সাতদিন পর…….
আমি শাড়ি পরে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে আছি আদিয়াত আর ওর ফ্যামিলি মেম্বারদের সামনে।
(সাত দিন আগে আমি বাসায় ফিরেই আদিয়াতকে সব কথা বলি।ওও তো আমার কথা শুনে মহা খুশি।তখনই আদিয়াত ওর ফ্যামিলিকে আমার কথা বলে।প্রথমে ওনারা রাজি হয়নি।কিন্তু এরপর আদিয়াত অনেক কিছু বুঝিয়ে তাদেরকে রাজি করিয়েছে।ফলস্বরূপ আজ আদিয়াতের ফ্যামিলির সবাই আমাকে দেখতে এসেছে।)
মিসেস রাইমা:মা,,তোমার মুখটা একটু উপরে তুলো(আদিয়াতের মম)
আমি তার কথা শুনে মাথা তুলেই দিলাম এক চিৎকার,,,,,,,,
আমি:আপনিইইইইইইইইইইই(অবাক হয়ে)
আরুশ:আমারো তো সেম কোশ্চেন।তুমি এখানে কি করছো?
আমি:আরে আজব মানুষ তো আপনি।আমার বাসায় আমি থাকবো নাতো কি আপনার বউ থাকবে(আরুশের দিকে তাকিয়ে)
আরুশ:হতেও তো পারে(বাঁকা হেসে)
আরুশের কথায় আমি অবাক হয়ে বললাম,,,
আমি:মানে?
আরুশ:আব,,কিছু না।বাই দ্যা ওয়ে,,,আহিলের জন্য আমরা যাকে দেখতে এসেছি,,,তুমিই সেই?
আমি:হুম
আদিয়াত:এই এক মিনিট,,,,নিহান তুই আয়রাকে আগে থেকেই চিনিস?(আরুশের দিকে তাকিয়ে)
আরুশ:হ্যা।(সোজা সাপ্টা উত্তর)
মি.আবরার:কিন্তু কিভাবে?(আদিয়াতের পাপা)
আরুশ:সে অনেক বড় হিস্টোরি।বাদ দাও
আদিয়াত:আচ্ছা আয়রা শোনো এইটা আমার ছোট আব,,ছোট বলতে এক বছরের ছোট ভাই নিহান আহমেদ আরুশ।যেহেতু আগে থেকেই চেনো তাই আর এক্সট্রা করে পরিচয় করানো লাগবে না আশা করি।
আমি:হুম
মিসেস আরশি:আচ্ছা তাহলে এখন মেয়েকে আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে তা করে নিতে পারেন(আমার আম্মু)
মি.আরহাম:হ্যা,,সেইটায়।তবে আয়রা আমারদের একমাত্র মেয়ে।তাই আমি ওকে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে আমাদের কাছে থেকে দূরে রাখতে চাই না।কিন্তু যেহেতু এই বিয়েতে আমার মেয়ের কোনো আপত্তি নেই।তাই আমি মেনে নিয়েছি।
মি.আবরার:আপনি কোনো চিন্তু করবেন না ভাই।মেয়ে তো আর দূরে কোথাও যাচ্ছে না।আপনাদের যখন ইচ্ছা তখনই যেয়ে আপনাদের মেয়েকে দেখে আসবেন।
মিসেস রাইমা:আর আপনাদের মেয়ে আমাদের বাড়িতে বউমা হয়ে নয় বরং নিজেদের মেয়ে হয়েই থাকবে।(আমার মাথায় হাত বুলিয়ে)
ঐশি:তো ওদের বিয়ে নিয়ে যা যা বলার এখন বলে নেই আমরা?(সবার দিকে তাকিয়ে)
মিসেস রাইমা:তোমরা কে হও আয়রার?
আমি:ওরা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।(সাদাফদের দিকে তাকিয়ে)
মিসেস রাইমা:ওও আচ্ছা।
মি.আবরার:তো আমরা চাচ্ছি যাতে সামনের মাসেই আয়রা আর আদিয়াতের এনগেজমেন্ট হয়ে যাক।এতে আপনাদের কোনো সমস্যা আছে?
মি.আরহাম:নাহ,এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।কি বলো আয়রার আম্মু?
মিসেস আরশি:হ্যা এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
মিসেস রাইমা:এনগেজমেন্ট পার্টি তা কোথায় করা হবে?
আমি তখন বলে উঠলাম,,,,
আমি:আমি চাই যাতে আমাদের এনগেজমেন্ট পার্টি যেন বাসাতেই হয়।
আদিয়াত:তাহলে তে হয়েই গেল।আমাদের বাসাতেই তাহলে পার্টি হবে।
আমি:আচ্ছা
সাদাফ:এবার ওদের একটু আলাদা কথা বলার সুযোহ করে দাও তোমরা।
মিসেস আরশি:হ্যা হ্যা,ঐশি তোমরা আদিয়াত আর আয়রাকে নিয়ে আয়রার রুমে যাও।
এরপর আমাকে আর আদিয়াতকে নিয়ে সবাই আমাদের রুমে গেলো।সেখানে আমাদেরকে রেখে সবাই বেরিয়ে গেল।এখন রুমে শুধু আমি আর আদিয়াত।আমাদের মধ্যে পিনপতন নিরবতা ভেংয়ে আমিই বলে উঠলাম,,,
আমি:আচ্ছা আদিয়াত,তুমি আমাকে সত্যিই ভালোবাসো তো?
কথাটা আমি এমনিতে বললেও আদিয়াত আমার কথায় চমকে গেলো।ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারলাম নাহ।এভাবে চমকে যাওয়ার কি ছিলো?
আদিয়াত:আ,আমি তো,তোম,তোমাকে ভা,ভালোবাসি বলেই তো বিয়ে করতে চাচ্ছি তাইনা?(আমতা আমতা করে)
আমি:তো তুমি এই ঠান্ডা ওয়েদারেও এমন ঘামছো কেন?আর তোতলাচ্ছোই বা কেন?
আদিয়াত:আ,আমি একটু ওয়াশরুমে যাবো।তোমাদের ওয়াশরুমটা কোন দিকে?
আমি ওকে ওয়াশরুম দেখিয়ে দিলাম ঠিকই।কিন্তু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আদিয়াত আমার কথায় ঘাবরে গেছে।কিন্তু কেন?
এর মধ্যেই সবাই রুমে এসে আমাকে নিয়ে গেল বাইরে।একটু পর আদিয়াতও আসলো।
আমাদের এনগেজমেন্ট নিয়ে অনেক কথা হলো।কিন্তু এর মধ্যে আরুশ একটাও কতা বলেনি শুধু শুনেছে।আর মুখে তার বিখ্যাত সেই ডেভিল স্মাইল।আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা যে এসব কি হচ্ছে।কিন্তু এতোটুকু বুঝতে পারচি যে আমার জন্য সত্যিই বড় কোনো ধামাকা ওয়েট করছে।আর আমি হয়তো এইটার জন্য প্রস্তুত নাহ।তাই আমার ভয় হচ্ছে।আমি কোনো বাজে পরিস্থিতির সম্মুখিন হবো না তো?
আমি:এই আজ আরিয়ান আসেনি কেন?ওর কি হয়েছে?
ইভা:জানিনা।ওর ফোন অফ।এজন্য সাদাপ আর আয়মান ওর বাসায় গিয়েছিলো।সেখানেও ওও নাই।
আমি:এর আবার কি হলো রে ভাই?(চিন্তিত স্বরে)
আয়মান:দেখ আয়ু আমার কথায় নাহ শেষে ঠিক হয়!(মাথায় হাত দিয়ে)
আমি:উফফফ তুই তাম তো।আমার এইবার ওকে নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।
ঝিনুক:সত্যিই তো আরিয়ানটা গেলো কই?(ভাবার ভংগিতে)
ঐশি:শালা শয়তানটা ফেনটাও অফ করে রাখছে।(রাগি স্বরে)
আমি:এই সাদাফ তোরা খোঁজ নে তো যে এই হারামিটা কই গিয়ে মরছে।
সাদাফ:হুম দেখছি।তুই চিন্তা করিস না।
আমি:হুম।