ইট পাটকেল | পর্ব – ২৩

(১৮+ সতর্কতা)
উত্তরায় বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আশমিন সেখানে চিফ গেস্ট। সিটি করপোরেশনের মেয়র সহ কয়েকজন এমপি ও সেখানে উপস্থিত আছে। আশমিনের গাড়ি বহর ঢুকতেই সাংবাদিকরা হামলে পরলো। সানভি ড্রাইভারের পাশের সিটে মুখ কুচকে বসে আছে। মেয়ে হলে এতক্ষণে সে কেদে ভাসিয়ে দিত। আশমিনের সেদিকে ধ্যান নেই। সে ব্যাস্ত ভঙ্গিতে ফোনে কারোর সাথে কথা বলে যাচ্ছে। বিগত কয়েক মাস যাবৎ ঢাকার বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে মেয়েরা নিখোজ হচ্ছে। কয়েকজনকে পাওয়া গেলেও বাকিদের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। পুলিশ আর গোয়েন্দা বিভাগের সাথে সাথে আশমিন নিজের লোকদের ও লাগিয়ে দিয়েছে।কিন্তু ফলাফল শূন্য। প্রায় পঁচাত্তর জন মেয়ে নিখোঁজ। যেদের পাওয়া গেছে তারা বয়ফ্রেন্ড নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। বাকিদের এরকম কোন রেকর্ড নেই।আশমিন পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করে রেখেছে।আজকের সমাবেশ শেষে এই নিয়ে একটা মিটিং আছে।
আশমিনের গাড়ি থামতেই বাহাদুর তার টিম সহ পুরো গাড়ি ঘেরাও করে ফেললো। প্রয়োজনের তুলনায় আজ অনেক বেশি সিকিউরিটি দেয়া হচ্ছে আশমিন কে।রাজনীতি বিদদের উপর এরকম জনসমাগমেই সবচেয়ে বেশি হামলা হয়। নূর নিজের সিকিউরিটি টিম ও পাঠিয়ে দিয়েছে আশমিনের অগোচরে। আশমিনের উপর রাগ টা কমে এসেছে নূরের।আশমিন কানাডা থাকা অবস্থায় আমজাদ চৌধুরী তাকে সবকিছু খুলে বলেছে।কামিনী চৌধুরীর করা কীর্তি আর আশিয়ান অমির ব্যপারে সব জানে নূর।বাকরুদ্ধ হয়ে শুনেছিল সব।তাই আশিয়ান কে দেখে সে অবাক হয় নি। হোটেল রুমের সেই মেয়ের ঘটনার পিছনে লারার হাত আছে।আর তাকে সাহায্য করেছে কামিনী চৌধুরী। উদ্দেশ্য ছিল শুধু নূর কে আশমিনের জীবন থেকে সরানো।এতো টা ঘৃণা কেন করেন কামিনী চৌধুরী তার উত্তর পায়নি নূর। আশমিন কে করা ড্রাগস দেয়া হয়েছিল সেদিন।সানভি সময় মতো না পৌছালে আশমিনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতো সেদিন।সেই মুহুর্তে মাথায় খু*ন চেপে গিয়েছিল নূরের। আমজাদ চৌধুরী থামিয়েছে তাকে।এখনো অনেক কিছু খোলসা হওয়া বাকি।তাই কামিনী চৌধুরী কে নিজের মতো ছেড়ে দিতে হবে।সবকিছু শুনে নিজেকে শান্ত করেছে নূর।মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছে কামিনী চৌধুরীর বুকে প্রথম গু*লিটা সে ই করবে।শুধু সময়ের অপেক্ষা। নূরের আশমিনের উপর রাগটা এখন আর এতটা প্রখর ভাবে নেই।সে নিজেও চায় জীবন টা কে গুছিয়ে নিতে।আশমিন কে টাইট দেয়ার জন্য সারাজীবন পরে আছে।
আশমিন মনোযোগ দিয়ে ফোনে কিছু একটা করছে। সানভি ভয়ে ভয়ে বললো,
— স্যার,,
আশমিন ভ্রু কুচকে তাকালো সানভির দিকে। তারা এখনো গাড়ির ভিতর অবস্থান করছে।ভীড় নিয়ন্ত্রণে আসলে গাড়ি থেকে নামবে।সানভি ইতস্তত করতে করতে বললো,
— আপনার পাঞ্জাবি টা চেঞ্জ করা দরকার।
আশমিন এক ভ্রু উচু করে তাকালো সানভির দিকে। সানভি ফোনে একটা ছবি তুলে আশমিনের দিকে এগিয়ে দিল।আশমিন ছবি দেখে হালকা হাসলো। প্রিয়তমার দেয়া চিহ্ন জ্বলজ্বল করছে তার পাঞ্জাবি তে। ভালবাসার মুহুর্ত গুলো মনে করতেই কটমট করে তাকালো সানভির দিকে। সানভি বেলুনের মতো চুপসে গিয়ে আরেকটা পাঞ্জাবি এগিয়ে দিলো আশমিনের দিকে। গাড়ি তে সব সময় এক সেট কাপড় থাকে আশমিনের।
— তোমার শাস্তি আরো বারানো হলো সান।বিয়ের পর তুমি একা হানিমুনে সুইজারল্যান্ড যাবে। এটা আমার পক্ষ থেকে তোমার বিয়ের গিফট।
সানভি অসহায় চোখে তাকালো আশমিনের দিকে। সামান্য একটা পাঞ্জাবি চেঞ্জ করতে বলার অপরাধে তাকে একা একা সুইজারল্যান্ড হানিমুনে যেতে হবে! সানভি দুঃখী দুঃখী গলায় বলল,,
— বউ খুব রাগ করবে স্যার।
আশমিন সেদিকে পাত্তা দিলো না।পাঞ্জাবি চেঞ্জ করে ফেললো। গায়ের পাঞ্জাবি সানভির হাতে দিয়ে বললো,
— এটা এভাবেই আমার কভার্ডে রেখে দিবে।
সানভি মাথা দুলিয়ে সায় জানালো।বাহাদূর দরজা খুলতেই আশমিন গটগট করে বেড়িয়ে গেলো। সবার সাথে কথা বলে বিশ্রামের জন্য বরাদ্দকৃত রুমে চলে গেলো। মন খুব বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।কপালে চিন্তার ভাজ পরেছে আশমিনের। আশিয়ানের একটা ব্যবস্থা খুব তারাতাড়ি করতে হবে। হাত পা বাধা না থাকলে এক গু*লিতে কাহিনি খতম করে ফেলতো সে।বিরক্তি তে মুখ তেতো হয়ে গেলো আশমিনের। তার হাত পা বাধা থাকলেও আশিয়ানের নেই।সে যে কোন সময় আক্রমণ করতে পারে।চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বাকা হাসলো আশমিন। বিরবির করে বললো,
— দুই একবার ছাড় পাবি ছোট ভাই। আমি আবার ভালো সাজার ভং বেশিক্ষন ধরে থাকতে পারবো না। আমি জন্মগত ব্যাড বয়।
নূরের মুখোমুখি বসে আছে অমি।মলিন মুখে ইতস্ততার ছাপ স্পষ্ট।
— আমার উপর রেগে আছো অমি?
অমি অবাক চোখে তাকালো নূরের দিকে। তড়িঘড়ি করে বললো,
— না না।কি বলছেন ম্যাম?আমি কেন রাগ করবো আপনার উপর?
— সত্যি টা আমরা দুজনেই জানি অমি।সম্পর্কে আমরা ভাই বোন। তুমি সব আগে থেকেই জানতে।সব সময় বড় ভাইয়ের মতো আগলে রেখেছো আমাকে।কখনো নিজের পরিচয় প্রকাশ করো নি। একবার বোন বলে কাছে ডেকেই দেখতে। নিরাশ করতাম না তোমায়।আমার নিঃসঙ্গ সময়ের একমাত্র সাথী তুমি। ভাইয়া বলে জরিয়ে ধরার অধিকার কি নেই আমার?
অমি নিচের দিকে তাকিয়ে নিজের চোখের পানি লুকাতে ব্যস্ত। ছোট বোন টাকে সে প্রচন্ড ভালবাসে।কিন্তু নিয়তি তাকে হাতে পায়ে বেড়ি পরিয়ে দিয়েছে। চাইলেও সে বুকে আগলে ধরতে পারেনি তার বোনকে।নিজের বাবার লাশের পাশে বসে দু ফোটা চোখের পানি ফেলতে পারার অধিকার ও তার ছিল না। অবৈধদের এতো অধিকার থাকে না। আর পাচটা সাধারণ মানুষের মতো সে বাবার কবরে দু মুঠো মাটি দিয়েছে।
নূর নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে একপাশ থেকে জরিয়ে ধরলো অমি কে।যে নিঃস্বার্থ ভাবে সারাজীবন আগলে রেখেছে তাকে।অমি ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।শক্ত করে জরিয়ে ধরলো বোন কে।নূরের চোখ থেকেও পানি ঝরছে।দুটো ভাই আছে তার। একজন শামুকের আবরণের মতো আগলে রাখে তাকে।আরেকজন মারার পায়তারা করছে।অমি নূররে মাথায় চুমু খেয়ে ভরাট কন্ঠে বললো,
— আমার বোন তুই।সসম্পর্কের মানদন্ড আমাদের যেমন ই হোক না কেন।তোর ভাই সারাজীবন তোর সাথে আছে। আশিয়ান কে নিয়ে ভাবিস না।সেও নিজের ভূল বুঝতে পারবে একদিন। আমরা দুই ভাই আগলে রাখবো তোকে।আমাদের ম্যাম হয়েই থাকবি তুই।তুই যে খুব আদরের বোন আমার।
নূর শক্ত করে জরিয়ে রইলো তার ভাই কে। তার আপনজন। তার ও ভাই আছে ভাবতেই বুক খুশিতে নেচে উঠলো।
আশমিন সব সময় শান্ত থাকতে পছন্দ করে। অতিরিক্ত রেগে গেলেও তার মুখবয় থাকে শান্ত।সেই শান্ত মানুষ টা আজ কোন ভাবেই শান্ত থাকতে পারছে না।অস্থির হয়ে পা নাচিয়ে যাচ্ছে বারবার। পাশের কয়েকজন তার অস্থিরতা দেখে নিজেরাও অস্থির হয়ে উঠছে।বার নার জানতে চাইছে সে ঠিক আছে কি না।সে কিভাবে বোঝাবে তার এখন বউ কোলে নিয়ে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে। বিকেল পাচটা বেজে গেছে।লম্বা বক্তৃতা শুনতে শুনতে কান পচে গেলো। এদের মুখেই শুধু বড় বড় কথা।কাজের বেলায় ঠনঠনা ঠন ঘন্টা। নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেই ফেললো আশমিন। গম্ভীর গলায় বলল,
— নিজের বক্তব্য ছোট করুন।অপ্রয়োজনীয় কথার দরকার নেই।যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু বলুন।
সবার বক্তব্য শোনার পর আশমিনের কপালে চন্তার ছাপ পরলো। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।
— ঢাকা শহরের এমনকি মফস্বলের প্রত্যেকটি স্কুল কলেজের সামনে দুজন করে পুলিশ মোতায়ন করুন।সংবাদ সম্মেলন করে বাবা মা এবং স্কুল কলেজ কর্তৃপক্ষ কে সাবধান করে দিন।স্কুল কলেযে থাকাকালীন শিক্ষকেরা এবং বাইরে থাকাকালীন বাবা মায়েরা যেত তাদের সন্তানের উপর কড়া নজরদারি রাখে। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাদের কেউ সতর্ক থাকতে হবে। যেহেতু স্কুল কলেজ থেকেই বেশি অপহরণ হচ্ছে সেহেতু সেদিকেই বেশি খেয়াল রাখুন।স্টুডেন্ট সাজিয়ে আপনাদের কিছু টিম মেম্বার পাঠিয়ে দিন।হাত ফস্কে যাবে কোথায়? ঠিক এসে জালে আটকা পরবে।নিজেদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করবেন। দায়িত্বে অবহেলা করলে কেউ ছাড় পাবেন না।
মিটিং শেষ করে আশমিন বেড়িয়ে গেলো। ঘড়ি তে অলরেডি রাত দশটা বাজে।ক্লান্তিতে শরীর ভেঙ্গে আসছে। গাড়ি তে বসে গা এলিয়ে দিলো আশমিন।
— সোজা বাড়িতে যাবে সান।
সানভি তারাতাড়ি গাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিল।আশমিন কে ক্লান্ত লাগছে খুব।
বাড়িতে প্রবেশ করতেই আমজাদ চৌধুরীর কে গোমড়া মুখে বসে থাকতে দেখে তার দিকে এগিয়ে গেলো আশমিন। ঘড়ির কাঁটা বারোটার ঘরে যেতে পনেরো মিনিট বাকি আছে।
— দুই দুটো বউ থাকতে এতিমের মতো এখানে বসে আছো কেন? আর কি চাই(কপাল কুচকে)?
আমজাদ চৌধুরী আশমিনের কথায় পাত্তা না দিয়ে আগের মতোই বসে রইলেন। আশমিন তার মুখের দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে বললো,
— আস্তাগফিরুল্লাহ! তুমি কি আবার বিয়ে করতে চাইছো? এসব বায়না চলবে না। দুটো পর্যন্ত ঠিক আছে। নিজের বয়স টা ও তো একবার দেখো। এই বয়সে এতো গুলো বউ সামলাতে পারবে না। যাও রুমে যাও।ভালো ছেলেরা জেদ করে না।
আমজাদ চৌধুরী আগুন চোখে তাকালো আশমিনের দিকে। দাত কড়মড় করতে করতে বললো,
— চুপ করো বেয়াদব ছেলে। মুখের লাগাম কি নর্দমায় ফেলে দিয়ে এসেছো? বাবা হই তোমার। সম্মান দিয়ে কথা বলো। বাবার সাথে এসব কি ধরনের কথাবার্তা!
আশমিন অবাক হওয়ার ভান করলো। নাদান গলায় বলল,
— আমি আবার কি বললাম?
আমজাদ চৌধুরী আর কিছু বললো না। কামিনী চৌধুরী কে হাজার অনুরোধ করে ও গলাতে পারেনি সে।কতদিন হলো ঠিক মতো চোখের দেখা টাও দেখতে পায়না। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে।গেস্ট রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল সে।এই নির্লজ্জ ছেলের যন্ত্রণায় কোথাও বসেও শান্তি নেই।
বাবার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে তপ্ত শ্বাস ছাড়লো আশমিন।এভাবে কথা না বললে সে সারারাত এখানে বসেই পাড় করে দিতো।
নিজের রুমে ঢুকে মুচকি হাসলো আশমিন। সারা রুমে ফুলের ছড়াছড়ি। বউ তার জন্য অপেক্ষা করছে ভাবতেই মন খুশিতে ভরে উঠলো। তারাতাড়ি ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।নূর রুমের কোথাও নেই। ফ্রেশ হয়ে এসে সোজা বেলকনিতে চলে গেলো আশমিন। সিদুর লাল শাড়ি তে নূর কে অপ্সরাদের মতো লাগছে।শুকনো ঢোক গিলে দাঁড়িয়ে গেলো আশমিন। কোমোড়ের নিচ পর্যন্ত লম্বা কোকড়ানো চুল গুলো আশমিনের দূর্বলতা। হালকা পায়ে এগিয়ে গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো নূর কে।কেপে উঠলো নূর।
— আমার হাত পা কাপছে বউ। তোমাকে দেখলে আমি হয়তো আজ ম*রেই যাবো। পাগল পাগল লাগছে নিজেকে।
নূর ঘুরে তাকাল আশমিনের দিকে। সত্যিই আশমিনের হাত পা কাপছে। নূরের মুখের দিকে তাকিয়ে কাপাকাপি বন্ধ হয়ে গেলো আশমিনের। চাদের আলোয় নূরের সৌন্দর্য উপচে পরছে। ঘোরে চলে গেলো আশমিন। এক হাতে কোমড় পেচিয়ে ধরে নিজের কাছে নিয়ে এলো নূর কে।নূরের শরীরের হালকা কাপুনি আরো অস্থির করে তুলছে আশমিন কে। বারান্দার দেয়ালের সাথে চেপে ধরেই দুজনের ওষ্ঠ এক করে দিলো সে। আশমিনের বেহায়া হাতের বিচরণ থেকে বাচতে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো নূর। আশমিন আরো শক্ত করে চেপে ধরলো। ঠোঁট ছেড়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে দুজন। আশমিন নেশালো গলায় বলল,
— আমার তোমাকে চাই নূর।এই মুহুর্তে চাই।আর অপেক্ষা করতে পারছি না।
নূর জরিয়ে ধরলো আশমিন কে।লজ্জায় মুখ গুজে দিলো আশমিনের বুকে।আশমিন শব্দ করে হাসলো।প্রেয়সীর কপালে চুমু খেয়ে কোলে তুলে নিল তাকে।রুমের ভিতর অগ্রসর হতে হতে শয়তানি হেসে বললো,
— আজ তোমাকে কে বাচাবে সুন্দরী?
রাতটা স্বপ্নের মতো সুন্দর মনে হলো নূরের কাছে।আশমিন এতো বছরের ভালবাসা তাকে উজার করে দিয়েছে।প্রতিটি মুহুর্তে তাকে অনুভব করিয়েছে তার ভালবাসার গভীরতা। ভালবাসায় উন্মাদ হলেও তার সুভিধা অসুভিধার দিকে সম্পুর্ন ধ্যান ছিল আশমিনের।
সকালে আশমিনের চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গলো নূরের। মাত্র দুই ঘন্টা হয়েছে ঘুমিয়েছে সে। সারা শরীরের সাথে মাথার যন্ত্রণা ও এসে যোগ হলো আশমিনের চিৎকারে।
— এভাবে আমার সর্বনাশ করলে নূর! আমার ইজ্জত লুটে নিতে তোমার লজ্জা করলো না? একজন ভোলা ভালা মন্ত্রীর ইজ্জত হরণ করেছো তুমি।কি সাংঘাতিক!
নূর ঘুম ঘুম চোখে নিজের কপাল চাপড়ালো।সারা রাত নিজেই ওকে ঘুমাতে দেই নি।এখন এসে সকাল সকাল নাটক শুরু করেছে।নূর আবার শুয়ে পরলো।গায়ে কম্বল জড়াতে জরাতে বললো,
— থানায় ফোন দিয়ে বলুন আপনার বউ আপনার ইজ্জত লুটে নিয়েছে। তারা নিশ্চয়ই আপনাকে সাহায্য করবে।
আশমিন পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো নূর কে। ঘাড়ে চুমু খেয়ে টেনে বসিয়ে দিল। নূর বিরক্ত চোখে তাকালো আশমিনের দিকে। আশমিন হালকা হেসে একটা একবাটি নুডুলস এগিয়ে দিলো নূরের দিকে। নিজেই চামচ নিয়ে মুখের সামনে ধরলো। নূর কিছু না বলে খেয়ে নিলো। না খেলে আশমিন ছাড়বে না সে খুব ভালো করেই জানে। কয়েক চামচ খেয়ে আর খাবে না জানালে একটা পেইন কিলার খাইয়ে দিল নূর কে। হালকা জ্বর জ্বর ভাব আছে শরীরে।
নূর আবার শুয়ে পরতেই আশমিন ও তাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।
চোখ বন্ধ করে ভাবলো সানভির একটা খোঁজ নেয়া দরকার। সত্যি সত্যি নর্দমায় নেমে গেছে নাকি দেখতে হবে।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।