রুমাইশা গিয়ে বেঞ্চে বসতেই ওর বান্ধবী সালিমা আর আফিয়া এসে বসলো ওর দুই পাশে৷ আর বাকি মেয়ে গুলো ওকে আশপাশ থেকে ঘিরে ধরলো। আর ছেলে গুলো উৎসুক হয়ে ওদের পাশের সারিতে বসে রইলো, মেয়েরা রুমাইশাকে কি প্রশ্ন করে আর রুমি কি উত্তর দেয় সেটা শোনার জন্য৷
রুমাইশা এদের সবাইকে এইভাবে ওকে ঘিরে ধরতে দেখে চোখ কুচকে তাকিয়ে বলল,
— কি?
সালিমা পাশ থেকে খুব উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— তুই ওই বোটানি স্যারের গাড়িতে কেমনে গেলি? তোকে লিফট দিয়েছে নাকি রাস্তা থেকে?
বাকিরা ও চুপ করে রুমাইশার দিকে তাকিয়ে রইলো উত্তর শোনার জন্য৷ রুমাইশার এমনিতেই মেজাজ খারাপ। তার ওপর এদের এইভাবে ঘিরে ধরায় প্রচন্ড বিরক্ত হলো ও। ছোট করে বলল,
— না, লিফট দেয়নি।
সামনে থেকে মারিয়া নামের একটা মেয়ে খোচা মেরে বলল,
— তাহলে কি স্যার তোর বাড়ি গিয়ে তোকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে এসেছে? বাড়ি গিয়ে বলেছে নাকি যে, রুমাইশা কাদের, চলো আমার গাড়িতে করে তোমাকে কলেজে নিয়ে যাই, কষ্ট করে অন্য গাড়িতে উঠতে হবে না!
বলে মুখ চেপে হাসলো ওরা কয়েক জন।
রুমাইশা ওদের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে উত্তর দিলো,
— না সেটাও নয়।
রুমাইশার এমন ঠান্ডা উত্তরে মারিয়া দমে গিয়ে বাকা চোখে তাকিয়ে বলল,
— তাহলে কি? আকাশ থেকে স্যারের গাড়িতে পড়েছিলি নাকি?
রুমাইশার রাগ হলো খুব। নিজকে যথাসম্ভব সংযত রেখে শক্ত গলায় বলল,
— যেখান থেকেই পড়ি, তাতে তোর কি অসুবিধা? সে কৈফিয়ত তোকে দিতে হবে কেন?
রুমাইশার উত্তরে মারিয়া মুখ বেকিয়ে পেছন ঘুরিয়ে ভিড় ঠেলে নিজের বেঞ্চের দিকে এগোলো, আর যেতে যেতে বিড়বিড় করে বলল,
— হুম, দেমাগি! বড়লোক ছেলে দেখলেই গলায় ঝুলে পড়ার ধান্দা।
অন্য কেউ মারিয়ার এ কথা শুনতে না পেলেও দূর থেকে সে কথা স্পষ্ট শুনলো রুমাইশা। আর শুনেই রাগের চোটে দাঁতে দাঁত পিষে গেলো ওর৷এতক্ষণ পেছনের বেঞ্চের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে বসে ছিলো ও, কিন্তু এবার সোজা হয়ে বসলো। বসেই বলে কঠিন গলায় বলে উঠলো,
— মারিয়া, কি বললি তুই আমাকে? আবার বল!
মারিয়া থতমত খেয়ে গেলো। কিন্তু দমে না গিয়ে পেছন ফিরে বলল,
— বলেছি তোর দেমাগ বেশি, আর সাফওয়ান স্যার কে বড়োলোক পেয়ে স্যারের গলায় ঝুলে পড়ার ধান্দা করছিস,
মিথ্যা বলেছি আমি?
মারিয়ার কথা শুনে আতকে উঠলো সবাই।
ডিপার্টমেন্টের বলতে গেলে সবাই রুমাইশা কে যথেষ্ট ভদ্র আর মার্জিত মেয়ে বলে জানে। ক্লাসের ছেলেদের সাথে ওর খুব খুব প্রয়োজন ছাড়া কখনো কথাই হয়না৷ এখনো পর্যন্ত কলেজের কোনো ছেলে ওর মুখ খোলা দেখেনাই। আর সেই রুমাইশা কে এমন একটা কথা বলায় বাকিরাও মারিয়ার ওপর ভয়ানক চটে গেলো৷ কিন্তু সেই সাথে ওদের মুখে দেখা গেলো উদ্বেগের ছাপ।
রুমাইশা ফার্স্ট ইয়ারে থাকা কালিন কলেজের কোনো এক ছেলে নিজের সাথে রুমাইশা কে জড়িয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছিলো, যার কিছুই রুমাইশা জানতো না। সেই ছেলে কেও ও ভালোভাবে চিনতো না পর্যন্ত। আর তাতে ভয়ানক রেগে গেছিলো রুমাইশা।
সেই ছেলেকে ভরা ক্লাসে সবার সামনে প্রচন্ড আকারে ধমকে ছিলো ও, আর এরপর ডিপার্টমেন্ট হেডের কাছে নালিশ দিয়ে যত মানুষের সামনে সেই ছেলে ওকে জড়িয়ে বাজে কথা বলেছিলো সেই সবাই কে ডেকে উপস্থিত করে ছেলেকে দিয়ে ক্ষমা চাইয়েছিলো ও।
সেই কথা কেউ ভোলেনি। তাই আজ মারিয়ার কপালে কি আছে সেটাই ভাবছে সবাই৷ নিরবে ওরা রুমাইশার দিকেই তাকিয়ে আছে, ও কি রিয়্যাক্ট করে সেটা দেখার জন্য।
রুমাইশা মারিয়ার দিকে শকুনি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বসা থেকে উঠে দাড়ালো। তারপর বলল,
— আমি, সাফওয়ানের বৈধ এবং কাগজে কলমে বিবাহিতা স্ত্রী, আমি কারো আবাসিক হোটেলে পাঁচশ টাকায় বিক্রি হওয়া সুগার বেবি নই’ এই কথা টা মাথায় রাখবি। আর! ফারদার আমার সম্পর্কে কোনো ধরনের কোনো বাজে কথা বললে আমি ভুলে যাবো যে তুই একটা মানুষ। কুত্তা পিডান পিডাইয়ে রাস্তায় ফেলে রাখবো মনে থাকে যেন।
রুমাইশার কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সবাই। একেতো রুমাইশা বলেছে যে ও সাফওয়ানের বউ, আর তারপর আবার মারিয়ার এমন সত্য বলেছে যা সবাই জানতো, কিন্তু কেউ কখনো বলতে সাহস করেনি, কারণ ও যার সাথে রিলেশনশীপে আছে সে খুবই ডেঞ্জারাস পার্সন, নেতা গিরি করে আর যাকে তাকে মেরে হাত পা ভেঙে বসে।
রুমাইশার কথা শুনে ও পাশ থেকে ছেলে গুলো এতক্ষন যা একটু ফুসুরফাসুর করছিলো সেটাও বন্ধ হয়ে গেলো। পুরো রুম জুড়ে পিন পতন নিরাবতা৷ রুমাইশার এমন উত্তরে বাকিরা খুশি হলো, কিন্তু ভয় ও পেলো, কারণ সেদিন ও মারিয়ে অকারণে একটা ছেলে কে মার খাইয়েছে ওর বুড়া বয়ফ্রেন্ড রে দিয়ে। সে এখন হাসপাতালে ভর্তি।
রুমাইশার উত্তর শুনে মারিয়া বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে রইলো। এমন অপমানে চোখে পানি এসে গেলো ওর। রাগে রিরি করতে করতে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো ও৷
মারিয়া চলে গেলে বাকিরা রুমাইশার দিকে উদ্বেগের দৃষ্টিতে তাকালো। কিন্তু রুমাইশা সেসব উপেক্ষা করে আবার নিজের জায়গায় বসে পড়লো। সালিমা আর আফিয়া এসে আবার ওর পাশে বসে চিন্তিত গলায় বলল,
— দোস্ত তুই ওকে এ কথা বলতে গেলি কেন? জানিসই তো ও কেমন। এক্ষুনি গিয়ে ওর বুড়ো মাস্তান কে খবর দিয়ে ডেকে আনবে কলেজে , দেখিস!
রুমাইশা নিশ্চিন্ত মনে বই খাতা বের করতে করতে বলল,
— যা করতে চায় করতে দে। আমি কাউকে ভয় পাই না। আগে হলে পেতাম৷ কিন্তু এখন আমার একটা বর আছে, তাই আমি পৃথিবীর আর কাউকে পরোয়া করিনা।
বলে মুচকি হাসলো রুমাইশা। নেকাবের আড়াল থেকেও সে হাসি টা স্পষ্ট হলো। সালিমা, আফিয়া ছাড়াও আর ও কিছু মেয়ে এসে রুমাইশা কে ঘিরে বসে পড়লো, সাফওয়ানের সাথে কিভাবে কি করে বিয়ে হলো তাই শোনার জন্য। কিন্তু রুমাইশা সাফ সাফ বলে দিলো এখন কোনো কথা নয়, স্যার নোটস দিয়ে বেরিয়ে গেলে তখন বলবে৷
সবাই সেই সময় টার জন্য উৎসুক হয়ে বসে রইলো।
কিন্তু ক্লাস শেষে বাধলো বিপত্তি। ক্লাস শেষ হওয়ার আগ-মুহুর্তে মারিয়া সহ বেশ কয়েক জন লোক ডিপার্টমেন্টের বিল্ডিং এ ঢুকলো তারপর সোজা ডিপার্টমেন্ট হেডের রুমের দিকে এগোলো। ক্লাস রুম থেকে দেখা গেলো তাদের বারান্দা দিয়ে যেতে৷
আর তার খানিক পরেই ডেপ্টের ক্লার্ক এসে খবর দিলো রুমাইশাকে ডিপার্টমেন্ট হেড ডেকেছেন৷
রুমাইশা সহ বাকি সবাই আচ করতে পারলো ডাকার কারণ টা৷ ওরা একবার করে সবাই রুমাইশা কে দেখলো৷ ওদের সবার মুখেই উদ্বেগ পরিলক্ষিত হলো। কিন্তু রুমাইশা স্বাভাবিকই থাকলো। স্যারের থেকে অনুমতি নিয়ে ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে ডিপার্টমেন্ট হেডের রুমের দিকে এগোলো ও৷
আর আসন্ন বিপদ আঁচ করতে পেরে সালিমা আর আফিয়া ও স্যারের থেকে অনুমতি নিয়ে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে সোজা বোটানি ডিপার্টমেন্টের দিকে এগোলো।
রুমাইশা স্যারের রুমে ঢুকে দেখলো মারিয়া স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে ফ্যাচফ্যাচ করে কাদছে। আর ওর পাশেই গলা উঁচু করে বীরদর্পে দাঁড়িয়ে আছে মারিয়ার কথিত বয়ফ্রেন্ড, এলাকার পাতি নেতা, মধ্যবয়সী, বেটে খাটো মারুফ ভাই।
রুমাইশা ঢুকে স্যার কে সালাম দিলো। ডিপার্টমেন্ট হেড তখন রুমাইশা কে বললেন,
— রুমাইশা কাদের, তোমাকে তো আমি খুব ভদ্র মেয়ে বলেই জানি। তুমি যে কাউকে এইরকম কথা বলবে সেটা আমি ভাবতেও পারিনি। তুমি ওকে এমন নোংরা কথা কেন বলেছো তার কৈফিয়ত দাও, এন্ড ওর কাছে ক্ষমা চাও৷
রুমাইশা মারিয়ার দিকে একবার তীক্ষ্ণ নজর দিয়ে স্যার কে ঘটনা টা খুলে বলার প্রস্তুতি নিলো।
এদিকে সালিমা আর আফিয়া দুজনে মিলে বোটানি ডিপার্টমেন্টে গিয়ে খুজে খুজে সাফওয়ানের ক্লাস রুম বের করলো। সাফওয়ান দাঁড়িয়ে ছিলো দরজাতেই, পরীক্ষা দেওয়ারত ছেলে মেয়েদের গার্ড দিচ্ছিলো।
সালিমা আর আফিয়া এসে সাফওয়ানের সামনে দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে বলল,
— স্যার, আপনার সাথে আমাদের একটু কথা ছিলো।
এদের কে আগে কখনো না দেখায় ভ্রু কুচকে গেলো সাফওয়ানের, গলা খাকারি দিয়ে ও জিজ্ঞেস করলো,
— জ্বি, বলুন, শুনছি আমি।
সাফওয়ান কলেজের সমস্ত ছেলে মেয়েদের সাথে আপনি করে কথা বলে, এবার ও তার ব্যাতিক্রম ঘটলো না। সালিমা কিছুক্ষণ ইতস্তত করে বলল,
— স্যার, রুমাইশা কে ডিপার্টমেন্ট হেড ডেকে পাঠিয়েছে।
রুমাইশার নাম শুনে সাফওয়ানের কুচকে যাওয়া কপাল আবার সোজা হলো মুহুর্তেই। সালিমা কে কারণ জিজ্ঞাসা করলে সালিমা ঘটনার সূত্রপাত থেকে সব বলে দিলো। সব শোনার পর সাফওয়ানের কপাল আবার ও কুঞ্চিত হলো।
সালিমা কে বলল,
— ঠিক আছে, আপনি ক্লাস রুমে যান, আমি আসছি এখনি৷
সালিমা আর আফিয়া বোটানি ডিপার্টমেন্ট থেকে বেরিয়ে আবার ও নিজেদের ডিপার্টমেন্টে এলো।
যিনি ক্লাস নিচ্ছিলেন তিনি ততক্ষনে বেরিয়ে গেছেন৷ সালিমা আর আফিয়া ক্লাস রুমে ঢুকতেই সবার ভেতর গুঞ্জন শুরু হলো।
চাপা কন্ঠে সবাই নিজেদের ভেতরে আলোচনা করতে থাকলো রুমাইশার সাথে আসলেই কি হতে চলেছে সেই বিষয়ে।
ডিপার্টমেন্ট হেডের রুমে এখন উত্তেজিত অবস্থা৷ মারুফ নামের লোকটা খুব হম্বিতম্বি করছে। ওর চ্যালাব্যালা গুলো দরজা আটকে দাঁড়িয়ে আছে৷ ডিপার্টমেন্ট হেডের দিকে আঙুল তুলে সে রাগী গলায় বলল,
— আমি এখনি এর একটা বিহিত চাই, নইলে এই মেয়ের ওপর কিন্তু আমার হাত উঠে যাবে৷ তখন আপনারা কিন্তু কিছু বলতে পারবেন না৷ আমার প্রেমিকা কে পতিতা বলার সাহস কোথায় পায় ও? ওকে এখনি ক্ষমা চাইতে বলুন৷
ডিপার্টমেন্ট হেড বললেন,
— দেখুন, মিঃ মারুফ, দোষ এখানে দুজনের ই সমান। আর ঝামেলা টা, যতদুর আমরা দুজনেই শুনেছি, শুরু করেছে মারিয়া। তাই রুমাইশার ক্ষমা চাওয়ার কোনো কারণ দেখিনা৷ আর তাছাড়া সে যথেষ্ট ভদ্র মেয়ে৷ মারিয়া ওকে যে কথা টা বলেছে সেটা বলাও তো ওর উচিত হয়নি। সুতরাং কেউ কারো কাছে ক্ষমা চাইবে না৷ আপাতত দুজন দুজনের ভেতর কার দ্বন্দ মিটিয়ে ফেলুক।
কিন্তু মারুফ শুনলো না। সে রুমাইশা কে সহ ডিপার্টমেন্ট হেড কে ধমকাতে লাগলো। আর রুমাইশা মাথা উচু করে নির্বিকার হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো সেখানে।
সালিমা আর আফিয়া রা যখন ক্লাসে আলোচনা করতে ব্যাস্ত তখনি সাফওয়ান কে এই বিল্ডিং এ ঢুকতে দেখলো ওরা। সাফওয়ানের চোখ মুখ ঢাকা থাকায় মুখের অভিব্যক্তি বোঝার উপায় নেই, কিন্তু হাত দুইটা মুষ্টিবদ্ধ ওর। আর সেই সাথে হাতের কব্জির উপরিভাগের শিরা গুলো অদ্ভুত ভাবে ভাসমান৷
সাফওয়ান কে দেখেই ওদের গুঞ্জন থেমে গেলো। বড় বড় পা ফেলে বিশালাকার সাফওয়ান কে ওরা ডিপার্টমেন্ট হেডের রুমের দিকে হেটে যেতে দেখলো৷ আর সাফওয়ান ওদের আড়াল হতেই আবার শুরু হলো গুঞ্জন৷
ডিপার্টমেন্ট হেডের রুমে তখন মারুফ লোকটা সমানে গলা উচিয়ে ধমকে চলেছে৷ আর ডিপার্টমেন্ট হেড তাকে বিষয় টা বোঝানোর চেষ্টা করছে অনেক্ষন ধরেই। কিন্তু মারুফ কিছুই বুঝতে চাইছে না, তার একটাই কথা রুমাইশা কে এখনি মারিয়ার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে৷ সেটাও পায়ে পড়ে৷
রুমাইশা ঠাই দাঁড়িয়ে আছে, কোনোদিকে তাকাচ্ছে না। ওর মুখে কোনো ভীতির ছাপ নেই। মাথাটা উচু করে সামনে তাকিয়ে আছে ও৷ ওর হয়ে ডিপার্টমেন্ট হেডের ওকালতি দেখছে ও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।
এমন সময় মারুফ ডিপার্টমেন্ট হেড কে বাদ দিয়ে সোজা রুমাইশার সাথে কথা বলতে এগিয়ে এলো, তারপর বলল,
— এই মেয়ে, তুমি এখনি মারিয়ার কাছে ক্ষমা চাইবে, এই মুহুর্তে ওর পা ধরে ক্ষমা চাইবে তুমি, যতক্ষন না ক্ষমা চাইছো ততক্ষণ এই কলেজের বাউন্ডারি পার হতে পারবে না তুমি।
কিন্তু রুমাইশা কোনো হেলদোল দেখালো না আগের মতোই স্থীর হয়ে সামনে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। মারুফ দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
— কি বলছি কানে যাচ্ছে না তোমার? দেমাগ তো কম না তোমার! পাঁচ মিনিট সময় দিলাম তোমাকে, ক্ষমা চাও ওর কাছে। এক মিনিট ও বেশি দেরি করলে এখানেই তোমার সর্বনাশ করবো আমি৷
মারুফের চ্যালাব্যালা গুলো রুমাইশার দিকে এগিয়ে এলো যেন কিছুটা৷ রুমাইশা নিজের জায়গা থেকে এক পাও নড়লো না আর মাথাও নামালো না। রুমাইশার এমন নির্বিকার ভাবভঙ্গি দেখে তখন মারুফ যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো, রুমাইশার দিকে তেড়ে এসে বলে উঠলো,
— এই মেয়ে এখনি ক্ষমা চা তুই মারিয়ার কাছে, নইলে তোকে আজকেই মেরে পুতে ফেলবো!
এমন সময় বাইরে থেকে একটা শক্ত গমগমে আওয়াজ ভেসে এলো,
— আমার স্ত্রীকে সম্মান দিয়ে কথা বলুন।