে……..
__তুমি হীনা আমি মরেই যাবো ফেইরিপরী।

চলবে………………………..🍁

যান ওয়াসেনাতকে সত্যিটা জানাই দিছি।এবার অরিএানের কি হইবো।আমি জানি না।একজনে বলেছে খারাপ ভালোবাসা নাকি মৃত্যুর পরে দোজখে নিয়ে যায়।আমার মতে ভালোবাসায় কোনো খারপ কিছু নেই।ভালোবাসা মানে তো ভালতে বাস করা।আসলে যারা এটা নিয়ে পাইজলামি করে তারা কখনো ভালোবাসার মানেই বুঝে নাই।ভালোবাসা তো ওইটাই যেটা হযরত মোহাম্মদ (স)তার বউ খাদিজাকে করতো।মৃত্যুর পরেও যার কথা মোহাম্মদ (স)এর মনে বিরহ বেদনা জাগিয়েছে। যার বিরহ আমার নবি আপনার নবি বিশ্বের নবির চোখে পানি এনেছে।এটাই আসল ভালোবাসা।আর খারাপ ভালোবাসা বলতে কিছু নেই।দুটিই ভিন্ন ভাবে ব্যবহিত। ভালোবাসার আশেপাশে খারাপ যায় না।কারন একটাই ভালোবাসাতে খারাপ কিছু নেই।ভালোবাসা এমন অসংখ্য উদাহরণ তার সাথে খারাপের বিপরিত মুখি সম্পর্কের ধারনা দিয়েছে।যেমন জুলেখার ভালোবাসার কথা শুনলেই বুঝা যায়। সে প্রকৃত ভাবে ইউসুফ (আ)কে ভালোবেসেছে।তাই পেয়েছে।প্রথমে কিন্তু তার ভালোবাসা পাওয়ার পদ্ধতি ভুল ছিল।তাই তিনি অনেক বছর অপেক্ষার পরে তার ভালোবাসা পেয়েছে।তার ভালোবাসা কিন্তু আল্লাহর কাছে সিকৃতি পেয়েছে।এত কথার অর্থ একটাই ভালোবাসার সাথে খারাপ জিনিসটা যায় না।আর আমরা যা খারাপ ভাবি তা ভালোবাসা না।………………….🍂
ভুল গুলো মহান আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবে।…………………..🍁

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।